Tuesday, February 24, 2015

দৃষ্টি সংযত করার ২০ টি উপায়: দৃষ্টি সংযত রাখার অনেক উপায় আছে।



'‎দৃষ্টি সংযত করার ২০ টি উপায়: দৃষ্টি সংযত রাখার অনেক উপায় আছে। আর আল্লাহর
কাছে প্রার্থনা করি যেন আল্লাহ আমাদের সাহায্য
করেন।
১। সবসময় মনে রাখা যে আল্লাহ আপনাকে দেখছেন ,
আপনি যেখানেই যান আল্লাহ আপানার সঙ্গেই আছেন
(তাঁর সর্বময় জ্ঞানের মাধ্যমে)
হতে পারে আপনি লুকিয়ে আপনার পাশের
জনকে দেখছেন যা সে জানে না, কিন্তু আল্লাহ
তা জানছেন।
ﻳَﻌْﻠَﻢُ ﺧَﺎﺋِﻨَﺔَ ﺍﻟْﺄَﻋْﻴُﻦِ ﻭَﻣَﺎ ﺗُﺨْﻔِﻲ ﺍﻟﺼُّﺪُﻭﺭُ
চোখের চুরি এবং অন্তরের গোপন বিষয়
তিনি জানেন। (সূরা গাফিরঃ১৯)
২) আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া ,
মিনতি সহকারে তাঁকে ডাকা। আল্লাহ বলেন-
ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺭَﺑُّﻜُﻢُ ﺍﺩْﻋُﻮﻧِﻲ ﺃَﺳْﺘَﺠِﺐْ ﻟَﻜُﻢْ
তোমাদের পালনকর্তা বলেন,
তোমরা আমাকে ডাক, আমি সাড়া দেব।
(সূরা গাফিরঃ৬০)
৩) সবসময় মনে রাখবেন, আপনি যা যা নেয়ামত উপভোগ
করছেন তার সবই আল্লাহর তরফ থেকে পেয়েছেন, আর এ
জন্য আপনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত। আল্লাহর
দেওয়া দৃষ্টির নেয়ামতের
কৃতজ্ঞতা জানাতে হলে আপানাকে আপনার চোখ
দুটিকে সে সব জিনিস দেখা থেকে বিরত
রাখতে হবে যা যা আল্লাহ নিষেধ করেছেন। ভাল কাজের
প্রতিফল কি ভাল ছাড়া কিছু হতে পারে?
ﻭَﻣَﺎ ﺑِﻜُﻢ ﻣِّﻦ ﻧِّﻌْﻤَﺔٍ ﻓَﻤِﻦَ ﺍﻟﻠَّﻪِ
তোমাদের কাছে যে সমস্ত নেয়ামত আছে,
তা আল্লাহরই পক্ষ থেকে। (সূরা নামলঃ৫৩)
৪) নিজের সাথে সংগ্রাম করা , দৃষ্টি নত রাখার জন্য
নিজে নিজে অভ্যাস করার চেষ্টা করা এবং এ
কাজে ধৈর্যশীল হওয়া ও হাল ছেড়ে না দেওয়া।
আল্লাহ বলেন-
যারা আমার পথে সাধনায় আত্মনিয়োগ করে,
আমি অবশ্যই তাদেরকে আমার পথে পরিচালিত
করব। নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মপরায়ণদের
সাথে আছেন। (সূরা আনকাবুতঃ ৬৯)
৫) এমন সব স্থান এড়িয়ে চলার চেষ্টা করা যেখানে নিষিদ্ধ
দৃষ্টির প্রলোভনে পড়ার আশঙ্কা আছে বলে মনে হয়। যেমন,
মার্কেট, বিপনী বিতান, পর্দাহীন দাওয়াতের আসর,
রাস্তা ঘাটে অলস আড্ডা, ইন্টারনেটে অহেতুক
ঘাঁটাঘাঁটি ইত্যাদি। রসুল (সাঃ) বলেছেন-
তোমরা রাস্তার উপর বসা ছেড়ে দাও। লোকজন
বলল, এ ছাড়া আমাদের কোন উপায় নেই।
কেননা, এটাই আমাদের উঠাবসার জায়গা আর
এখানেই আমরা কথাবার্তা বলে থাকি।
তিনি বললেন, “যদি তোমাদের
সেখানে বসতেই হয়, তবা রাস্তার হক আদায়
করবে।” তারা বলল, রাস্তার হক কি?
