★ কোরআন হাদীস খুবি তাকীদ এসেছে পরিচয় হবে শুধূই মুসলিম। তবে কেন সাইনবোর্ড লাগায়, মাযহাবের, আহলে হাদীস, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত, পির-মুরিদী, সালাফী, সুন্নী, ব্রেলবী, দেওবন্দী অভাব নাই..???
★ সাহবী, তাবেঈন- তাবে তাবেঈন, ইমামগণ তারা কোরআন - হাদীস মেনে কোন মাযহাব মেনেছেন বা পরিচয়ে কি বলোছেন...????
মুসলমানদের একটিই পরিচয় ‘মুসলিম’ এবং শুধুই ‘মুসলিম’।
★ কুরআন ও সুন্নাহের আলোকে তোলে ধরার চেস্টা করেছি ইনশাআল্লাহ
★ অনুগ্রহপূর্বক ঢালাওভাবে দলীলবিহীন মনগড়া বক্তব্য এবং
মন্তব্য পরিহার করুন। ঢালাও মন্তব্য
মূলত: মূর্খতারই বহি:প্রকাশ
★ আল্লাহ কুরআন এ বলেছেন,
তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন মুসলিম? (সূরা ফুসিলাত, আয়াত-৩৩)
** “হে ঈমানদারগণ!
তোমরা আল্লাহ্কে ভয় কর
যেভাবে তাঁহাকে ভয় করা উচিত
এবং তোমরা মুসলিম না হইয়া কোন
অবস্থায় মৃত্যুবরণ করিও না”। ___
সূরা আলে ইমরান ৩:১০২।
** “এবং ইব্রাহীম ও ইয়া’কূব এই
সম্বন্ধে তাহাদের পুত্রগণকে নির্দেশ
দিয়া বলিয়াছিল, ‘হে পুত্রগণ! আল্লাহ্ই
তোমাদের জন্য এই দীনকে মনোনীত
করিয়াছেন। সুতরাং মুসলিম
না হইয়া তোমরা কখনও মৃত্যুবরণ করিও
না’। ___ সূরা বাকারা ২:১৩২।
** “যখন ঈসা তাহাদের অবিশ্বাস
উপলব্ধি করিল তখন সে বলিল, আল্লাহ্র
পথে কাহারা আমার সাহায্যকারী?
হাওয়ারীগণ বলিল, আমরাই আল্লাহ্র
পথে সাহায্যকারী।
আমরা আল্লাহে ঈমান আনিয়াছি।
আমরা মুসলিম, তুমি ইহার সাক্ষী থাক”। _
__ সূরা আলে ইমরান ৩:৫২।
** “তুমি বল, ‘হে কিতাবীগণ! আস
সে কথায় যাহা আমাদের ও তোমাদের
মধ্যে এক; যেন আমরা আল্লাহ্ ব্যতীত
কাহারও ইবাদত না করি, কোন কিছুকেই
তাঁহার শরীক না করি এবং আমাদের কেহ
কাহাকেও আল্লাহ্ ব্যতীত রব
হিসাবে গ্রহন না করি’। যদি তাহারা মুখ
ফিরাইয়া লয় তবে বল,
‘তোমরা সাক্ষী থাক, অবশ্যই
আমরা মুসলিম’। ___ সূরা আলে ইমরান
৩:৬৪।
** “বল, ‘আমার সালাত, আমার কুরবানী,
আমার জীবন ও আমার মরণ জগতসমূহের
প্রতিপালক আল্লাহ্রই উদ্দেশ্যে’। তাঁহার
কোন শরীক নাই এবং আমি ইহারই জন্য
আদিষ্ট হইয়াছি এবং আমি প্রথম মুসলিম”।
___ সূরা আনাম ৬:১৬২-১৬৩।
** “তুমি তো আমাদিগকে শাস্তি দিতেছ
শুধু এইজন্য যে, আমরা আমাদের
প্রতিপালকের নির্দেশে ঈমান
আনিয়াছি যখন উহা আমাদের নিকট
আসিয়াছে। হে আমাদের প্রতিপালক!
