Tuesday, November 14, 2017

জান্নাতে প্রবেশকারী ব্যক্তিদের গুণাবলী কি? জান্নাতি কারা?



Image may contain: flower and text


জান্নাতে প্রবেশকারী ব্যক্তিদের গুণাবলী কি?
জান্নাতি কারা?
ﺍﻟﺤﻤﺪ ﻟﻠﻪ ﺭﺏ ﺍﻟﻌﺎﻟﻤﻴﻦ، ﻭﺍﻟﺼﻼﺓ ﻭﺍﻟﺴﻼﻡ ﻋﻠﻰ ﺃﺷﺮﻑ ﺍﻷﻧﺒﻴﺎﺀ ﻭﺍﻟﻤﺮﺳﻠﻴﻦ، ﻧﺒﻴﻨﺎ ﻣﺤﻤﺪ ﻭﻋﻠﻰ ﺁﻟﻪ ﻭﺻﺤﺒﻪ ﺃﺟﻤﻌﻴﻦ .
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি সমগ্র জগতের প্রতিপালক। আর সালাত ও সালাম নাযিল হোক সমস্ত নবী ও রাসূলদের সরদার আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর এবং তার পরিবার-পরিজন ও তার সমস্ত সাহাবীদের উপর।
আল্লাহ তা‘আলা আমাকে যে সব আমল করা দ্বারা একজন মানুষ জান্নাতে প্রবেশ করতে পারে বা জান্নাতী ব্যক্তিদের গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্যগুলো কি সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
💦💦💦💦💦💦💦💦💦💦💦
জান্নাতে প্রবেশকারী ব্যক্তিদের গুণাবলী

এক- নরম দিল হওয়া
যাদের অন্তর নরম হবে, যারা খোশ মেজাজের অধিকারী হবে, সর্বদা আল্লাহ-ভীতু হয়, কারো কোনো ক্ষতিকারক নয়, ধৈর্যশীল ব্যক্তি, এমন লোক জান্নাতী হবে।
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻋَﻦْ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗَﺎﻝَ : ‏« ﻳَﺪْﺧُﻞُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﺃَﻗْﻮَﺍﻡٌ ﺃَﻓْﺌِﺪَﺗُﻬُﻢْ ﻣِﺜْﻞُ ﺃَﻓْﺌِﺪَﺓِ ﺍﻟﻄَّﻴْﺮِ »
আবু হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “জান্নাতে প্রবেশ করবে এমন ব্যক্তি যাদের অন্তরসমূহ হবে পাখির অন্তরের ন্যায়[1]”।

🎀🎁🎗🎁🎀🎋🎋🎖🏆🏅💡📚
দুই-দুর্বল অসহায় হওয়া:-
জান্নাতে গরীব-মিসকিন, ফকির, পরমুখাপেক্ষী, দুর্বল লোকদের সংখ্যাধিক্য হবে। পক্ষান্তরে যারা তাদের বিপরীত হবে, অর্থাৎ অহংকারী, দুশ্চরিত্র ও ঝগড়াটে ব্যক্তি জাহান্নামে প্রবেশ করবে।
ﻋَﻦْ ﺣَﺎﺭِﺛَﺔَ ﺑْﻦَ ﻭَﻫْﺐٍ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺳَﻤِﻊَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗَﺎﻝ : ‏« ﺃَﻟَﺎ ﺃُﺧْﺒِﺮُﻛُﻢْ ﺑِﺄَﻫْﻞِ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ؟ ﻗَﺎﻟُﻮﺍ ﺑَﻠَﻰ ﻗَﺎﻟَﺼﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻤﻜُﻞُّ ﺿَﻌِﻴﻒٍ ﻣُﺘَﻀَﻌِّﻒٍ ﻟَﻮْ ﺃَﻗْﺴَﻢَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻟَﺄَﺑَﺮَّﻩُ ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻝَ ﺃَﻟَﺎ ﺃُﺧْﺒِﺮُﻛُﻢْ ﺑِﺄَﻫْﻞِ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ؟ ﻗَﺎﻟُﻮﺍ ﺑَﻠَﻰ ﻗَﺎﻝَ ﻛُﻞُّ ﻋُﺘُﻞٍّ ﺟَﻮَّﺍﻅٍ ﻣُﺴْﺘَﻜْﺒِﺮٍ »
“হারেসা ইবন ওহাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, তিনি বলেছেন: “আমি কি তোমাদেরকে জান্নাতি লোকদের গুণাবলীর কথা বলব না?” সাহাবাগণ বললেন: হ্যাঁ বলুন। তিনি বললেন: “প্রত্যেক দুর্বল, লোক চোখে হেয়, কিন্তু সে যদি কোন বিষয়ে আল্লাহর নামে কসম করে তাহলে আল্লাহ তার কসম পূর্ণ করবেন।” অতঃপর তিনি বললেন: আমি কি তোমাদেরকে জাহান্নামী লোকদের কথা বলব না? তারা বললেন: বলুন। তিনি বললেন: “প্রত্যেক ঝগড়াকারী, দুশ্চরিত্র, অহংকারী ব্যক্তি[2]।”