তিনি (সাঃ) বললেন, ‘ দৃষ্টি অবনমিত রাখা, কষ্ট
দেওয়া হতে বিরত থাকা, সালামের জবাব
দেওয়া, সৎকাজের আদেশ
দেওয়া এবং অসৎকাজে নিষেধ
করা।’ (বুখারী ২৩০৩; ইফা)
ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রেও এই হাদিসটি প্রযোজ্য।
এখানেও নিজের দৃষ্টিকে (নিষিদ্ধ সাইট, অন্যের
প্রোফাইল অকারণে দেখার মাধ্যমে) যত্রতত্র নিক্ষেপ
করা, কাউকে কটাক্ষ করে মন্তব্য করা, অর্থহীন
আলোচনায় লিপ্ত হওয়া অনুমোদনযোগ্য নয়।
৬) সবসময় এটা মনে রাখা যে, পরিস্থিতি যেমনই হোক,
নিষিদ্ধের প্রতি আকর্ষণ বা প্রলোভন যতই বড় হোক,
আপনার মনের ভেতরে যতই আবেগের তাড়না আসুক, এই
ব্যপারে আপনার আর কোন পথ খোলা নেই। আপনাকে সব
জায়গায়, সব সময় নিষিদ্ধ জিনিস থেকে দৃষ্টি সংযত
করতেই হবে। আশেপাশের কলুষিত পরিবেশের অজুহাত
দিয়ে বা আপনি প্রলোভনের শিকার হয়েছেন এসব
কথা বলে নিজের দোষের সপক্ষে যুক্তি দেখানোর কোন
অবকাশ নেই।
৭) বেশী বেশী করে নফল ইবাদত করা, কারণ নিয়মিত ফরজ
এবাদতের সাথে সাথে নফল ইবাদত করে নিজের
শারীরিক কার্যাবলীকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়।
হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ বলেছেন,
“…আমার বান্দা সর্বদা নফল ইবাদত দ্বারা আমার
নৈকট্য অর্জন করতে থাকবে। আমন
কি অবশেষে আমি তাকে আমার এমন প্রিয়পাত্র
বানিয়ে নেই যে, আমিই তার কান হয়ে যাই
যা দিয়ে সে শোনে (অর্থাৎ আল্লাহর
ইচ্ছা অনুযায়ী শোনে)আমিই তার চোখ হয়ে যাই
যা দিয়ে সে সবকিছু দেখে (অর্থাৎ আল্লাহর
ইচ্ছা অনুযায়ী দেখে) আমিই তার হাত হয়ে যাই
যা দিয়ে সে ধরে (অর্থাৎ আল্লাহর
ইচ্ছা অনুযায়ী হাত দিয়ে কাজ করে) আমিই তার
পা হয়ে যাই যা দিয়ে সে চলে (অর্থাৎ
আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী চলে) সে যদি আমার
কাছে কোন কিছু চায়, তবে আমি নিশ্চয়ই
তাকে তা দান করি। আর যদি সে আমার
কাছে আশ্রয় চায়, তবে অবশ্যই আমি তাঁকে আশ্রয়
দেই।…” [সহীহ বুখারী ৬০৫৮]
৮) এটা মনে রাখা যে আমরা যে জমীনের উপর গুনাহ
করি, সেই জমীন আমাদের বিরুদ্ধে আমাদের গুনাহের
সাক্ষী দেবে। আল্লাহ বলেনঃ
ﻳَﻮْﻣَﺌِﺬٍ ﺗُﺤَﺪِّﺙُ ﺃَﺧْﺒَﺎﺭَﻫَﺎ
সেদিন সে (পৃথিবী) তার বৃত্তান্ত বর্ণনা করবে।
(সূরা জিলজালঃ ৪)
৯) যে আয়াত দৃষ্টিকে এদিক সেদিক অযথা নিষিদ্ধ
জিনিসের প্রতি নিক্ষেপ করতে নিষেধ
