Wednesday, May 20, 2015

১০টি ইসলাম ধ্বংসকারী বিষয।




১০টি ইসলাম ধ্বংসকারী বিষয।
-------------------------------------------
হে মুসলিম ভাই!
এ কথা জেনে নিন যে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা সকল বান্দার উপর ইসলামে প্রবেশ করা, উহা আঁকড়ে ধরা এবং উহার পরিপন্থী বিষয় থেকে সতর্ক থাকা ফরজ করেছেন।
আর নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামকে সে দিকে আহবান করার
জন্যই প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ্ এই মর্মে
ঘোষণা দিয়ে বলেন, যে ব্যক্তি নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর
অনুসরণ করবে সে হেদায়াত প্রাপ্ত হবে
পক্ষান্তরে যে তাঁর থেকে বিমুখ হবে সে
পথভ্রষ্ট হবে। তিনি বহু আয়াতে মুরতাদ
হওয়ার মাধ্যম, শির্ক ও কুফরীর সকল
প্রকার হতে সতর্ক করেছেন।
বিদ্যানগণ মুরতাদের বিধি-বিধান
অধ্যায়ে এই মর্মে উল্লেখ করেছেন যে,
একজন মুসলমান ব্যক্তির রক্ত ও ধন-সম্পদ
হালাল কারী বিভিন্ন ইসলাম বিধ্বংসী
কার্য কলাপ সম্পদনের মাধ্যমে মুরতাদ ও
ইসলাম হতে বহিস্কার হয়ে যায়।
ইসলাম বিধ্বংসী কাজ হল সর্ব মোট ১০টি
যা শাইখুল ইসলাম ইমাম মুহাম্মাদ বিন
সুলায়মান আত তামীমী (রহিমাহু্মুল্লাহ) ও
অন্যান্য বিদ্বানগণ উল্লেখ করেছেন।
আমরা ঐ সকল ইসলাম বিধ্বংসী কাজ
গুলো নিন্মে সংক্ষিপ্ত ভাবে কিঞ্চিত
ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ সহ আপনার জন্য
উল্লেখ করছি। যাতে আপনি উক্ত
বিষয়গুলো থেকে সতর্ক থেকে অপরকে
সতর্ক করতে পারেন।
ইসলাম বিধ্বংশী কাজ গুলো নিন্মরূপঃ
প্রথমঃ আল্লাহর ইবাদতে শির্ক করা।
আল্লাহ বলেনঃ
“নিশ্চয় আল্লাহ তার সাথে শির্ক করাকে
ক্ষমা করেন না। উহা ব্যতিরেকে উহার
নিন্ম পর্যায়ের পাপ সবই তিনি যাকে
ইচছা ক্ষমা করেন”। [নিসা : ১১৬]
আল্লাহ তাআলা আরও বলেনঃ
“নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি শির্ক করবে আল্লাহ
তার উপর জান্নাত হারাম করে দিবেন
এবং তার বাসস্থান হবে জাহান্নাম, আর
এই সমস্ত যালিমদের জন্য কোন
সাহায্যকারী থাকবে না”। [সূরা
মায়েদাহ্ : ৭২]
জ্ঞাতব্যঃ এই শির্কের অন্তর্ভূক্ত হল:
মৃতকে আহবান করা, তাদের নিকট ফরিয়াদ
করা, তাদের জন্য নযর-নেয়াজ মানা ও পশু
যবেহ করা। যেমন কোন ব্যক্তি জ্বিনের
জন্য বা কোন কবেরর জন্য যবেহ করল
ইত্যাদি।
দ্বিতীয়ঃ নিজের ও আল্লাহর মধ্যে
মধ্যস্থতা সাব্যস্ত করে তাদের উপরেই
ভরসা রাখা। এই ধরণের ব্যক্তি সর্ব
সম্মতিক্রমে কাফের বলে গণ্য।
তৃতীয়ঃ মুশরিককে মুশরিক বা কাফেরকে
কাফের না বলা বা তাদের কুফরীতে
সন্দেহ পোষণ করা কিংবা তাদের ধর্মকে
সঠিক ভাবা।
চতুর্থঃ এই বিশ্বাস করা যে অন্যের
আদর্শ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামের আদর্শের চাইতে অধিক
পূর্ণাঙ্গ। কিংবা এই বিশ্বাস করা যে,
অন্যের বিধান নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লামের বিধান অপেক্ষা অধিক
উত্তম। (যেমন কেউ কেউ তাগুতের
বিধানকে নবীর বিধানের উপর শ্রেষ্ঠত্ব
দিযে থাকে) সে ব্যক্তি কাফের বলে
গণ্য হবে।
পঞ্চমঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম আনিত কোন বস্তুকে ঘৃণার
চোখে দেখা। এমতাবস্থায় সে কাফের
বলে গণ্য হবে যদিও সে ঐ বস্তুর উপর