আমাদিগকে ধৈর্য্য দান কর
এবং মুসলমানরূপে আমাদের মৃত্যু দাও”। ___
সূরা আ’রাফ ৭:১২৬।
** “হে আমার প্রতিপালক!
তুমি আমাকে রাজ্য দান করিয়াছ
এবং স্বপ্নের ব্যাখ্যা শিক্ষা দিয়াছ।
হে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর স্রষ্টা! তুমিই
ইহলোক ও পরলোকে আমার অভিভাবক।
তুমি আমাকে মুসলিম হিসাবে মৃত্যু দাও
এবং আমাকে সৎকর্মপরায়ণদের আর্ন্তভুক্ত
কর”। ___ সূরা ইউসুফ ১২:১০১।
** “এবং জিহাদ কর আল্লাহ্র
পথে যেভাবে জিহাদ করা উচিত।
তিনি তোমাদিগকে মনোনিত করিয়াছেন।
তিনি দীনের ব্যাপারে তোমাদের উপর
কোন কঠোরতা আরোপ করেন নাই।
ইহা তোমাদের পিতা ইব্রাহীমের
মিল্লাত। তিনি(আল্লাহ্)
পূর্বে তোমাদের নামকরণ করিয়াছেন
‘মুসলিম’ এবং এই কিতাবেও”। ___
সূরা হাজ্জ ২২:৭৮।
** “এবং বল, আমাদের প্রতি ও তোমাদের
প্রতি যাহা অবতীর্ণ হউয়াছে,
তাহাতে আমরা বিশ্বাস
করি এবং আমাদের ইলাহ্ ও তোমাদের
ইলাহ্ তো একই এবং আমরা মুসলিম”। ___
সূরা আনকাবূত ২৯:৪৬।
** “আর তার চাইতে কার কথা উত্তম
যে আল্লাহ্র প্রতি মানুষকে আহ্বান করে,
সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন
মুসলিম”। ___ হা মীম আস্-সাজদা ৪১:৩৩।
উপরের আয়াতসমূহের দ্বারা কি এটাই
দ্ব্যার্থহীনভাবে প্রমাণিত নয়,
যে ইসলামের অনুসারীদের একটিই পরিচয়
সেটি হচ্ছে ‘মুসলিম’?
★ সূরা হাজ্জ-এর ৭৮নং আয়াত
অনুযায়ী আল্লাহ্ সুবহানাহু
ওয়া তাআ’লা আমাদেরকে নামকারণ
করছেন মুসলিম হিসাবে।
সূরা আলে ইমরানের ১০২ নং আয়াত
অনুযায়ী আল্লাহ্তাআ’লা আমাদের
পরিপূর্ণ মুসলিম হয়ে মৃত্যুবরণ
করতে বলেছেন।
★ সূরা আলে ইমরানের ৬৪, সূরা আনকাবূতের
৪৬ আয়াতের মাধ্যমে আমাদেরকে মুসলিম
বলে পরিচয় দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
★ আল্লাহ্ সুবহানাহু
ওয়া তাআ’লা পূর্বে প্রেরিত
নবী রাসূলগনের
উদ্ধৃতি দিয়ে দেখিয়েছেন, তাঁর
নবী রাসূলগণ নিজেরা মুসলিম
হিসাবে মৃত্যু বরণ করার আকাংখা প্রকাশ
করেছেন এবং তাদের সন্তানদেরকেও
মুসলিম হিসাবে মৃত্যুবরণ করার জন্য
নসিহত করেছেন। যেমন সূরা বাকার ১৩২,
সূরা ইউসুফ ১০১ নং আয়াত।
এমনকি ফিরআউনের দরবারে আগত
জাদুকরেরাও আল্লাহ্তাআ’লার
কাছে মুসলিম হিসাবে মৃত্যুবরণ করার জন্য
ফরিয়াদ করিয়াছিলেন। (সূরা আ’রাফ ১২৬)
এতগুলি উদাহরণের
মাধ্যমে আল্লাহ্তাআ’লা কি আমাদের
মুসলিম হওয়াকেই গুরুত্ব আরোপ করেননি?
কিন্তু না, আমাদের শুধু মুসলিম পরিচয়ই
যথেষ্ট নয়, কারন তার সাথে আমরা বিভক্তির সাইনবোর্ড লাগিয়েছি গলায়।
আর একে অপরকে বলি আপনি কোন দলের..???