করে তা মনে করা। যেমনঃ
“মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত
রাখে (নিষিদ্ধ জিনিস দেখা হতে)
এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে।
এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয়
তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত
আছেন।” [সূরা নুরঃ৩০]
১০। অপ্রয়োজনীয় এদিক সেদিকে দৃষ্টিপাত
করা থেকে বিরত থাকা, শুধুমাত্র যা দেখা প্রয়োজন
সেদিকে তাকানো; বিশেষ করে এমন জায়গায়
অযথা দৃষ্টি না ফেরানো যেখানে এমন প্রলোভনের
আশঙ্কা থাকে যা থেকে সহজে মুক্ত হওয়া কঠিন।
হতে পারে সেটা আপনার আশেপাশের দৃশ্যে, বা কোন
ম্যাগাজিনে, টিভিতে, অথবা ইন্টারনেটে।
১১) বিয়ে হল একটি কার্যকরী প্রতিকার। নবী মুহাম্মাদ
(সাঃ) বলেছেন-
“হে যুব সম্প্রদায়! তোমাদের
মধ্যে যারা বিয়ে করার সামর্থ্য
রাখে তারা যেন বিয়ে করে। কেননা, বিবাহ
তার দৃষ্টিকে সংযত
রাখে এবং যৌনতাকে সংযমী করে;
এবং যাদের বিয়ে করার সামর্থ্য নেই, সে যেন
রোজা পালন করে। কেননা, রোজা তার
যৌনতাকে দমন করবে।” (সহীহ বুখারী ৪৬৯৬, ইফা)
১২) বেহেশতের হুরদের কথা মনে করা ; আল্লাহ
আপনাকে যা নিষেধ করেছেন
তা দেখা হতে নিজেকে বিরত রাখতে উৎসাহিত
করবে, যাতে আল্লাহর এই নেয়ামতের পাওয়ার
আশা করতে পারেন। রাসুল (সাঃ) বলেছেন-
‘জান্নাতের কোন নারী যদি দুনিয়ার
প্রতি দৃষ্টিপাত করে তবে সমস্ত
দুনিয়া আলোকিত ও খুশবুতে মোহিত হয়ে যাবে।
জান্নাতি নারীর নাসীফ (ওড়না) দুনিয়ার
সবকিছুর চেয়ে উত্তম।’ (সহীহ বুখারী ৬১২১; ইফা)
১৩) যার প্রতি আকৃষ্ট বোধ করছেন তার
ত্রুটি সম্পর্কে চিন্তা করা…
১৪) যত্রতত্র দৃষ্টি নিক্ষেপের কুফল, এর শাস্তি ও তার
যন্ত্রণার কথা চিন্তা  করা।
১৫) দৃষ্টি অবনত রাখার সুফল সম্পর্কে চিন্তা করা।
১৬) মানুষের সঙ্গে আলচনার আসরে, জনসমাবেশে এই
প্রসঙ্গ উত্থাপন করা, এর কুফল সম্পর্কে ব্যখ্যা করা।
১৭) যেসব পোষাকে, চালচলনে, কথাবার্তায় সৌন্দর্য
প্রদর্শিত হয় ও অন্যকে আকৃষ্ট করে এমন সব কিছু পরিহার
করতে নিজের পরিবার ও আত্মীয়দেরকে উপদেশ
দেওয়া।
১৮) যেসব কুচিন্তা ও শয়তানের
ওয়াসওয়াসা মনে জাগে তা আপনাকে কাবু করে সেই
অনুযায়ী কাজে পরিণত করার আগেই
সাথে সাথে তা ঝেরে ফেলা। যে প্রথম দৃষ্টিতেই
নিজেকে সংযত করে নেয় সে অনেক
সমস্যা থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারে; কিন্তু
