Sunday, July 26, 2015

জান্নাতের অন্তরায়ঃ অহংকার/দাম্ভিকতা




আস সালামুয়ালাইকুম,আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহুম্মা সাল্লি ওয়াসাল্লিম আ'লা নাবিয়্যিনা মুহাম্মাদ
-----------------
জান্নাতের অন্তরায়ঃ অহংকার/দাম্ভিকতা
======================
মহাগ্রন্থ কুর’আন আল কারীমে আল্লাহ্‌ রাব্বুল ‘আলামীন বলেনঃ
“নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ কোন দাম্ভিক অহংকারীকে পছন্দ করেন না।”[সূরা লোকমান; ৩১:১৮]
আব্দুল্লাহ্‌ ইবনে মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত, প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সা) বলেছেনঃ
“যার অন্তরে অণু পরিমান অহংকার থাকবে সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেনা।” এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলঃ যদি কেউ সুন্দর জামা আর সুন্দর জুতা পরিধান করতে ভালবাসে? তখন নবী করীম (সা) বললেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ সুন্দর এবং তিনি সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন। অহংকার মানে হল সত্য প্রত্যাখ্যান করা এবং মানুষকে হেয় প্রতিপন্ন করা।”
[সহীহ্‌ মুসলিম; কিতাবুল ঈমান, অধ্যায়ঃ ১, হাদীস নম্বরঃ ১৬৪]
এই হাদীস অনুযায়ী অহংকার দুই ধরনেরঃ
১. সত্য প্রত্যাখ্যান করাঃ
কুর’আন আল কারীমে আল্লাহ্‌ রাব্বুল ‘আলামীন বলেনঃ
“যখন তার নিকট আমার আয়াত সমূহ আবৃত্তি করা হয়, তখনসে দম্ভভরে মুখ ফিরিয়ে নেয়, যেনসে এটা শুনতেই পায়নি, যেন তার কর্ণদুটি বধির।অতএব, তাকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দিয়ে দাও।”
[সূরা লোকমান; ৩১:৭]
“যারা নিজেদের নিকট কোন দলীল না থাকলেও আল্লাহ্‌র নিদর্শন সম্পর্কে বিতর্কে লিপ্ত হয়, তাদের আছে শুধু অহংকার, যা সফল হবার নয়। অতএব,আল্লাহ্‌র শরণাপন্ন হও; তিনিতো সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।” [সূরা আল-মু’মিন; ৪০:৫৬]
তবে যাদের ঔদ্ধত্য এবং অহংবোধ তাদেরকে পরিপূর্ণভাবে সত্য গ্রহণ করা থেকে বিরত রাখে-অর্থাৎ যারা মতের অমিলের কারনে বা খেয়াল-খুশিমত সত্য আংশিকভাবে মেনে চলে এবং আংশিক মেনে চলা থেকে বিরত থাকে-তারা কাফির নয়। তবে তাদের দাম্ভিকতার জন্যও রয়েছে যথাপোযুক্ত শাস্তি। আর একারনেই আলেমরা এই ব্যাপারে একমত যে, যখন কেউ আল্লাহ্‌র রাসূল (সা) এর সুন্নাহ্‌ সম্পর্কে অবগত হয় তখন তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া তার পক্ষে সমীচীন নয়; ঠিক তেমনি সমীচীন নয় তার উপরে অন্য কারোর কথা বা কাজকে প্রাধান্য দেওয়া সে যেই হোক না কেন-যত প্রভাবশালী ব্যক্তিই হোক না কেন।
২. মানুষকে হেয় প্রতিপন্ন করাঃ
এই ধরনের অহংকারের অন্তর্ভুক্ত হল মানুষকে অবজ্ঞা করা, তাদের ঘৃণা করা, নিজের সম্পর্কে অতি উচ্চ মনোভাব পোষণ করা এবং অন্যদের ছোট/ নিচু মনে করা, অন্যকে ছোট প্রমানিত করার উদ্দ্যেশ্যে নিজেকে জাহির করা, নিজের সম্পর্কে অতি উচ্চ ধারনা পোষণ করে, নিজেকে অন্য সবার চাইতে উত্তম মনে করে; আর এটাই তাকে উদ্বুদ্ধ করে আল্লাহ্‌র সৃষ্টিকে ঘৃণা, অবজ্ঞা আর হাসিঠাট্টা করতে। যেটা প্রতীয়মান হয় তার কথা এবং কাজে। এই অহংকারের ব্যাপারে কুর’আন আল কারীমে আল্লাহ্‌ রাব্বুল ‘আলামীন বলেনঃ
“(অহংকারবশে) তুমি মানুষ হতে মুখ ফিরিয়ে নিয়ো না এবং পৃথিবীতেউদ্ধতভাবে বিচরণ করো না; কারণ আল্লাহ্‌ কোন উদ্ধত, অহংকারীকে পছন্দ করেন না।” [সূরা লোকমান, ৩১:১৮]
অহংকারীর ঠিকানা হল জাহান্নাম। আল্লাহ্‌ রাব্বুল ‘আলামীন বলেনঃ
“সুতরাং,তোমরা দ্বারগুলি দিয়ে জাহান্নামে প্রবেশ কর, সেখানে স্থায়ী হবার জন্যে; দেখ অহংকারীদের আবাসস্থল কত নিকৃষ্ট।”[সূরা নাহল; ১৬:২৯]

No comments:

Post a Comment