পোস্টের শুরুতেই একটি কথা বলে রাখা জরুরী মনে করছি। আর তা হল, এই পোস্টটি অবশ্যই সুশীল ও তথাকথিত আধুনিকমনাদের জন্য নয়। শুধুমাত্র তাদের জন্য যারা আল্লাহ্র হুকুম মতো নিজেরা চলতে চান এবং নিজের পরিবারকে আল্লাহ্র হুকুম মতো চালাতে চান।
ইসলাম বলে নারীর ক্যারিয়ার তার ঘরে, বাহিরে নয়। এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.) এর হাদীস, সাহাবা (রাঃ) দের দৃষ্টান্ত, উলামাদের বক্তব্য ১৪০০ বছর ধরে সুবিদিত। কোন সত্যপন্থী আলেম নারীদের ঘরের বাহিরে কাজ করার ব্যাপারে অনুমতি জ্ঞাপক ফাতাওয়া দেননি।
ক্যারিয়ার গড়তে হবে, নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে, কতো যুক্তি তাদের। মুসলিম নারীদের ক্যারিয়ার তার ঘরে, বাহিরে নয়। এটাই ইসলামের দাবি। কারো মানতে ইচ্ছা হলে মানবে, ইচ্ছা না হলে মানবে না। হাশরের ময়দানেই বুঝা যাবে আল্লাহ্র হুকুমের বিপরীতে নিজের যুক্তি দিয়ে ইসলাম বুঝার ফল। আল্লাহ্ সবাইকে সহিহ বুঝ দান করুক।
“হিজাব করে মহিলারা পুরুষদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে পারবে”। এটি একটি বহুল প্রচলিত শয়তানি ধোঁকা।
অবশ্যই নারী ডাক্তার, নার্স, নারী টিচার প্রয়োজন নারীদের জন্যই। এইজন্য নারী শিক্ষা অবশ্যই প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের সিস্টেমটা এমন যে নারী সারাজীবন শিক্ষা অর্জন করার পর তাকে এমন পরিবেশে চাকরি করতে হয় যে পরিবেশকে ইসলাম হারাম ঘোষণা করেছে। অর্থাৎ নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা ইসলামে নিষিদ্ধ।
একটা মা খুব ভালো করেই জানেন তার অনুপস্থিতিতে তার বাচ্চাকে কাজের মেয়ে বা বুয়া কিভাবে লালনপালন করবে। অথচ তথাকথিত ক্যারিয়ারের দোহাই দিয়ে এখনকার কিছু মায়েরা তাদের সন্তানদের দেখাশোনা করার পরিবর্তে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অফিস করে তার ক্যারিয়ারের মর্যাদা(?) রক্ষা করে। অথচ তার স্বামীর ইনকাম দিয়ে তাদের সংসার খুব ভালো করেই চলে যেত! টাকা রোজগারের জন্য সন্তানকে ঘরে কাজের লোকের কাছে ফেলে রেখে তার বাহিরে কাজ করতে যাওয়ার কোনই প্রয়োজন ছিল না।
রাসুলুল্লাহ(সাঃ) বলেছেন, “নারীরা হচ্ছে চাদর এবং যদি সে গৃহের বাইরে যায় তবে শয়তান খুশি হয় (তাকে বিভ্রান্ত করতে পারবে বলে)। সে (নারী) আল্লাহর নৈকট্য ততোটা লাভ করতে পারে না যতটা সে গৃহে থেকে করতে পারতো।”
[ইবনে হিব্বান ও ইবনে আবী খুযাইমাহ, আলবানী এটিকে সহীহ বলেছেন, সিলসিলা আস সহীহাহ ২৬৮৮]
কিছু বিশেষ শর্ত সাপেক্ষে নারীদের বাইরে কাজ করতে যাওয়া জায়েয আছে। যদি এসব মিলে যায় তবে সে বাইরে কাজ করতে যেতে পারে।
✿●═══ সেগুলো হলো ═══●✿
•৷• প্রয়োজনীয় পরিমান অর্থের জন্য তার কাজ করা প্রয়োজন, যেটি আপনার ক্ষেত্রে খাটে।
•৷• কাজটি প্রকৃতিগতভাবে নারীদের জন্য উপযুক্ত হতে হবে। যেমন - ডাক্তারী, নার্সিং, শিক্ষকতা, সেলাই এবং এরকম আরও।
•৷• কর্মস্থলটি শুধুমাত্র নারীদের জন্যই হতে হবে এবং সেখানে নন-মাহরাম পুরুষদের সাথে কোন মেলামেশার সুযোগ থাকবে না।
•৷• কাজের সময় সে পূর্ণরুপে শরীআহ অনুযায়ী হিজাব (পর্দা) করবে।
•৷• তার কাজ তাকে মাহরাম ছাড়া ভ্রমনে বাধ্য করবে না।
•৷• তার কাজ তাকে মাহরাম ছাড়া ভ্রমনে বাধ্য করবে না।
•৷• তার বাইরে কাজ করতে যাওয়া, কোনো হারাম কাজে জড়িত করবে না। যেমন - ড্রাইভারের সাথে একাকী অবস্থান করা বা পারফিউম ব্যাবহার করা যাতে নন-মাহরামরা নাকে তার ঘ্রান পায়।
•৷• কাজ এমন হবেনা, যা তার প্রয়োজনীয় বিষয়াদিকে উপেক্ষা করতে বাধ্য করে। যেমন - গৃহের দেখাশোনা, স্বামী-সন্তানের যত্ন নেয়া।
শাইখ উসাইমিন(রহ.) বলেন, “নারীরা যেখানে কাজ করবে, সে কর্মক্ষেত্র শুধুমাত্র নারীদের জন্যে হতে হবে। যেমন- বালিকাদের শিক্ষাদান, কারিগরি সহায়তা পরিচালনা, নিজ ঘরে মহিলাদের জন্য নারী দর্জি এবং অন্যান্য। পুরুষদের সাথে কাজ করা নারীদের জন্য জায়েয নয়, কারন পুরুষের সাথে তাকে মিশতে হতে পারে, যা মারাত্মক ফিতনাহ (কুকর্মে প্ররোচনা এবং নানা সমস্যার উৎস) তাই এটা উপেক্ষা করা উচিত।
উল্লেখ্য, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আমার মৃত্যুর পরে পুরুষদের জন্য নারীর চেয়ে অধিক ক্ষতিকর ফিতনা আর কিছু রেখে যাচ্ছি না।” [সহীহ বুখারী হাঃ ৫০৯৬]
আপনার কর্মক্ষেত্র যদি এসকল শর্ত পুরন করে, তবে সেখানে কাজ করায় আপনার কোন দোষ নেই ইন-শা আল্লাহ। আর, আল্লাহ-ই সবচেয়ে ভালো জানেন।
No comments:
Post a Comment