আহল অর্থ অনুসারী আর সুন্নাহ অর্থ রীতি, নিয়ম, পথ, পন্থা। এবং 'জামাআহ' অর্থ দল, গোষ্ঠী, সম্প্রদায়। সুন্নাতের কিছু অনুসারী আছে যারা জামাতবদ্ধ সুদৃঢ় আকীদা-বিশ্বাসের উপর প্রতিষ্ঠিত; তাদেরকে ‘আহলুস্ সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ’ বলা হয়।
এখানে তিনটি বিষয় রয়েছেঃ ১. আকীদা ২. আহলুস্ সুন্নাহ ৩. আল-জামাআহ। নিম্নে প্রত্যেকটির পরিচয় দেয়া হলোঃ
>>> প্রথম : 'আকীদা' এর অর্থঃ <<<
আকীদার শাব্দিক অর্থ বন্ধন, বাঁধন, দৃঢ়ভাবে বাঁধা। পারিভাষিক অর্থ আকীদা এমন সুদৃঢ় ও সঠিক ঈমানকে বলে, যার মধ্যে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। সুতরাং যদি তার সে সুদৃঢ় বিশ্বাস বিশুদ্ধ ও সঠিক হয়, তাহলে আকীদাও বিশুদ্ধ এবং সঠিক হবে। যেমন- আহলুস্ সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের আকীদা আর যদি তা ভ্রান্ত হয়, তাহলে আকীদাও ভ্রান্ত এবং বাতিল বলে গণ্য হবে। যেমন- বিভিন্ন ভ্রান্ত আকীদাপন্থী পথভ্রষ্ট সম্প্রদায়ের আকীদা ও বিশ্বাস।
>>> দ্বিতীয় : 'আহলুস্ সুন্নাহ ' এর অর্থঃ <<<
[সুন্নাহ] سُنَّة এর শাব্দিক অর্থ রীতি, নিয়ম, পথ, পন্থা; তা উৎকৃষ্ট হোক কিংবা নিকৃষ্ট হোক। ইসলামী আকীদাপন্থীদের পরিভাষায় ‘সুন্নাহ’ অর্থ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবীগণ যে জীবনাদর্শ অনুযায়ী জীবন-যাপন করেছেন সে জীবনাদর্শকে ‘সুন্নাহ’ বলা হয়। আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবীদের জীবনাদর্শ অনুসরণ করাকে 'আহলুস্ সুন্নাহ' বলা হয়।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
فَإِنَّهُ مَنْ يَعِشْ مِنْكُمْ فَسَيَرَى اخْتِلَافًا كَثِيرًا، فَعَلَيْكُمْ بِسُنَّتِي وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِينَ الْمَهْدِيينَ، عَضُّوا عَلَيْهَا بِالنَّوَاجِذِ، وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ؛ فَإِنَّ كُلَّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ
আমার পরে তোমাদের মধ্যে যারা জীবিত থাকবে, তারা অনেক মতবিরোধ দেখতে পাবে; সুতরাং তোমরা আমার সুন্নাত ও হেদায়াতপ্রাপ্ত খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাতকে আঁকড়ে ধর এবং তা দাঁত দিয়ে (অর্থাৎ খুব শক্তভাবে) ধরে রাখ; আর তোমরা দীনের মাঝে নতুন বিষয় আবিষ্কার করা থেকে বিরত থাকবে, কারণ প্রত্যেক নতুন বিষয়ই হচ্ছে বিদ'আত, প্রত্যেক বিদ'আত হচ্ছে গোমরাহী বা ভ্রষ্টতা। (আবূ দাউদ: ৪৬০৭, আত-তিরমিযী: ২৬৭৬, আহমদ: ১৬৬৯৫, ইবনে মাজাহ: ৪২, এবং মাজমুওয়ায়ে ফাতাওয়া: ১০/৩৫৪) ইমাম আত-তিরমিযী বলেন, হাদীছটি হাসান সহীহ।
সালিম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইবনু ‘উমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলতেন-
يَقُولُ أَلَيْسَ حَسْبُكُمْ سُنَّةَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নাতই কি তোমাদের জন্য যথেষ্ট নয়? সহীহুল বুখারী: ১৮১০
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
فَمَنْ رَغِبَ عَنْ سُنَّتِي فَلَيْسَ مِنِّي
যারা আমার সুন্নাতের প্রতি বিরাগভাব পোষণ করবে, তারা আমার দলভুক্ত নয়। সহীহুল বুখারী: ৫০৬৩, সহীহ মুসলিম: ৩২৯৪
এটা এমন এক আদর্শ, যা অনুসরণ করা ওয়াজিব। এ সুন্নাতের অনুসারীদের প্রশংসা করা হয়েছে। পক্ষান্তরে এর বিরোধীদের নিন্দা করা হয়েছে। এজন্যই বলা হয় অমুক ব্যক্তি আহলুস্ সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের অনুসারী অর্থাৎ সে সুদৃঢ় ও প্রশংসিত আদর্শের অনুসারী।