🎀🎁🎗🎁🎀🎋🎋🎖🏆🏅💡📚
তিন-নম্র-ভদ্র ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে:-
নম্র-ভদ্র, মানুষের নিকট গ্রহণযোগ্য ও মানুষের কাছের লোক- যাকে মানুষ বিপদ আপদে কাছে পায়- এমন খোশ মেজাজ, পরিচিত ও ভাল লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে। এ ধরনের লোকের জন্য আল্লাহ তা‘আলা জাহান্নামকে হারাম করে দিয়েছেন।
ﻋَﻦِ ﺍﺑْﻦِ ﻣَﺴْﻌُﻮﺩٍ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪُ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗَﺎﻝَ : ‏« ﺣُﺮِّﻡَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ﻛُﻞُّ ﻫَﻴِّﻦٍ ﻟَﻴِّﻦٍ ﺳَﻬْﻞٍ ﻗَﺮِﻳﺐٍ ﻣِﻦْ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ »
“ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “প্রত্যেক নরম দিল ভদ্র এবং মানুষের সাথে মিশুক লোকদের জন্য জাহান্নাম হারাম”। যাদের জন্য জাহান্নাম হারাম তারা অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে[3]।

🎀🎁🎗🎁🎀🎋🎋🎖🏆🏅💡📚
চার- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর অনুসরণকারী জান্নাতে যাবে:-
যে ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনুসরণ করবে, সে জান্নাতে যাবে। পক্ষান্তরে যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুসরণ করবে না সে জাহান্নামে যাবে। সুতরাং, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুসরণ করা দ্বারাই জান্নাতে প্রবেশ করা নিহিত। প্রমাণ-
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗَﺎﻝَ : ‏« ﻛُﻞُّ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻳَﺪْﺧُﻠُﻮﻥَ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﺇِﻟَّﺎ ﻣَﻦْ ﺃَﺑَﻰ ﻗَﺎﻟُﻮﺍ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻭَﻣَﻦْ ﻳَﺄْﺑَﻰ ﻗَﺎﻝَ ﻣَﻦْ ﺃَﻃَﺎﻋَﻨِﻲ ﺩَﺧَﻞَ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﻭَﻣَﻦْ ﻋَﺼَﺎﻧِﻲ ﻓَﻘَﺪْ ﺃَﺑَﻰ »
“আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- আমার সমস্ত উম্মত জান্নাতে যাবে তবে ঐ সমস্ত লোক ব্যতীত যারা অস্বীকার করে। সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করল হে আল্লাহর রাসূল! কে অস্বীকার করে? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি আমার অনুসরণ করে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে, আর যে আমার নাফরমানী করে সে অস্বীকার করে[4]।”

