আল্লাহ রাব্বুল আলামীন স্বীয় বান্দাদের প্রতি অধিক দয়ালু ও ক্ষমাশীল। তিনি তার বান্দাদের যে কোন উপায়ে ক্ষমা করতে ও তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করতে পছন্দ করেন। আল্লাহ তা’আলা মানুষের ছোট গুনাহ কেবল নেক আমল করা দ্বারাই ক্ষমা করে দেন। কিন্তু কবীরা গুনাহ তাওবা ছাড়া ক্ষমা করা হয় না। তাই কবীরা গুনাহ হতে ক্ষমা পাওয়ার জন্য তাওবা করা জরুরি।
কোন মানুষ অপরাধ করার পর যখন আল্লাহ তা’আলার নিকট তাওবা করে এবং তার দ্বারা সংঘটিত গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে, আল্লাহ তাকে অত্যধিক পছন্দ করেন, তার তাওবা কবুল করেন এবং তাওবার মাধ্যমে বান্দাকে পবিত্র করেন।
🔴🔴 আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলেন:
أَفَلا يَتُوبُونَ إِلَى اللَّهِ وَيَسْتَغْفِرُونَهُ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ
তবে কি তারা আল্লাহর দিকে ফিরে আসবে না আর তাঁর কাছে ক্ষমা চাইবে না? আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু। 📚[মায়েদা, ৫/৭৪]
وَاسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ ثُمَّ تُوبُوا إِلَيْهِ إِنَّ رَبِّي رَحِيمٌ وَدُودٌ
আর তোমরা তোমাদের ররের কাছে ক্ষমা চাও অতঃপর তাঁরই দিকে ফিরে এসো, নিশ্চয় আমার রব অসীম দয়ালু, অতি ভালবাসা পোষণকারী। 📚[হুদ, ১১/৯০]
🔴🔴 আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা আরো বলেন:
وَأَنِ اسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ ثُمَّ تُوبُوا إِلَيْهِ يُمَتِّعْكُمْ مَتَاعًا حَسَنًا إِلَى أَجَلٍ مُسَمًّى وَيُؤْتِ كُلَّ ذِي فَضْلٍ فَضْلَهُ وَإِنْ تَوَلَّوْا فَإِنِّي أَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍ كَبِيرٍ
আর তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও, এরপর তাঁরই দিকে ফিরে এসো, তাহলে তিনি নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত তোমাদেরকে উত্তম জীবন সামগ্রী উপভোগ করতে দিবেন এবং অনুগ্রহ পাওয়ার যোগ্য প্রত্যেক ব্যক্তিকে তাঁর অনুগ্রহ অনুযায়ী দান করবেন, আর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তাহলে অবশ্যই আমি তোমাদের উপর এক মহা দিবসের আযাবের আশঙ্কা করছি। 📚[হুদ, ১১/৩]
🔴🔴 আল্লাহ্ তা'আলা বলেন:
وَاسْتَغْفِرُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ
আর তোমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও, নিশ্চয় আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু। 📚[আল-বাকারা, ২/১৯৯]
وَاسْتَغْفِرُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ
আর তোমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও, নিশ্চয় আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু। 📚[মুযাম্মিল, ৭৩/২০]
فَقُلْتُ اسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ إِنَّهُ كَانَ غَفَّارًا
সুতরাং আমি বলেছি, তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও, নিশ্চয় তিনি হলেন ক্ষমাশীল। 📚[নুহ, ৭১/১০]
🔴🔴 এমনকি পবিত্র কোরআনে বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা তাঁর ক্ষমা ও দয়ার কথা উল্লেখ করেন:
إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ
নিশ্চয় আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু।
📚[২/১৭৩, ১৮২, ১৯২, ১৯৯, ২২৬, ৩/৮৯, ৫/৩, ৩৯, ৮/৬৯, ৯/৫, ৯৯, ১০২, ১৬/১১৫, ২৫/৫, ৬২, ৪৯/১৪, ৫৮/১২, ৬০/১২, ৬৪/১৪, ৭৩/২০]
বান্দা যখন কোন অপরাধ করে আল্লাহর নিকট ফিরে যায় এবং তাওবা করে, আল্লাহ তার তাওবা কবুল করেন আল্লাহ তা’আলা তার প্রতি অধিক খুশি হন। যেমন,