যে নিজেকে এই কাজেই লিপ্ত রাখে সে কখনও দৃঢ়তার
সাথে মন থেকে এর কুপ্রভাব দূর করতে পারে না।
১৯) মৃত্যুর সময় নিজের কর্ম নিয়ে গভীর অনুশোচনার
কথা জীবন থাকতেই চিন্তা করা ও এই করুন পরিনতির
কথা চিন্তা করে ভীত হওয়া।
২০) সৎসঙ্গে থাকা। কারন মানুষ যাদের
সাথে চলাফেরা করে তাদের বৈশিষ্ট্য দিয়েই
প্রভাবিত হয়। আর তার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সহচরের অনুসরণ
করে; এবং সবচেয়ে কাছের বন্ধুই মানুষকে তার নিজের
পথে টেনে নেয়। আপনি যদি এমন বন্ধুদের সঙ্গে থাকেন
যাদের দৈনন্দিন অভ্যাসই হল অন্য নারীদের
নিয়ে আলোচনা করা, হারাম দৃষ্টি নিক্ষেপ করা,
তাহলে নিশ্চিত ভাবেই আপনার জন্য দৃষ্টি সংযত
রাখা দুরূহ। অন্যদিকে আপনি যদি এমন মানুষের
সঙ্গে থাকেন যিনি এই বিষয়ে সদা সতর্ক,
স্বাভাবিকভাবেই তখন আপনি ইচ্ছা থাকেলও এই
হারাম কাজ প্রকাশ্যে করতে সংকোচ বোধ করবেন।
অতএব সঙ্গ নির্বাচনে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করুন,
নিজের স্বার্থেই।‎'

দৃষ্টি সংযত করার ২০ টি উপায়: দৃষ্টি সংযত রাখার অনেক উপায় আছে। আর আল্লাহর
কাছে প্রার্থনা করি যেন আল্লাহ আমাদের সাহায্য
করেন।
১। সবসময় মনে রাখা যে আল্লাহ আপনাকে দেখছেন ,
আপনি যেখানেই যান আল্লাহ আপানার সঙ্গেই আছেন
(তাঁর সর্বময় জ্ঞানের মাধ্যমে)
হতে পারে আপনি লুকিয়ে আপনার পাশের
জনকে দেখছেন যা সে জানে না, কিন্তু আল্লাহ
তা জানছেন।
ﻳَﻌْﻠَﻢُ ﺧَﺎﺋِﻨَﺔَ ﺍﻟْﺄَﻋْﻴُﻦِ ﻭَﻣَﺎ ﺗُﺨْﻔِﻲ ﺍﻟﺼُّﺪُﻭﺭُ
চোখের চুরি এবং অন্তরের গোপন বিষয়
তিনি জানেন। (সূরা গাফিরঃ১৯)
২) আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া ,
মিনতি সহকারে তাঁকে ডাকা। আল্লাহ বলেন-
ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺭَﺑُّﻜُﻢُ ﺍﺩْﻋُﻮﻧِﻲ ﺃَﺳْﺘَﺠِﺐْ ﻟَﻜُﻢْ
তোমাদের পালনকর্তা বলেন,
তোমরা আমাকে ডাক, আমি সাড়া দেব।
(সূরা গাফিরঃ৬০)
৩) সবসময় মনে রাখবেন, আপনি যা যা নেয়ামত উপভোগ
করছেন তার সবই আল্লাহর তরফ থেকে পেয়েছেন, আর এ
জন্য আপনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত। আল্লাহর
দেওয়া দৃষ্টির নেয়ামতের
কৃতজ্ঞতা জানাতে হলে আপানাকে আপনার চোখ
দুটিকে সে সব জিনিস দেখা থেকে বিরত
রাখতে হবে যা যা আল্লাহ নিষেধ করেছেন। ভাল কাজের
প্রতিফল কি ভাল ছাড়া কিছু হতে পারে?
