বিবাহের জন্য বায়োডাটার প্রচলন আমাদের দাদী-নানীদের যুগে ছিল না।
এতে করে কি তারা পরস্পরকে ভালোভাবে বুঝেন নি?
নাকি তাদের ভালোবাসায় ঘাটতি পরেছিল?
নাকি তাদের ভালোবাসায় ঘাটতি পরেছিল?
বরং পরিসংখ্যানে দেখা যায় বর্তমানের একে অপরকে ভালোভাবে বুঝার জন্য বায়োডাটা দ্বারা যাচাইকৃত বিয়ে গুলোই অপেক্ষাকৃত কম শক্তিশালী।
আমাদের দাদী-নানীদের যুগের বিয়ে গুলোই ছিল অধিক টেকসই ও স্থায়ী।।
বিবাহের নিমিত্তে লিখিত বায়োডাটায় সাধারণত এমনসব তথ্য থাকে, যার প্রায় কোনটাই বৈবাহিক জীবনে কোন কাজে আসে না। তবু এই তথ্যগুলোকে খুব গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে কার্য সমাধার আয়োজন করা হয়। অথচ আজ পর্যন্ত কোন দম্পতি পাওয়া যাবে না যাদের দাম্পত্য সমস্যাগুলো স্ত্রীর সুন্দর মুখ কিংবা স্বামীর উচ্চতার দিকে তাকিয়ে সমাধান হয়ে গেছে।
বিভিন্ন দম্পতির সাংসারিক জীবনে যেসব সমস্যা দেখা যায়, সেগুলোর সমাধানের ব্যাপারে চিন্তা করে দেখি-- ঐ স্বামী যদি অমুক ভার্সিটিতে না পড়ে যদি ডিইউ বা বুয়েটে পড়তেন, তবে কি সমস্যা সমাধান হয়ে যেত ??
অথবা স্ত্রীর গায়ের রঙ আরেকটু পরিষ্কার হলে কি সমস্যা মিটে যেত ??
কোন উত্তর নেই।।
অথচ পাত্র-পাত্রীর সেক্যুলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ডিগ্রি, এগুলোকে বিয়ের সময় কত গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়।
কেন উঁচু উঁচু ডিগ্রীধারির সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে মানুষের ঘর থেকে সুখটাও উড়ে গেছে?
কেন আগেরদিনের ‘পরাধীন’ গৃহিণী মায়েদের ঘরের মমতা আর শান্তি আজকের ‘স্বাধীন’ চাকরিজীবী মায়েদের ঘরে নেই?
কেন আজ একটার পর একটা ডিভোর্সের সংবাদ আসে?
কেন এত এত ‘উচ্চশিক্ষা’র বহর আর ‘নারীর ক্ষমতায়ন’ এর পরও ঘর ভাংছে?
কেন মেয়েরা পুরুষের সাথে ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং সব শেখার পরও আত্মহত্যা করে?
কেন গৃহিণী মায়েদের ‘ব্যাকডেটেড’ বলা ‘আধুনিকা কর্মজীবী নারী’কে সুখের খোঁজে সাইকোলজিস্টের কাছে ধরনা দিতে হয়?
কারণ একটাই। সেক্যুলার শিক্ষার বহরকে মাথায় জায়গা দিতে গিয়ে যে ইসলামিক জ্ঞান, মূল্যবোধ, নৈতিকতা সব হারাতে বসেছে মানুষ।
পাত্র-পাত্রী বাছাইয়ের সময় দ্বীনদারিতাকে স্রেফ ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলে দুনিয়াবি ‘যোগ্যতা’কে সব ভেবে সেই দিকেই ঝাপিয়ে পরছে মানুষ।
কেউ হয়তো নামে মাত্র দ্বীনদারী পাত্র-পাত্রী খুঁজছে। কিন্তু আসলে দেখে ডিগ্রী, অর্থ-সম্পদ, সৌন্দর্য্য।
আরে যেই ছেলে প্রস্রাব করে কীভাবে পবিত্র হতে হয় সেটা জানেনা, সে স্ত্রীর কী হক্ব আদায় করবে?