★★★ বিভিন্ন দলে বিভক্ত হতে আল্লাহর নিষেধ:-
★ “নিশ্চয় যারা স্বীয় ধর্মকে খন্ড-বিখন্ড করেছে এবং অনেক দল হয়ে গেছে, তাদের সাথে আপনার কোন সম্পর্ক নেই। তাদের ব্যাপার আল্লাহ তা`আয়ালার নিকট সমর্পিত। অতঃপর তিনি(আল্লাহ) বলে দেবেন যা কিছু তারা করে থাকে।” (সূরা-আন’আম, আয়াত সংখ্যা-১৫৯)
★ “সবাই তাঁর অভিমুখী হও এবং ভয় কর, নামায কায়েম কর এবং মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না। যারা তাদের ধর্মে বিভেদ সৃষ্টি করেছে এবং অনেক দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। প্রত্যেক দলই নিজ নিজ মতবাদ নিয়ে উল্লসিত।”
** “তোমরা সকলে আল্লাহ্র রজ্জু
দৃঢভাবে ধারণ কর এবং পরষ্পর বিচ্ছিন্ন
হইও না”। ___ সূরা আলে ইমরান ৩:১০৩।
** “তোমরা তাহাদের মত হইও
না যাহারা তাহাদের নিকট স্পষ্ট
নিদর্শন আসিবার পর বিচ্ছিন্ন হইয়াছে ও
নিজেদের মধ্যে মতভেদ সৃষ্টি করিয়াছে।
তাহাদের জন্য মহাশাস্তি রহিয়াছে”। __
_ সূরা আলে ইমরান ৩:১০৫।
★ রাসূল(সাঃ) বলেছেন- যদি কেউ মুসলিম উম্মাহর একতা নষ্ট করতে চায় তাকে তরবারী দিয়ে আঘাত কর সে যেই হোক না কেন। যদি তাতে না থামে তাহলে মেরে ফেল (সহিহ মুসলিম, ৪৫৬৫ নং হাদীস)
★ রাসূল(সাঃ) এর এমন কঠোর কথার পর কেউ কি দল তৈরী করবেন ???
যেখানে আল্লাহ্তাআ’লা এই বিচ্ছিন্ন
হওয়া এবং মতভেদ করাকে শাস্তিযোগ্য
অপরাধ হিসাবে গণ্য করেছেন
সেখানে আমাদের এত ধৃষ্টতা দেখানোর
সাহস হয় কোথা থেকে?
★
গ্রন্থঃ মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
অধ্যায়ঃ পর্ব-১ঃ ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان)
হাদিস নাম্বার: ১৮৬
মালিক ইবনু আনাস (রাঃ) (রহঃ) হতে মুরসালরূপে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি তোমাদের মধ্যে দু’টি জিনিস রেখে যাচ্ছি। যতক্ষণ তোমরা সে দু’টি জিনিস আঁকড়ে ধরে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত পথভ্রষ্ট হবে না- আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রসূলের হাদীস। [ইমাম মালিক মুয়াত্ত্বায় বর্ণনা করেছেন।][1]
হাদিসের মানঃ হাসান
★ আমরা কেন আজকে, আহলে হাদীস সালাফী, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত, মাযহাবী, পীর-মুরিদী তরীকার অভাব নাই...
আমরা নিজেরা কেন বিভক্ত।
অনুসরন করতে হবে সত্য সহ উলিল আমর, যরা জানেন এবং সৎ আমলকারী তাদের সহুবত নিব কিন্তু তারা কোন বুল করলেও তাকে ফিকস্ড মানব কেন....???
যার মাজযহাব মতামত আল্লাহর কোরআন ও রাসূল ( সাঃ) এর সুন্নাহর সাথে মিলবে তাঁর মাযহাবি হক্ব।
এখন যদি কোন ইমাম ভুল করেন তখন কি আমি তার উপরি আমল করব...??