🔵🔵 আনাস বিন মালেক রা. হতে বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন- “আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় বান্দার তাওবায় ঐ ব্যক্তির চেয়েও অধিক খুশি হন, যে ব্যক্তি তার বাহন সাওয়ারীনিয়ে কোন জনমানব শূন্য প্রান্তরে অবস্থান করছিল,হঠাৎ তার সাওয়ারীটি পালিয়ে গেল। সাওয়ারীটির সাথে ছিল তার খাদ্য ও পানীয় বস্তু। লোকটি সাওয়ারীটি খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে তার ব্যাপারে হতাশ হয়ে একটি গাছের নিকট এসে তার ছায়া-তলে এসে শুয়ে পড়ল। কিছুক্ষণ পর ঘুম থেকে উঠে সে দেখে তার সাওয়ারীটি তার পার্শ্বে এসে দাঁড়িয়ে আছে। তখন সে অধিক খুশিতে তার সাওয়ারীর লাগাম চেপে ধরে বলল,হে আল্লাহ! তুমি আমার বান্দা এবং আমি তোমার রব! লোকটি অধিক খুশিতে উল্টা-পাল্টা বলে ফেলল”। 📚[মুসলিম, হাদিস: ২৭৪৪, জামে সহীহ: ৩৬৮/৪]
🔴🔴 আল্লাহ্ তা'আলা বলেন:
أَلَمْ يَعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ هُوَ يَقْبَلُ التَّوْبَةَ عَنْ عِبَادِهِ وَيَأْخُذُ الصَّدَقَاتِ وَأَنَّ اللَّهَ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ
তারা কি জানে না যে, নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর বান্দাদের তাওবা কবুল করেন এবং সদকা গ্রহণ করেন? আর নিশ্চয় আল্লাহ তিনিই তওবা কবুলকারী, অসীম দয়ালু।
📚[তাওবা, ৯/১০৪]
وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَا الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তওবা কর যেন তোমরা সফলকাম হতে পার। 📚[আন-নুর, ২৪/৩১]
إِنَّهُ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ
নিশ্চয় তিনিই তওবা কবুলকারী, অসীম দয়ালু।
📚[আল-বাকারা, ২/৩৭, ২/৫৪]
إِنَّ اللَّهَ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ
নিশ্চয় আল্লাহ তিনিই তওবা কবুলকারী, অসীম দয়ালু। 📚[তাওবা, ৯/১১৮]
إِنَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ
নিশ্চয় আপনি (আল্লাহ) তাওবা কবুলকারী, অসীম দয়ালু। 📚[আল-বাকারা, ২/১২৮]
শুধু নিজের জন্য নয় বরং মুমিনদের জন্য ক্ষমা চাওয়া মুসলিম উম্মার একটি অনন্য এবং মহৎ বৈশিষ্ট্য।
🔴🔴 আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলেন:
وَاسْتَغْفِرِ اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ كَانَ غَفُورًا رَحِيمًا
আর আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাও, নিশ্চয় আল্লাহ হলেন ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু। 📚[আন-নিসা, ৪/১০৬]
وَاسْتَغْفِرْ لَهُنَّ اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ
আর তুমি তাদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও, নিশ্চয় আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু। মুমতাহিনা, ৬০/১২
فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَاسْتَغْفِرْهُ إِنَّهُ كَانَ تَوَّابًا
অতঃপর তুমি তোমার রবের প্রশংসার সাথে পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর এবং তাঁর কাছে ক্ষমা চাও, নিশ্চয় তিনি হলেন তাওবা কবুলকারী। 📚[নাসর, ১১০/৩]
فَاصْبِرْ إِنَّ وَعْدَ اللَّهِ حَقٌّ وَاسْتَغْفِرْ لِذَنْبِكَ وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ بِالْعَشِيِّ وَالإبْكَارِ
কাজেই তুমি ধৈর্য ধারণ কর, নিশ্চয় আল্লাহর ওয়াদা সত্য, তুমি তোমার ভুল-ত্রুটির জন্যে ক্ষমা চাও এবং সকাল-সন্ধ্যায় তোমার রবের প্রশংসাসহ পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর। 📚[গাফির, ৪০/৫৫]
فَاعْلَمْ أَنَّهُ لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَاسْتَغْفِرْ لِذَنْبِكَ وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مُتَقَلَّبَكُمْ وَمَثْوَاكُمْ
অতএব জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ ছাড়া কোন (সত্য) উপাস্য নেই আর তোমার জন্য এবং মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদের ভুলত্রুটির জন্যে তুমি ক্ষমা চাও আর আল্লাহ তোমাদের গতিবিধি ও অবস্থান সম্পর্কে ভালভাবে অবগত আছেন। 📚[মুহাম্মদ, ৪৭/১৯]
