আল্লাহ তা‘আলা মুমিনদের জন্য
জান্নাতের মধ্যে যা প্রস্তুত
রেখেছেন
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ ﺇِﻥَّ ﭐﻟۡﻤُﺘَّﻘِﻴﻦَ ﻓِﻲ ﺟَﻨَّٰﺖٖ ﻭَﻋُﻴُﻮﻥٍ ٤٥ ﭐﺩۡﺧُﻠُﻮﻫَﺎ ﺑِﺴَﻠَٰﻢٍ ﺀَﺍﻣِﻨِﻴﻦَ ٤٦
ﻭَﻧَﺰَﻋۡﻨَﺎ ﻣَﺎ ﻓِﻲ ﺻُﺪُﻭﺭِﻫِﻢ ﻣِّﻦۡ ﻏِﻞٍّ ﺇِﺧۡﻮَٰﻧًﺎ ﻋَﻠَﻰٰ ﺳُﺮُﺭٖ ﻣُّﺘَﻘَٰﺒِﻠِﻴﻦَ ٤٧ ﻟَﺎ
ﻳَﻤَﺴُّﻬُﻢۡ ﻓِﻴﻬَﺎ ﻧَﺼَﺐٞ ﻭَﻣَﺎ ﻫُﻢ ﻣِّﻨۡﻬَﺎ ﺑِﻤُﺨۡﺮَﺟِﻴﻦَ ٤٨ ﴾ [ﺍﻟﺤﺠﺮ : ٤٥، ٤٨]
অর্থাৎ নিশ্চয় পরহেযগাররা বাস করবে
উদ্যান ও প্রস্রবণসমূহে। [তাদেরকে বলা
হবে,] তোমরা শান্তি ও নিরাপত্তার
সাথে তাতে প্রবেশ কর। আমি তাদের
অন্তরে যে ঈর্ষা থাকবে তা দূর করে দেব;
তারা ভ্রাতৃভাবে পরস্পর মুখোমুখি হয়ে
আসনে অবস্থান করবে। সেথায় তাদেরকে
অবসাদ স্পর্শ করবে না এবং তারা সেথা
হতে বহিষ্কৃতও হবে না। (সূরা হিজর ৪৫-৪৮
আয়াত)
তিনি আরও বলেন,
﴿ ﻳَٰﻌِﺒَﺎﺩِ ﻟَﺎ ﺧَﻮۡﻑٌ ﻋَﻠَﻴۡﻜُﻢُ ﭐﻟۡﻴَﻮۡﻡَ ﻭَﻟَﺎٓ ﺃَﻧﺘُﻢۡ ﺗَﺤۡﺰَﻧُﻮﻥَ ٦٨ ﭐﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺀَﺍﻣَﻨُﻮﺍْ
ﺑَِٔﺎﻳَٰﺘِﻨَﺎ ﻭَﻛَﺎﻧُﻮﺍْ ﻣُﺴۡﻠِﻤِﻴﻦَ ٦٩ ﭐﺩۡﺧُﻠُﻮﺍْ ﭐﻟۡﺠَﻨَّﺔَ ﺃَﻧﺘُﻢۡ ﻭَﺃَﺯۡﻭَٰﺟُﻜُﻢۡ ﺗُﺤۡﺒَﺮُﻭﻥَ ٧٠ ﻳُﻄَﺎﻑُ
ﻋَﻠَﻴۡﻬِﻢ ﺑِﺼِﺤَﺎﻑٖ ﻣِّﻦ ﺫَﻫَﺐٖ ﻭَﺃَﻛۡﻮَﺍﺏٖۖ ﻭَﻓِﻴﻬَﺎ ﻣَﺎ ﺗَﺸۡﺘَﻬِﻴﻪِ ﭐﻟۡﺄَﻧﻔُﺲُ ﻭَﺗَﻠَﺬُّ ﭐﻟۡﺄَﻋۡﻴُﻦُۖ
ﻭَﺃَﻧﺘُﻢۡ ﻓِﻴﻬَﺎ ﺧَٰﻠِﺪُﻭﻥَ ٧١ ﻭَﺗِﻠۡﻚَ ﭐﻟۡﺠَﻨَّﺔُ ﭐﻟَّﺘِﻲٓ ﺃُﻭﺭِﺛۡﺘُﻤُﻮﻫَﺎ ﺑِﻤَﺎ ﻛُﻨﺘُﻢۡ ﺗَﻌۡﻤَﻠُﻮﻥَ ٧٢
ﻟَﻜُﻢۡ ﻓِﻴﻬَﺎ ﻓَٰﻜِﻬَﺔٞ ﻛَﺜِﻴﺮَﺓٞ ﻣِّﻨۡﻬَﺎ ﺗَﺄۡﻛُﻠُﻮﻥَ ٧٣ ﴾ [ﺍﻟﺰﺧﺮﻑ : ٦٨، ٧٣]
অর্থাৎ হে আমার বান্দাগণ! আজ
তোমাদের কোন ভয় নেই এবং তোমরা
দুঃখিতও হবে না। যারা আমার আয়াতে
বিশ্বাস করেছিলে এবং আত্মসমর্পণকারী
(মুসলিম) ছিলে। তোমরা এবং তোমাদের
সহধর্মিণীগণ সানন্দে জান্নাতে প্রবেশ
কর। সবর্ণের থালা ও পান পাত্র নিয়ে
ওদের মাঝে ফিরানো হবে, সেখানে
রয়েছে এমন সমস্ত কিছু, যা মন চায় এবং
যাতে নয়ন তৃপ্ত হয়। সেখানে তোমরা
চিরকাল থাকবে। এটিই জান্নাত, তোমরা
তোমাদের কর্মের ফলস্বরূপ যার অধিকারী
হয়েছ। সেখানে তোমাদের জন্য রয়েছে
প্রচুর ফলমূল, তা থেকে তোমরা আহার
করবে। (সূরা যুখরুফ ৬৮-৭৩ আয়াত)
তিনি অন্য জায়গায় বলেন,
﴿ ﺇِﻥَّ ﭐﻟۡﻤُﺘَّﻘِﻴﻦَ ﻓِﻲ ﻣَﻘَﺎﻡٍ ﺃَﻣِﻴﻦٖ ٥١ ﻓِﻲ ﺟَﻨَّٰﺖٖ ﻭَﻋُﻴُﻮﻥٖ ٥٢ ﻳَﻠۡﺒَﺴُﻮﻥَ
ﻣِﻦ ﺳُﻨﺪُﺱٖ ﻭَﺇِﺳۡﺘَﺒۡﺮَﻕٖ ﻣُّﺘَﻘَٰﺒِﻠِﻴﻦَ ٥٣ ﻛَﺬَٰﻟِﻚَ ﻭَﺯَﻭَّﺟۡﻨَٰﻬُﻢ ﺑِﺤُﻮﺭٍ ﻋِﻴﻦٖ ٥٤ ﻳَﺪۡﻋُﻮﻥَ
ﻓِﻴﻬَﺎ ﺑِﻜُﻞِّ ﻓَٰﻜِﻬَﺔٍ ﺀَﺍﻣِﻨِﻴﻦَ ٥٥ ﻟَﺎ ﻳَﺬُﻭﻗُﻮﻥَ ﻓِﻴﻬَﺎ ﭐﻟۡﻤَﻮۡﺕَ ﺇِﻟَّﺎ ﭐﻟۡﻤَﻮۡﺗَﺔَ ﭐﻟۡﺄُﻭﻟَﻰٰۖ
ﻭَﻭَﻗَﻯٰﻬُﻢۡ ﻋَﺬَﺍﺏَ ﭐﻟۡﺠَﺤِﻴﻢِ ٥٦ ﻓَﻀۡﻠٗﺎ ﻣِّﻦ ﺭَّﺑِّﻚَۚ ﺫَٰﻟِﻚَ ﻫُﻮَ ﭐﻟۡﻔَﻮۡﺯُ ﭐﻟۡﻌَﻈِﻴﻢُ ٥٧