🎀🎁🎗🎁🎀🎋🎋🎖🏆🏅💡📚
পাঁচ- দৈনিক বারো রাকাত সালাত আদায়কারী
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে যে ব্যক্তি প্রতি দিন বারো রাকাআত সালাত (ফজরের পূর্বে দুই রাকাআত, যোহরের পূর্বে চার রাকাআত, পরে দুই রাকাআত, মাগরিবের পরে দুই রাকাআত, এশার পরে দুই রাকাআত সুন্নত) আদায় করে সে জান্নাতে যাবে। প্রমাণ:
ﻋَﻦْ ﺃُﻡِّ ﺣَﺒِﻴﺒَﺔَ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ ﺯَﻭْﺝِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺃَﻧَّﻬَﺎ ﻗَﺎﻟَﺖْ : ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳَﻘُﻮﻝُ : ‏« ﻣَﺎ ﻣِﻦْ ﻋَﺒْﺪٍ ﻣُﺴْﻠِﻢٍ ﻳُﺼَﻠِّﻲ ﻟِﻠﻪِ ﻛُﻞَّ ﻳَﻮْﻡٍ ﺛِﻨْﺘَﻲْ ﻋَﺸْﺮَﺓَ ﺭَﻛْﻌَﺔً ﺗَﻄَﻮُّﻋًﺎ ﻏَﻴْﺮَ ﻓَﺮِﻳﻀَﺔٍ ﺇِﻟَّﺎ ﺑَﻨَﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻟَﻪُ ﺑَﻴْﺘًﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ »
“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রী উম্মে হাবীবা ˆরাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন- “যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে প্রতিদিন ফরয ব্যতীত বারো রাকাআত নফল সালাত আদায় করবে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করবেন[5]।”

🎀🎁🎗🎁🎀🎋🎋🎖🏆🏅💡📚
ছয়-আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী ব্যক্তি জান্নাতে যাবে
যে ব্যক্তি আল্লাহর ইবাদতে তার সাথে কাউকে শরীক করবে না, সালাত কায়েম করবে, যাকাত করবে এবং আত্মীয়তা সম্পর্ক বজায় রাখবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﺃَﻳُّﻮﺏَ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗَﺎﻝَ ﺟَﺎﺀَ ﺭَﺟُﻞٌ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺩُﻟَّﻨِﻲ ﻋَﻠَﻰ ﻋَﻤَﻞٍ ﺃَﻋْﻤَﻠُﻪُ ﻳُﺪْﻧِﻴﻨِﻲ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ ﻭَﻳُﺒَﺎﻋِﺪُﻧِﻲ ﻣِﻦْ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ﻗَﺎﻝَ : ‏« ﺗَﻌْﺒُﺪُ ﺍﻟﻠﻪَ ﻟَﺎ ﺗُﺸْﺮِﻙُ ﺑِﻪِ ﺷَﻴْﺌًﺎ ﻭَﺗُﻘِﻴﻢُ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓَ ﻭَﺗُﺆْﺗِﻲ ﺍﻟﺰَّﻛَﺎﺓَ ﻭَﺗَﺼِﻞُ ﺫَﺍ ﺭَﺣِﻤِﻚَ ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺃَﺩْﺑَﺮَ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻬُﺼﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻤﺈِﻥْ ﺗَﻤَﺴَّﻚَ ﺑِﻤَﺎ ﺃُﻣِﺮَ ﺑِﻪِ ﺩَﺧَﻞَ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ »
“আবূ আয়্যুব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল: হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন কোনো আমলের কথা বলুন যা আমাকে জান্নাতের নিকটবর্তী এবং জাহান্নাম থেকে দূরে রাখবে। তিনি বললেন: আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাঁর সাথে কাউকে অংশীদার সাব্যস্ত করবে না। সালাত কায়েম কর, যাকাত আদায় কর, আর আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখ। যখন ঐ লোক ফিরে যেতে লাগল, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তাকে যা করতে বলা হল, যদি সে এর ওপর আমল করে তাহলে সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে[6]।
🎀🎁🎗🎁🎀🎋🎋🎖🏆🏅💡📚