আল্লাহ্ তা’আলা শিরককারিকে কখনই ক্ষমা করবেন না যদি সে মৃত্যুর পূর্বে তওবা করেন। তার সাথে এ কথাও সত্য যে মানুষ নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত ইত্যাদি যতই আল্লাহর ইবাদত করুক না কেন কিংবা নফ্সের হক মানুষ যত সুন্দরভাবেই আদায় করুক না কেন, নিজের মধ্যে চারিত্রিক উন্নতি যতই ঘটুক না কেন, যতক্ষণ না সে অন্য মানুষের হক-এর প্রতি মনোনিবেশ করবে, ততক্ষণ সে পূর্ণাঙ্গ মানুষ হ’তে পারবে না।
🔵🔵 একবার রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর পাশে উপবিষ্ট সাহাবায়ে কিরাম (রাঃ)কে বললেন-"তোমরা কি জানো,গরীব কে ?" সাহাবায়ে কিরাম (রাঃ) বললেন-আমাদের মধ্যে তো গরীব তাদেরকে বলা হয়,যাদের কাছে ধন-সম্পদ,টাকা-পয়সা না থাকে। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ)বললেন-"প্রকৃত পক্ষে আমার উম্মতের মধ্যে সবচেয়ে গরীব সে,যে কিয়ামতের দিন নামায,রোযা,যাকাত, সবকিছু নিয়ে উঠবে,কিন্তু তার এ কর্মগুলো থাকবে যে,সে দুনিয়াতে কারো সাথে মন্দ আচরন করেছে, কারো কাছে অর্থের ঋণী, কারো নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে,কারো সম্পদ আত্মসাৎ করেছে,কাউকে আঘাত করেছে,কাউকে খুন করেছে ইত্যাদি,তাই এর বিনিময়ে কিয়ামতের দিন তার কিছু নেকী একে দিবে,কিছু নেকী ওকে দিবে। এভাবে দিতে দিতে বান্দার হক আদায়ের পূর্বে যদি তার নেকী শেষ হয়ে যায়,তাহলে এই হকদারদের গুনাহ তার উপর চাপিয়ে দেওয়া হবে।এরপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।" 📚[মুসলিম শরীফ]
🔴🔴 আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলেন:
নিশ্চয় আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে তাঁর সাথে কাউকে শরীক করে। এছাড়া যাকে ইচ্ছা, ক্ষমা করেন। যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে সুদূর ভ্রান্তিতে পতিত হয়। 📚[সূরা নিসা: ১১৬]
🔴🔴 আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা আরো বলেন:
اسْتَغْفِرْ لَهُمْ أَوْ لا تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ إِنْ تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ سَبْعِينَ مَرَّةً فَلَنْ يَغْفِرَ اللَّهُ لَهُمْ ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ كَفَرُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَاللَّهُ لا يَهْدِي الْقَوْمَ الْفَاسِقِينَ
তুমি তাদের জন্য ক্ষমা চাও কিংবা তাদের জন্য ক্ষমা না চাও একই কথা, যদি তুমি তাদের জন্য সত্তর বারও ক্ষমা চাও, তবুও কখনোই আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করবেন না, এই জন্য যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে অস্বীকার (অমান্য) করেছে, আর আল্লাহ ফাসিকদের সঠিক পথ দেখান না। 📚[তওবা, ৯/৮০]
কেউ হয়ত বলতে পারেন, আমি তাওবা করতে চাই কিন্তু তাওবা করলে আমার লাভ কি? এবং কে আমাকে নিশ্চয়তা দেবে যে, আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করবেন? আমি সঠিক পথে চলতে চাই কিন্তু আমার মধ্যে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব রয়েছে, যদি আমি নিশ্চিতভাবে জানতে পারতাম যে আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করবেন তাহলে আমি তাওবা করতাম?
আমি তাকে বলব, আপনার ভিতরে যে অনুভূতি সৃষ্টি হয়েছে সে অনুভূতি ইতঃপূর্বে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)এর সাহাবাদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছিল। আপনি যদি মনোযোগ সহকারে নিম্নোক্ত দুটি রেওয়ায়েত পড়েন, তাহলে আপনার মনের প্রশ্ন আশা করি দূর হয়ে যাবে।