﴾ [ ﺍﻟﺪﺧﺎﻥ : ٥١، ٥٧]
অর্থাৎ নিশ্চয় সাবধানীরা থাকবে
নিরাপদ স্থানে- বাগানসমূহে ও
ঝরনারাজিতে, ওরা পরিধান করবে মিহি ও
পুরু রেশমী বস্ত্র এবং মুখোমুখি হয়ে বসবে।
এরূপই ঘটবে ওদের; আর আয়তলোচনা হুরদের
সাথে তাদের বিবাহ দেব। সেখানে তারা
নিশ্চিন্তে বিবিধ ফলমূল আনতে বলবে।
[ইহকালে] প্রথম মৃত্যুর পর তারা সেখানে
আর মৃত্যু আস্বাদন করবে না। আর তিনি
তাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি হতে
রক্ষা করবেন। [এ প্রতিদান] তোমার
প্রতিপালকের অনুগ্রহসবরূপ। এটিই তো মহা
সাফল্য। (সূরা দুখান ৫১-৫৭ আয়াত)
আল্লাহ অন্যত্র বলেছেন,
﴿ ﺇِﻥَّ ﭐﻟۡﺄَﺑۡﺮَﺍﺭَ ﻟَﻔِﻲ ﻧَﻌِﻴﻢٍ ٢٢ ﻋَﻠَﻰ ﭐﻟۡﺄَﺭَﺍٓﺋِﻚِ ﻳَﻨﻈُﺮُﻭﻥَ ٢٣ ﺗَﻌۡﺮِﻑُ ﻓِﻲ
ﻭُﺟُﻮﻫِﻬِﻢۡ ﻧَﻀۡﺮَﺓَ ﭐﻟﻨَّﻌِﻴﻢِ ٢٤ ﻳُﺴۡﻘَﻮۡﻥَ ﻣِﻦ ﺭَّﺣِﻴﻖٖ ﻣَّﺨۡﺘُﻮﻡٍ ٢٥ ﺧِﺘَٰﻤُﻪُۥ ﻣِﺴۡﻚٞۚ
ﻭَﻓِﻲ ﺫَٰﻟِﻚَ ﻓَﻠۡﻴَﺘَﻨَﺎﻓَﺲِ ﭐﻟۡﻤُﺘَﻨَٰﻔِﺴُﻮﻥَ ٢٦ ﻭَﻣِﺰَﺍﺟُﻪُۥ ﻣِﻦ ﺗَﺴۡﻨِﻴﻢٍ ٢٧ ﻋَﻴۡﻨٗﺎ ﻳَﺸۡﺮَﺏُ
ﺑِﻬَﺎ ﭐﻟۡﻤُﻘَﺮَّﺑُﻮﻥَ ٢٨ ﴾ [ﺍﻟﻤﻄﻔﻔﻴﻦ : ٢٢، ٢٨]
অর্থাৎ পুণ্যবানগণ তো থাকবে পরম
স্বাচ্ছন্দ্যে। তারা সুসজ্জিত আসনে বসে
দেখতে থাকবে। তুমি তাদের মুখমণ্ডলে
স্বাচ্ছন্দ্যের সজীবতা দেখতে পাবে।
তাদেরকে মোহর আঁটা বিশুদ্ধ মদিরা হতে
পান করানো হবে। এর মোহর হচ্ছে
কস্তুরীর। আর তা লাভের জন্যই
প্রতিযোগীরা প্রতিযোগিতা করুক। এর
মিশ্রণ হবে তাসনীমের [পানির]। এটা
একটি প্রস্রবণ, যা হতে নৈকট্য-প্রাপ্ত
ব্যক্তিরা পান করবে। (সূরা মুত্বাফিফীন
২২-২৮]
এ মর্মে আরও বহু আয়াত বিদ্যমান।
1/1889 . ﻭَﻋَﻦْ ﺟَﺎﺑِﺮٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻰ
ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : «ﻳَﺄْﻛُﻞُ ﺃَﻫْﻞُ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔِ ﻓِﻴﻬَﺎ، ﻭَﻳَﺸْﺮَﺑُﻮﻥَ، ﻭَﻻَ ﻳَﺘَﻐَﻮَّﻃُﻮﻥَ، ﻭَﻻَ
ﻳَﻤْﺘَﺨِﻄُﻮﻥَ، ﻭَﻻَ ﻳَﺒُﻮﻟُﻮﻥَ، ﻭَﻟﻜِﻦْ ﻃَﻌَﺎﻣُﻬُﻢْ ﺫَﻟِﻚَ ﺟُﺸَﺎﺀٌ ﻛَﺮَﺷْﺢِ ﺍﻟﻤِﺴْﻚِ، ﻳُﻠْﻬَﻤُﻮﻥَ
ﺍﻟﺘَّﺴْﺒِﻴﺢَ ﻭَﺍﻟﺘَّﻜْﺒِﻴﺮَ، ﻛَﻤَﺎ ﻳُﻠْﻬَﻤُﻮﻥَ ﺍﻟﻨَّﻔَﺲَ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
১/১৮৮৯। জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু
হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, ‘‘জান্নাতবাসীরা জান্নাতের
মধ্যে পানাহার করবে; কিন্তু পেশাব-
পায়খানা করবে না, তারা নাক ঝাড়বে
না, পেশাবও করবে না। বরং তাদের ঐ
খাবার ঢেকুর ও কস্তুরীবৎ সুগন্ধময় ঘাম [হয়ে
দেহ থেকে বের হয়ে যাবে]। তাদের মধ্যে
তাসবীহ ও তাকবীর পড়ার স্বয়ংক্রিয়
