Sunday, October 22, 2017

সালাতুর রাসূল (সা:):



Image may contain: one or more people and people standing


সালাতুর রাসূল (সা:): (পর্ব-১)
--------------------------

وَأَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِىْ
‘আর তুমি সালাত কায়েম কর আমাকে স্মরণ করার জন্য’ (সূরা ত্বোয়া-হা ২০/১৪)

সম্মানিত মুসলিম ভাই ও বোনেরা, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহে ওয়া বারাকাতুহু।
মৃত্যুর পরে সর্বপ্রথম আল্লাহ তাআলা সালাতের হিসেব নিবেন। আর সেই সালাত আদায়ের নিয়মের মধ্যেই যদি আমাদের গলদ থেকে যায় তবে আমরা আল্লাহর কাছে কি হিসেব দিব? রাসূলুল্লাহ্(সা) বলেছেনঃ
“তোমরা আমাকে যেভাবে সালাত (নামায) আদায় করতে দেখেছ সেভাবে সালাত (নামায) আদায় করবে” [বুখারী: ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ;৬০৩, বুখারী হা/৬৩১, ৬০০৮, ৭২৪৬; মিশকাত হা/৬৮৩, ‘সালাত’ অধ্যায়-৪, অনুচ্ছেদ-৬]
রাসুলুল্লাহ (সা:) কখনো কি বলেছেন যে পৃথিবীর এক এক অঞ্চলের মানুষ এক এক নিয়মে নামাজ পড়বে। পৃথিবীর মধ্য প্রাচ্যের মুসলিমরা এক নিয়মে নামাজ পড়বে, আবার এশিয়া মহাদেশের মুসলিমরা আরেক নিয়মে নামাজ পড়বে। আবার ইউরোপ এর মুসলিমরা এই দুই নিয়ম বাদ দিয়ে অন্য আরেকটি নিয়ম এ নামাজ পড়বে। নাকি কখনও তিনি বলেছেন যে, হানাফি মাজহাব এর মুসলিমরা এক নিয়মে নামাজ পড়বে আবার শাফিই মাজহাবের মুসলিমরা আরেক নিয়মে নামাজ পড়বে। এমন কথা তিনি বলতেই পারেন না। কারণ উপরোক্ত হাদিসে আমরা দেখছি রাসুলুল্লাহ (সা:) সবাইকে অর্থাৎ সারা বিশ্বের মুসলিমদের তিনি যেভাবে নামাজ পরতেন সেভাবে অর্থাৎ এক নিয়মে নামাজ পড়ার কথা বলছেন।
এমন কি সালাত আদায় করার নিয়মে নারী ও পুরুষের ভিন্ন পদ্ধতি রাসূলুল্লাহ্ (সা:) দিয়ে জাননি, নারী ও পুরুষের ভিন্ন পদ্ধতিতে সলাত আদায় করতে হবে এই বিষয়ে কোন সহিহ হাদিস নেই।আমাদের এই উপমহাদেশের মুসলিমদের মাঝে নারী-পুরুষের যে ভিন্ন ভিন্ন সালাত আদায়ের পদ্ধতি (পুরুষের নাভির নিচে হাত বাঁধা এবং মহিলাদের বুকে হাত বাঁধা) চালু রয়েছে তা আমাদের তৈরী করা। এই ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি রাসুলুল্লাহ (সা:) এর সময়ে বা তাঁর সাহাবা-তাবেয়ীন-তাবে তাবেয়ীন দের সময়ে ছিলনা।
আমাদের আল্লাহ এক, রাসুলুল্লাহ (সা:) এক, কোরআন একটি। সুতরাং সারা বিশ্বের মুসলিমদের ইবাদত বন্দেগী এবং সকল আমল ও হবে একটাই নিয়মে। এই নিয়মে কোনো ভেদাভেদ অথবা পার্থক্য থাকবেনা। এটাইতো স্বাভাবিক। কিন্তু আজকে আমাদের পৃথিবীর মুসলিমদের নামাজ, ইবাদত, বন্দেগী, আমল এর মধ্যে এত এত পার্থক্য আসলো কোত্থেকে? এর কারণ হচ্ছে শুধুমাত্র একটি। আমরা রাসুলুল্লাহ (সা:) এর সহিহ হাদিস থেকে আজকে অনেক অনেক দুরে সরে এসেছি। এতটাই দুরে সরে এসেছি যে, সহিহ হাদিস অনুযায়ী নামাজ, ইবাদত, বন্দেগী, আমল আমরা সম্পূর্ণ ভুলে গেছি এবং আমাদের কাছে অপরিচিত হয়ে গেছে।
আমরা বিভিন্ন মাজহাব, ঈমাম, হুজুর, পীর, মৌলভি সাহেবের দোহাই দিয়ে নামাজের বিভিন্ন নতুন নতুন নিয়ম তৈরী করেছি যা রাসুলুল্লাহ (সা:) নিজে করেন নি, করতে বলেন নি এবং সাহাবায়ে কেরামগণ, তাবেয়ীন গণ, তবে তাবেয়ীনগ গণ কেউ করেন নি। তাহলে কোথায় পেলাম আমরা এইসব নিয়ম ??? আমাদের মধ্যে অনেকেই সহিহ হাদিস জানার পরেও তাদের বাপ-দাদা-ঈমাম সাহেব-মৌলভি সাহেব দের উদাহরণ দিয়ে বলে, যে এত এত মানুষ কি ভুল নিয়মে এত দিন নামাজ পড়ে আসছে? এত বড় ঈমাম অথবা এত বড় হুজুর যিনি সারা জীবন কোরআন-হাদিস পড়েছেন উনি কি ভুল করছেন? ঈমাম সাহেম অথবা হুজুর-মৌলভি সাহেব তো মানুষ। আর মানুষ মাত্রই তো ভুল হতে পারে। সুতরাং ওনারা যে ভুল করছেন না সেই গেরান্টি আপনাকে কে দিল? আর বেশির ভাগ মানুষ যদি কোনো কাজ দীঘদিন ধরে করে থাকে তবে তাও যে সঠিক হতেই হবে সেই কথাও আপনাকে কে বললো?
যদি বেশির ভাগ মানুষের কাজ সঠিক হবে, তবে আজকে মুসলিমরা সহ মনে হয় পৃথিবীর ৯০% থেকে ৯৫% মানুষ সুদের সাথে জড়িত। হয় তারা সুদ দেয়, নয়তো সুদ নেয়, আর না হয় সুদের হিসাব করে অথবা সুদের সাক্ষী থাকে। তাই বলে কি সুদের আদান প্রদান হালাল অথবা জায়েজ হয়ে যাবে, যেটা আল্লাহ তাআলা কোরআন শরীফের মাধ্যমে হারাম ঘোষণা করেছেন?
অধিকাংশ মানুষের দোহাই দেয়া সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কোরআনে কি বলেছেন দেখুন:
“যদি আপনি এই পৃথিবীর সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকের অনুসরণ করেন, তাহলে তারা আপনাকে আল্লাহর পথ থেকে বিভ্রান্ত করে দেবে। তারা শুধু অলীক কল্পনার অনুসরণ করে এবং সম্পূর্ণ অনুমান ভিত্তিক কথাবার্তা বলে থাকে।” (সুরা আল-আনআম ৬:১১৬)

No comments:

Post a Comment