#প্রথমত: ইমাম মুসলিম আমর ইবনে আ’স (রা:) ইসলাম গ্রহণের ঘটনা বর্ণনা করেন। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি বলেন: “মহান আল্লাহ যখন আমার অন্তরে ইসলামকে পছন্দনীয় করে দিলেন, তখন আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)এর নিকট গিয়ে বললাম, আপনি আপনার হাত বাড়ান আমি বাইয়াত করবো। তখন তিনি হাত বাড়ালে আমি হাত গুটিয়ে নেই। তিনি বলেন, হে আমর তোমার কি হল? আমি বললাম, আমি শর্ত করতে চাই। তিনি বলেন, কিসের শর্ত? বললাম, আমাকে যেন ক্ষমা করে দেয়া হয়। তিনি বললেন, হে আমর! তুমি কি জাননা যে, ইসলাম পূর্বের সবকিছু ধ্বংস করে দেয় এবং হিজরত পূর্বের সমস্ত গুনাহ ধ্বংস করে দেয়।
#দ্বিতীয়ত: সহীহ মুসলিমে ইবনে আব্বাস (রা:) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: কিছু মুশরিক লোক মানুষ হত্যা করে এবং তারা অনেক হত্যাকান্ড ঘটায়, জিনা করে এবং অনেক ব্যভিচার করে এরপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ)এর নিকট এসে বলে, আপনি যা বলেন এবং যার দিকে আহ্বান করেন তা অতি উত্তম। এখন আপনি যদি আমাদেরকে জানাতেন যে, আমরা যা করেছি এর কি কাফ্ফারা রয়েছে? তখন আল্লাহর এ বাণী নাযিল হয়: 🔴🔴
﴿ وَٱلَّذِينَ لَا يَدۡعُونَ مَعَ ٱللَّهِ إِلَٰهًا ءَاخَرَ وَلَا يَقۡتُلُونَ ٱلنَّفۡسَ ٱلَّتِي حَرَّمَ ٱللَّهُ إِلَّا بِٱلۡحَقِّ وَلَا يَزۡنُونَۚ وَمَن يَفۡعَلۡ ذَٰلِكَ يَلۡقَ أَثَامٗا ٦٨ يُضَٰعَفۡ لَهُ ٱلۡعَذَابُ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ وَيَخۡلُدۡ فِيهِۦ مُهَانًا ٦٩ إِلَّا مَن تَابَ وَءَامَنَ وَعَمِلَ عَمَلٗا صَٰلِحٗا فَأُوْلَٰٓئِكَ يُبَدِّلُ ٱللَّهُ سَئَِّاتِهِمۡ حَسَنَٰتٖۗ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورٗا رَّحِيمٗا ٧٠ ﴾ [الفرقان: ٦٨، ٧٠]
“আর যারা আল্লাহর সাথে অন্য কোন মা’বুদের উপাসনা করে না এবং আল্লাহ যাকে [হত্যা করা] হারাম করে দিয়েছেন, তাকে হত্যা করে না, শরীয়ত সম্মত কারণ ব্যতীত এবং তারা ব্যভিচার করে না, আর যে ব্যক্তি এরূপ কাজ করবে, তাকে শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। কিয়ামাতের দিন তার শাস্তি বৃদ্ধি পেতে থাকবে এবং সে তাতে অনন্তকাল লাঞ্ছিত অবস্থায় থাকবে। কিন্তু যারা তাওবা করবে এবং ঈমান আনবে আর নেক কাজ করতে থাকবে আল্লাহ তাদের পাপসমূহকে পুণ্যে পরিবর্তন করে দিবেন। আর আল্লাহ বড়ই করুণাময়। 📚[সূরা আল-ফুরকারন, আয়াত: ৬৮-৭০]
এবং এ আয়াতটিও নাযিল হয়: 🔴🔴
﴿ ۞قُلۡ يَٰعِبَادِيَ ٱلَّذِينَ أَسۡرَفُواْ عَلَىٰٓ أَنفُسِهِمۡ لَا تَقۡنَطُواْ مِن رَّحۡمَةِ ٱللَّهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ يَغۡفِرُ ٱلذُّنُوبَ جَمِيعًاۚ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلۡغَفُورُ ٱلرَّحِيمُ ٥٣ ٥٤ ﴾ [الزمر: ٥٢، ٥٣]
“আপনি বলে দিন, [আল্লাহ বলেন] হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজেদের উপর অত্যাচার করেছো, তোমরা আল্লাহ তা’আলার রহমত হতে নিরাশ হয়ো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ [অতীতের] সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করবেন। নিশ্চয় তিনি বড়ই ক্ষমাশীল, দয়ালু।” 📚[সূরা যুমার: ৫২, ৫৩]
الَّذِينَ يَجْتَنِبُونَ كَبَائِرَ الإثْمِ وَالْفَوَاحِشَ إِلا اللَّمَمَ إِنَّ رَبَّكَ وَاسِعُ الْمَغْفِرَةِ هُوَ أَعْلَمُ بِكُمْ
যারা বড় বড় গোনাহ ও অশ্লীলকার্য থেকে বিরত থাকে কিন্তু ছোটখাট গুনাহ হয়ে যায় নিশ্চয় তোমার রব ক্ষমা করার ব্যাপারে অত্যন্ত প্রশস্ত (বিশাল/ব্যাপক), তিনি তোমাদের সম্পর্কে ভালভাবেই জানেন। 📚[নাজম, ৫৩/৩২]
فَمَنْ تَابَ مِنْ بَعْدِ ظُلْمِهِ وَأَصْلَحَ فَإِنَّ اللَّهَ يَتُوبُ عَلَيْهِ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ
তবে যে তার গুনাহের পর তওবা করে আর সংশোধিত হয়, তবে নিশ্চয় আল্লাহ তার তওবা কবুল করবেন, নিশ্চয় আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু। মায়েদা, 📚[৫/৩৯]