শক্তি প্রক্ষিপ্ত হবে, যেমন শ্বাসক্রিয়ার
শক্তি স্বয়ংক্রিয় করা হয়েছে।’’ (মুসলিম)
[1]
2/1890 ﻭَﻋَﻦْ ﺃَﺑﻲ ﻫُﺮَﻳﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ
ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : « ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺗَﻌَﺎﻟَﻰ : ﺃَﻋْﺪَﺩْﺕُ ﻟِﻌِﺒَﺎﺩِﻱ ﺍﻟﺼَّﺎﻟِﺤِﻴﻦَ ﻣَﺎ
ﻻَ ﻋَﻴْﻦٌ ﺭَﺃَﺕْ، ﻭَﻻَ ﺃُﺫُﻥٌ ﺳَﻤِﻌَﺖْ، ﻭَﻻَ ﺧَﻄَﺮَ ﻋَﻠَﻰ ﻗَﻠْﺐِ ﺑَﺸَﺮٍ، ﻭَﺍﻗْﺮَﺅُﻭﺍ ﺇِﻥْ
ﺷِﺌْﺘُﻢْ : ﴿ ﻓَﻠَﺎ ﺗَﻌۡﻠَﻢُ ﻧَﻔۡﺲٞ ﻣَّﺎٓ ﺃُﺧۡﻔِﻲَ ﻟَﻬُﻢ ﻣِّﻦ ﻗُﺮَّﺓِ ﺃَﻋۡﻴُﻦٖ ﺟَﺰَﺍٓﺀَۢ ﺑِﻤَﺎ ﻛَﺎﻧُﻮﺍْ
ﻳَﻌۡﻤَﻠُﻮﻥَ ١٧ ﴾ [ ﺍﻟﺴﺠﺪﺓ : ١٧] . ﻣﺘﻔﻖ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
২/১৮৯০। আবূ হুরাইরা হতে বর্ণিত, তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘মহান আল্লাহ
বলেছেন, ‘আমি আমার পুণ্যবান বান্দাদের
জন্য এমন জিনিস প্রস্তুত রেখেছি, যা কোন
চক্ষু দর্শন করেনি, কোন কর্ণ শ্রবণ করেনি
এবং যার সম্পর্কে কোন মানুষের মনে
ধারণাও জন্মেনি।’ তোমরা চাইলে এ
আয়াতটি পাঠ করতে পার; যার অর্থ, ‘‘কেউই
জানে না তার জন্য তার কৃতকর্মের
বিনিময় স্বরূপ নয়ন-প্রীতিকর কি পুরস্কার
লুকিয়ে রাখা হয়েছে।’’ (সূরা সাজদাহ ১৭
আয়াত, বুখারী-মুসলিম] [2]
3/1891 ﻭَﻋَﻨْﻪ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ :
«ﺃَﻭَّﻝُ ﺯُﻣْﺮَﺓٍ ﻳَﺪْﺧُﻠُﻮﻥَ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔَ ﻋَﻠَﻰ ﺻُﻮﺭَﺓِ ﺍﻟﻘَﻤَﺮِ ﻟَﻴْﻠَﺔَ ﺍﻟﺒَﺪْﺭِ، ﺛُﻢَّ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ
ﻳَﻠُﻮﻧَﻬُﻢْ ﻋَﻠَﻰ ﺃَﺷَﺪِّ ﻛَﻮْﻛَﺐٍ ﺩُﺭِّﻱٍّ ﻓِﻲ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﺀِ ﺇِﺿَﺎﺀَﺓً، ﻻَ ﻳَﺒُﻮﻟُﻮﻥَ، ﻭَﻻَ
ﻳَﺘَﻐَﻮَّﻃُﻮﻥَ، ﻭَﻻَ ﻳَﺘْﻔُﻠُﻮﻥَ، ﻭَﻻَ ﻳَﻤْﺘَﺨِﻄُﻮﻥَ . ﺃَﻣْﺸَﺎﻃُﻬُﻢُ ﺍﻟﺬَّﻫَﺐُ، ﻭَﺭَﺷْﺤُﻬُﻢُ
ﺍﻟﻤِﺴْﻚُ، ﻭَﻣَﺠَﺎﻣِﺮُﻫُﻢُ ﺍﻷُﻟُﻮَّﺓُ - ﻋُﻮﺩُ ﺍﻟﻄِّﻴﺐِ - ﺃَﺯْﻭَﺍﺟُﻬُﻢُ ﺍﻟﺤُﻮﺭُ ﺍﻟﻌِﻴْﻦُ، ﻋَﻠَﻰ
ﺧَﻠْﻖِ ﺭَﺟُﻞٍ ﻭَﺍﺣِﺪٍ، ﻋَﻠَﻰ ﺻُﻮﺭَﺓِ ﺃَﺑِﻴﻬِﻢْ ﺁﺩَﻡَ ﺳِﺘُّﻮﻥَ ﺫِﺭَﺍﻋﺎً ﻓِﻲ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﺀِ » .
ﻣﺘﻔﻖ ﻋَﻠَﻴْﻪِ .
ﻭَﻓِﻲ ﺭِﻭَﺍﻳَﺔِ ﺍﻟﺒُﺨَﺎﺭِﻱ ﻭَﻣُﺴﻠِﻢٍ : «ﺁﻧِﻴَﺘُﻬُﻢْ ﻓِﻴﻬَﺎ ﺍﻟﺬَّﻫَﺐُ، ﻭَﺭَﺷْﺤُﻬُﻢُ
ﺍﻟﻤِﺴْﻚُ . ﻭَﻟِﻜُﻞِّ ﻭَﺍﺣِﺪٍ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ﺯَﻭْﺟَﺘَﺎﻥِ ﻳُﺮَﻯ ﻣُﺦُّ ﺳَﺎﻗِﻬِﻤَﺎ ﻣِﻦْ ﻭَﺭَﺍﺀِ ﺍﻟﻠَّﺤْﻢِ ﻣِﻦَ
ﺍﻟﺤُﺴْﻦِ، ﻻَ ﺍﺧْﺘِﻼَﻑَ ﺑَﻴْﻨَﻬُﻢْ، ﻭَﻻَ ﺗَﺒَﺎﻏُﺾَ، ﻗُﻠُﻮﺑُﻬُﻢْ ﻗَﻠْﺐُ ﻭَﺍﺣِﺪٍ، ﻳُﺴَﺒِّﺤُﻮﻥَ ﺍﻟﻠﻪَ
ﺑُﻜْﺮَﺓً ﻭَﻋَﺸِﻴﺎً » .
