
মানুষ কবর থেকে কী অবস্থায় পুনরুত্থিত হবে?
উত্তর: পুনরুত্থিত হবে; ‘‘খালি পায়ে উলংগাবস্থায় এবং খাৎনা পূর্বাবস্থায়। সকলেই উদ্ভিদ লতা-পাতার মত বেড়ে উঠবে, অতঃপর দলে দলে হাশরের ময়দানের দিকে এগিয়ে যাবে। এখানে সৃষ্টির সব কিছুই আল্লাহর সম্মুখে উপস্থিত হবে। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ يَوۡمَئِذٖ تُعۡرَضُونَ لَا تَخۡفَىٰ مِنكُمۡ خَافِيَةٞ ١٨ ﴾ [الحاقة: ١٨]
‘‘সেদিন তোমাদেরকে উপস্থিত করা হবে এবং তোমাদের কোনো কিছুই গোপন থাকবে না’’। (সূরা আল-হাক্কাহ: ১৮)
সবার হিসাব-নিকাশ করা হবে এবং সকলেই তাদের কৃতকর্ম জানতে পারবে। মহান আল্লাহ বলেন:
﴿ يَوۡمَ يَبۡعَثُهُمُ ٱللَّهُ جَمِيعٗا فَيُنَبِّئُهُم بِمَا عَمِلُوٓاْۚ أَحۡصَىٰهُ ٱللَّهُ وَنَسُوهُۚ ﴾ [المجادلة: ٦]
‘‘সেদিন আল্লাহ তাদের সকলকে একত্রে পুনরুত্থিত করবেন এবং তাদের তাদের আমল সম্পর্কে তিনি জানিয়ে দিবেন, আল্লাহ তা হিসেব করে রেখেছেন অথচ তারা তা বিস্মৃত হয়েছে’’। (সূরা আল-মুজাদালা: ৬)
দাঁড়িপাল্লা দ্বারা বান্দাদের কৃতকর্ম ওজন করা হবে এবং কাজ-কর্মের যাথাযথ মূল্যায়ন ও উপস্থাপন করা হবে। আল্লাহ বলেন:
﴿ وَنَضَعُ ٱلۡمَوَٰزِينَ ٱلۡقِسۡطَ لِيَوۡمِ ٱلۡقِيَٰمَةِ فَلَا تُظۡلَمُ نَفۡسٞ شَيۡٔٗاۖ وَإِن كَانَ مِثۡقَالَ حَبَّةٖ مِّنۡ خَرۡدَلٍ أَتَيۡنَا بِهَاۗ وَكَفَىٰ بِنَا حَٰسِبِينَ ٤٧ ﴾ [الانبياء: ٤٧]
‘‘ক্বিয়ামত দিবসে আমরা স্থাপন করব ন্যায় বিচারের পাল্লা। সুতরাং কারো প্রতি কোনোই অবিচার করা হবে না এবং কর্ম যদি সরিষা দানা পরমাণ ওজনেরও হয় তবুও উহা আমরা উপস্থিত করব। হিসাব গ্রহণে আমরাই যথেষ্ট’’। (সূরা আল-আম্বিয়া: ৪৭)
প্রত্যেকেই নিজের আমলনামা স্বহস্তে গ্রহণ করবে এবং তা পাঠ করবে। সুমহান আল্লাহ বলেন:
﴿ فَأَمَّا مَنۡ أُوتِيَ كِتَٰبَهُۥ بِيَمِينِهِۦ فَيَقُولُ هَآؤُمُ ٱقۡرَءُواْ كِتَٰبِيَهۡ ١٩ ﴾ [الحاقة: ١٩]
‘‘আর যাকে তার আমলনামা তারই ডান হাতে দেওয়া হবে, অতঃপর তাকে বলা হবে; নাও তোমরাও লিপিবদ্ধ আমলনামা পড়ে দেখ’’। (সূরা আল হা-ক্কাহ: ১৯)
হাশরের ময়দানে হিসাব-নিকাশ শেষ হবার পরে সকলকে জাহান্নামের উপর দিয়ে পথ অতিক্রম করতে হবে। যে অতিক্রম করতে সক্ষম হবে সে নিরাপত্তা লাভ করলো। সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে:
«وَيُضْرَبُ الصِّرَاطُ بَيْنَ ظَهْرَيْ جَهَنَّمَ، فَأَكُونُ أَنَا وَأُمَّتِي أَوَّلَ مَنْ يُجِيزُهَا»
‘‘আর জাহান্নামের উপর দিয়ে চলাচলের রাস্তা স্থাপন করা হবে। আমি এবং আমার উম্মতই প্রথম তা অতিক্রম করবো’’।
জাহান্নামের উপর দিয়ে মুমিনগণ পথ অতিক্রমকালে তাদের পরস্পরের দেনা-পাওনা পরিশোধ করবে যা দুনিয়ায় পরস্পরে আদায় করে নি। আবু সাঈদ আল-খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«يَخْلُصُ المُؤْمِنُونَ مِنَ النَّارِ، فَيُحْبَسُونَ عَلَى قَنْطَرَةٍ بَيْنَ الجَنَّةِ وَالنَّارِ، فَيُقَصُّ لِبَعْضِهِمْ مِنْ بَعْضٍ مَظَالِمُ كَانَتْ بَيْنَهُمْ فِي الدُّنْيَا، حَتَّى إِذَا هُذِّبُوا وَنُقُّوا أُذِنَ لَهُمْ فِي دُخُولِ الجَنَّةِ»
‘‘মুমিনগণ জাহান্নাম থেকে মুক্ত হয়ে জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝে কানতারা বা সাঁকো পথ অতিক্রমকালে তাদের পরস্পরিক দেনা পাওনা পরিশোধের কাজ সমাপ্ত করা হবে, যে দেনা-পাওনা দুনিয়াতে অমিমাংসিত রয়ে গেছে। পারস্পরিক দেনা-পাওনা পরিশোধিত হবার পরই জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি লাভ করবে’’[55]। (আল-বুখারী)
No comments:
Post a Comment