إِلا الَّذِينَ تَابُوا وَأَصْلَحُوا وَبَيَّنُوا فَأُولَئِكَ أَتُوبُ عَلَيْهِمْ وَأَنَا التَّوَّابُ الرَّحِيمُ إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا وَمَاتُوا وَهُمْ كُفَّارٌ أُولَئِكَ عَلَيْهِمْ لَعْنَةُ اللَّهِ وَالْمَلائِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ
কিন্তু যারা তওবা করেছে ও সংশোধিত হয়েছে আর স্পষ্টভাবে সত্য বর্ণনা করেছে তাহলে তাদের তাওবা আমি কবুল করব, নিশ্চয় আমি তওবা কবুলকারী, অসীম দয়ালু। নিশ্চয় যারা কুফরী করে এবং কাফের অবস্থায়ই মৃত্যুবরণ করেছে, তাদের উপর আল্লাহর, ফেরেশতাগনের, এবং সকল মানুষের লা’নত।
📚[আল-বাকারা, ২/১৬০-১৬১]
إِنَّمَا التَّوْبَةُ عَلَى اللَّهِ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السُّوءَ بِجَهَالَةٍ ثُمَّ يَتُوبُونَ مِنْ قَرِيبٍ فَأُولَئِكَ يَتُوبُ اللَّهُ عَلَيْهِمْ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا وَلَيْسَتِ التَّوْبَةُ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ حَتَّى إِذَا حَضَرَ أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ إِنِّي تُبْتُ الآنَ وَلا الَّذِينَ يَمُوتُونَ وَهُمْ كُفَّارٌ أُولَئِكَ أَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا
আসলে আল্লাহ তাদের তাওবা কবুল করেন, যারা ভুলবশতঃ মন্দ কাজ করে ফেলে তারপর অবিলম্বে তারা তওবা করে, অতঃপর আল্লাহ এদের তাওবা কবুল করবেন, আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। আর তাদের তাওবা নিস্ফল, যারা গুনাহ করতেই থাকে অবশেষে যখন তাদের কারো মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন বলে, নিশ্চয় আমি এখন তাওবা করছি, আর তাওবা তাদের জন্যও নয়, যারা কাফির অবস্থায় মারা যায়, আমি এদের জন্যই তৈরী করেছি যন্ত্রনাদায়ক আযাব।
📚[আন-নিসা, ৪/১৭-১৮]
إِلا الَّذِينَ تَابُوا مِنْ بَعْدِ ذَلِكَ وَأَصْلَحُوا فَإِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا بَعْدَ إِيمَانِهِمْ ثُمَّ ازْدَادُوا كُفْرًا لَنْ تُقْبَلَ تَوْبَتُهُمْ وَأُولَئِكَ هُمُ الضَّالُّونَ
কিন্তু তারা ছাড়া যারা এরপরে তওবা করেছে আর নিজেদেরকে সংশোধন করেছে তবে নিশ্চয় আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু। নিশ্চয় যারা ঈমান আনার পরে কুফরী করেছে তার এরপর তাদের কুফরীকে বৃদ্ধি করেছে তাদের তওবা কক্ষনো কবুল করা হবে না আর তারাই পথভ্রষ্ট। 📚[আলে-ইমরান, ৩/৮৯-৯০]
إِنَّ الَّذِينَ فَتَنُوا الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ ثُمَّ لَمْ يَتُوبُوا فَلَهُمْ عَذَابُ جَهَنَّمَ وَلَهُمْ عَذَابُ الْحَرِيقِ
নিশ্চয় যারা মুমিন পুরুষ ও নারীকে যুলুম-নিপীড়ন করেছে, অতঃপর তওবা করে নাই, তবে তাদের জন্য জাহান্নামের শাস্তি রয়েছে, আর তাদের জন্য আগুনে দগ্ধ হওয়ার শাস্তি রয়েছে। 📚[আল-বুরুজ, ৮৫/১০]
হে মুসলিম ভাই! আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে, তাওবা দ্বারা শুধু গুনাহ মাপ হয় না বরং তাওবা আরও অনেক ফায়েদা ও লাভ রয়েছে। যেমন-
✔১. তাওবা দ্বারা আল্লাহর ভালো বাসা ও মহব্বত লাভ হয়:
আল্লাহ তা’আলা তাওবাকারীকে মহব্বত করেন।
🔴🔴 আল্লাহ তা’আলা বলেন,
﴿ إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلتَّوَّٰبِينَ وَيُحِبُّ ٱلۡمُتَطَهِّرِينَ ٢٢٢ ﴾ [البقرة: ٢٢٢]
“নিশ্চয় আল্লাহ তাওবাকারীদেরকে ভালবাসেন এবং ভালবাসেন অধিক পবিত্রতা অর্জনকারীদেরকে”।[33]
✔২. দুনিয়া ও আখেরাতের সফলতা অর্জন:
🔴🔴 তাওবা দ্বারা একজন বান্দা দুনিয়া ও আখেরাতে সফলকাম হয়। আল্লাহ তা’আলা বলেন,
﴿ وَتُوبُوٓاْ إِلَى ٱللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ ٣١ ﴾ [النور : ٣١]
“হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার”।
✔৩. গুনাহগুলোকে নেকী দ্বারা পরিবর্তন করে দেয়া হয়:
বান্দা যখন তার অপরাধ বুঝতে পেরে সত্যিকার তাওবা করে, তখন আল্লাহ তা’আলা শুধু তার গুনাহকেই ক্ষমা করবেন না, বরং গুনাহগুলোকে নেকী দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন। আপনি মহান আল্লাহ তা’আলার এ বাণীকে একটু গভীরভাবে চিন্তা করে দেখুন, তাতে আল্লাহ তা’আলা বান্দাদের কী সু-সংবাদ দিচ্ছেন:
﴿ إِلَّا مَن تَابَ وَءَامَنَ وَعَمِلَ عَمَلٗا صَٰلِحٗا فَأُوْلَٰٓئِكَ يُبَدِّلُ ٱللَّهُ سَئَِّاتِهِمۡ حَسَنَٰتٖۗ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورٗا رَّحِيمٗا ٧٠ ﴾ [الفرقان: ٧٠]
“তবে যে তাওবা করে, ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে। পরিণামে আল্লাহ তাদের পাপগুলোকে পূণ্য দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন। আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু”।
এখানে তাওবাকারী হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন, আমি ছিলাম পথভ্রষ্ট, নামায পড়তাম না, ইসলামের গন্ডির বাইরে ছিলাম, আমি কিছু ভাল কাজও করেছি, এখন তাওবা করার পর এগুলো কি ধরা হবে, নাকি সব হাওয়া হয়ে যাবে?
🔵🔵 আপনার প্রশ্নের জবাব হল, উরওয়া ইবনে জুবাইর (রা) হতে বর্ণিত হাদীসটি। তিনি বলেন, “হাকীম ইবনে হিজাম তাকে জানিয়েছেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)কে বলেছেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি জাহেলিয়াতের যুগে দান-খয়রাত, গোলাম মুক্ত করা, আত্মীয়তা রক্ষা করা ইত্যাদি নেকীর কাজ করতাম। আমি কি এতে নেকী পাব? রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, “তুমি ইসলাম গ্রহণ করেছো, পূর্বেরগুলোকে উত্তম ভাবেই পাবে।” 📚[বুখারী]
সুতরাং, এসব পাপ ক্ষমায় পরিবর্তন করে দেয়া হবে এবং এসব জাহেলিয়াতের যুগের নেকী তাওবার পরে ঠিক রাখা হবে। তাহলে আর কি-ইবা বাকী থাকলো?
✔৫. তাওবা দ্বারা জান্নাত লাভ হয়:
তাওবা জান্নাতে প্রবেশের কারণ হয়। আল্লাহ তা’আলা তাওবাকারীদের গুনাহ ক্ষমা করবেন এবং তাদের জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।
🔴🔴 আল্লাহ তা’আলা বলেন,
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ تُوبُوٓاْ إِلَى ٱللَّهِ تَوۡبَةٗ نَّصُوحًا عَسَىٰ رَبُّكُمۡ أَن يُكَفِّرَ عَنكُمۡ سَئَِّاتِكُمۡ وَيُدۡخِلَكُمۡ جَنَّٰتٖ تَجۡرِي مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُ ٨ ﴾ [التحريم: ٨]
“হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা কর, খাঁটি তাওবা; আশা করা যায় তোমাদের রব তোমাদের পাপসমূহ মোচন করবেন এবং তোমাদেরকে এমন জান্নাতসমূহে প্রবেশ করাবেন যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত”।
🔴🔴 আল্লাহ তা’আলা আরও বলেন,
﴿ وَٱلَّذِينَ إِذَا فَعَلُواْ فَٰحِشَةً أَوۡ ظَلَمُوٓاْ أَنفُسَهُمۡ ذَكَرُواْ ٱللَّهَ فَٱسۡتَغۡفَرُواْ لِذُنُوبِهِمۡ وَمَن يَغۡفِرُ ٱلذُّنُوبَ إِلَّا ٱللَّهُ وَلَمۡ يُصِرُّواْ عَلَىٰ مَا فَعَلُواْ وَهُمۡ يَعۡلَمُونَ ١٣٥ أُوْلَٰٓئِكَ جَزَآؤُهُم مَّغۡفِرَةٞ مِّن رَّبِّهِمۡ وَجَنَّٰتٞ تَجۡرِي مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُ خَٰلِدِينَ فِيهَاۚ وَنِعۡمَ أَجۡرُ ٱلۡعَٰمِلِينَ ١٣٦ ﴾ [ال عمران: ١٣٥، ١٣٦]
“আর যারা কোন অশ্লীল কাজ করলে অথবা নিজদের প্রতি যুলম করলে আল্লাহকে স্মরণ করে, অতঃপর তাদের গুনাহের জন্য ক্ষমা চায়। আর আল্লাহ ছাড়া কে গুনাহ ক্ষমা করবে ? আর তারা যা করেছে, জেনে শুনে তা তারা বার বার করে না। এরাই তারা, যাদের প্রতিদান তাদের রবের পক্ষ থেকে মাগফিরাত ও জান্নাতসমূহ যার তলদেশে প্রবাহিত রয়েছে নহরসমূহ। সেখানে তারা স্থায়ী হবে। আর আমলকারীদের প্রতিদান কতই না উত্তম!