৩/১৮৯১। উক্ত রাবী রাদিয়াল্লাহু আনহু
হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, ‘‘জান্নাতে প্রথম প্রবেশকারী
দলটির আকৃতি পূর্ণিমা রাতের চাঁদের মত
হবে। অতঃপর তাদের পরবর্তী দলটি
আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্রের ন্যায়
জ্যোতির্ময় হবে। তারা [জান্নাতে]
পেশাব করবে না, পায়খানা করবে না, থুথু
ফেলবে না, নাক ঝাড়বে না। তাদের
চিরুনি হবে স্বর্ণের। তাদের ঘাম হবে
কস্তুরীর ন্যায় সুগন্ধময়। তাদের ধুনুচিতে
থাকবে সুগন্ধ কাঠ। তাদের স্ত্রী হবে
আয়তলোচনা হুরগণ। তারা সকলেই একটি
মানব কাঠামো, আদি পিতা আদমের
আকৃতিতে হবে [যাদের উচ্চতা হবে] ষাট
হাত পর্যন্ত।’’ (বুখারী-মুসলিম) [3]
বুখারী-মুসলিমের আর এক বর্ণনায় আছে
যে, ‘‘[জান্নাতে] তাদের পাত্র হবে
সবর্ণের, তাদের গায়ের ঘাম হবে কস্তুরীর
ন্যায় সুগন্ধময়। তাদের প্রত্যেকের জন্য এমন
দু’জন স্ত্রী থাকবে, যাদের সৌন্দর্যের দরুন
মাংস ভেদ করে পায়ের নলার হাড়ের
মজ্জা দেখা যাবে। তাদের মধ্যে কোন
মতভেদ থাকবে না। পারস্পরিক বিদ্বেষ
থাকবে না। তাদের সকলের অন্তর একটি
অন্তরের মত হবে। তারা সকাল-সন্ধ্যায়
তাসবীহ পাঠে রত থাকবে।’’
4/1892 ﻭَﻋَﻦِ ﺍﻟﻤُﻐِﻴﺮَﺓِ ﺑﻦِ ﺷُﻌﺒَﺔَ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻋَﻦ ﺭَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ
ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ، ﻗَﺎﻝَ : «ﺳَﺄَﻝَ ﻣُﻮﺳَﻰ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﺭَﺑَّﻪُ : ﻣَﺎ ﺃَﺩْﻧَﻰ
ﺃَﻫْﻞِ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔِ ﻣَﻨْﺰِﻟَﺔً ؟ ﻗَﺎﻝَ: ﻫُﻮَ ﺭَﺟُﻞٌ ﻳَﺠِﻲﺀُ ﺑَﻌْﺪَ ﻣَﺎ ﺃُﺩْﺧِﻞَ ﺃَﻫْﻞُ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔِ
ﺍﻟﺠَﻨَّﺔَ، ﻓَﻴُﻘَﺎﻝُ ﻟَﻪُ : ﺍُﺩْﺧُﻞِ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔَ . ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ: ﺃَﻱْ ﺭَﺏِّ، ﻛَﻴْﻒَ ﻭَﻗَﺪْ ﻧَﺰَﻝَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ
ﻣَﻨَﺎﺯِﻟَﻬُﻢْ، ﻭَﺃَﺧَﺬُﻭﺍ ﺃَﺧَﺬَﺍﺗِﻬِﻢْ ؟ ﻓَﻴُﻘَﺎﻝُ ﻟَﻪُ : ﺃَﺗَﺮْﺿَﻰ ﺃَﻥْ ﻳَﻜُﻮﻥَ ﻟَﻚَ ﻣِﺜْﻞُ ﻣُﻠْﻚِ
ﻣَﻠِﻚٍ ﻣِﻦْ ﻣُﻠُﻮﻙِ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ؟ ﻓَﻴﻘُﻮﻝُ : ﺭَﺿِﻴْﺖُ ﺭَﺏِّ، ﻓَﻴﻘُﻮﻝُ : ﻟَﻚَ ﺫَﻟِﻚَ ﻭَﻣِﺜْﻠُﻪُ
ﻭَﻣِﺜْﻠُﻪُ ﻭَﻣِﺜْﻠُﻪُ ﻭَﻣِﺜْﻠُﻪُ، ﻓَﻴﻘُﻮﻝُ ﻓِﻲ ﺍﻟﺨَﺎﻣِﺴَﺔِ . ﺭَﺿِﻴْﺖُ ﺭَﺏِّ، ﻓَﻴﻘُﻮﻝُ : ﻫَﺬَﺍ
ﻟَﻚَ ﻭَﻋَﺸَﺮَﺓُ ﺃَﻣْﺜَﺎﻟِﻪِ، ﻭَﻟَﻚَ ﻣَﺎ ﺍﺷْﺘَﻬَﺖْ ﻧَﻔْﺴُﻚَ، ﻭَﻟَﺬَّﺕْ ﻋَﻴْﻨُﻚَ . ﻓَﻴﻘُﻮﻝُ :
ﺭَﺿِﻴﺖُ ﺭَﺏِّ . ﻗَﺎﻝَ : ﺭَﺏِّ ﻓَﺄَﻋْﻼَﻫُﻢْ ﻣَﻨْﺰِﻟَﺔً ؟ ﻗﺎﻝَ : ﺃُﻭﻟَﺌِﻚَ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺃَﺭَﺩْﺕُ ؛
ﻏَﺮَﺳْﺖُ ﻛَﺮَﺍﻣَﺘَﻬُﻢْ ﺑِﻴَﺪِﻱ، ﻭَﺧَﺘَﻤْﺖُ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ، ﻓَﻠَﻢْ ﺗَﺮَ ﻋَﻴْﻦٌ، ﻭَﻟَﻢْ ﺗَﺴْﻤَﻊْ ﺃُﺫُﻥٌ،
ﻭَﻟَﻢْ ﻳَﺨْﻄُﺮْ ﻋَﻠَﻰ ﻗَﻠْﺐِ ﺑَﺸَﺮٍ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
৪/১৮৯২। মুগীরা ইবনে শু‘বা
রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘মুসা স্বীয় প্রভুকে
জিজ্ঞাসা করলেন, ‘জান্নাতিদের মধ্যে
সবচেয়ে নিম্নমানের জান্নাতি কে হবে?’
আল্লাহ তা‘আলা উত্তর দিলেন, সে হবে
এমন একটি লোক, যে সমস্ত জান্নাতিগণ
জান্নাতে প্রবেশ করার পর [সর্বশেষে]
আসবে। তখন তাকে বলা হবে, ‘তুমি
জান্নাতে প্রবেশ কর।’ সে বলবে, ‘হে প্রভু!
আমি কিভাবে [কোথায়] প্রবেশ করব? অথচ
সমস্ত লোক নিজ নিজ জায়গা দখল করেছে
এবং নিজ নিজ অংশ নিয়ে ফেলেছে।’ তখন
তাকে বলা হবে, ‘তুমি কি এতে সন্তুষ্ট যে,
পৃথিবীর রাজাদের মধ্যে কোন রাজার মত
তোমার রাজত্ব হবে?’ সে বলবে, ‘প্রভু!
আমি এতেই সন্তুষ্ট।’ তারপর আল্লাহ বলবেন,
‘তোমার জন্য তাই দেওয়া হল। আর ওর
সমতুল্য, ওর সমতুল্য, ওর সমতুল্য, ওর সমতুল্য
[অর্থাৎ ওর চার গুণ রাজত্ব দেওয়া হল]।’ সে
পঞ্চমবারে বলবে, ‘হে আমার প্রভু! আমি
[ওতেই] সন্তুষ্ট।’ তখন আল্লাহ বলবেন,
‘তোমার জন্য এটা এবং এর দশগুণ [রাজত্ব
তোমাকে দেওয়া হল]। এ ছাড়াও তোমার
জন্য রইল সে সব বস্তু, যা তোমার অন্তর
কামনা করবে এবং তোমার চক্ষু তৃপ্তি
উপভোগ করবে।’ তখন সে বলবে, ‘আমি ওতেই
সন্তুষ্ট, হে প্রভু!’
[মুসা] বললেন, ‘হে আমার প্রতিপালক!
