সালাতুর রাসূল (সা:): (পর্ব-২)
----------------------------------------
বাপ-দাদাদের অন্ধ অনুসরণ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কোরআনে কি বলেছেন দেখুন:
“আর যখন তাদেরকে বলা হয় যে, সে হুকুমের আনুগত্য কর যা আল্লাহ নাযিল করেছেন, তখন তারা বলেঃ কখনো না, আমরা তো সে বিষয়েরই অনুসরণ করব, যাতে আমরা আমাদের বাপ-দাদাদেরকে দেখেছি। যদিও তাদের বাপ-দাদারা কিছুই জানত না, আর সরল সঠিক পথেও ছিলনা। বস্তুতঃ এসব সত্য প্রত্যাখ্যানকারীদের উদাহারণ এমন, যেন কেউ এমন জীবকে আহবান করছে, যা কিছুই শোনে না, হাঁক-ডাক আর চিৎকার ছাড়া। এরা বধির, মুর্খ এবং অন্ধ। সুতারাং এরা কিছুই বোঝে না” (সুরা আল-বাকারা ২:১৭০-১৭১)
আজকে দেখা যায় যারাই সহিহ হাদিসের অনুকরণ এবং অনুসরণে নামাজ আদায় করে, তাদেরকে বাঁকা চোখে দেখা হয়। তাদের সম্পর্কে কটু কথা বলা হয়। এমনকি অনেক জায়গায় তাদেরকে সহিহ নিয়মে নামাজ পড়তে পর্যন্ত বাধা দেয়া হয়। অনেকের কাছ থেকে শুনি বিভিন্ন এলাকার মসজিদে তাদেরকে ঢুকতে দেয়া হয়না, মসজিদ থেকে বের করে দেয়া হয় অথবা মসজিদে ঢুকলে মাজহাবী দের মত করে জাল এবং জয়ীফ হাদিসের অনুকরণে রাসুলুল্লাহ (সা:) এর দেখানো পদ্ধতি বাদ দিয়ে সহিহ নিয়মের নামাজ বাদ দিয়ে বিদআতী পদ্ধতিতে নামাজ পড়তে বাধ্য করা হয়। এ কেমন রীতি ???
আমরা নিজেরাও সহিহ হাদিসের অনুসরণ করছিনা, সহিহ হাদিস গোপন করে মাযহাব এর দোহাই দিয়ে জাল হাদিসকে পুজি করে নিজে বিদআতী তরিকায় নামাজ আদায় করছি, আবার অন্যকেও সহিহ তরিকায় নামাজ আদায়ে বাধা দিচ্ছি। জানিনা এই ধরনের আলেম-ওলামারা কেন জেনে বুঝে এই কাজ করছেন। রোজ হাশরের ময়দানে তারা আল্লাহ কে কি জবাব দিবেন তারাই ভালো জানেন।
অতএব, সব কথার শেষ কথা হচ্ছে এই যে, দ্বীন ইসলামের ক্ষেত্রে এবং ইবাদত বন্দেগীর ক্ষেত্রে অধিক সওয়াবের আশায় ও এমন কিছু করা যাবেনা যা রাসুলুল্লাহ (সা:) করেন নি এবং করতে বলেন নি। কারণ তিনি আমাদের কাছে দ্বীনের সকল নিয়ম-কানুন-শর্ত-পদ্ধতি, ইবাদত-আমলের রীতি-নীতি সব কিছু বলে গিয়েছেন। এমন কিছুই বাকি থাকেনি যা তিনি আমাদের কে বলেন নি অথবা বলতে ভুলে গেছেন (নাউজুবিল্লাহ) ।
আর তাইতো আল্লাহ তাআলা কোরআন এ বলেন:
"আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্নাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম। " (সূরা মায়েদাহ- আয়াত ৩)
তাহলে দ্বীন যেহেতু পরিপূর্ণ হয়ে গেছে রাসুলুল্লাহ (সা:) এর জীবদ্দশায় তাহলে দ্বীনের মাঝে নতুন নতুন সংযোজন আসলো কিভাবে? আল্লাহ এবং তার রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা আমাদের জন্য নির্ধারন করে দিয়েছেন, পৃথিবীতে কোন মানুষের সেই ক্ষমতা নেই তা থেকে বাড়াবার বা কমাবার। যারা এগুলো করবে তারা বিদাত করবে। ইহুদী-নাসারারা তাদের নবী মারা যাবার পর তাদের ধর্মের মধ্যে সংযোজন -বিয়োজন করে পথভ্রষ্ট হয়েছে। এইজন্যই মুসলিমদের দ্বীনের মধ্যে কোন কিছু বাড়ানো বা কমানো নিষিদ্ধ।
আবার রাসুলুল্লাহ (সা:) এর পরে নিশ্চই কারো উপরে নতুন করে ওহি অথবা ইবাদত-আমল এর কোনো পদ্ধতি নতুন করে নাজিল হয়নি। তাহলে সহিহ হাদিসের বাইরে আমরা নিত্য নতুন ইবাদত-আমল এবং এর পদ্ধতি পাই কোথায়??? আমরা এক বা দুই শতাংশ জমি কিনতে গিয়ে জমির বিগত ৫০ বছরের দলিল বের করে ফেলি, দেখি জমির দলিল ঠিক আছে কিনা। জমির ওয়ারিশ, উত্তরাধিকারী কে কে বা কয়জন ছিল/আছে। আগে আরো কয়বার জমিটি বিক্রয় হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি। অথচ সর্বনিন্ম জান্নাতি পাবে ১০টি পৃথিবীর সমান জান্নাত। এতবড় জান্নাতের জন্য যে আমল/ইবাদত/বন্দেগী করছি সেটা ভুল না সঠিক করছি, তার দলিল দেখার অথবা যাচাই-বাছাই এর প্রয়োজন ও মনে করি না।
No comments:
Post a Comment