★ রাসূল ( সাঃ) বলেছেন,
নু‘মান ইব্নু বশীর (রাঃ)
তিনি বলেনঃ আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, ‘হালাল স্পষ্ট এবং হারামও স্পষ্ট। আর এ দু’য়ের মাঝে রয়েছে বহু সন্দেহজনক বিষয়- যা অনেকেই জানে না। যে ব্যক্তি সেই সন্দেহজনক বিষয় হতে বেঁচে থাকবে, সে তার দ্বীন ও মর্যাদা রক্ষা করতে পারবে। আর যে সন্দেহজনক বিষয়সমূহে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তার উদাহরণ সে রাখালের ন্যায়, যে তার পশু বাদশাহ্ সংরক্ষিত চারণভূমির আশেপাশে চরায়, অচিরেই সেগুলোর সেখানে ঢুকে পড়ার আশংকা রয়েছে। জেনে রাখ যে, প্রত্যেক বাদশাহ্রই একটি সংরক্ষিত এলাকা রয়েছে। আরো জেনে রাখ যে, আল্লাহর যমীনে তাঁর সংরক্ষিত এলাকা হলো তাঁর নিষিদ্ধ কাজসমূহ। জেনে রাখ, শরীরের মধ্যে একটি গোশতের টুকরা আছে, তা যখন ঠিক হয়ে যায়, গোটা শরীরই তখন ঠিক হয়ে যায়। আর তা যখন খারাপ হয়ে যায়, গোটা শরীরই তখন খারাপ হয়ে যায়। জেনে রাখ, সে গোশতের টুকরোটি হল ক্বলব (অন্তর)। সহীহ বোখারী ৫১ নং হাদীস
(২০৫১; মুসলিম ২২/২০ হাঃ ১৫৯৯, আহমাদ ১৮৩৯৬, ১৮৪০২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৫০,ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৫০)
হাসান ইবনু আলী (রাঃ)
রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর এই বাণীটি আমি ভালভাবে স্মরণ রেখেছি যে, যে কাজে মনে খটকা লাগে, সে কাজ পরিহার করে খটকাহীন কাজ অবলম্বন কর। সত্য ও শুদ্ধের ক্ষেত্রে দ্বিধার সৃষ্টি হয় না, মিথ্যা ও অশুদ্ধের ক্ষেত্রেই দ্বিধার সৃষ্টি হয় (আহমাদ, তিরমিযী, নাসাঈ, মিশকাত হা/২৭৭৩)
★ আর একটা হাদীস আপনাদের বলব- এটা পাবেন সহীহ বুখারী ৩৬০৬ নং হাদীস এ।
হুযাইফাহ ইবন ইয়ামান (রাঃ) বলেন, লোকজন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে কল্যাণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতেন আর আমি তাঁকে অকল্যাণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতাম; এই ভয়ে যেন আমি ঐ সবের মধ্যে পড়ে না যাই।
আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা জাহিলীয়্যাতে অকল্যাণকর অবস্থায় জীবন যাপন করতাম অতঃপর আল্লাহ্ আমাদের এ কল্যাণ দান করেছেন। এ কল্যাণকর অবস্থার পর আবার কোন অকল্যাণের আশঙ্কা আছে কি?
তিনি বললেন, হ্যাঁ, আছে।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, ঐ অকল্যাণের পর কোন কল্যাণ আছে কি?
তিনি বললেন, হ্যাঁ, আছে। তবে তাতে কিছু মন্দ থাকবে।
আমি বললাম, সে মন্দটা কি?
তিনি বললেন, এমন একদল লোক যারা মানুষকে ঐ দিকে নিয়ে যাবে যা আমার সুন্নত না। তাদের কাজে ভাল-মন্দ সবই থাকবে।
আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, অতঃপর কি আরো অকল্যাণ আছে?
তিনি বললেন, হ্যাঁ, কিছু মানুষ জাহান্নামের দরজার দিকে আমন্ত্রণ জানাবে। যারা তাদের ডাকে সাড়া দিবে তাকেই তারা জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে।
আমি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! এদের পরিচয় বর্ণনা করুন।
তিনি বললেন, তারা আমাদেরই সম্প্রদায়ভুক্ত এবং কথা বলবে আমাদেরই ভাষায়।
আমি বললাম, আমি যদি এ অবস্থায় পড়ে যাই তাহলে আপনি আমাকে কি করতে আদেশ দেন?
তিনি বললেন, মুসলিমদের দল ও তাঁদের ইমামকে আঁকড়ে ধরবে।
আমি বললাম, যদি মুসলিমদের এহেন দল ও ইমাম না থাকে?