হাফেয ইবনে রজব (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, সুন্নাত হলো প্রচলিত পদ্ধতি, যা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও খোলাফায়ে রাশেদীনের বিশ্বাস, ‘আমাল ও বক্তব্যসমূহ অন্তর্ভুক্ত করে; এটাই হলো প্রকৃত সুন্নাত। [জামিউল উলুম ওয়াল হিকাম: ১/১২০]
শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, সুন্নাত হল ঐ সকল আমল, যা পালনে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনুগত হওয়ার ব্যাপারে শরীয়তের দলিল রয়েছে। হয় তা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে পালন করেছেন বা তাঁর অনুমোদনে সে যুগে পালন করা হয়েছে অথবা চাহিদা না থাকায় কিংবা অসুবিধার কারণে সে যুগে পালিত হয়নি। এ সবই সুন্নাতের অন্তর্ভুক্ত। [মাজমুয়ায়ে ফতোয়ায়ে ইবনে তাইমিয়া: ২১/৩১৭]
>>> তৃতীয় : 'জামাআহ' <<<
এর শাব্দিক অর্থ দল, গোষ্ঠী, সম্প্রদায় ইত্যাদিঃ
ইবনে ফারেস (রহিমাহুল্লাহ) বলেন- জীম, মীম ও আইন হরফ দ্বারা গঠিত শব্দ কোন বস্তু একত্রিত করা বুঝায়।
ইসলামী আকীদার পরিভাষায় জামাআত হল, উম্মতে মুহাম্মাদীর নেককার ব্যক্তিবর্গ। যেমন-সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ী, তাবে-তাবেয়ী এবং কিয়ামত পর্যন্ত আগত নিষ্ঠার সাথে তাদের অনুসারীগণ, যারা কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাতে রাসূলের উপর ঐকমত্য পোষণকারী। [শরহু আকীদাতি আত-তহাবী: ৬৮পৃ:]
>>> তারা কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাতের অনুসারী <<<
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলে গেছেন-
تَرَكْتُ فِيكُمْ أَمْرَيْنِ لَنْ تَضِلُّوا مَا تَمَسَّكْتُمْ بِهِمَا كِتَابَ اللَّهِ وَسُنَّتِيْ
আমি তোমাদের মাঝে দুটি বস্তু ছেড়ে যাচ্ছি যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা এই দুটিকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করবে কক্ষনো পথভ্রষ্ট হবে না। বস্তু দুটি হলঃ আল্লাহর কিতাব (তথা আল-কুরআন) এবং আমার সুন্নাত (তথা হাদীছ)। [হাকেম: ১/১৭২, ৩১৯, বায়হাক্বী: ১০/১১৪, ২০৮৩, মালেক: ১৫৯৪, হাদীছ বিশুদ্ধ। আলবানীর ছহীহুল জামে‘য়া ২৯৩৭, ৩২৩২]
তারা কিতাবুল্লাহ ও রাসূলের সুন্নাতকে দৃঢ়ভাবে ধারণকারী হবে। যে আর্দশের উপর আনসার ও মুহাজির সাহাবায়ে কেরামগণ ছিলেন, তারাও সে আদর্শের অনুসারী হবে।
তারা হল الْجَمَاعَةُ [আল-জামা‘আহ] একটি দল, যারা সুন্নাতের অনুসারী
আওফ বিন মালেক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
افْتَرَقَتْ الْيَهُودُ عَلَى إِحْدَى وَسَبْعِينَ فِرْقَةً فَوَاحِدَةٌ فِي الْجَنَّةِ وَسَبْعُونَ فِي النَّارِ وَافْتَرَقَتْ النَّصَارَى عَلَى ثِنْتَيْنِ وَسَبْعِينَ فِرْقَةً فَإِحْدَى وَسَبْعُونَ فِي النَّارِ وَوَاحِدَةٌ فِي الْجَنَّةِ وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَتَفْتَرِقَنَّ أُمَّتِي عَلَى ثَلَاثٍ وَسَبْعِينَ فِرْقَةً وَاحِدَةٌ فِي الْجَنَّةِ وَثِنْتَانِ وَسَبْعُونَ فِي النَّارِ قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَنْ هُمْ قَالَ الْجَمَاعَةُ
ইহুদীরা একাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছে, তন্মধ্যে একদল জান্নাতী এবং সত্তর দল জাহান্নামী। খ্রীষ্টানরা বাহাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছে, তন্মধ্যে একাত্তর দল জাহান্নামী ও একদল জান্নাতী। ঐ সত্ত্বার শপথ! যাঁর হাতে মুহাম্মাদের জীবন, নিশ্চয়ই আমার উম্মত তেহাত্তর দলে বিভক্ত হবে, তাদের একদল জান্নাতী এবং বাহাত্তর দল জাহান্নামী। জিজ্ঞেস করা হল, হে আল্লাহর রাসূল! তারা কারা? তিনি বললেন, তারা হল الْجَمَاعَةُ (আল-জামা‘আহ) একটি দল। (যারা সুন্নাতের অনুসারী) [ইবনে মাজা: ২/৩২১]