আর সর্বোচ্চ স্তরের জান্নাতি কারা
হবে?’ আল্লাহ তা‘আলা বললেন, ‘তারা হবে
সেই সব বান্দা, যাদেরকে আমি চাই। আমি
স্বহস্তে যাদের জন্য সম্মান-বৃক্ষ রোপণ
করেছি এবং তার উপর সীল-মোহর অংকিত
করে দিয়েছি [যাতে তারা ব্যতিরেকে
অন্য কেউ তা দেখতে না পায়]। সুতরাং
কোন চক্ষু তা দর্শন করেনি, কোন কর্ণ তা
শ্রবণ করেনি এবং কোন মানুষের মনে তা
কল্পিতও হয়নি।’’ (মুসলিম) [4]
5/1893 ﻭَﻋَﻦِ ﺍﺑﻦِ ﻣَﺴﻌُﻮﺩ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ
ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : «ﺇِﻧِّﻲ ﻷَﻋْﻠَﻢُ ﺁﺧِﺮَ ﺃَﻫْﻞِ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ﺧُﺮُﻭﺟﺎً ﻣِﻨْﻬَﺎ، ﻭَﺁﺧِﺮَ
ﺃَﻫْﻞِ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔِ ﺩُﺧُﻮﻻً ﺍﻟﺠَﻨَّﺔَ . ﺭَﺟُﻞٌ ﻳَﺨْﺮُﺝُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ﺣَﺒْﻮﺍً، ﻓَﻴﻘُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪُ - ﻋَﺰَّ
ﻭَﺟَﻞَّ - ﻟَﻪُ : ﺍﺫْﻫَﺐْ ﻓﺎﺩْﺧُﻞِ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔَ، ﻓَﻴَﺄﺗِﻴﻬَﺎ، ﻓَﻴُﺨَﻴَّﻞُ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺃَﻧَّﻬَﺎ ﻣَﻸَﻯ،
ﻓَﻴَﺮْﺟِﻊُ، ﻓَﻴﻘُﻮﻝُ : ﻳَﺎ ﺭَﺏِّ ﻭَﺟَﺪْﺗُﻬَﺎ ﻣَﻸَﻯ ! ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪُ ـ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ ـ ﻟَﻪُ:
ﺍﺫْﻫَﺐْ ﻓَﺎﺩْﺧُﻞِ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔَ، ﻓَﻴَﺄﺗِﻴﻬَﺎ، ﻓَﻴُﺨﻴَّﻞُ ﺇِﻟَﻴﻪِ ﺃﻧَّﻬﺎ ﻣَﻸَﻯ، ﻓﻴَﺮْﺟِﻊُ . ﻓَﻴَﻘُﻮْﻝُ :
ﻳَﺎ ﺭَﺏِّ ﻭَﺟَﺪْﺗُﻬَﺎ ﻣَﻸَﻯ، ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪُ ـ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ ـ ﻟَﻪُ : ﺍﺫْﻫَﺐْ ﻓَﺎﺩْﺧُﻞِ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔَ
. ﻓَﺈِﻥَّ ﻟَﻚَ ﻣِﺜْﻞَ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﻭَﻋَﺸﺮَﺓَ ﺃَﻣْﺜَﺎﻟِﻬَﺎ ؛ ﺃَﻭْ ﺇِﻥَّ ﻟَﻚَ ﻣِﺜْﻞَ ﻋَﺸﺮَﺓِ ﺃَﻣْﺜَﺎﻝِ
ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ، ﻓَﻴﻘُﻮﻝُ : ﺃَﺗَﺴْﺨَﺮُ ﺑِﻲ، ﺃَﻭْ ﺗَﻀْﺤَﻚُ ﺑِﻲ ﻭَﺃﻧْﺖَ ﺍﻟﻤَﻠِﻚُ ؟ » ﻗَﺎﻝَ : ﻓَﻠَﻘَﺪْ
ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺿَﺤِﻚَ ﺣَﺘَّﻰ ﺑَﺪَﺕْ ﻧَﻮَﺍﺟِﺬُﻩُ ﻓَﻜَﺎﻥَ
ﻳَﻘُﻮْﻝُ : « ﺫَﻟِﻚَ ﺃَﺩْﻧَﻰ ﺃَﻫْﻞِ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔِ ﻣَﻨْﺰِﻟَﺔً » . ﻣﺘﻔﻖ ﻋﻠﻴﻪ
৫/১৮৯৩। ইবনে মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু
আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘সর্বশেষে যে ব্যক্তি
জাহান্নাম থেকে বের হয়ে জান্নাতে
প্রবেশ করবে, তার সম্পর্কে অবশ্যই আমার
জানা আছে। এক ব্যক্তি হামাগুড়ি দিয়ে
[বা বুকে ভর দিয়ে] চলে জাহান্নাম থেকে
বের হবে। তখন আল্লাহ আয্যা অজাল্ল্
বলবেন, ‘যাও জান্নাতে প্রবেশ কর।’
সুতরাং সে জান্নাতের কাছে এলে তার
ধারণা হবে যে, জান্নাত পরিপূর্ণ হয়ে
গেছে। ফলে সে ফিরে এসে বলবে, ‘হে প্রভু!
জান্নাত তো পরিপূর্ণ দেখলাম।’ আল্লাহ
আয্যা অজাল্ল্ বলবেন, ‘যাও, জান্নাতে
প্রবেশ কর।’ তখন সে জান্নাতের কাছে
এলে তার ধারণা হবে যে, জান্নাত তো
ভরে গেছে। তাই সে আবার ফিরে এসে
বলবে, ‘হে প্রভু! জান্নাত তো ভরতি
দেখলাম।’ তখন আল্লাহ আয্যা অজাল্ল্
বলবেন, ‘যাও জান্নাতে প্রবেশ কর।
তোমার জন্য থাকল পৃথিবীর সমতুল্য এবং
তার দশগুণ [পরিমাণ বিশাল জান্নাত]!
অথবা তোমার জন্য পৃথিবীর দশগুণ
[পরিমাণ বিশাল জান্নাত রইল]!’ তখন সে
বলবে, ‘হে প্রভু! তুমি কি আমার সাথে
ঠাট্টা করছ? অথবা আমার সাথে হাসি-
মজাক করছ অথচ তুমি বাদশাহ [হাসি-
ঠাট্টা তোমাকে শোভা দেয় না]।’’
বর্ণনাকারী বলেন, তখন আমি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে
এমনভাবে হাসতে দেখলাম যে, তাঁর
চোয়ালের দাঁতগুলি প্রকাশিত হয়ে গেল।
তিনি বললেন, ‘‘এ হল সর্বনিম্ন মানের
জান্নাতি।’’ (বুখারী-মুসলিম) [5]
6/1894 ﻭَﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻣُﻮﺳَﻰ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ : ﺃَﻥَّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ
ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗَﺎﻝَ : « ﺇِﻥَّ ﻟِﻠﻤُﺆْﻣِﻦِ ﻓِﻲ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔِ ﻟَﺨَﻴْﻤَﺔً ﻣِﻦْ ﻟُﺆْﻟُﺆَﺓٍ ﻭَﺍﺣِﺪَﺓٍ ﻣُﺠَﻮَّﻓَﺔٍ
ﻃُﻮﻟُﻬَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﺀِ ﺳِﺘُّﻮﻥَ ﻣِﻴﻼً . ﻟِﻠﻤُﺆْﻣِﻦِ ﻓِﻴﻬَﺎ ﺃَﻫْﻠُﻮﻥَ ﻳَﻄُﻮﻑُ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢُ
ﺍﻟﻤُﺆْﻣِﻦُ ﻓَﻼَ ﻳَﺮَﻯ ﺑَﻌْﻀُﻬُﻢْ ﺑَﻌْﻀﺎً » . ﻣﺘﻔﻖ ﻋﻠﻴﻪ
৬/১৮৯৪। আবূ মুসা আশআরী
রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, ‘‘নিশ্চয় জান্নাতে মুমীনদের জন্য
একটি শূন্যগর্ভ মোতির তাঁবু থাকবে, যার
দৈর্ঘ্য হবে ষাট মাইল। এর মধ্যে মুমীনদের
জন্য একাধিক স্ত্রী থাকবে। যাদের
সকলের সাথে মুমিন সহবাস করবে। কিন্তু
তাদের কেউ কাউকে দেখতে পাবে না।’’
(বুখারী-মুসলিম) [6]
এক মাইলঃ ছয় হাজার হাত সমান
দীর্ঘ।
7/1895 ﻭَﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﺳَﻌِﻴﺪٍ ﺍﻟﺨُﺪﺭِﻱِّ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ
ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ، ﻗَﺎﻝَ : « ﺇِﻥَّ ﻓِﻲ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔِ ﺷَﺠَﺮَﺓً ﻳَﺴِﻴﺮُ ﺍﻟﺮَّﺍﻛِﺐُ ﺍﻟﺠَﻮَﺍﺩَ
ﺍﻟﻤُﻀَﻤَّﺮَ ﺍﻟﺴَّﺮﻳﻊَ ﻣِﺌَﺔَ ﺳَﻨَﺔٍ ﻣَﺎ ﻳَﻘْﻄَﻌُﻬﺎ » . ﻣﺘﻔﻖ ﻋﻠﻴﻪ
ﻭَﺭَﻭَﻳَﺎﻩُ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﺤِﻴﺤَﻴﻦِ ﺃَﻳﻀﺎً ﻣِﻦ ﺭِﻭَﺍﻳَﺔِ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻪُ
ﻗَﺎﻝَ : « ﻳَﺴﻴﺮُ ﺍﻟﺮَّﺍﻛِﺐُ ﻓِﻲ ﻇِﻠِّﻬﺎ ﻣِﺌَﺔَ ﺳَﻨَﺔٍ ﻣَﺎ ﻳَﻘْﻄَﻌُﻬﺎ » .