সাত-তাহাজ্জুদ আদায়কারী, রোজা পালনকারী ও অন্যকে খাদ্য দানকারী:
মনে রাখবে, চরিত্রবান, তাহাজ্জুদগুজার, অধিক পরিমাণে নফল রোযা আদায়কারী ও অন্যকে খাদ্য দানকারী জান্নাতে যাবে। এ ধরনের লোকদের জন্য জান্নাতে বিশেষ ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। প্রমাণ-
ﻋَﻦْ ﻋَﻠِﻲٍّ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮْﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ‏« ﺇِﻥَّ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ ﻟَﻐُﺮَﻓًﺎ ﺗُﺮَﻯ ﻇُﻬُﻮﺭُﻫَﺎ ﻣِﻦْ ﺑُﻄُﻮﻧِﻬَﺎ ﻭَﺑُﻄُﻮﻧُﻬَﺎ ﻣِﻦْ ﻇُﻬُﻮﺭِﻫَﺎ ﻓَﻘَﺎﻡَ ﺃَﻋْﺮَﺍﺑِﻲٌّ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻟِﻤَﻦْ ﻫِﻲَ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪُ؟ ﻗَﺎﻝَ ﻫﻲ ﻟِﻤَﻦْ ﺃَﻃَﺎﺏَ ﺍﻟْﻜَﻠَﺎﻡَ ﻭَﺃَﻃْﻌَﻢَ ﺍﻟﻄَّﻌَﺎﻡَ ﻭَﺃَﺩَﺍﻡَ ﺍﻟﺼِّﻴَﺎﻡَ ﻭَﺻَﻠَّﻰ ﻟِﻠﻪِ ﺑِﺎﻟﻠَّﻴْﻞِ ﻭَﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻧِﻴَﺎﻡٌ »
“আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: জান্নাতে এমন কিছু ঘর আছে যার ভিতর থেকে বাহিরের সব কিছু দেখা যাবে। আবার বাহির থেকে ভিতরের সব কিছু দেখা যাবে। এক বেদুইন ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রাসূলুল্লাহ! ঐ ঘর কার জন্য? তিনি বললেন: ঐ ব্যক্তির জন্য যে ভাল ও নরম কথা, বলে, অন্যকে আহার করায়, অধিক পরিমাণে নফল রোযা রাখে, আর যখন লোকেরা আরামে নিদ্রারত থাকে তখন উঠে সে সালাত আদায় করে[7]।”

🍓🍒🍅🍭
আট:-ন্যায় পরায়ণ বাদশাহ জান্নাতে যাবে:-
ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ, অপরের প্রতি অনুগ্রহকারী, নরম অন্তর, কারো নিকট কোন কিছু চায়না এমন ব্যক্তিও জান্নাতে যাবে।
ﻋَﻦْ ﻋِﻴَﺎﺽِ ﺑْﻦِ ﺣِﻤَﺎﺭٍ ﺍﻟْﻤُﺠَﺎﺷِﻌِﻲِّ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : ‏« ﺫَﺍﺕَ ﻳَﻮْﻡٍ ﻓِﻲ ﺧُﻄْﺒَﺘِﻪِ ﻭَﺃَﻫْﻞُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ ﺛَﻠَﺎﺛَﺔٌ ﺫُﻭ ﺳُﻠْﻄَﺎﻥٍ ﻣُﻘْﺴِﻂٌ ﻣُﺘَﺼَﺪِّﻕٌ ﻣُﻮَﻓَّﻖٌ ﻭَﺭَﺟُﻞٌ ﺭَﺣِﻴﻢٌ ﺭَﻗِﻴﻖُ ﺍﻟْﻘَﻠْﺐِ ﻟِﻜُﻞِّ ﺫِﻱ ﻗُﺮْﺑَﻰ ﻭَﻣُﺴْﻠِﻢٍ ﻭَﻋَﻔِﻴﻒٌ ﻣُﺘَﻌَﻔِّﻒٌ ﺫُﻭ ﻋِﻴَﺎﻝٍ »
“ইয়াদ্ব ইবন হিমার মাজাশে‘য়ী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: তিন প্রকারের লোক জান্নাতে যাবে। এক- ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ, সত্যবাদী, নেক আমলকারী। দুই- ঐ ব্যক্তি যে প্রত্যেক আত্মীয়ের সাথে এবং প্রত্যেক মুসলমানের সাথে দয়া করে। তিন-ঐ ব্যক্তি যে লজ্জা স্থানকে সংরক্ষণ করে এবং বিনা প্রয়োজনে কারো নিকট কোন কিছু চায় না[8]।
যদি রাজা বাদশার ন্যায় বিচার করে, তাহলে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যদি অন্যায় করে, তাহলে তাদের জন্য জাহান্নাম অবধারিত। সুতরাং ক্ষমতাশীলদের প্রতি দাওয়াত থাকল, তারা যেন প্রজাদের প্রতি কোন প্রকার অন্যায়-অনাচার ও জুলুম অত্যাচার না করে।
আত্মীয় স্বজনদের সাথে ভালো ব্যবহার করা একটি মহৎ গুন। কিন্তু দুঃখের বিষয় বর্তমানে আমরা আত্মীয় স্বজনদের সাথে দুর্ব্যবহার করে থাকি। আত্মীয় স্বজনদের খোজ খবর নেই না।
মানুষের কাছে হাত না পাতা খুবই জরুরি। বর্তমানে দেখা যায় ভিক্ষা ভিত্তি একটি পেশা হয়ে দাড়িয়েছে। যাদের অভাব তারাও চায় আবার যাদের অভাব নাই তারাও চায়। কিন্তু তারপরও কিছু লোক আছে, যারা মানুষের কাছে হাত পাতে না। তারা লজ্জার কারণে ঘরে বসে কষ্ট করে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত।