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- إِلاَّ مِلَّةً وَاحِدَةً কেবলমাত্র একটি দল (যারা জান্নাতী), সাহাবীগণ বললেন, وَمَنْ هِيَ يَا رَسُولَ اللهِ؟ হে আল্লাহর রাসূল! তারা কারা ? উত্তরে তিনি বললেন- ما أنا عليه وأصحابي যারা আমার এবং আমার সাহাবায়ে কেরামের অনুসারী। [আত-তিরমিযী: ২৬৪১]
আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, জামাআত ঐ বিষয়কে বলে, যা সত্যের অনুকূল হয়, যদিও তাতে তুমি একা হও।
নুয়াইম ইবনে হাম্মাদ (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, যখন জামাআত ভেঙ্গে যাবে তখন তোমার জন্য আবশ্যক হল, ভেঙ্গে যাওয়ার পূর্বে জামাআত যে উদ্দেশ্য ও আর্দশের উপর ছিল সে আর্দশের উপর অটল থাকা, যদিও তুমি একা হও। কেননা সে সময় তুমি একাই জামাআত হিসেবে গণ্য হবে। [ইগাসাতিল লাফহান, ইবনে তাইমিয়া: ১/৭০]
>>> তারা মুক্তিপ্রাপ্ত দল <<<
যে দলটি জান্নাতে যাবে তাদের পরিচয় সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ما أنا عليه اليوم وأصحابي ‘আজকের দিনে আমি ও আমার ছাহাবীগণ যে নীতির উপরে আছি, তার অনুসারী দল (হাকেম ১/১২৯)।
ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন-
تَبْيَضّ وُجُوْهُ أَهْلِ السُّنَّةِ وَ الاِئْتِلافِ، وَتَسْوَدُّ وُجُوْهُ أَهْلِ الْبِدْعَةِ وَ التَّفَرُّقِ.
আহলুস্ সুন্নাহ তথা সুন্নাতের অনুসারীদের চেহারা উজ্জ্বল হবে ও বিদআতপন্থীদের চেহারা অন্ধকারের ন্যায় কালো হবে। [ইজতিমাউল জুয়ুশিল ইসলামিয়াহ আলা গাজওয়াল মুয়াত্তালা ওয়াল জাহমিয়া, ইবনে কাইয়্যিম (রহিমাহুল্লাহ): ২/৩৯]
>>> তারা সর্বদা হকের উপর অটল থাকবে <<<
মুআবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে বর্ণিত হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
لَا تَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي قَائِمَةٌ بِأَمْرِ اللهِ لَا يَضُرُّهُمْ مَنْ خَذَلَهُمْ أَوْ خَالَفَهُمْ حَتَّى يَأْتِيَ أَمْرُ اللَّهِ وَهُمْ ظَاهِرُوْنَ عَلى النَّاسِ )متفق عليه(
আমার উম্মতের একটি দল সর্বদা আল্লাহর নির্দেশের উপর অটল থাকবে। বিরোধীদের বিরোধিতা ও অপমানকারীদের অপমান তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আল্লাহর ফয়সালা (কিয়ামত) আসার পূর্ব পর্যন্ত তারা সর্বদা মানুষের উপর বিজয়ী থাকবে। সহীহুল বুখারী: ৩৬৪১
মুগীরা ইবনে শুবা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে অন্য রেওয়ায়াতে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
لَا تَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي ظَاهِرِينَ عَلَى الْحَقِّ لَا يَضُرُّهُمْ مَنْ خَذَلَهُمْ حَتَّى يَأْتِيَ أَمْرُ اللَّهِ وَهُمْ كَذَلِكَ
'সর্বদা আমার উম্মতের একটি দল সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে আল্লাহর ফয়সালা (কিয়ামত) আসার পূর্ব পর্যন্ত, অপমানকারীদের অপমান তাদের কোন ক্ষতি করবে না।' সহীহ মুসলিম: ৪৮৪৪
ইবনে তাইমিয়া (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, আহলুস্ সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ হচ্ছে সর্বোত্তম উম্মত, তারা সহজ, সরল ও সঠিক পথের অনুসারী। [ফতোয়া ইবনে তাইমিয়া: ৩/৩৬৮]
>>> তারা মানুষের কাছে অচেনা দল <<<
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