ﻭَﻣَﺎ ﺑِﻜُﻢ ﻣِّﻦ ﻧِّﻌْﻤَﺔٍ ﻓَﻤِﻦَ ﺍﻟﻠَّﻪِ
তোমাদের কাছে যে সমস্ত নেয়ামত আছে,
তা আল্লাহরই পক্ষ থেকে। (সূরা নামলঃ৫৩)
৪) নিজের সাথে সংগ্রাম করা , দৃষ্টি নত রাখার জন্য
নিজে নিজে অভ্যাস করার চেষ্টা করা এবং এ
কাজে ধৈর্যশীল হওয়া ও হাল ছেড়ে না দেওয়া।
আল্লাহ বলেন-
যারা আমার পথে সাধনায় আত্মনিয়োগ করে,
আমি অবশ্যই তাদেরকে আমার পথে পরিচালিত
করব। নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মপরায়ণদের
সাথে আছেন। (সূরা আনকাবুতঃ ৬৯)
৫) এমন সব স্থান এড়িয়ে চলার চেষ্টা করা যেখানে নিষিদ্ধ
দৃষ্টির প্রলোভনে পড়ার আশঙ্কা আছে বলে মনে হয়। যেমন,
মার্কেট, বিপনী বিতান, পর্দাহীন দাওয়াতের আসর,
রাস্তা ঘাটে অলস আড্ডা, ইন্টারনেটে অহেতুক
ঘাঁটাঘাঁটি ইত্যাদি। রসুল (সাঃ) বলেছেন-
তোমরা রাস্তার উপর বসা ছেড়ে দাও। লোকজন
বলল, এ ছাড়া আমাদের কোন উপায় নেই।
কেননা, এটাই আমাদের উঠাবসার জায়গা আর
এখানেই আমরা কথাবার্তা বলে থাকি।
তিনি বললেন, “যদি তোমাদের
সেখানে বসতেই হয়, তবা রাস্তার হক আদায়
করবে।” তারা বলল, রাস্তার হক কি?
তিনি (সাঃ) বললেন, ‘ দৃষ্টি অবনমিত রাখা, কষ্ট
দেওয়া হতে বিরত থাকা, সালামের জবাব
দেওয়া, সৎকাজের আদেশ
দেওয়া এবং অসৎকাজে নিষেধ
করা।’ (বুখারী ২৩০৩; ইফা)
ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রেও এই হাদিসটি প্রযোজ্য।
এখানেও নিজের দৃষ্টিকে (নিষিদ্ধ সাইট, অন্যের
প্রোফাইল অকারণে দেখার মাধ্যমে) যত্রতত্র নিক্ষেপ
করা, কাউকে কটাক্ষ করে মন্তব্য করা, অর্থহীন
আলোচনায় লিপ্ত হওয়া অনুমোদনযোগ্য নয়।
৬) সবসময় এটা মনে রাখা যে, পরিস্থিতি যেমনই হোক,
নিষিদ্ধের প্রতি আকর্ষণ বা প্রলোভন যতই বড় হোক,
আপনার মনের ভেতরে যতই আবেগের তাড়না আসুক, এই
ব্যপারে আপনার আর কোন পথ খোলা নেই। আপনাকে সব
জায়গায়, সব সময় নিষিদ্ধ জিনিস থেকে দৃষ্টি সংযত
করতেই হবে। আশেপাশের কলুষিত পরিবেশের অজুহাত
দিয়ে বা আপনি প্রলোভনের শিকার হয়েছেন এসব
কথা বলে নিজের দোষের সপক্ষে যুক্তি দেখানোর কোন
অবকাশ নেই।
৭) বেশী বেশী করে নফল ইবাদত করা, কারণ নিয়মিত ফরজ
এবাদতের সাথে সাথে নফল ইবাদত করে নিজের
শারীরিক কার্যাবলীকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়।
হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ বলেছেন,