যে সুদী ব্যাঙ্কে চাকরি করে আল্লাহ্র সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে, সে স্ত্রীর কী নিরাপত্তা দেবে?
সমাজের মা-বাবা রা কি বোঝে না?
যে আল্লাহ্কে ভয় করে না, যখন-তখন আল্লাহ্র হক নষ্ট করে, সে কিভাবে অন্যের হক প্রতিষ্ঠা করবে?
মানুষের হক নষ্ট করে, মানুষের সাথে যেই গাদ্দারি করে তো সহজেই পালয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু আল্লাহ্র হক নষ্ট করে তো পালানোর কোন পথ নেই। এতদাসত্ত্বেও যে অহরহ আল্লাহ্র হক নষ্ট করে, তাকে কিভাবে বিশ্বাস করা যায়? তার সাথে কিভাবে জীবন কাটানো যায়??
সুতরাং দুনিয়ার স্টাব্লিশমেন্টকে প্রাধান্য দিয়ে মানুষ শয়তানের প্রথম ফাঁদে পা দেয়।
এরপর দ্বিতীয় ফাঁদ হল বিয়ের অনুষ্ঠান। বিয়ে কোন সামাজিক অনুষ্ঠান না, এটা একটা ধর্মীয় অনুষ্ঠান। কিন্তু এটাকে মুশরিকি কালচারাল ফাংশন বানিয়ে ফেলে যতরকম নষ্টামি আছে সবের যোগান দিয়ে মানুষ দিনশেষে দুয়া করে আল্লাহ্ যেন দাম্পত্য জীবন সুখী করেন।
কী কপটতা!
কী মূর্খতা!!
পুরো বিয়ের অনুষ্ঠানে খুশি করা হয় শয়তানকে, আর শান্তি চাওয়া হয় আল্লাহ্র কাছে!
এরপর দ্বিতীয় ফাঁদ হল বিয়ের অনুষ্ঠান। বিয়ে কোন সামাজিক অনুষ্ঠান না, এটা একটা ধর্মীয় অনুষ্ঠান। কিন্তু এটাকে মুশরিকি কালচারাল ফাংশন বানিয়ে ফেলে যতরকম নষ্টামি আছে সবের যোগান দিয়ে মানুষ দিনশেষে দুয়া করে আল্লাহ্ যেন দাম্পত্য জীবন সুখী করেন।
কী কপটতা!
কী মূর্খতা!!
পুরো বিয়ের অনুষ্ঠানে খুশি করা হয় শয়তানকে, আর শান্তি চাওয়া হয় আল্লাহ্র কাছে!
এরপর সাংসারিক জীবন। প্রথম দুটো ক্ষেত্রে শয়তানকে খুশি করা মানুষেরা এই জীবনে সুখী হয় না।
যখন মানুষ সাংসারিক জীবনে সমস্যায় পড়ে তখন তারা সমাধান চায় শয়তানের কাছে। এটা হল শয়তানের তৃতীয় ফাঁদ। কেউ ভারতীয় সিরিয়ালে সাংসারিক জীবনের সমস্যার সমাধান খুঁজে।
কেউ মুশরিকদের কৃষ্টি-কালচারে কাছে,
কেউ মেহতাব খানম-সারা যাকেরদের মত বাতিল আদর্শের অনুসারীদের কাছে।
কেউ মুশরিকদের কৃষ্টি-কালচারে কাছে,
কেউ মেহতাব খানম-সারা যাকেরদের মত বাতিল আদর্শের অনুসারীদের কাছে।
তাদের দেখানো পথে হেঁটে শান্তি আসা তো দূরের কথা, যেটুকু ছিল তাও চলে যায়। ফলাফল সংসারে বিপর্যয়, কখনো ছাড়াছাড়ি আবার কখনো বা আত্মহনন। আর বেঁচে থেকে হিসাব মেলানো জীবনে কী কী পেলাম না, আর ‘মেয়েরা এত খারাপ’ কিংবা ‘ছেলেরা সবই এমন’ টাইপের বস্তাপচা বুলি।
কী তুচ্ছ এদের জীবন, কী অপমানজনক এদের অস্তিত্ব!
