Friday, May 22, 2015

বে-নামাযীর কোনো আমলই কবুল হয় না।




বে-নামাযীর কোনো আমলই কবুল হয় না।
-----------------------------------------------------
ইমাম বুখারী বুরাইদা (রাঃ) হতে
বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বলেছেন:
“যে ব্যক্তি আসরের নামায ত্যাগ করে
তার আমল নিষ্ফল হয়ে যায়।”
“তার আমল নিষ্ফল হয়ে যায়” এর অর্থ হল:
তা বাতিল হয়ে যায় এবং তা তার কোনো
কাজে আসবে না। এ হাদিস প্রমাণ করে
যে, বেনামাযীর কোনো আমল আল্লাহ
কবুল করেন না এবং বেনামাযী তার আমল
দ্বারা কোন ভাবে উপকৃত হবে না। তার
কোনো আমল আল্লাহর কাছে উত্তোলন
করা হবে না।
ইবনুল কায়্যিম তাঁর ‘আস-স্বালাত’ (পৃ-৬৫)
নামক গ্রন্থে এ হাদিসের মর্মার্থ
আলোচনা করতে গিয়ে বলেন – “এ হাদিস
থেকে বোঝা যায় যে, নামায ত্যাগ করা
দুই প্রকার:
(১) পুরোপুরিভাবে ত্যাগ করা। কোন
নামাযই না-পড়া। এ ব্যক্তির সমস্ত আমল
বিফলে যাবে।
(২) বিশেষ কোন দিন বিশেষ কোন নামায
ত্যাগ করা। এক্ষেত্রে তার বিশেষ
দিনের আমল বিফলে যাবে। অর্থাৎ
সার্বিকভাবে সালাত ত্যাগ করলে তার
সার্বিক আমল বিফলে যাবে। আর বিশেষ
নামায ত্যাগ করলে বিশেষ আমল বিফলে
যাবে।”
“ফাতাওয়াস সিয়াম” (পৃ-৮৭) গ্রন্থে
এসেছে শাইখ ইবনে উছাইমীনকে
বেনামাযীর রোজা রাখার হুকুম সম্পর্কে
জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো তিনি উত্তরে
বলেন: বেনামাযীর রোজা শুদ্ধ নয় এবং
তা কবুলযোগ্য নয়। কারণ নামায
ত্যাগকারী কাফের, মুরতাদ। এর সপক্ষে
দলিল হচ্ছে-
আল্লাহ্ তাআলার বাণী:
“আর যদি তারা তওবা করে, সালাত
কায়েম করে ও যাকাত দেয় তবে তারা
তোমাদের দ্বীনি ভাই।” [৯ সূরা আত্
তওবা: ১১]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম এর বাণী:
“কোন ব্যক্তির মাঝে এবং শির্ক ও
কুফরের মাঝে সংযোগ হচ্ছে সালাত
বর্জন।”[সহিহ মুসলিম (৮২)]
এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম এর বাণী –
“আমাদের ও তাদের মধ্যে চুক্তি হলো
নামাযের। সুতরাং যে ব্যক্তি নামায
ত্যাগ করল, সে কুফরি করল।”[জামে
তিরমিযী (২৬২১), আলবানী ‘সহীহ আত-
তিরমিযী’ গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ বলে
চিহ্নিত করেছেন]
এই মতের পক্ষে সাহাবায়ে কেরামের
‘ইজমা’ সংঘটিত না হলেও সর্বস্তরের
সাহাবীগণ এই অভিমত পোষণ করতেন।
প্রসিদ্ধ তাবেয়ী আব্দুল্লাহ ইবনে
শাক্বিক রাহিমাহুমুল্লাহ বলেছেন: “নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর
সাহাবীগণ নামায ছাড়া অন্য কোন আমল
ত্যাগ করাকে কুফরি মনে করতেন না।”
পূর্বোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে বলা যায়,
যদি কোন ব্যক্তি রোজা রাখে; কিন্তু
নামায না পড়ে তবে তার রোজা
প্রত্যাখ্যাত, গ্রহণযোগ্য নয় এবং তা
কেয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে কোন
উপকারে আসবে না। আমরা এমন
ব্যক্তিকে বলবো: আগে নামায ধরুন,
তারপর রোজা রাখুন। আপনি যদি নামায
না পড়েন, কিন্তু রোজা রাখেন তবে
আপনার রোজা প্রত্যাখ্যাত হবে; কারণ
কাফেরের কোন ইবাদত কবুল হয় না ।”
আল-লাজনাহ আদ্দায়িমা (ফতোয়া
বিষয়ক স্থায়ী কমিটি) কে প্রশ্ন করা
হয়েছিল (১০/১৪০): যদি কোন ব্যক্তি
শুধুমাত্র রমজান মাসে রোজা পালনে ও
নামায আদায়ে সচেষ্ট হয় আর রমজান
শেষ হওয়ার সাথে সাথেই নামায ত্যাগ
করে, তবে তার সিয়াম কি কবুল হবে?
এর উত্তরে বলা হয়- “নামায ইসলামের
পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম। সাক্ষ্যদ্বয়ের পর
ইসলামের স্তম্ভগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ ও ফরজে আইন। যে ব্যক্তি এর
ফরজিয়তকে অস্বীকার করে কিংবা
অবহেলা বা অলসতা করে তা ত্যাগ করল
সে কাফের হয়ে গেল। আর যারা শুধু
রমজানে নামায আদায় করে ও রোজা
পালন করে তবে তা হলো আল্লাহর সাথে
ধোঁকাবাজি। কতইনা নিকৃষ্ট সেসব লোক
যারা রমজান মাস ছাড়া আল্লাহ্কে
চেনে না! রমজান ব্যতীত অন্য
মাসগুলোতে নামায ত্যাগ করায় তাদের
সিয়াম শুদ্ধ হবে না। বরং আলেমদের
বিশুদ্ধ মতানুযায়ী নামাযের ফরজিয়তকে
অস্বীকার না-করলেও তারা বড় কুফরে
লিপ্ত কাফের।”

No comments:

Post a Comment