“…আমার বান্দা সর্বদা নফল ইবাদত দ্বারা আমার
নৈকট্য অর্জন করতে থাকবে। আমন
কি অবশেষে আমি তাকে আমার এমন প্রিয়পাত্র
বানিয়ে নেই যে, আমিই তার কান হয়ে যাই
যা দিয়ে সে শোনে (অর্থাৎ আল্লাহর
ইচ্ছা অনুযায়ী শোনে)আমিই তার চোখ হয়ে যাই
যা দিয়ে সে সবকিছু দেখে (অর্থাৎ আল্লাহর
ইচ্ছা অনুযায়ী দেখে) আমিই তার হাত হয়ে যাই
যা দিয়ে সে ধরে (অর্থাৎ আল্লাহর
ইচ্ছা অনুযায়ী হাত দিয়ে কাজ করে) আমিই তার
পা হয়ে যাই যা দিয়ে সে চলে (অর্থাৎ
আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী চলে) সে যদি আমার
কাছে কোন কিছু চায়, তবে আমি নিশ্চয়ই
তাকে তা দান করি। আর যদি সে আমার
কাছে আশ্রয় চায়, তবে অবশ্যই আমি তাঁকে আশ্রয়
দেই।…” [সহীহ বুখারী ৬০৫৮]
৮) এটা মনে রাখা যে আমরা যে জমীনের উপর গুনাহ
করি, সেই জমীন আমাদের বিরুদ্ধে আমাদের গুনাহের
সাক্ষী দেবে। আল্লাহ বলেনঃ
ﻳَﻮْﻣَﺌِﺬٍ ﺗُﺤَﺪِّﺙُ ﺃَﺧْﺒَﺎﺭَﻫَﺎ
সেদিন সে (পৃথিবী) তার বৃত্তান্ত বর্ণনা করবে।
(সূরা জিলজালঃ ৪)
৯) যে আয়াত দৃষ্টিকে এদিক সেদিক অযথা নিষিদ্ধ
জিনিসের প্রতি নিক্ষেপ করতে নিষেধ
করে তা মনে করা। যেমনঃ
“মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত
রাখে (নিষিদ্ধ জিনিস দেখা হতে)
এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে।
এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয়
তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত
আছেন।” [সূরা নুরঃ৩০]
১০। অপ্রয়োজনীয় এদিক সেদিকে দৃষ্টিপাত
করা থেকে বিরত থাকা, শুধুমাত্র যা দেখা প্রয়োজন
সেদিকে তাকানো; বিশেষ করে এমন জায়গায়
অযথা দৃষ্টি না ফেরানো যেখানে এমন প্রলোভনের
আশঙ্কা থাকে যা থেকে সহজে মুক্ত হওয়া কঠিন।
হতে পারে সেটা আপনার আশেপাশের দৃশ্যে, বা কোন
ম্যাগাজিনে, টিভিতে, অথবা ইন্টারনেটে।
১১) বিয়ে হল একটি কার্যকরী প্রতিকার। নবী মুহাম্মাদ
(সাঃ) বলেছেন-
“হে যুব সম্প্রদায়! তোমাদের
মধ্যে যারা বিয়ে করার সামর্থ্য
রাখে তারা যেন বিয়ে করে। কেননা, বিবাহ
তার দৃষ্টিকে সংযত
রাখে এবং যৌনতাকে সংযমী করে;
এবং যাদের বিয়ে করার সামর্থ্য নেই, সে যেন
রোজা পালন করে। কেননা, রোজা তার
যৌনতাকে দমন করবে।” (সহীহ বুখারী ৪৬৯৬, ইফা)
১২) বেহেশতের হুরদের কথা মনে করা ; আল্লাহ