🍁🌿🍄
নয়- আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল এবং দ্বীনের প্রতি সন্তুষ্টি জ্ঞাপন
আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনায় আনন্দ অনুভবকারী, ইসলামকে সন্তুষ্ট চিত্তে স্বীয় দ্বীন হিসেবে বিশ্বাসকারীও জান্নাতে যাবে।
ﻋَﻦْ ﺍَﺑِﻲْ ﺳَﻌِﻴﺪٍ ﺍﻟْﺨُﺪْﺭِﻱَّ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗَﺎﻝَ : ‏« ﻣَﻦْ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺿِﻴﺖُ ﺑِﺎﻟﻠﻪُ ﺭَﺑًّﺎ ﻭَﺑِﺎﻟْﺈِﺳْﻠَﺎﻡِ ﺩِﻳﻨًﺎ ﻭَﺑِﻤُﺤَﻤَّﺪٍ ﺭَﺳُﻮﻟًﺎ ﻭَﺟَﺒَﺖْ ﻟَﻪُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔُ »
“আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি বলে যে আল্লাহকে রব হিসেবে, ইসলামকে দ্বীন হিসেবে এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে নবী হিসেবে পেয়ে আমি সন্তুষ্ট। তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে[9]।

🌾🌿🍀🍁
দশ:- দুই বা দুইয়ের অধিক কন্যাকে লালন-পালন করা:-
দুই বা দুইয়ের অধিক কন্যাকে লালন-পালন করে সু-শিক্ষা দানকারী এবং বালেগা হওয়ার পর তাদেরকে সু-পাত্রে পাত্রস্থকারী ব্যক্তিও জান্নাতি হবে। প্রমাণ-
ﻋَﻦْ ﺃَﻧَﺲِ ﺑْﻦِ ﻣَﺎﻟِﻚٍ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪُ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ‏« ﻣَﻦْ ﻋَﺎﻝَ ﺟَﺎﺭِﻳَﺘَﻴْﻦِ ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﺒْﻠُﻐَﺎ ﺟَﺎﺀَ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﺃَﻧَﺎ ﻭَﻫُﻮَ ﻭَﺿَﻢَّ ﺃَﺻَﺎﺑِﻌَﻪُ »
“আনাস ইবন মালেক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি দুইজন কন্যাকে তাদের প্রাপ্তবয়স্কা হওয়া পর্যন্ত লালন-পালন করল, কিয়ামতের দিন আমি ও ঐ ব্যক্তি এক সাথে উপস্থিত হব। একথা বলে তিনি তাঁর দুই আঙ্গুলকে একত্রিত করে দেখালেন (যে এভাবে)[10]।