بَدَأَ الْإِسْلَامُ غَرِيبًا وَسَيَعُودُ كَمَا بَدَأَ غَرِيبًا فَطُوبَى لِلْغُرَبَاءِ
ইসলাম অচেনা ক্ষুদ্র পরিসরে আত্মপ্রকাশ করেছে এবং অতিসত্তর তা পূর্বাবস্থায় ফিরে যাবে, সুতরাং সুসংবাদ অচেনা দলের জন্য। সহীহ মুসলিম: ২৬৭
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আ'স রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে ইমাম আহমদ (রহিমাহুল্লাহ) অন্যত্র বর্ণনা করেছেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হল, হে আল্লাহর রাসূল! অচেনা ক্ষুদ্র দল কারা? তিনি বললেন, অধিকাংশ পাপীদের মধ্যে কিছু সৎকর্মপরায়ণ লোক। মুসনাদে ইমাম আহমদ: ২/১৭৭
অন্য সূত্রে বর্ণিত এক হাদীসে রয়েছে, যখন মানুষ বিশৃংখল হয়ে পড়ে, তখন তারা সংশোধন করে দেয় এবং নিজেরা সঠিক পথে চলে। আহমদ: ৪/১৭৩
>>> কুরআনে আল্লাহর দল <<<
وَمَنْ يَتَوَلَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَالَّذِينَ آمَنُوا فَإِنَّ حِزْبَ اللَّهِ هُمُ الْغَالِبُونَ
আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল আর মুমিনদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, তবে নিশ্চয় সেটি আল্লাহর দল আর তারাই বিজয়ী হবে। আল-মায়িদাহ, ৫/৫৬
لا تَجِدُ قَوْمًا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ يُوَادُّونَ مَنْ حَادَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَوْ كَانُوا آبَاءَهُمْ أَوْ أَبْنَاءَهُمْ أَوْ إِخْوَانَهُمْ أَوْ عَشِيرَتَهُمْ أُولَئِكَ كَتَبَ فِي قُلُوبِهِمُ الإيمَانَ وَأَيَّدَهُمْ بِرُوحٍ مِنْهُ وَيُدْخِلُهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الأنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ أُولَئِكَ حِزْبُ اللَّهِ أَلا إِنَّ حِزْبَ اللَّهِ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাসী এমন কোন সম্প্রদায়/দল তুমি পাবে না যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধাচারীদেরকে ভালবাসে, হোক না এই বিরোধীরা তাদের পিতা, পুত্র, ভাই অথবা তাদের জ্ঞাতি গোষ্ঠি। আল্লাহ এদের অন্তরে ঈমান বদ্ধমূল করে দিয়েছেন, এবং তাদেরকে তাঁর অদৃশ্য শক্তি দ্বারা শক্তিশালী করেছেন; তিনি তাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতসমূহে যার তলদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারাসমূহ প্রবাহিত হয়, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে; আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে; এরাই আল্লাহর দল; জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহর দলই সফলকাম। আল-মুজাদালাহ, ৫৮/২২
উপসংহারঃ যারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবায়ে কেরামের আর্দশের অনুসারী এবং সুন্নাতকে সুদৃঢ়ভাবে ধারণকারী। যথা- তাবেয়ী, তাবে তাবেয়ী ও হেদায়াতপ্রাপ্ত ইমামগণ। তারা সুন্নাতের অনুসরণে সুদৃঢ় ও সর্বদা সকল প্রকার বিদআত থেকে দূরে থাকে। বিদআতপন্থী ও প্রবৃত্তির অনুসারী দলসমূহের বিপরীত একটি সঠিক দল। এরাই কিয়ামত পর্যন্ত সাহায্যপ্রাপ্ত জামাআত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাতের সাথে সম্পর্ক থাকার কারণে এবং বাহ্যিক, আন্তরিক, ও মৌখিক কার্যাবলীতে সুন্নাতকে সম্মিলিতভাবে আঁকড়ে ধরার কারণে তাদের নামকরণ করা হয়েছে, “আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআত”। আর আমি সেই দলেরই একজন। হে আল্লাহ! সর্বদা তুমি আমাকে সেই দলের মধ্যে শামিল রাখ। আমিন
No comments:
Post a Comment