Thursday, June 11, 2015

রমজানকে অর্থবহ করার মতো কয়েকটি প্রস্তুতি:



Ahmad Ullah's photo.

রকামারি নেক আমলের বারতা নিয়ে আগত এই মহিমান্বিত মাসে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের রজমানপূর্ব আয়োজন দেখে বুঝা দায় যে, এটি কোন সংযমের মাসের প্রস্তুতি! যথা- {১} বানিজ্য মন্ত্রনালয় ও তদসংশ্লিষ্টরা অতিরিক্ত ভোগ্য পণ্য আমদানীর ব্যবস্থা করে। {২}ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার জন্য মাল মজুদ করে। {৩}টিভি সিনেমা কতৃপক্ষ ঈদের অনুষ্ঠান ও নাটক-সিনেমা নির্মান করে। {৪}রাজনৈতিক দলগুলো ইফতার পার্টির আবরণে রাজনৈতিক বক্তব্য-বিবৃতির ছক এঁকে। {৫}সাধারণ মানুষ ছোলা-চিনি-বেগুন-বেসম ইত্যাদি কিনে রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করে থাকে!! যে মাসে আল্লাহ তা'আলা বৈধ খাদ্যগ্রহণের পরিধিও কমিয়ে আনার নির্দেশনা দিয়েছেন, সে মাসে যেন আমরা উল্টো আরো বেশি ভোজনবিলাসিতার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ি! আমাদের প্রস্তুতি দেখে মনে হয় সংযম নয়, রমজান যেন খাদ্যবিলাসের বারতা নিয়েই আগমন করেছে!
সঠিক প্রস্তুতি মানেই কাজের অর্ধপূর্ণতা। যেকোন কাজের পূর্বে উপযুক্ত প্রস্তুতি কাজটির প্রতি সদিচ্ছা, নিষ্ঠা, গুরুত্বারোপ ও দৃঢ়প্রত্যয়ের প্রমাণ বহন করে। আল্লাহ তাআ'লা বলেন, তারা (মুনাফিকরা) যদি (যুদ্ধে) বের হওয়ার ইচ্ছা থাকতো তবে সেজন্য অবশ্যই তারা প্রস্তুতি গ্রহণ করতো।(তাওবা,৪৬)
মুআল্লা ইবনুল ফজল বলেন-সালফে সালেহীনের অনেকে রমজানের পুর্বের ৬মাস রমজানকে স্বাগতম জানানোর অপেক্ষায় থাকতেন। আর পরের ৬মাস রমজানে কৃত নেক আমল কবুলের দুআ করতেন।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- আল্লাহর পছন্দ হলো- তোমাদের কেউ কোন কাজ করলে সে যেন সেটাকে সর্বোত্তম ও নিখুঁতভাবে সম্পাদ করে। (তাবরানী) আর যথাযথ প্রস্তুতি যেকোন কাজকে সুদৃঢ় ও সুন্দর করতে সাহায্য করে।
রমজানকে অর্থবহ করার মতো কয়েকটি প্রস্তুতি:
১- ক্ষমা ও সওয়াব আহরণের জন্য মানসিকভাবে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ও প্রত্যয়ী হওয়া।
২-কুরআন-সুন্নায় বর্ণিত রমজান ও রোযার ফজীলত সমূহের কথা কল্পনা করা, প্রয়োজনে সব সময় চোখে পড়ে, এমন স্থানে লিখে রাখা।
৩-জীবনের হেলায় কাটানো রমজানের পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে, সেমর্মে কঠিন সংকল্প করা এবং রমজান মাসে আমলের পথে সাম্ভাব্য বাধাগুলো অপসারণে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নেওয়া।
৪-পূর্বের রমজানের কোন রোযা কাজা হয়ে থাকলে এবারের রমজানের পূর্বেই সেগুলো পূর্ণ করা।
৫-আল্লাহর সাধারণ ক্ষমার পূর্বশর্ত, শির্ক ও হিংসামুক্ত হওয়া। সুতরাং রমজানে সাধারণ ক্ষমা লাভের জন্য নিজেকে হিংসা ও শির্ক থেকে পরিচ্ছন্ন করে নেওয়া।
৬-রমজান ও রোযা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় জ্ঞানার্জন করা।
৭-রমজানের সদ্ব্যবহার করে ক্ষমা না পেলে উল্টো জিব্রীল ও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভয়াবহ বদদু'আর হাদীসটির কথা চিন্তা করা।
৮- সিয়াম, দানশীলতা, ধৈর্য, ও রমজান মাসের অপরাপর বিশেষ আমল সমূহের অনুশীলন শা'বান থেকেই আরম্ভ করা।
৯-সময়ের সর্বোত্তম ব্যবহারের জন্য ২৪ঘন্টার রুটিন তৈরি করা।
১০-সর্বোপরি নিছক হেলাল কমিটির দিকে চেয়ে না থেকে নিজস্ব উদ্যোগে শা'বানের ২৯তারিখে রমজানের চাঁদ অনুসন্ধান করা।

No comments:

Post a Comment