Monday, November 13, 2017

মক্কার কাফেররা একবার আহলে কিতাবদের পরামর্শক্রমে রাসুল (صلى الله عليه و سلم)কে অপদস্ত করার জন্য প্রশ্ন করেঃ



Image may contain: text


মক্কার কাফেররা একবার আহলে কিতাবদের পরামর্শক্রমে রাসুল (صلى الله عليه و سلم)কে অপদস্ত করার জন্য প্রশ্ন করেঃ
১. আসহাবে কাহফ কারা ছিলেন?
২. খিযিরের ঘটনাটির তাৎপর্য কি?
৩. যুলকারনাইন কে ছিলেন?

তাদের প্রশ্ন তিনটি শুনে রাসূল (সাঃ) বললেন,- 'আগামীকাল আমি তোমাদেরকে প্রশ্নগুলোর উত্তর দিব।'
উত্তরটা দিতে গিয়ে রাসূল (সাঃ) 'ইনশাআল্লাহ্' শব্দটা বলতে ভুলে গেলেন। কাফেররাও আগামীকাল উত্তর পাওয়ার ওয়াদা নিয়ে চলে গেলো।
কিন্তু, ওয়াদা করার সময় 'ইনশাআল্লাহ্' না বলার কারণে সেদিন থেকে পরের পনেরো দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরও এ ব্যাপারে (প্রশ্ন তিনটির ব্যাপারে) কোন ওহীই আসলো না
এবং জীবরাঈল (আঃ) ও আগমন করেননি।

মুশরিকরা মনে করলো রাসূল (সাঃ) হয়তো এসবের উত্তর জানে না। এজন্যই বিলম্ব করছে। 
ওইদিকে রাসূল (সাঃ) ও চিন্তায় পড়ে গেলেন। কী হলো? এই প্রশ্নগুলো এমন যে, এগুলোর উত্তর আল্লাহ তা'লা ছাড়া আর কেউই জানেন না। তিনি ওহী না পাঠানো অবধি রাসূল (সাঃ) ও কোন উত্তর দিতে পারছেন না। অবশেষে ঠিক পনেরো দিন পরেই এসব ব্যাপারে ওহী আসলো। আল্লাহ তা'লা আসহাবে কাহাফ, যুলকারনাঈন, রূহ সহ বিভিন্ন রহস্যময় ব্যাপারে রাসূল (সাঃ) কে জানিয়ে দিলেন। যে সূরায় এসব নিয়ে বলা হয়েছে সূরাটির নাম- সূরা আল কাহাফ।

চিন্তা করে দেখুন। তিনি ছিলেন আল্লাহর রাসূল। শুধুমাত্র ওয়াদা দেওয়ার ক্ষেত্রে 'ইনশাআল্লাহ' বলতে ভুলে যাওয়ায় আল্লাহ তা'লা পনেরো দিন ওহী পাঠানো বন্ধ করে দিলেন। মুশরিকদের সাময়িক একটা বিজয়োল্লাসের সুযোগ করে দিলেন। কেনো এমনটি হলো?
কেবলমাত্র ওয়াদা দেওয়ার ক্ষেত্রে 'ইনশাআল্লাহ' বলতে ভুলে যাওয়ায়।

মূলত এই ‘ইনশা আল্লাহ্‌’ বলার অর্থ হচ্চে আল্লাহ্‌র কাছে নিজেকে সঁপে দেওয়া। আমার কাজের দায়ভার আল্লাহ্‌র উপর ছেড়ে দেওয়া এবং আল্লাহ্‌র করুণা প্রত্যাশা করা।
‘কখনোই তুমি কোন বিষয়ে বল নাঃ আমি এটা আগামীদিন করব। বরং বলঃ ইনশা আল্লাহ্‌(যদি আল্লাহ্‌ চায়)।’(কাহফ ১৮:২৩-২৪)
একবার এক ব্যাক্তি আমাকে বলেন, ‘আগামিকাল আপনার সাথে দেখা করব।’ আমি একটু হেসে বললাম, ‘ভাই বলতে হবেঃ ইনশা আল্লাহ্‌, আগামিকাল আপনার সাথে দেখা করব।’ আমার কথা শুনে সে অনেকটা কৌতুকবোধ করল বলে মনে হল।
আমাদের মাঝে একটা অভ্যাস প্রচলিত আছে, সেটা হল ভবিষ্যতের কোন কাজের ব্যাপারে খুব কনফিডেন্স থাকি। একবার ভাবিও না এটা একমাত্র আল্লাহ্‌র দয়া ছাড়া সম্ভব না। সত্যি কথা বলতে, এটা মূলত স্মার্টনেসের পরিচয় বহন করে। স্মার্টরাই তো যেকোনো কাজের ব্যাপারে কনফিডেন্স!!
আচ্ছা, একজন মুসলিমের জন্য 'ইনশাআল্লাহ'র চেয়ে বড় প্রমিস আর কী হতে পারে?
প্রাত্যহিক জীবনের প্রতিটি বাক্যে, প্রতিটি কর্মের জন্য 'ইনশাআল্লাহ' 'আলহামদুলিল্লাহ্‌' 'সুবাহানআল্লাহ' বলাটা যে কতোটা তৃপ্তির, কতোটা প্রাপ্তির তা কেবল একজন প্রকৃত মুসলিম যে নিজের জীবনে দ্বীনকে প্রতিফলিত করতে পেরেছে, কেবল সে-ই অনুধাবন করতে পারে।
প্রতিদিন কতো রকম ওয়াদা আমরা করি। এই ওয়াদাগুলো করার সময় আমরা কী 'ইনশাআল্লাহ' বলি? 
আসুন, ওয়াদা করার ক্ষেত্রে আমরা 'ইনশাআল্লাহ' বলি। বলার অভ্যাস না থাকলে প্র্যাকটিস করি।
ان شاء الله
আল্লাহ্‌ আমাদের সকলকে তাঁর উপর নির্ভরশীল হতে সকল প্রকার স্মার্টনেস বিসর্জন দেবার তৌফিক দিন।

No comments:

Post a Comment