Sunday, April 17, 2016

"তিলাওয়াতের সিজদাহ" কিভাবে দেয় ?





কুরআন মাজীদের সিজদার আয়াত তিলাঅয়াত করলে বা শুনলে তকবীর দিয়ে একটি সিজদাহ করা এবং তকবীর দিয়ে মাথা তোলা মুস্তাহাব। এই সিজদার পর কোন তাশাহহুদ বা সালাম নেই।

এই সিজদা কি অয়াজিব?
তিলাওয়াতের সিজদা কুরআন তেলাওয়াতকারী ও শ্রোতার জন্য সুন্নত।
এক বর্ণনায় রাসুলুল্লাহ (সা) বলেন, ‘আল্লাহ আমাদের উপর (তিলাওয়াতের) সিজদাহ ফরয করেন নি। আমরা চাইলে তা করতে পারি।’ 
(বুখারী ১০৭৭নং)

যায়দ বিন সাবেত (রাঃ) বলেন, ‘আল্লাহর রসূল (সাঃ)-এর কাছে সূরা নাজম পাঠ করলাম। তিনি সিজদাহ করলেন না।’ 
(বুখারী ১০৭৩, মুসলিম, মিশকাত ১০২৬নং)

------------------------------------
এই সিজদার জন্য ওযূ জরুরী কি?
তিলাওয়াতের সিজদার জন্য ওযূ শর্ত নয়।

তিলাওয়াতের সিজদা্য় কি দুআ পড়তে হয়?
১- سَجَدَ وَجْهِىَ لِلَّذِيْ خَلَقَهُ وَشَقَّ سَمْعَهُ وَبَصَرَهُ بِحَوْلِهِ وَقُوَّتِهِ।

উচ্চারণ- সাজাদা অজহিয়া লিল্লাযী খালাক্বাহু অশাক্বক্বা সামআহু অবাস্বারাহু বিহাউলিহী অক্বুউওয়াতিহ্‌।
অর্থ- আমার মুখমন্ডল তাঁর জন্য সিজদাবনত হল যিনি ওকে সৃষ্টি করেছেন এবং স্বীয় শক্তি ও ক্ষমতায় ওর চক্ষু ও কর্ণকে উদগত করেছেন। (আবূদাঊদ, সুনান, সহীহ তিরমিযী, সুনান৪৭৪নং, আহ্‌মদ ৬/৩০)
আবূ দাউদের বর্ণনায় আছে, এই দুআ সিজদায় একাধিকবার পাঠ করতে হয়।
২- اَللّهُمَّ اكْتُبْ لِيْ بِهَا عِنْدَكَ أَجْراً، وَّضَعْ عَنِّيْ بِهَا وِزْراً، وَّاجْعَلْهَا لِيْ عِنْدَكَ ذُخْراً، وَّتَقَبَّلْهَا مِنِّيْ كَمَا تَقَبَّلْتَهَا مِنْ عَبْدِكَ دَاوُوْدَ।

উচ্চারণ:- আল্লাহুম্মাকতুব লী বিহা ইন্দাকা আজরা, অযা’ আন্নী বিহা বিযরা, অজ্‌আলহা লী ইন্দাকা যুখরা, অতাক্বাব্বালহা মিন্নী কামা তাক্বাব্বালতাহা মিন আবদিকা দাঊদ।
অর্থ- হে আল্লাহ! এর (সিজদার) বিনিময়ে তোমার নিকট আমার জন্য পুণ্য লিপিবদ্ধ কর, পাপ মোচন কর, তোমার নিকট এ আমার জন্য জমা রাখ এবং এ আমার নিকট হতে গ্রহণ কর যেমন তুমি তোমার বান্দা দাঊদ (আহমাদ, মুসনাদ) থেকে গ্রহণ করেছ। (সহীহ তিরমিযী, সুনান ৮৭নং,হাকেম১/২১৯, ইবনে মাজাহ্‌ ১০৫৩নং)
নামাযের ভিতরে তিলাওয়াতের সিজদাহ আসলে কি করতে হয়?
একাকী বা ইমাম সকলের জন্য নামাযে সিজদার আয়াত তেলাওয়াত করা বৈধ এবং সকলের জন্য সিজদাহ করা সুন্নত। অবশ্য সির্রী (যে নামাজের কিরাত চুপি চুপি পড়ে)নামাযে ইমামের জন্য সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করে সিজদা না করাই উত্তম। (তামামুল মিন্নাহ্‌, আলবানী ১/২৭০পৃ:) কারণ, এতে মুক্তাদীদের মাঝে গোলমাল সৃষ্টি হয়। 
(ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ্‌, সঊদী উলামা-কমিটি ১/৩২৯, মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ্‌ ৫/৩০০)

মুক্তাদীর করনীয় কি? 
মুক্তাদীর জন্য ইমামের ইক্তিদায় ঐ সিজদাহ করা জরুরী। যেমন, সিজদার আয়াত তিলাঅত করতে শুনলেও যদি ইমাম সিজদাহ না করেন, তাহলে মুক্তাদী সিজদাহ করতে পারে না।

একই সঙ্গে কয়েকটি সিজদার আয়াত পড়লে কয়টি সিজদা দিবে?
একটি সিজদাই যথেষ্ট। যেমন হিফয করার সময় সিজদার আয়াত বারবার পড়লেও সবশেষে একটি সিজদাহ করে নেওয়া যথেষ্ট।

আয়াতটি পাঠ বা শোনার পরেই কি সিজদাহ দিতে হবে?
সিজদার আয়াত পাঠ বা শোনার পর পরই সিজদাহ দেয়া নিয়ম।তবে কোন কারনে সিজদাহ করার সুযোগ না হলে সামান্য ক্ষণ পরে সিজদাহ কাযা করে নেওয়া যায়। দেরী লম্বা হয়ে গেলে কাযা করা যাবে না। 
(ফিকহুস সুন্নাহ্‌ আরবী ১/১৯৮)

সিজদার পরহাত তুলে মুনাজাত করা যাবে ? 
এই সিজদার পরহাত তুলে মুনাজাত করা বিদআত। 
(মু’জামুল বিদা’ ২৮০পৃ:)

সূত্রঃ--
স্বালাতে মুবাশ্‌শির

No comments:

Post a Comment