🌿🌾🌵🌴🍂🍃
এগার- ওযুর পর দুইরাকাআত নফল সালাত (তাহিয়্যাতুল ওযু) রীতিমত আদায়কারীও জান্নাতি হবে।
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮْﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻟِﺒِﻠَﺎﻝٍ ﻋِﻨْﺪَ ﺻَﻠَﺎﺓِ ﺍﻟْﻐَﺪَﺍﺓِ ‏« ﻳَﺎ ﺑِﻠَﺎﻝُ ﺣَﺪِّﺛْﻨِﻲ ﺑِﺄَﺭْﺟَﻰ ﻋَﻤَﻞٍ ﻋَﻤِﻠْﺘَﻪُ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺈِﺳْﻠَﺎﻡِ ﻣﻨﻔﻌﺔ ﻓﺎﻧﻲ ﻓَﺈِﻧِّﻲ ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺍﻟﻠﻠﻴﻠﺔ ﺧﺸﻒ ﻧَﻌْﻠَﻴْﻚَ ﺑَﻴْﻦَ ﻳَﺪَﻱَّ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ ‏» ﻗَﺎﻝَ ﺑﻼﻝ ﻣَﺎ ﻋَﻤِﻠْﺖُ ﻋَﻤَﻠًﺎ ﺃَﺭْﺟَﻰ ﻋِﻨْﺪِﻱ ﻣﻨﻔﻌﺔ ﻣﻦ ﺃَﻧِّﻲ ﻟَﻢْ ﺃَﺗَﻄَﻬَّﺮْ ﻃَﻬُﻮﺭًﺍ ﺗَﺎﻣًّﺎ ﻓِﻲ ﺳَﺎﻋَﺔِ ﻣِﻦْ ﻟَﻴْﻞٍ ﺃَﻭْ ﻧَﻬَﺎﺭٍ ﺇِﻟَّﺎ ﺻَﻠَّﻴْﺖُ ﺑِﺬَﻟِﻚَ ﺍﻟﻄُّﻬُﻮﺭِ ﻣَﺎ ﻛُﺘِﺐَ ﻟِﻲ ﺃَﻥْ ﺃُﺻَﻠِّﻲَ
“আবু হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন ফজরের নামাযের পর বেলাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে জিজ্ঞেস করলেন, হে বেলাল! ইসলাম গ্রহণের পর তোমার এমন কি আমল আছে যার বিনিময়ে তুমি পুরস্কৃত হওয়ার আশা রাখ? কেননা আজ রাতে আমি জান্নাতে আমার সামনে তোমার চলার শব্দ পেয়েছি। বেলাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন: আমি এর চেয়ে অধিক কোন আমল তো দেখছি না যে, দিনে বা রাতে যখনই আমি ওযু করি তখনই যতটুকু আল্লাহ তাওফিক দেন ততটুকু নফল সালাত আমি আদায় করি[11]।
অপর একটি হাদিসে বর্ণিত-
ﻋﻦ ﻋﻘﺒﺔ ﺑﻦ ﻋﺎﻣﺮ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ ﻛﺎﻧﺖ ﻋﻠﻴﻨﺎ ﺭﻋﺎﻳﺔ ﺍﻹﺑﻞ ﻓﺠﺎﺀﺕ ﻧﻮﺑﺘﻲ ﻓﺮﻭﺣﺘﻬﺎ ﺑﻌﺸﻲ ﻓﺄﺩﺭﻛﺖ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﺋﻤﺎ ﻳﺤﺪﺙ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻓﺄﺩﺭﻛﺖ ﻣﻦ ﻗﻮﻟﻪ ‏« ﻣﺎ ﻣﻦ ﻣﺴﻠﻢ ﻳﺘﻮﺻﺄ ﻓﻴﺤﺴﻦ ﻭﺿﻮﺀﻩ ﺛﻢ ﻳﻘﻮﻡ ﻓﻴﺼﻠﻰ ﺭﻛﻌﺘﻴﻦ ﻣﻘﺒﻞ ﻋﻠﻴﻬﻤﺎ ﺑﻘﻠﺒﻪ ﻭ ﻭﺟﻬﻪ ﺇﻻ ﻭﺟﺒﺖ ﻟﻪ ﺍﻟﺠﻨﺔ »
“উকবা ইবনে আমের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, আমাদের উপর দায়িত্ব ছিল উট চরাবার। যখন আমার পালা আসল তখন আমি এক বিকালে সেগুলো ছেড়ে আসলাম। তখন আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখলাম যে তিনি মানুষদের নিয়ে কথা বলছেন, তখন তার যে কথা আমি ধারণ করতে পেরেছি তার মধ্যে ছিল, “তোমাদের যে কেউ ওযু করল, আর সে তার ওযু সুন্দর করে সম্পন্ন করে, তারপর দুই রাকাত তাহিয়্যাতুল অজুর দুই রাকাত সালাত ভালোভাবে আদায় করল, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে[12]।”