✔৬. দুনিয়াতে উত্তম জীবন উপকরণ ও আখেরাতে উত্তম প্রতিদান লাভ হয়:
🔴🔴 আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআনে করীমে এরশাদ করেন-
﴿ وَأَنِ ٱسۡتَغۡفِرُواْ رَبَّكُمۡ ثُمَّ تُوبُوٓاْ إِلَيۡهِ يُمَتِّعۡكُم مَّتَٰعًا حَسَنًا إِلَىٰٓ أَجَلٖ مُّسَمّٗى وَيُؤۡتِ كُلَّ ذِي فَضۡلٖ فَضۡلَهُۥۖ ٣ ﴾ [هود: ٣]
“আর তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও। তারপর তার কাছে ফিরে যাও, (তাহলে) তিনি তোমাদেরকে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত উত্তম ভোগ-উপকরণ দেবেন এবং প্রত্যেক আনুগত্যশীলকে তাঁর আনুগত্য মুতাবিক দান করবেন”।
✔৭. আসমান থেকে সময়মত বৃষ্টি ও তোমাদের শক্তি দান করবেন:
🔴🔴 আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআনে হুদ আ. এর ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, হুদ তার সম্প্রদায়ের লোকদের বলছিল,
﴿ وَيَٰقَوۡمِ ٱسۡتَغۡفِرُواْ رَبَّكُمۡ ثُمَّ تُوبُوٓاْ إِلَيۡهِ يُرۡسِلِ ٱلسَّمَآءَ عَلَيۡكُم مِّدۡرَارٗا وَيَزِدۡكُمۡ قُوَّةً إِلَىٰ قُوَّتِكُمۡ وَلَا تَتَوَلَّوۡاْ مُجۡرِمِينَ ٥٢ ﴾ [هود: ٥٢]
“হে আমার কওম, তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও অতঃপর তার কাছে তাওবা কর, তাহলে তিনি তোমাদের উপর মুষলধারে বৃষ্টি পাঠাবেন এবং তোমাদের শক্তির সাথে আরো শক্তি বৃদ্ধি করবেন। আর তোমরা অপরাধী হয়ে বিমুখ হয়ো না”।
✔৮. দু’আ কবুল হয়:
🔴🔴 আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআনে সালেহ আ. এর ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, সালেহ তার সম্প্রদায়ের লোকদের বলছিল,
﴿ ۞وَإِلَىٰ ثَمُودَ أَخَاهُمۡ صَٰلِحٗاۚ قَالَ يَٰقَوۡمِ ٱعۡبُدُواْ ٱللَّهَ مَا لَكُم مِّنۡ إِلَٰهٍ غَيۡرُهُۥۖ هُوَ أَنشَأَكُم مِّنَ ٱلۡأَرۡضِ وَٱسۡتَعۡمَرَكُمۡ فِيهَا فَٱسۡتَغۡفِرُوهُ ثُمَّ تُوبُوٓاْ إِلَيۡهِۚ إِنَّ رَبِّي قَرِيبٞ مُّجِيبٞ ٦١ ﴾ [هود: ٦١]
আর সামূদ জাতির প্রতি (পাঠিয়েছিলাম) তাদের ভাই সালিহকে। সে বলল, ‘হে আমার কওম, তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর, তিনি ছাড়া তোমাদের কোন (সত্য) ইলাহ নেই, তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে এবং সেখানে তোমাদের জন্য আবাদের ব্যবস্থা করেছেন । সুতরাং তোমরা তাঁর কাছে ক্ষমা চাও, অতঃপর তাঁরই কাছে তাওবা কর। নিশ্চয় আমার রব নিকটে,সাড়াদানকারী’।
✔৯. তাওবার দ্বারা যাবতীয় বলা-মুসিবত ও আল্লাহর আযাব দূর হয়:
🔴🔴 আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআনে এরশাদ করেন-
﴿ وَمَا كَانَ ٱللَّهُ لِيُعَذِّبَهُمۡ وَأَنتَ فِيهِمۡۚ وَمَا كَانَ ٱللَّهُ مُعَذِّبَهُمۡ وَهُمۡ يَسۡتَغۡفِرُونَ ٣٣ ﴾ [الانفال: ٣٣]
আর আল্লাহ এমন নন যে, তাদেরকে আযাব দেবেন এ অবস্থায় যে, তুমি তাদের মাঝে বিদ্যমান এবং আল্লাহ তাদেরকে আযাব দানকারী নন এমতাবস্থায় যে, তারা ক্ষমা প্রার্থনা করছে।
✔১০. তাওবার দ্বারা পেরেশানি দূর হয়, বিপদ থেকে মুক্ত পায় এবং রিযিক বৃদ্ধি পায়:
🔵🔵 আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রা:) হতে হাদিস বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি বেশি বেশি করে আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থণা করে, আল্লাহ তা’আলা তার সমস্ত পেরেশানীকে দূর করে দেয়, সকল বিপদ থেকে উদ্ধার করে এবং তাকে তার ধারণাতীত রিযিক দান করে”।
🔴🔴 আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআনে এরশাদ করেন-
إِلا مَنْ تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ عَمَلا صَالِحًا فَأُولَئِكَ يُبَدِّلُ اللَّهُ سَيِّئَاتِهِمْ حَسَنَاتٍ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَحِيمًا وَمَنْ تَابَ وَعَمِلَ صَالِحًا فَإِنَّهُ يَتُوبُ إِلَى اللَّهِ مَتَابًا
তবে যারা তওবা করে ও ঈমান আনে আর সৎ আমল করে তবে আল্লাহ তাদের পাপগুলোকে পুন্যের দ্বারা পরিবর্তত করে দেবেন, আল্লাহ হলেন অত্যন্ত ক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু। আর যে তওবা করে আর সৎ আমল করে তবে নিশ্চয় সে পরিপূর্ণভাবে আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করেছে। 📚[ফুরকান, ২৫/৭০-৭১]
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا تُوبُوا إِلَى اللَّهِ تَوْبَةً نَصُوحًا عَسَى رَبُّكُمْ أَنْ يُكَفِّرَ عَنْكُمْ سَيِّئَاتِكُمْ وَيُدْخِلَكُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الأنْهَارُ
হে ঈমানদারগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তওবা কর, খাঁটি তাওবা, আশা করা যায়, তোমাদের রব তোমাদের পাপসমূহ মোচন করে দিবেন আর তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে যার তলদেশে নহরসমুহ প্রবাহিত। 📚[তাহরীম, ৬৬/৮]
وَالَّذِينَ إِذَا فَعَلُوا فَاحِشَةً أَوْ ظَلَمُوا أَنْفُسَهُمْ ذَكَرُوا اللَّهَ فَاسْتَغْفَرُوا لِذُنُوبِهِمْ وَمَنْ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلا اللَّهُ وَلَمْ يُصِرُّوا عَلَى مَا فَعَلُوا وَهُمْ يَعْلَمُونَ أُولَئِكَ جَزَاؤُهُمْ مَغْفِرَةٌ مِنْ رَبِّهِمْ وَجَنَّاتٌ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الأنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَنِعْمَ أَجْرُ الْعَامِلِينَ
আর যারা কোন অশ্লীল কাজ করে ফেলে কিংবা তাদের নিজের উপর জুলুম করে ফেলে তখনই আল্লাহকে স্মরণ করে অতঃপর তাদের পাপের জন্য ক্ষমা চায়, আল্লাহ ছাড়া আর কে আছে যে পাপসমূহ ক্ষমা করতে পারেন? তারা যা করে ফেলেছে, জেনে শুনে তার পুনরাবৃত্তি করে না। এরাই তারা, যাদের প্রতিদান তাদের রবের পক্ষ থেকে ক্ষমা ও জান্নাত যার তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে আর সৎকর্মশীলদের প্রতিদান কতই না উত্তম! 📚[আলে-ইমরান, ৩/১৩৫-১৩৬]
وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَهُمْ مَغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ عَظِيمٌ وَالَّذِينَ كَفَرُوا وَكَذَّبُوا بِآيَاتِنَا أُولَئِكَ أَصْحَابُ الْجَحِيمِ
আর আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজসমূহ করেছে, তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরুস্কার আর যারা অবিশ্বাস করেছে ও আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে, তারাই প্রজ্বলিত আগুনের অধিবাসী।
📚[মায়েদা, ৫/৯-১০]
No comments:
Post a Comment