Thursday, July 2, 2015

রমজান মাসে কুরআন খতম করা মুস্তাহাব




আস সালামুয়ালাইকুম
-
রমজান মাসে কুরআন খতম করা মুস্তাহাব
======================
প্রশ্ন: রমজান মাসে কুরআন খতম করা কি একজন মুসলমানের জন্য জরুরী?
উত্তর :সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
হ্যাঁ, রমজান মাসে অধিক পরিমাণ কুরআন তেলাওয়াত করা এবং কুরআন খতম করতে সচেষ্ট থাকা মুস্তাহাব। তবে সেটা ফরজ নয়। অর্থাৎ খতম করতে না পারলে গুনাহ হবে না। তবে অনেক সওয়াব থেকে সে ব্যক্তি বঞ্ছিত হবেন।
এর দলিল হচ্ছে- আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে ইমাম বুখারি (৪৬১৪) বর্ণিত হাদিস: “জিব্রাইল (আঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাই্হি ওয়া সাল্লামের নিকট প্রতিবছর একবার কুরআন পাঠ পেশ করতেন। আর যে বছর তিনি মারা যান সে বছর দুইবার পেশ করেন।”
ইবনে কাছির (রহঃ) ‘আল-জামে ফি গারিবিল হাদিস’ গ্রন্থে (৪/৬৪) বলেন: তিনি তাঁকে যতটুকু কুরআন নাযিল হয়েছে ততটুকু পাঠ করে শুনাতেন। সমাপ্ত
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণে সলফে সালেহিনের আদর্শ ছিল রমজান মাসে কুরআন খতম করা। কাতাদা (রহঃ) সাতদিনে একবার কুরআন খতম করতেন। রমজান মাস এলে প্রতি তিনদিনে একবার কুরআন খতম করতেন। শেষ দশ রাত্রি শুরু হলে প্রতি রাতে একবার কুরআন খতম করতেন।[আস সিয়ার, (৫/২৭৬)]
মুজাহিদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি রমজানের প্রতি রাত্রিতে কুরআন খতম করতেন।[নববির ‘আত তিবয়ান (পৃষ্ঠা-৭৪)] তিনি বলেন: উক্তিটির সনদ সহিহ।
রবী’ বিন সুলাইমান বলেন: শাফেয়ী রমজান মাসে ষাটবার কুরআন খতম করতেন।[আস সিয়ার (১০/৩৬)]
কাসেম বিন হাফেয ইবনে আসাকির বলেন: আমার পিতা নিয়মিত জামাতে নামায ও কুরআন তেলাওয়াত করতেন। প্রতি শুক্রবারে কুরআন খতম করতেন। রমজান মাসে প্রতিদিন খতম করতেন।[আস সিয়ার (২০/৫৬২)]
ইমাম নববি কুরআন খতমের সংখ্যা বিষয়ক মাসয়ালার উপর টীকা লিখতে গিয়ে বলেন:
এ বিষয়ে নির্বাচিত অভিমত হচ্ছে- ব্যক্তি বিশেষের ভিন্নতার প্রেক্ষিতে এ মাসয়ালার বিধানও ভিন্ন হবে। যে ব্যক্তি তার সূক্ষ্ম চিন্তা দিয়ে খুঁটিনাটি বিষয় ঊদঘাটন করতে সক্ষম সে ব্যক্তি শুধু ততটুকু পড়বেন যতটুকু পড়ে তিনি এটি ভালভাবে বুঝে নিতে পারেন।
অনুরূপভাবে যে ব্যক্তি ইলম বিতরণে অথবা দ্বীনের অন্য কোন বিশেষ দায়িত্বে অথবা মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত রয়েছেন তিনিও। সেক্ষেত্রে তিনি ততটুকু পড়বেন যতটুকু পড়তে তার দায়িত্ব অবহেলা না হয়। আর যদি ব্যক্তি এ শ্রেণীর কেউ না হন তাহলে তিনি যত বেশি পড়তে পারেন তত বেশি পড়বেন; তবে যেন বিরক্তি আসার পর্যায়ে না পৌঁছে। সমাপ্ত[আত তিবয়ান (পৃষ্ঠা-৭৬)]
কুরআন তেলাওয়াত ও কুরআন খতম করার এতো তাগিদ ও এত গুরুত্বের পরেও সেটা মুস্তাহাব পর্যায়ে। এটি জরুরী ফরজ পর্যায়ে নয়; যেটা না করলে কোন মুসলমান গুনাহগার হবেন।
শাইখ উছাইমীনকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: রোজাদারের উপর কুরআন খতম করা কি ফরজ?
তিনি উত্তরে বলেন: রমজান মাসে রোজাদারের জন্য কুরআন খতম করা ফরজ নয়। তবে ব্যক্তির উচিত রমজানে বেশি বেশি কুরআন পড়া। এটাই ছিল রাসূলের আদর্শ। গোটা রমজান মাসে জিব্রাইল (আঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে কুরআন পাঠ করতেন। সমাপ্ত
[মাজমুউ ফাতাওয়া ইবনে উছাইমীন (২০/৫১৬)]
---ফাত্বওয়া 65754: ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

No comments:

Post a Comment