আপনাকে যা নিষেধ করেছেন
তা দেখা হতে নিজেকে বিরত রাখতে উৎসাহিত
করবে, যাতে আল্লাহর এই নেয়ামতের পাওয়ার
আশা করতে পারেন। রাসুল (সাঃ) বলেছেন-
‘জান্নাতের কোন নারী যদি দুনিয়ার
প্রতি দৃষ্টিপাত করে তবে সমস্ত
দুনিয়া আলোকিত ও খুশবুতে মোহিত হয়ে যাবে।
জান্নাতি নারীর নাসীফ (ওড়না) দুনিয়ার
সবকিছুর চেয়ে উত্তম।’ (সহীহ বুখারী ৬১২১; ইফা)
১৩) যার প্রতি আকৃষ্ট বোধ করছেন তার
ত্রুটি সম্পর্কে চিন্তা করা…
১৪) যত্রতত্র দৃষ্টি নিক্ষেপের কুফল, এর শাস্তি ও তার
যন্ত্রণার কথা চিন্তা করা।
১৫) দৃষ্টি অবনত রাখার সুফল সম্পর্কে চিন্তা করা।
১৬) মানুষের সঙ্গে আলচনার আসরে, জনসমাবেশে এই
প্রসঙ্গ উত্থাপন করা, এর কুফল সম্পর্কে ব্যখ্যা করা।
১৭) যেসব পোষাকে, চালচলনে, কথাবার্তায় সৌন্দর্য
প্রদর্শিত হয় ও অন্যকে আকৃষ্ট করে এমন সব কিছু পরিহার
করতে নিজের পরিবার ও আত্মীয়দেরকে উপদেশ
দেওয়া।
১৮) যেসব কুচিন্তা ও শয়তানের
ওয়াসওয়াসা মনে জাগে তা আপনাকে কাবু করে সেই
অনুযায়ী কাজে পরিণত করার আগেই
সাথে সাথে তা ঝেরে ফেলা। যে প্রথম দৃষ্টিতেই
নিজেকে সংযত করে নেয় সে অনেক
সমস্যা থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারে; কিন্তু
যে নিজেকে এই কাজেই লিপ্ত রাখে সে কখনও দৃঢ়তার
সাথে মন থেকে এর কুপ্রভাব দূর করতে পারে না।
১৯) মৃত্যুর সময় নিজের কর্ম নিয়ে গভীর অনুশোচনার
কথা জীবন থাকতেই চিন্তা করা ও এই করুন পরিনতির
কথা চিন্তা করে ভীত হওয়া।
২০) সৎসঙ্গে থাকা। কারন মানুষ যাদের
সাথে চলাফেরা করে তাদের বৈশিষ্ট্য দিয়েই
প্রভাবিত হয়। আর তার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সহচরের অনুসরণ
করে; এবং সবচেয়ে কাছের বন্ধুই মানুষকে তার নিজের
পথে টেনে নেয়। আপনি যদি এমন বন্ধুদের সঙ্গে থাকেন
যাদের দৈনন্দিন অভ্যাসই হল অন্য নারীদের
নিয়ে আলোচনা করা, হারাম দৃষ্টি নিক্ষেপ করা,
তাহলে নিশ্চিত ভাবেই আপনার জন্য দৃষ্টি সংযত
রাখা দুরূহ। অন্যদিকে আপনি যদি এমন মানুষের
সঙ্গে থাকেন যিনি এই বিষয়ে সদা সতর্ক,
স্বাভাবিকভাবেই তখন আপনি ইচ্ছা থাকেলও এই
হারাম কাজ প্রকাশ্যে করতে সংকোচ বোধ করবেন।
অতএব সঙ্গ নির্বাচনে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করুন,
নিজের স্বার্থেই।

No comments:

Post a Comment