৭/১৮৯৫। আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু
আনহু হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
‘‘জান্নাতের মধ্যে এমন একটি বৃক্ষ আছে,
যার ছায়ায় কোন আরওহী উৎকৃষ্ট,
বিশেষভাবে প্রতিপালিত হালকা দেহের
দ্রুতগামী ঘোড়ায় চড়ে একশো বছর চললেও
তা অতিক্রম করতে সক্ষম হবে না।’’
(বুখারী-মুসলিম) [7]
এটিকেই আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু
আনহু হতে বুখারী-মুসলিম সহীহায়নে
বর্ণনা করেছেন যে, ‘‘একটি সওয়ার
[অশ্বারোহী] তার ছায়ায় একশো বছর
ব্যাপী চললেও তা অতিক্রম করতে পারবে
না।’’
8/1896 ﻭَﻋَﻨْﻪ ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗَﺎﻝَ : « ﺇِﻥَّ ﺃَﻫْﻞَ
ﺍﻟﺠَﻨَّﺔِ ﻟَﻴَﺘَﺮَﺍﺀَﻭْﻥَ ﺃَﻫْﻞَ ﺍﻟﻐُﺮَﻑِ ﻣِﻦ ﻓَﻮْﻗِﻬِﻢْ ﻛَﻤَﺎ ﺗَﺮَﺍﺀَﻭْﻥَ ﺍﻟﻜَﻮْﻛَﺐَ ﺍﻟﺪُّﺭِّﻱَّ ﺍﻟﻐَﺎﺑِﺮَ
ﻓِﻲ ﺍﻷُﻓُﻖ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻤَﺸْﺮِﻕِ ﺃَﻭِ ﺍﻟﻤَﻐْﺮِﺏِ ﻟِﺘَﻔَﺎﺿُﻞِ ﻣَﺎ ﺑَﻴْﻨَﻬُﻢْ » ﻗَﺎﻟُﻮﺍ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ
ﺍﻟﻠﻪِ ؛ ﺗِﻠْﻚَ ﻣَﻨَﺎﺯِﻝُ ﺍﻷَﻧﺒِﻴَﺎﺀِ ﻻَ ﻳَﺒْﻠُﻐُﻬﺎ ﻏَﻴْﺮُﻫُﻢْ ﻗَﺎﻝَ : « ﺑَﻠَﻰ ﻭَﺍﻟَّﺬِﻱ ﻧَﻔْﺴِﻲ
ﺑِﻴَﺪِﻩِ، ﺭِﺟَﺎﻝٌ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﺑِﺎﻟﻠﻪِ ﻭَﺻَﺪَّﻗُﻮﺍ ﺍﻟﻤُﺮْﺳَﻠِﻴﻦَ » . ﻣﺘﻔﻖ ﻋﻠﻴﻪ
৮/১৮৯৬। উক্ত রাবী [আবূ সাঈদ খুদরী
রাদিয়াল্লাহু আনহু] হতে বর্ণিত, নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, ‘‘অবশ্যই জান্নাতিগণ তাদের
উপরের বালাখানার অধিবাসীদের
এমনভাবে দেখতে পাবে, যেমন তোমরা
আকাশের পূর্ব অথবা পশ্চিম দিগন্তে
উজ্জ্বল অস্তগামী তারকা গভীর দৃষ্টিতে
দেখতে পাও। এটি হবে তাদের মর্যাদার
ব্যবধানের জন্য।’’ [সাহাবীগণ] বললেন, ‘হে
আল্লাহর রসূল! এ তো নবীগণের স্থান;
তাঁরা ছাড়া অন্যরা সেখানে পৌঁছতে
পারবে না।’ তিনি বললেন, ‘‘অবশ্যই, সেই
সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ
আছে! সেই লোকরাও [পৌঁছতে পারবে]
যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান রেখে
রসূলগণকে সত্য বলে বিশ্বাস করেছে।’’
(বুখারী-মুসলিম) [8]
9/1897 ﻭَﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳﺮَﺓَ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ : ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻰ
ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗَﺎﻝَ : « ﻟَﻘَﺎﺏُ ﻗَﻮْﺱٍ ﻓِﻲ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔِ ﺧَﻴْﺮٌ ﻣِﻤَّﺎ ﺗَﻄْﻠُﻊُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
ﺍﻟﺸَّﻤْﺲُ ﺃَﻭ ﺗَﻐْﺮُﺏُ » . ﻣﺘﻔﻖ ﻋﻠﻴﻪ
৯/১৮৯৭। আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু
আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
‘‘জান্নাতে ধনুক পরিমাণ স্থান [দুনিয়ার]
যেসব বস্তুর উপর সূর্য উদিত কিংবা
অস্তমিত হচ্ছে সেসব বস্তু চেয়েও উত্তম।’’
(বুখারী-মুসলিম) [9]
10/1898 ﻭَﻋَﻦْ ﺃَﻧَﺲٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋﻨﻪ : ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ
ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗَﺎﻝَ : « ﺇِﻥَّ ﻓِﻲ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔِ ﺳُﻮْﻗﺎً ﻳَﺄﺗُﻮﻧَﻬَﺎ ﻛُﻞَّ ﺟُﻤُﻌَﺔٍ . ﻓَﺘَﻬُﺐُّ ﺭِﻳﺢُ
ﺍﻟﺸَّﻤَﺎﻝِ، ﻓَﺘَﺤْﺜُﻮ ﻓﻲ ﻭُﺟُﻮﻫِﻬِﻢ ﻭَﺛِﻴَﺎﺑِﻬِﻢْ، ﻓَﻴَﺰﺩَﺍﺩُﻭﻥَ ﺣُﺴﻨﺎً ﻭَﺟَﻤَﺎﻻً ﻓَﻴَﺮْﺟِﻌُﻮﻥَ
ﺇﻟَﻰ ﺃَﻫْﻠِﻴﻬِﻢْ، ﻭَﻗَﺪ ﺍﺯْﺩَﺍﺩُﻭﺍ ﺣُﺴْﻨﺎً ﻭَﺟَﻤَﺎﻻً، ﻓَﻴﻘُﻮﻝُ ﻟَﻬُﻢْ ﺃَﻫْﻠُﻮﻫُﻢْ : ﻭَﺍﻟﻠﻪِ ﻟﻘﺪِ
ﺍﺯْﺩَﺩْﺗُﻢْ ﺣُﺴْﻨﺎً ﻭَﺟَﻤَﺎﻻً ! ﻓَﻴﻘُﻮﻟُﻮﻥَ : ﻭَﺃﻧْﺘُﻢْ ﻭَﺍﻟﻠﻪِ ﻟَﻘَﺪِ ﺍﺯْﺩَﺩْﺗُﻢْ ﺑَﻌْﺪَﻧَﺎ ﺣُﺴْﻨﺎً
ﻭَﺟَﻤﺎﻻً ! » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
১০/১৮৯৮। আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু
হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
‘‘জান্নাতে একটি বাজার হবে, যেখানে
জান্নাতিগণ প্রত্যেক শুক্রবার আসবে।
তখন উত্তর দিক থেকে বায়ু প্রবাহিত হবে,
যা তাদের চেহারায় ও কাপড়ে সুগন্ধ
ছড়িয়ে দেবে। ফলে তাদের শোভা-
সৌন্দর্য আরও বেড়ে যাবে। অতঃপর তারা
রূপ-সৌন্দর্যের বৃদ্ধি নিয়ে তাদের
স্ত্রীগণের কাছে ফিরবে। তখন তারা
তাদেরকে দেখে বলবে, ‘আল্লাহর কসম!
