Monday, February 9, 2015

গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া অথবা দোয়া করা শিরক



গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া অথবা দোয়া করা শিরক
=============
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরানে ইরশাদ করেছেন,
‘‘আল্লাহ ছাড়া এমন কোন সত্তাকে ডেকোনা, যা তোমার কোন উপকার করতে পারবে না এবং ক্ষতিও করতে পারবে না। যদি তুমি এমন কারো তাহলে নিশ্চয়ই তুমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত। আর আল্লাহ যদি তোমাকে কোন বিপদে ফেলেন, তাহলে একমাত্র তিনি ব্যতীত আর কেউ তা থেকে তোমাকে উদ্ধার করতে পারবে না। (ইউনুসঃ ১০৬, ১০৭)
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরানে আরো ইরশাদ করেছেন,
‘‘আল্লাহর কাছে রিজিক চাও এবং তাঁরই ইবাদত করো। (আনকাবুত : ১৭)
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরানের অন্য এক আয়াতে ইরশাদ করেছেন,
‘‘তার চেয়ে অধিক ভ্রান্ত আর কে হতে পারে, যে ব্যক্তি আল্লাহকে ছাড়া এমন সত্তাকে ডাকে যে সত্তা কেয়ামত পর্যন্ত তার ডাকে সাড়া দিতে পারবে না। (আহকাফ : ৫)
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরানে ইরশাদ করেছেন,
‘‘বিপদগ্রস্ত ব্যক্তির ডাকে কে সাড়া দেয় যখন সে ডাকে ? আর কে তার কষ্ট দূর করে? (নামল : ৬২)
ইমাম তাবরানী বর্ণনা করেছেন, নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে এমন একজন মুনাফিক ছিলো, যে মোমিনদেরকে কষ্ট দিতো। তখন মুমিনরা পরস্পর বলতে লাগলো, চলো, আমরা এ মুনাফিকের অত্যাচার থেকে বাঁচার জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাহায্য চাই। নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন বললেন,
‘‘আমার কাছে সাহায্য চাওয়া যাবে না। একমাত্র আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাইতে হবে।
এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায় :
১- গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া বা গাইরুল্লাহকে ডাকা ‘শিরকে আকবার।
২- সব চেয়ে নেককার ব্যক্তিও যদি অন্যের সন্তুষ্টির জন্য গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য চায় বা দোয়া করে , তাহলেও সে জালিমদের অন্তর্ভূক্ত।
৩- গাইরুল্লাহর কাছে দোয়া করা কুফরী কাজ হওয়া সত্ত্বেও দুনিয়াতে এর কোন উপকারিতা নেই। [অর্থাৎ কুফরী কাজে কোন সময় দুনিয়াতে কিছু বৈষয়িক উপকারিতা পাওয়া যায়, কিন্তু গাইরুল্লাহর কাছে দোয়া করার মধ্যে দুনিয়ার উপকারও নেই]
৪- আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো কাছে রিযিক চাওয়া উচিত নয়। যেমনিভাবে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে জান্নাত চাওয়া উচিৎ নয়।
৫-যে ব্যক্তি গাইরুল্লাহর কাছে দোয়া করে, তার চেয়ে বড় পথভ্রষ্ট আর কেউ নয়।
৬- যে ব্যক্তি গাইরুল্লাহর কাছে দোয়া করে সে গাইরুল্লাহ দোয়াকারী সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবচেতন থাকে, অর্থাৎ তার ব্যাপারে গাইরুল্লাহ সম্পূর্ণ অনবহিত থাকে।
৭- যাকে ডাকা হয় কিংবা যার কাছে দোয়া করা হয়, তাকে মাদউ বলে,,প্রকৃত মাদউ কখনো শিরকী কাজের অনুমতি কিংবা নির্দেশ দেয়নি।
৮- গাইরুল্লাহকে ডাকার অর্থই হচ্ছে তার ইবাদত করা। ঐ ইবাদতের মাধ্যমেই কুফরী করা হয়।
বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে এই যে, মূর্তি পূজারীরাও একথা স্বীকার করে যে, বিপদগ্রস্ত, অস্থির ও ব্যাকুল ব্যক্তির ডাকে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কেউ সাড়া দিতে পারে না। এ কারণেই তারা যখন কঠিন মুসীবতে পতিত হয়, তখন ইখলাস ও আন্তরিকতার সাথে তারা আল্লাহকে ডাকে।
৯-এর মাধ্যমে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক তাওহীদের হেফাযত, সংরক্ষণ এবং আল্লাহ তাআলার সাথে আদব-কায়দা রক্ষা করে চলার বিষয়টি জানা গেলো।
--
রচয়িতা : মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহহাব
সম্পাদনায় : মাওলানা মিরাজ রহমান
সৌজন্যে : ইসলামহাউজ.কম

No comments:

Post a Comment