🌷🌲🌳🌱🌹🏵
বার- যে নারীর মধ্যে হাদিস বর্ণিত পাঁচটি গুণ পাওয়া যাবে:-
এক-যে নারী সময় মত যথাযথ সালাত আদায় করে। দুই- যে নারী তার স্বামীর অনুগত স্ত্রী হয়। তিন- যে নারী রমযান মাসের রোজা পালন করে। চার-যে নারী তার লজ্জা-স্থানের হেফাজত করে। সে জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে।
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲْ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮْﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ‏« ﺇِﺫَﺍ ﺻَﻠَّﺖِ ﺍﻟْﻤَﺮْﺃَﺓُ ﺧَﻤْﺴَﻬَﺎ ، ﻭَﺻَﺎﻣَﺖْ ﺷَﻬْﺮَﻫَﺎ ، ﻭَﺣَﺼَﻨَﺖْ ﻓَﺮْﺟَﻬَﺎ ، ﻭَﺃَﻃَﺎﻋَﺖْ ﺑَﻌْﻠَﻬَﺎ ﻗِﻴْﻞَ ﻟَﻬَﺎ ﺍَﺩْﺧُﻠِﻲْ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﻣِﻦْ ﺃَﻱِّ ﺃَﺑْﻮَﺍﺏِ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ ﺷِﺌْﺖِ »
“আবু হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে মহিলা পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করে, রমযান মাসে রোযা রাখে, স্বীয় লজ্জা-স্থান সংরক্ষণ করে, স্বীয় স্বামীর অনুগত থাকে, কিয়ামতের দিন তাকে বলা হবে যে, জান্নাতের যে দরজা দিয়ে খুশি তুমি জান্নাতে প্রবেশ কর[13]।

🌲🌱🌼🏵🕸
তের- শহীদ, নবজাত শিশু ও জীবন্ত প্রোথিত সন্তান:-
আম্বিয়া, শহীদ, মৃত্যুবরণকারী ঈমানদারদের নবজাতক শিশু এবং জীবন্ত প্রোথিত সন্তান (জাহিলিয়াতের যুগে যা করা হত) তারা জান্নাতি হবে।
ﺣَﺴْﻨَﺎﺀُ ﺑِﻨْﺖُ ﻣُﻌَﺎﻭِﻳَﺔَ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ ﻗَﺎﻟَﺖْ ﺣَﺪَّﺛَﻨَﺎ ﻋَﻤِّﻲ ﻗَﺎﻝَ ﻗُﻠْﺖُ ﻟِﻠﻨَّﺒِﻲِّ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻣَﻦْ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ؟ ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ‏« ﻭَﺍﻟﺸَّﻬِﻴﺪُ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ ﻭَﺍﻟْﻤَﻮْﻟُﻮﺩُ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ ﻭَﺍﻟْﻮَﺋِﻴﺪُ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ »
“হাসনা বিনতে মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমাকে আমার চাচা এ হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করেছি যে, কোন ধরনের লোকেরা জান্নাতি হবে? তিনি বললেন: শহীদরা জান্নাতি। মৃত্যুবরণকারী নবজাতক শিশু জান্নাতি। (জাহিলিয়াতের যুগে) জীবন্ত প্রোথিত শিশু জান্নাতি[14]।”