তিনি বলেন, তখন তুমি তাদের সকল দল উপদলের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করবে এবং আল্লাহর সান্নিধ্যে না আসা পর্যন্ত বৃক্ষমূল দাঁতে আঁকড়ে ধরে হলেও তোমার দীনের উপর থাকবে।
★ সহীহ বুখারী (তাওহীদ), ২/ ঈমান (বিশ্বাস)১০. ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, সে-ই মুসলিম, যার জিহবা ও হাত হতে সকল মুসলিম নিরাপদ এবং সে-ই প্রকৃত মুহাজির, আল্লাহ যা নিষেধ করেছেন তা যে ত্যাগ করে। (৬৪৮৪; মুসলিম ১/১৪ হাঃ ৪০, আহমাদ ৬৭৬৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৯)
গ্রন্থঃ মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
অধ্যায়ঃ পর্ব-১ঃ ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان)
হাদিস নাম্বার: ১৮৬
মালিক ইবনু আনাস (রাঃ) (রহঃ) হতে মুরসালরূপে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি তোমাদের মধ্যে দু’টি জিনিস রেখে যাচ্ছি। যতক্ষণ তোমরা সে দু’টি জিনিস আঁকড়ে ধরে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত পথভ্রষ্ট হবে না- আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রসূলের হাদীস। [ইমাম মালিক মুয়াত্ত্বায় বর্ণনা করেছেন।][1]
হাদিসের মানঃ হাসান
★ একজন মুসলমানের একমাত্র পরিচয় সে এজকন মুসলিম। কারও পরিচয় কখনও হতে পারে না যে, সে একজন হানাফি বা শাফি’ঈ বা মালিকী বা হাম্বিলী বা আহলে-হাদিস বা সালাফি। কেননা, নবী (সঃ) কখনও উল্লেখিত নামে নিজের পরিচয় প্রদান করেননি এবং মৃত্যুর পর কবরেও আমাকে / আপনাকে কখনও এইরূপ প্রশ্ন করা হবে না যে, আপনি কি হানাফী? বা শাফি’ঈ? বা মালিকী? বা হাম্বিলী? বা আহলে-হাদিস? বা সালাফি?
সুতরাং আমাদের সকলের উচিৎ সবসময় নিজেকে একজন মুসলিম হিসেবে পরিচয় প্রদান করা। তবে অবশ্যই সকলকে কুরআন ও সুন্নাহ’র আলোকে জীবনকে সাজাতে হবে যাতে আমরা মহান আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহ পেতে পারি ও জাহান্নামের আযাব হতে মুক্তি পেতে পারি।
এছাড়া কোরআনের বর্ণণা অনুযায়ী হযরত ইব্রাহিম (আ) মুসলিম ছিলেন।নিঃসন্দেহে অন্য সকল নবী-রাসুল(আ) এবং মহানবী(স) মুসলিম ছিলেন সুতরাং মহানবী (স) এর অনুসারীদেরকেও অবশ্যই ‘মুসলিম’ হতে হবে,শিয়া বা সুন্নী নয়।নবী (স) এর সাক্ষাৎ শিষ্যদের(সাহাবী) কেউ কখনো বলতেননা “আমি শিয়া” বা “আমি সুন্নী” বা “আমি হানাফী”,বরং তারা বলতেন আমি মুসলিম।দলীয় বিভাজনগুলো অনেক পরে এসেছে।তাই আমাদের উচিত বিভাজনের ঊর্ধ্বে উঠে সবার আগে নিজেকে মুসলিম ভাবা, নিজেদের মুসলিম বলে পরিচয় দেওয়া।“চার মাজহাবের যেকোন একটির অনুসারী হওয়া অপরিহার্য” এ মতবাদ বিষয়ে যেটা বলা যায় সেটা হচ্ছে সবার আগে কুরআন-সুন্নাহর অনুসারী হওয়া প্রয়োজন,মাজহাবের নয়।মাজহাবের ইমামগণও ভুল-ত্রুটির ঊর্ধ্বে নন,তারা শুধুমাত্র দ্বীন পালন করবার সুবিধার জন্য আল-কুরআন ও প্রাপ্ত হাদীসের আলোকে সমগ্র দ্বীনের বিধি-বিধান ব্যাখ্যা করেছেন।তাঁদেরকে মহান শিক্ষক বা গুরু হিসাবে গ্রহন করা যেতে পারে,এর বেশি নয়।আল্লাহ অবশ্যই তাঁদের মহৎ শ্রমের প্রতিদান দেবেন।