আপনাদের রূপ-সৌন্দর্য বেড়ে গেছে!’
তারাও বলে উঠবে, ‘আল্লাহর শপথ!
আমাদের যাবার পর তোমাদেরও রূপ-
সৌন্দর্য বেড়ে গেছে!’’ (মুসলিম) [10]
11/1899 ﻭَﻋَﻦْ ﺳَﻬْﻞِ ﺑﻦِ ﺳَﻌﺪٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ : ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ
ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗَﺎﻝَ : « ﺇِﻥَّ ﺃَﻫْﻞَ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔِ ﻟَﻴَﺘَﺮَﺍﺀَﻭْﻥَ ﺍﻟﻐُﺮَﻑَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔِ
ﻛَﻤَﺎ ﺗَﺘَﺮَﺍﺀَﻭْﻥَ ﺍﻟﻜَﻮﻛَﺐَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﺀِ » . ﻣﺘﻔﻖ ﻋﻠﻴﻪ
১১/১৮৯৯। সাহ্ল ইবনে সা’দ
রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘জান্নাতিগণ
জান্নাতের বালাখানাগুলিকে এমন
গভীরভাবে দেখবে, যেভাবে তোমরা
আকাশের তারকা দেখে থাক।’’ (বুখারী-
মুসলিম) [11]
12/1900 ﻭَﻋَﻨْﻪ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗَﺎﻝَ : ﺷَﻬِﺪْﺕُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻﻠﻰ
ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻣَﺠْﻠِﺴﺎً ﻭَﺻَﻒَ ﻓِﻴﻪِ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔَ ﺣَﺘَّﻰ ﺍﻧْﺘَﻬَﻰ، ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻝَ ﻓِﻲ ﺁﺧِﺮِ
ﺣَﺪِﻳﺜِﻪِ : «ﻓﻴﻬَﺎ ﻣَﺎ ﻻَ ﻋَﻴﻦٌ ﺭَﺃَﺕْ، ﻭَﻻَ ﺃُﺫُﻥٌ ﺳَﻤِﻌَﺖْ، ﻭَﻻَ ﺧَﻄَﺮَ ﻋَﻠﻰ ﻗَﻠْﺐِ
ﺑَﺸَﺮٍ » ﺛُﻢَّ ﻗَﺮَﺃَ : ﴿ ﺗَﺘَﺠَﺎﻓَﻰٰ ﺟُﻨُﻮﺑُﻬُﻢۡ ﻋَﻦِ ﭐﻟۡﻤَﻀَﺎﺟِﻊِ ﻳَﺪۡﻋُﻮﻥَ ﺭَﺑَّﻬُﻢۡ ﺧَﻮۡﻓٗﺎ
ﻭَﻃَﻤَﻌٗﺎ ﻭَﻣِﻤَّﺎ ﺭَﺯَﻗۡﻨَٰﻬُﻢۡ ﻳُﻨﻔِﻘُﻮﻥَ ١٦ ﻓَﻠَﺎ ﺗَﻌۡﻠَﻢُ ﻧَﻔۡﺲٞ ﻣَّﺎٓ ﺃُﺧۡﻔِﻲَ ﻟَﻬُﻢ ﻣِّﻦ ﻗُﺮَّﺓِ
ﺃَﻋۡﻴُﻦٖ ﺟَﺰَﺍٓﺀَۢ ﺑِﻤَﺎ ﻛَﺎﻧُﻮﺍْ ﻳَﻌۡﻤَﻠُﻮﻥَ ١٧ ﴾ [ ﺍﻟﺴﺠﺪﺓ : ١٦، ١٧] . ﺭﻭﺍﻩ
ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ
১২/১৯০০। উক্ত রাবী রাদিয়াল্লাহু আনহু
হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর
এমন এক মজলিসে উপস্থিত ছিলাম,
যেখানে তিনি জান্নাত সম্পর্কে
আলোচনা করছিলেন। শেষ পর্যন্ত তিনি
তা সমাপ্ত করলেন এবং আলোচনার শেষে
বললেন, ‘‘জান্নাতে এমন নিয়ামত [সুখ-
সামগ্রী] বিদ্যমান আছে যা কোন চক্ষু
দর্শন করেনি, কোন কর্ণ শ্রবণ করেনি এবং
কোন মানুষের মনে তার ধারণার উদ্রেকও
হয়নি. তারপর তিনি এই আয়াত পাঠ করলেন,
যার অর্থ হল, ‘তারা শয্যা-ত্যাগ করে
আকাঙ্ক্ষা ও আশংকার সাথে তাদের
প্রতিপালককে ডাকে এবং আমি তাদেরকে
যে রুযী প্রদান করেছি তা হতে তারা দান
করে। কেউই জানে না তার জন্য তার
কৃতকর্মের বিনিময় স্বরূপ নয়ন-প্রীতিকর কি
পুরস্কার লুকিয়ে রাখা হয়েছে।’’ (সূরা
সাজদাহ ১৬-১৭ আয়াত, বুখারী] [12]
13/1901 ﻭَﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﺳَﻌِﻴﺪٍ ﻭَﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ : ﺃَﻥَّ
ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗَﺎﻝَ : « ﺇِﺫَﺍ ﺩَﺧَﻞَ ﺃَﻫْﻞُ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔِ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔَ
ﻳُﻨَﺎﺩِﻱ ﻣُﻨَﺎﺩٍ : ﺇِﻥَّ ﻟَﻜُﻢْ ﺃَﻥْ ﺗَﺤْﻴَﻮْﺍ، ﻓَﻼَ ﺗَﻤُﻮﺗُﻮﺍ ﺃَﺑَﺪﺍً، ﻭَﺇِﻥَّ ﻟَﻜُﻢْ ﺃَﻥْ ﺗَﺼِﺤُّﻮﺍ، ﻓَﻼَ
ﺗَﺴْﻘَﻤُﻮﺍ ﺃَﺑَﺪﺍً، ﻭَﺇِﻥَّ ﻟَﻜﻢْ ﺃَﻥْ ﺗَﺸِﺒُّﻮﺍ ﻓَﻼَ ﺗَﻬْﺮَﻣُﻮﺍ ﺃَﺑَﺪﺍً، ﻭَﺇِﻥَّ ﻟَﻜُﻢْ ﺃَﻥْ ﺗَﻨْﻌَﻤُﻮﺍ،
ﻓَﻼَ ﺗَﺒْﺄﺳُﻮﺍ ﺃَﺑَﺪﺍً » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
১৩/১৯০১। আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু
আনহু ও আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু
হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
‘‘জান্নাতিরা যখন জান্নাতে প্রবেশ করে
যাবে, তখন একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা
করবে যে, তোমাদের জন্য এখন অনন্ত জীবন;