🌷🌱🌲🌳🌳🌲🌱
চৌদ্দ-আল্লাহর পথের সৈনিক:
আল্লাহর পথে জিহাদকারী জান্নাতি হবে। আল্লাহর পথে জিহাদ করতে গিয়ে শহীদ হলে, সে অবশ্যই জান্নাতি। প্রমাণ-
ﻋَﻦْ ﻣُﻌَﺎﺫِ ﺑْﻦِ ﺟَﺒَﻞٍ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻋَﻦْ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗَﺎﻝَ : ‏« ﻣَﻦْ ﻗَﺎﺗَﻞَ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠﻪُ ﻣِﻦْ ﺭَﺟُﻞٍ ﻣُﺴْﻠِﻢٍ ﻓُﻮَﺍﻕَ ﻧَﺎﻗَﺔٍ ﻭَﺟَﺒَﺖْ ﻟَﻪُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔُ »
“মু‘আয ইবন জাবাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে ততক্ষণ পর্যন্ত জিহাদ করেছে যতক্ষণ কোনো উটের দুধ দোহন করতে সময় লাগে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব[15]।
পনের- মুত্তাকী এবং চরিত্রবান লোক:
মুত্তাকী এবং চরিত্রবান লোক জান্নাতে যাবে। অধিকাংশ মানুষকে তার তাকওয়া ও সুন্দর চরিত্র জান্নাতে প্রবেশ করাবে। আর অধিকাংশ মানুষকে তার মুখ ও লজ্জা-স্থান জাহান্নামে প্রবেশ করাবে।
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗَﺎﻝَ ﺳُﺌِﻞَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪُ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻋَﻦْ ﺃَﻛْﺜَﺮِ ﻣَﺎ ﻳُﺪْﺧِﻞُ ﺍﻟﻨَّﺎﺱَ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﻓَﻘَﺎﻝَ : ‏« ﺗَﻘْﻮَﻯ ﺍﻟﻠﻪُ ﻭَﺣُﺴْﻦُ ﺍﻟْﺨُﻠُﻖِ ﻭَﺳُﺌِﻞَ ﻋَﻦْ ﺃَﻛْﺜَﺮِ ﻣَﺎ ﻳُﺪْﺧِﻞُ ﺍﻟﻨَّﺎﺱَ ﺍﻟﻨَّﺎﺭَ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﻟْﻔَﻢُ ﻭَﺍﻟْﻔَﺮْﺝُ »
“আবু হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হল কোন আমলের কারণে সর্বাধিক লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে? তিনি বললেন: তাকওয়া (আল্লাহ ভীতি) ও উত্তম চরিত্র[16]।

🌸💮💮🏵
[1] মুসলিম, জান্নাত ও তার নেয়ামত সমূহের বর্ণনা অধ্যায়, হাদীস নং ২৮৪০।
[2] মুসলিম, হাদীস নং ২৮৫৩।
[3] আহমদ, ১/৪১৫। হাদীস নং ৩৯৩৮।
[4] বুখারি, কুরআন ও সূন্নাহকে আকড়ে ধরা বিষয় আলোচনা অধ্যায়। হাদীস নং ৭২৮০।
[5] মুসলিম, মুসাফিরদের সালাত আদায় করা অধ্যায়। হাদীস নং ৭২৮।
[6] মুসলিম কিতাবুল ঈমান, পরিচ্ছেদ: যে ঈমান একজন মুমিনকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। হাদীস নং ১৩।
[7] তিরমিযি, জান্নাতের আলোচনা। পরিচ্ছেদ: জান্নাতের কামরাসমূহের বৈশিষ্ট্য; ২/২০৫১, হাদীস নং ১৯৮৪।
[8] মুসলিম, কিতাবুল জান্নাহ, পরিচ্ছেদ: জান্নাতী ও জাহান্নামীদের গুনাগুণের বিষয়ে আলোচনা, হাদীস নং ২৮৬৫।
[9] আবু দাউদ, বিতির অধ্যায়, পরিচ্ছেদ ইস্তেগফার বিষয়ে আলোচনা, ১/১৩৫৩, হাদীস নং ১৫২৯।
[10] মুসলিম, কিতাবুল বির ওয়াস-সিলা, কন্যা সন্তানের প্রতি দয়া করা বিষয়ে আলোচনা, হাদীস নং ২৬৩১।
[11] বুখারি ও মুসলিম, দেখুন সংক্ষিপ্ত মুসলিম, হাদিস নং- ১৬৮২।
[12] মুসলিম, হাদিস: ১৪৪
[13] ইবনে হিব্বান, সহীহ জামে আসসগীর ১ম খণ্ড হাদিস নং-৬৭৩
[14] আবু দাউদ, কিতাবুল জিহাদ, হাদিস নং- ২/২২০০
[15] তিরমিযি, জিহাদের ফযিলত অধ্যায়, হাদিস নং-২/১৩৫৩
[16] তিরমিযি, কিতাবুল বির ওয়াসসিলা, পরিচ্ছেদ: উত্তম চরিত্র বিষয়ে আলোচনা।সুত্রঃ কুরআনের আলো ডট কম
সংকলন: জাকের উল্লাহ আবুল খায়ের | সম্পাদক: আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া

No comments:

Post a Comment