Sunday, October 22, 2017

মুসলিম হয়েও কেন ইসলাম বিদ্বেষী?



Image may contain: text


মুসলিম হয়েও কেন ইসলাম বিদ্বেষী???
-------------------------------

লক্ষীপুর পৌরসভার মাননীয় মেয়র মহোদয় কর্তৃক নামাজের সময় দোকানপাট বন্ধ রাখার ঘোষণার সংবাদ আমি যখন ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রূপে ও ওয়ালে শেয়ার করি তখন বেশ কিছু নামধারী মুসলিম কিন্তু ইসলাম বিদ্বেষী মন্তব্য করে, "আপনারা এখন জোর করে মানুষকে নামাজ পড়াবেন নাকি? ইবাদাত কি জোর করে করার জিনিষ? ধর্ম পালন যার যার বিশ্বাসের ব্যাপার, আপনারা কি জোর করে ধর্ম পালন করাবেন???" ইত্যাদি...ইত্যাদি...
তাদের উত্তরে আমি বলি, "৫ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ, আপনাকে পড়তেই হবে। আপনারা বলুন, এখানে দোকান বন্ধ করে কাদেরকে নামাজ পড়তে বলা হয়েছে? হিন্দুকে? বৌদ্ধকে? খৃষ্ঠানকে? না। দোকান বন্ধ করে নামাজ এর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে শুধুমাত্র মুসলিমদের। এখন কোনো মুসলিম যদি মনে করে আল্লাহর দেয়া ফরজ বিধান আমি মানব কি মানব না, তা আমার ব্যাপার, তবে সে কিন্তু আর মুসলিম থাকেনা। কারণ মুসলিম মানেই আল্লাহর দাসত্বে নিজেকে সোপর্দ করে ইসলামের সকল বিধি বিধান মেনে নেয়া। কেউ যদি মনে করে ইসলামের সকল বিধি বিধান আমি মানতে বাধ্য না, তবে সে চাইলে নিজের ধর্ম চেঞ্জ করে নিতে পারে অথবা নিজেকে নাস্তিক ও ঘোষণা করে দিতে পারে। তখন আর তাকে ইসলামি হুকুম আহকাম পালনের জন্য বলা হবেনা। কারণ মুসলিম ছাড়া ধর্মীয় ব্যাপারে কখনোই কাউকে জবরদস্তি করার অনুমতি ইসলামে দেয়া হয় নি।"
আমার এই বক্তব্যের পরেও অনেকে কটূক্তি করলো, আজেবাজে কথা বললো। মজার ব্যাপার এরা সবাই জন্মসূত্রে মুসলিম। মুসলিম নামধারী এত এত পরিমান মানুষ আমাদের সমাজে বর্তমানে ইসলাম বিদ্বেষী হয়ে যাচ্ছে যে ভাবলেই খুব অবাক লাগে, ভয় ও লাগে। বিধর্মী কাফের ইসলামকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করবে, কটূক্তি করবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মুসলিম পরিবারে জন্ম নিয়ে, মুসলিম বাবা মায়ের সন্তান হয়ে, মুসলিম নাম ধারণ করে, মুসলিম সমাজে বসবাস করে কেন এসকল মানুষ ইসলামকে এত ঘৃণা করে???
কিছু কারণ তুলে ধরার চেষ্টা করলাম:
১) শয়তানের চক্রান্ত অনুযায়ী ইহুদী-কাফেরদের জীবন যাপনকে বেশি পছন্দ করা।
২) ইসলামী জ্ঞান না থাকায় ইসলামকে ১৪০০ বছরের পুরনো সেকেলে ধর্ম মনে করা।
৩) কোরআনের জ্ঞান না থাকায় ইসলামকে অবৈজ্ঞানিক, অযৌক্তিক ধর্ম মনে করা।
৪) কোরআন এবং সহীহ হাদীসের জ্ঞান না থাকায় ইসলামকে অপ্রয়োজনীয় এবং অসম্পূর্ণ ধর্ম মনে করা।
৫) ইসলামী জ্ঞান না থাকায় মানব জীবনের জন্য উপকারী এবং প্রয়োজনীয় সকল ইসলামী বিধি বিধানকে অপ্রয়োজনীয় ও অহেতুক মনে করা।
৬) ইসলামের স্বর্ণ যুগের ইতিহাস, নবী-রাসূল এবং সাহাবী আজমাইনগনের গৌরবোজ্জ্বল জীবন ইতিহাস জানা না থাকায় ইসলামকে তুচ্ছ মনে করা।
৭) ইসলামিক চিন্তাবিদ, ইসলামিক স্কলারদের সম্পর্কে কোনো ধারণা না থাকায় আধুনিক সভ্যতা, জ্ঞান, বিজ্ঞান সহ সকল উন্নয়ন বিধর্মীদের হাত ধরে হয়েছে মনে করা (যদিও আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখার উন্নয়নে মুসলিমদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি)।
৮) ইহুদী-কাফেরদের চক্রান্তে মুসলিমদের মধ্যে এত এত দলাদলি এবং ভেদাভেদ দেখে ইসলাম সম্পর্কে ভুল ধারণা তৈরি হওয়া।
৯) এক এক দলের এক এক রকম ঈমান-আকীদাহ হওয়াতে সাধারণ মুসলিমদের মাঝে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়া।
১০) ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত বিশেষ করে মাদ্রাসা পড়ুয়ার অধিকাংশই বিজ্ঞান, ইংরেজী সহ আধুনিক শিক্ষা থেকে দূরে থাকায় ইসলামী জ্ঞানকে ছোট করে দেখা।
১১) উপমহাদেশের অধিকাংশ আলেম, ওলামা, ঈমাম, মৌলানা, হুজুর, মৌলভী শিরক-বিদআত-বানোয়াট গল্প-কাহিনী-পীর-মুরিদি তে লিপ্ত থাকায় ইসলামকে আদি ভৌতিক, কাল্পনিক, রূপকথার গল্প মনে করা।
১২) ইসলামকে ঘৃনা করার আরো কিছু কারণ হচ্ছে, ইসলামী বিধি বিধান মেনে চললে, ইসলামী সমাজ কায়েম হলে নিন্মোক্ত কাজ গুলো করা যাবেনা-
-যা ইচ্ছা তা করা যাবেনা।
-মদ গাঁজা সহ নেশাদ্রব্য ব্যবহার করা যাবেনা।
-সুদ ঘুষ খাওয়া যাবেনা।
-নারী পুরুষের অবাধ মেলামেশা, যৌনাচার, ব্যভিচার করা যাবেনা।
-যাকাত না দিয়ে সম্পদের পাহাড় বানানো যাবেনা।
-গরীব অসহয়কে নির্যাতন ও শোষণের মাধ্যমে দমিয়ে রাখা যাবেনা।
-মানুষের তৈরি আইন দিয়ে অন্যায়ের বিচার ব্যাহত করা যাবেনা। আইনকে নিজের সুবিধা মতো ব্যবহার করা যাবেনা।
-ক্ষমতা এবং সম্পদের জন্য যা ইচ্ছা তা করা যাবেনা।
-জীবনকে শুধু ভোগ বিলাসের উপকরণ মনে করা যাবেনা।
-অন্যের হক নষ্ট করা, আমানতের খিয়ানত করা যাবেনা।

তাই কোরআন এবং সহীহ হাদিসের জ্ঞান অর্জনের বিকল্প নেই।

No comments:

Post a Comment