তাহলে বায়োডাটা দেখে-শুনে এত যে সমস্ত বিষয় গুলো যাচাই-বাছাই করে এবং যে সমস্ত বিষয় গুলো প্রাধান্য দিয়ে বিয়ে করা হল এর পরিণাম এত শোচনীয়!!!!!!
যে সমস্ত বিষয় গুলো উল্লেখ করা হল, যে সমস্ত বিষয় গুলো উল্লেখ বায়োডাটা উল্লেখ না থাকলে ঐ ব্যক্তি আন-ফিট বলে ধরা হচ্ছে, প্রত্যাখ্যান করা হচ্ছে তারপরেও কেন দাম্পত্য শান্তি আসলো
না???
না???
আসল কথা হচ্ছেঃ
শান্তি হচ্ছে আল্লাহ্র পক্ষ থেকে, বস্তুত তিনিই হচ্ছেন আস-সালাম!
শান্তি হচ্ছে আল্লাহ্র পক্ষ থেকে, বস্তুত তিনিই হচ্ছেন আস-সালাম!
তার যে দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন তা মুলত আমাদের শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যই দিয়েছেন।
যে ব্যক্তি এই দিক-নির্দেশনাকে তুচ্ছ জ্ঞান করে এমন সব বিষয়কে প্রাধান্য দিবে (যা সাধারণত একটি বায়োডাটায় উল্লেখিত থাকে) সে কি করে শান্তি পেতে পারে??
যে ব্যক্তি এই দিক-নির্দেশনাকে তুচ্ছ জ্ঞান করে এমন সব বিষয়কে প্রাধান্য দিবে (যা সাধারণত একটি বায়োডাটায় উল্লেখিত থাকে) সে কি করে শান্তি পেতে পারে??
আল্লাহ্ কেন এমন নাফরমান ব্যক্তির সংসারে শান্তি ও রহমতের ধারা বর্ষণ করবেন?
বস্তুত যারা ইসলামকে একমাত্র জীবনব্যবস্থা হিসেবে নিয়েছে, তারা যেমনকে দ্বীনদারিতাকে সবার ওপরে রাখে, বিয়ের ক্ষেত্রেও আল্লাহ্কে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করে, বৈবাহিক জীবনের পরীক্ষাগুলো আল্লাহ্র ওপর ভরসা রেখেই মোকাবেলা করে, সব সমস্যার সমাধান ইসলামের মধ্যেই খোঁজে। আল্লাহ্কেই এরা মন থেকে রিজিকের মালিক মনে করে।
এরাই কাঙ্ক্ষিত সেই শান্তির দেখা ঠিকই পায়; সেজন্য লক্ষ টাকা কামানো লাগে না, অভিজাত এলাকায় ফ্ল্যাট বুকিং দেওয়া লাগে না, স্ত্রী-সন্তানের মুখের একটু হাসি আর রাতের আঁধারে স্রষ্টার দরবারে দাঁড়িয়ে ঝরিয়ে ফেলা দু-ফোঁটা চোখের পানিই এদের জীবনকে শান্তিময় করে তুলতে যথেষ্ট।
আল্লাহ্ আমাদের ঘরগুলোকে দ্বীনের জ্ঞানের চর্চার দ্বারা আলোকিত করার তৌফিক দিন। আমাদের প্রাপ্তির মধ্যে সন্তুষ্ট থাকার সামর্থ্য দিন। চিরস্থায়ী ঠিকানাকে স্মরণ করে মুসাফিরের জীবনযাপনের মানসিকতা দান করুন। বিয়ে এবং অন্য সকল ক্ষেত্রে দ্বীন ইসলামের সাথে আপোষহীনতা গড়ে তোলার তৌফিক দিন। আমীন।
No comments:
Post a Comment