কিন্তু তাঁদেরকে অন্ধভাবে অনুসরণ ও প্রায় নবী-রাসুলের পর্যায়ে জ্ঞান করা মোটেও সমীচিন নয়।ইমামগণের মাজহাবগুলো নিঃসন্দেহে একই ইসলামী মূলনীতির ওপরে ও সহীহ হাদীসের আলোকে দাঁড়িয়ে আছে,তবে সামান্য কিছু ক্ষেত্রে সহীহ হাদিসের বাত্যয় কিংবা ব্যখ্যার ক্ষেত্রে ত্রুটি প্রমাণিত হলে অবশ্যই সহীহ হাদিস ও তার ব্যাখ্যা গ্রহণ করা আবশ্যক।একটা কথা মনে রাখা দরকার,ইমামগণের সময়ে সকল হাদীস বর্তমানের মত সংকলন সম্পন্ন হয়নি,এত সহজলভ্য ছিলনা,কখনো একটি হাদীস সংগ্রহ করতে কয়েক মাইল ভ্রমণ করারও প্রয়োজন পড়ত।এত প্রতিবন্ধকতার মাঝেও ইমামগণ(র.) অক্লান্ত পরিশ্রম করে হাদীস সংগ্রহ করে তাঁদের প্রজ্ঞা অনুযায়ী ব্যাখ্যা প্রদান করতেন।কোন কোন হাদীস তাঁদের কাছে পৌঁছান সম্ভব হয়নি এবং ভুল-ত্রুটির ঊর্ধ্বে নন বলে যদি পরবর্তীতে যদি তাঁদের ব্যাখ্যায় ত্রুটি পরিলক্ষিত হয় তবে আমাদের অবশ্যই নিশ্চিত হয়ে কুরআন-সুন্নাহর অনুসরণ করা উচিত।
★ প্রসিদ্ধ ৪ ইমামের নিজস্ব মতামত তোলে ধরলামঃ-
১. ইমাম শাফিয়ী (রহ.) বলেন,
তোমাদের কারো কাছ থেকে রাসূল (স) এর সুন্নাত যেন ছুটে না যায়। আমি যত কিছুই বলে থাকি তা যদি রাসূল (স) এর হাদিসের পরিপন্থী হয় তবে, রাসূল (স) এর কথাই আমার কথা।
[হাকিম, পাতা-১০০]
২. ইমাম শাফেঈ (রহ.) বলেন,
আমি মানুষ। ভুল ত্রুটি দুটোই করি। আমার রায় দেখ। যা কুরআন ও সুন্নাহ মোতাবেক তা গ্রহন করো এবং যা তার বিপরীত তা প্রত্যাখ্যান কর।
[আল জামি, পাতা-৩২]
৩. ইমাম আবু হানিফা ( রহ.) বলেন,
হাদিস সহীহ হলে সেটাই আমার মাজহাব।
[আল হাশিয়া, পাতা-৬৩]
৪. ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহ.) বলেন,
যে ব্যক্তি রাসূল (স) এর হাদিস কে প্রত্যাখ্যান করে সে ধংসের মুখে দাঁড়িয়ে আছে।
[ইবনুল জাওয়ী, পাতা- ১৮২]
★★★ হে মুমিনগণ, তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর ও আনুগত্য কর রাসূলের এবং তোমাদের মধ্য থেকে কর্তৃত্বেরল অধিকারিদের। অতঃপর কোন বিষয়ে যদি তোমরা মতবিরোধ কর তাহলে তা আল্লাহ ও রাসূলের দিকে প্রত্যার্পণ করাও যদি তোমরা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখ। এটি উত্তম এবং পরিণামে উৎকৃষ্টতর’ (সূরা নিসা: ৫৯
প্রথমতঃ দলীল-প্রমাণসহ ফৎওয়া জেনে নিবে। আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ হ’ল, যারা জানে না তারা পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছে অভিজ্ঞ আলেমদের নিকট থেকে জেনে নিবে (নাহল ৪৩-৪৪)। ছাহাবীগণ একটি বিষয় একাধিক ছাহাবীর কাছে জানতেন (আহমাদ, আবুদাঊদ, ইবনে মাজাহ, মিশকাত হা/১১৫)। পরস্পরের নিকট দলীলও চাইতেন (তিরমিযী, মিশকাত হা/৩৫৫৪)। দ্বিতীয়তঃ রাসূল (ছাঃ) এবং ছাহাবায়ে কেরাম যেভাবে দলীল বুঝেছেন ঐভাবে গ্রহণ করতে হবে। মন মত বুঝলে চলবে না। তৃতীয়তঃ দ্বিমত দেখা দিলে কোনটি ছহীহ দলীলের নিকটবর্তী সেটা গ্রহণ করতে হবে। চতুর্থতঃ ফৎওয়াটি কোন পর্যায়ের তা দেখে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করতে হবে।
No comments:
Post a Comment