তোমরা আর কখনো মরবে না। তোমাদের
জন্য এখন চির সুস্বাস্থ্য; তোমরা আর কখনো
অসুস্থ হবে না। তোমাদের জন্য এখন চির
যৌবন; তোমরা আর কখনো বৃদ্ধ হবে না।
তোমাদের জন্য এখন চির সুখ ও পরমানন্দ;
তোমরা আর কখনো দুঃখ-কষ্ট পাবে না।’’
(মুসলিম) [13]
14/1902 ﻭَﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳﺮَﺓَ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ : ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ
ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗَﺎﻝَ : « ﺇِﻥَّ ﺃَﺩْﻧَﻰ ﻣَﻘْﻌَﺪِ ﺃَﺣَﺪِﻛُﻢْ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔِ ﺃَﻥْ ﻳَﻘُﻮﻝَ
ﻟَﻪُ : ﺗَﻤَﻦَّ، ﻓَﻴَﺘَﻤَﻨَّﻰ ﻭَﻳَﺘَﻤَﻨَّﻰ ﻓَﻴﻘُﻮﻝُ ﻟَﻪُ : ﻫَﻞْ ﺗَﻤَﻨَّﻴﺖَ ؟ ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ : ﻧَﻌَﻢْ،
ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ ﻟَﻪُ : ﻓَﺈِﻥَّ ﻟَﻚَ ﻣَﺎ ﺗَﻤَﻨَّﻴﺖَ ﻭَﻣِﺜْﻠَﻪُ ﻣَﻌَﻪُ » . ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
১৪/১৯০২। আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু
আনহু হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
‘‘তোমাদের মধ্যে নিম্নতম জান্নাতির
মর্যাদা এই হবে যে, তাকে আল্লাহ
তা‘আলা বলবেন, ‘তুমি কামনা-আকাঙ্ক্ষা
প্রকাশ কর [আমি অমুক জিনিস চাই, অমুক
বস্তু চাই ইত্যাদি]।’ সুতরাং সে কামনা
করবে আর কামনা করতেই থাকবে। তিনি
বলবেন, ‘তুমি কামনা করলে কি?’ সে উত্তর
দেবে, ‘হ্যাঁ।’ তিনি তাকে বলবেন, ‘তোমার
জন্য সেই পরিমাণ রইল, যে পরিমাণ তুমি
কামনা করেছ এবং তার সাথে সাথে তার
সমতুল্য আরও কিছু রইল।’’ (মুসলিম) [14]
15/1903 ﻭَﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﺳَﻌِﻴﺪٍ ﺍﻟﺨُﺪﺭِﻱِّ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ : ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ
ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗَﺎﻝَ : « ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ـ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ ـ ﻳَﻘُﻮﻝُ ﻷَﻫْﻞِ
ﺍﻟﺠَﻨَّﺔِ : ﻳَﺎ ﺃَﻫْﻞَ ﺍﻟﺠَﻨَّﺔِ، ﻓَﻴَﻘُﻮﻟُﻮﻥَ : ﻟَﺒَّﻴﻚَ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻭَﺳَﻌْﺪَﻳْﻚَ، ﻭَﺍﻟﺨَﻴْﺮُ ﻓِﻲ ﻳَﺪﻳْﻚَ،
ﻓَﻴﻘُﻮﻝُ : ﻫَﻞْ ﺭَﺿِﻴﺘُﻢ ؟ ﻓَﻴﻘُﻮﻟُﻮﻥَ : ﻭَﻣَﺎ ﻟَﻨَﺎ ﻻَ ﻧَﺮْﺿَﻰ ﻳَﺎ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻭَﻗَﺪْ ﺃَﻋْﻄَﻴْﺘَﻨَﺎ
ﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﺗُﻌْﻂِ ﺃَﺣﺪﺍً ﻣِﻦْ ﺧَﻠْﻘِﻚَ، ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ : ﺃَﻻَ ﺃُﻋْﻄِﻴﻜُﻢْ ﺃَﻓْﻀَﻞَ ﻣِﻦْ ﺫَﻟِﻚَ ؟
ﻓَﻴﻘُﻮﻟُﻮﻥَ : ﻭَﺃَﻱُّ ﺷَﻲﺀٍ ﺃَﻓْﻀَﻞُ ﻣِﻦْ ﺫَﻟِﻚَ ؟ ﻓَﻴﻘُﻮﻝُ : ﺃُﺣِﻞُّ ﻋَﻠَﻴﻜُﻢْ ﺭِﺿْﻮَﺍﻧِﻲ ﻓَﻼَ
ﺃَﺳْﺨَﻂُ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﺑَﻌْﺪَﻩُ ﺃَﺑَﺪﺍً » . ﻣﺘﻔﻖ ﻋﻠﻴﻪ
১৫/১৯০৩। আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু
আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘মহান
প্রভু জান্নাতিদেরকে সম্বোধন করে
বলবেন, ‘হে জান্নাতের অধিবাসীগণ!’
তারা উত্তরে বলবে, ‘হে আমাদের
প্রতিপালক! আমরা হাযির আছি, যাবতীয়
সুখ ও কল্যাণ তোমার হাতে আছে।’ তখন
আল্লাহ তা‘আলা বললেন, ‘তোমরা কি
সন্তুষ্ট হয়েছ?’ তারা বলবে, ‘আমাদের কি
হয়েছে যে, সন্তুষ্ট হব না? হে আমাদের
প্রতিপালক! তুমি তো আমাদেরকে সেই
জিনিস দান করেছ, যা তোমার কোন
সৃষ্টিকে দান করনি।’ তখন তিনি বলবেন,
‘এর চেয়েও উত্তম কিছু তোমাদেরকে দান
করব না কি?’ তারা বলবে, ‘এর চেয়েও উত্তম
বস্তু আর কি হতে পারে?’ মহান প্রভু জবাবে
বলবেন, ‘তোমাদের উপর আমার সন্তুষ্টি
অনিবার্য করব। অতঃপর আমি তোমাদের
প্রতি কখনো অসন্তুষ্ট হব না।’’ (বুখারী-
মুসলিম) [15]
No comments:
Post a Comment