Sunday, October 22, 2017

প্রশ্নঃ মৃত্যুর পর রাসুল (ﷺ) কি কারো উপকার করার ক্ষমতা রাখেন???



Image may contain: text


প্রশ্নঃ মৃত্যুর পর রাসুল (ﷺ) কি কারো উপকার করার ক্ষমতা রাখেন???
উত্তরঃ রাসুল (ﷺ) কারো কোন উপকার করার ক্ষমতা রাখেন না। কোন মৃত মানুষ যদি কারো উপকার করতে পারে তাহলে সবার আগে তা আমাদের রাসুল (ﷺ)-এরই পারার কথা। অথচ বাস্তবতা সম্পূর্ণ বিপরীত। রাসুল (ﷺ)-এর মৃত্যুর পর মুসলমানগণ বহু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সম্মুখীন হয়েছিলেন। কিন্তু বিপদ থেকে উদ্ধারের জন্য কখনো কোন সাহাবীকে তাঁর কবরে গিয়ে তাঁর নিকট কোন অভিযোগ করতে বা সাহায্য করতে দেখা যায়নি। সাহাবীগন যেমন তাঁর কাছ থেকে সাহায্য চান নি, তেমনি তিনি নিজ থেকে আগ্রহী হয়েও তাঁদের কোন উপকার করেন নি।
তাঁর যদি কোন উপকার করার কোন সামর্থ্য থাকতো, তাহলে তাঁর মৃত্যুর পর খিলাফত নিয়ে আনসার ও মুহাজিরদের মধ্যে কোন বিতর্কের সৃষ্টি হত না। উমার (রাঃ)-কে একজিন অগ্নিপুজকের হাতে শহীদ হতে হত না।
রাসুল (ﷺ) যদি কবর থেকে দিক-নির্দেশনা দিতে পারতেন তাহলে হয়তো উসমান (রাঃ)-কে বিদ্রোহীদের হাতে নির্মমভাবে শাহাদাৎ বরন করতে হত না। উসমান (রাঃ)-এর হত্যার বিষয়কে কেন্দ্র করে আলী (রাঃ) ও মুয়াবিয়া (রাঃ) এর মধ্যে কোন যুদ্ধ-বিগ্রহ সংঘটিত হত না। ইয়াজিদের সৈনিক দ্বারা মদিনায় লুটতরাজ, গণহত্যা, ও শ্লীলতাহানির মতো জঘন্য কর্ম সংঘটিত হত না। সর্বোপরি কারবালা প্রান্তরে তাঁর দৌহিত্র হুসেইন (রাঃ)-কে নির্মমভাবে শাহাদাৎ বরন করতে হত না।
খুলাফায়ে রাশেদিন ও সাহাবিগণ এরকম বহু সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন, কিন্তু তাঁরা কখনই একাকি বা দলবদ্ধভাবে রাসুল (ﷺ)-এর কবরে গিয়ে তাঁর কাছে দু’আ বা পরামর্শ চান নি।
রাসুল (ﷺ) যদি করর থেকে দিক-নির্দেশনা দিতে পারতেন তাহলে তাঁর নামে জাল হাদীস বানানো সম্ভব হত না। মুহাদ্দিসগন সহজেই তাঁর কবরে গিয়ে কোনটি জাল হাদীস কার কোনটি সহীহ হাদিস জেনে নিতে পারতেন। ফলে মুসলিম উম্মাহর মাঝে তাহলে তাঁর নামে জাল হাদীস বানানো সম্ভব হত না। মুহাদ্দিসগন সহজেই তাঁর কবরে গিয়ে কোনটি জাল হাদীস, আর কোনটি সহীহ হাদিস জেনে নিতে পারতেন। ফলে মুসলিম উম্মাহর মাঝে তাঁর হাদিসকে কেন্দ্র করে কোন মতভেদের সৃষ্টি হত না। তাঁর হাদিসসমুহের মাঝে কোনটি নাসিখ, কোনটি মানসুখ সহজেই জেনে নেয়া যেত।
কিন্তু বাস্তবে আমরা দেখতে পাই, তিনি এসব ক্ষেত্রে কিছুই করতে পারেননি। এতে প্রমানিত হয় 
যে, এসব ক্ষেত্রে কাউকে কোন সাহায্য করার কোনই ক্ষমতা রাসুল (ﷺ)-এর নেই।
যাই হোক, যুক্তি আমাদের দলীল নয়, আমাদের দলীল কুরআন ও সহিহ হাদিস। মহান আল্লাহ্‌ তায়ালা বলেন ‘’বল, আল্লাহ্‌র ইচ্ছা ব্যাতিত আমার নিজেরও কোন ক্ষতি বা লাভ করার ক্ষমতা আমার নেই’’ ইউনুস ১০/৪৯
======================== 
এই যদি হয় দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ মানব ও আল্লাহ্‌র সচেয়ে প্রিয় বান্দার অবস্থা, তাহলে তাঁর উম্মাতের মাঝে এমন কে থাকতে পারেন, যিনি মৃত্যুর পর জীবিতদের সাহায্য করতে পারেন?
বস্তুত কোন মানুষ মরে যাওয়ার পর যদি তাঁর ব্যাপারে ধারনা করা হয় যে, তিনি এখনো মানুষের উপকার করতে পারেন, এবং এ ধারনার ভিত্তিতে যদি সে ব্যাক্তিকে আহ্বান করা হয়, তাহলে তা হবে প্রকাশ্য শিরক। এজাতীয় শিরকের ব্যাপারে আল্লাহ্‌ তায়ালা বলেন ‘’তোমরা যদি তাদেরকে (সাহায্যের জন্য) আহ্বান কর, তাহলে তাঁরা তোমাদের ডাক শুনবে না, আর শুনলেও তাঁরা তোমাদের ডাকের কোন জবাব দিবে না’’ ফাতির ৩৫/১৪
মহান আল্লাহ্‌ তায়ালা আরও বলেন ‘’তার চেয়ে অধিক গুমরাহ আর কে, যে আল্লাহ্‌র পরিবর্তে এমন কিছুকে ডাকে যা কিয়ামত পর্যন্ত তাঁকে সাড়া দিবে না, আর তাদের ডাকাডাকি সম্পর্কেও তাঁরা একদম বেখবর’’ আহকাফ ৪৬/৫
লেখাটা শেষ করছি হানাফী মাজহাবের প্রসিদ্ধ আলেম আল্লামা শামী (রহঃ)-এর বক্তব্য দিয়ে। তিনি বলেন ‘’যদি কেউ ধারনা করে যে, আল্লাহ্‌ ব্যাতিত মৃত মানুষেরা পার্থিব বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন, তাহলে তার এ ধারনা কুফুরের অন্তর্গত বলে বিবেচিত হবে’’ ইবন আবেদীন ২/১৭৫
মহান আল্লাহ্‌ আমাদের সবাইকে শুধুমাত্র তাঁকে ডাকার তৌফিক দান করুন। আমীন।

No comments:

Post a Comment