বাহ্যিক ভাবে আমল করে। আল্লাহ
তাআলা বলেনঃ
“ইহা এজন্যই যে, তারা আল্লাহর
নাজিলকৃত বিষয়কে ঘৃণা করেছে সুতরাং
আল্লাহ তাদের আমল গুলোকে পণ্ড করে
দিয়েছেন”। [সূরা মুহাম্মাদ : ৯]
ষষ্ঠঃ দ্বীনের কোন বিষয় নিয়ে বা তার
পুরস্কার কিংবা শাস্তিকে নিয়ে ঠাট্টা-
বিদ্রুপ করা। আল্লাহ্ তাআলা বলেনঃ
“আপনি বলুন (হে রাসূল) তোমরা কি
আল্লাহর সাথে, স্বীয় আয়াত সমূহের
সাথে এবং রসূলের সাথে ঠাট্টা
করছিলে? কোন প্রকার ওজর-আপত্তির
অবতারণা কর না। তোমরা ঈমান
আনায়নের পর আবার কুফরী করেছ”। [সূরা
তাওবাহ্ : ৬৫-৬৬]
সপ্তমঃ যাদু-টোনা করা: যাদুর অন্যতম
প্রকার হল তন্ত্র-মন্ত্রের সাহায্যে দুজন
মানুষের বন্ধন তৈরী করা বা তাদের
মাঝে সম্পর্ক ছিন্ন করা। সুতরাং যে
ব্যক্তি যাদু করবে বা তাতে রাজি হবে
সে কাফের বলে বিবেচিত হবে। আল্লাহ
তাআলার বলেনঃ
“ঐ দুজন (হারূত- মারুত ফেরেস্তা) কাউকে
যাদু শিক্ষা দিতেন না যতক্ষণ পর্যন্ত এই
ক্থা না বলতেন-নিশ্চয় আমরা (তোমাদের
জন্য) পরীক্ষা স্বরূপ। সুতরাং (আমাদের
নিকট যাদু শিখে) কাফের হয়ো না”। [সূরা
বাকারা : ১০২]
অষ্টমঃ মুশরিকদেরকে মুসলমানদের
বিরূদ্ধে সাহায্য সহযোগিতা করা।
আল্লাহ তাআলার বাণী:
“তোমাদের মধ্য হতে যে ওদের (অর্থাৎ
বিধর্মীদের) সাথে বন্ধুত্ব করবে সে
তাদেরই দলভূক্ত বলে গণ্য হবে। নিশ্চয়
আল্লাহ যালেমদেরকে হেদায়াত দান
করেন না”। [সূরা মায়েদা : ৫১]
নবমঃ এ বিশ্বাস করা যে, কারও জন্য
মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম এর শরীয়তের বাইরে থাকার
অবকাশ রয়েছে। যেমন (এক শ্রেণীর ভণ্ড
সূফীর ধারণা অনুপাতে) অবকাশ ছিল
খিযির (আ:)এর জন্য মূসার (আ:) শরীয়ত
হতে বাইরে থাকার। এ বিশ্বাসেও সে
কাফের হয়ে যাবে। আল্লাহ তাআলা
বলেন:
“যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য ধর্ম
অন্বেষণ করবে তার থেকে তা গ্রহন করা
হবে না। এবং সে পরকালে ক্ষতি
গ্রস্থদের দলভূক্ত হবে”। [সূরা আলে
ইমরান: ৮৫]
দশমঃ সম্পূর্ণ রূপে আল্লাহর দ্বীন হতে
বিমুখ থাকা। সে ব্যাপারে জ্ঞানার্জন
না করা, তদানুযায়ী আমল না করা, এই
ধরণের মন-মানষিকতার ব্যক্তিও কাফের
বলে পরিগণিত হবে। আল্লাহ তাআলা
বলেনঃ
“ঐ ব্যক্তি অপেক্ষা কে বেশী যালিম
(অত্যাচারী) হতে পারে, যাকে উপদেশ
দেওযা হয়েছে স্বীয় প্রতিপালকের
আয়াত সমূহ দ্বারা অত:পর সে উহা হতে
বিমুখ হয়েছে? নিশ্চয় আমি অপরাধীদের
থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ কারী”। [সূরা
সাজদাহ্ : ২২]
কোন লোক এ সকল বিষয়ে লিপ্ত হলে সে
কাফের বলে বিবেচিত হবে চাই সে মজা
করার জন্য এ সকল কাজ করুক বা গুরুত্ব
সহকারে করুক, সেচ্ছায় করুক বা ভয়ে
করুক। অবশ্য কাউকে যদি বাধ্য করা হয়
তবে তার ব্যাপার আলাদ। এ সমস্ত ইসলাম
বিধ্বংশ বিষয় অত্যন্ত মারাত্মক। তার
পরও তা ব্যাপকভাবে এসব সংগঠিত হয়ে
থাকে। সুতরাং মুসলিম ব্যক্তির উপর
অপরিহার্য কর্তব্য হল এ সকল বিষয় থেকে
সতর্ক থাকা। আমরা আল্লাহর নিকট তার
ক্রোধ অবধারিত কারী বিষয় হতে এবং
তাঁর যন্ত্রনা দায়ক শাস্তি হতে আশ্রয়
প্রার্থনা করছি। সৃষ্টির সেরা মুহাম্মাদ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের
উপর, তাঁর পরিবারের উপর, সাহাবীগণের
উপর আল্লাহ রহমত ও শান্তির ধারা
অবতীর্ণ হোক।

No comments:

Post a Comment