Wednesday, October 5, 2016

মৃত ব্যক্তি দুনিয়ার কোন কিছু শুনতে পায় কিনা?





মৃত্যুর পর একটি মানুষ আলমে বরযখ নামে এক অদৃশ্য জগতে অবস্থান করে। এখন প্রশ্ন এই যে, তারা দুনিয়ার মানুষের কোন কথা-বার্তা, কোন স্তবস্তুতি, কোন প্রশংসাবাদ, কোন দোয়া ও কাকুতি-মিনতি শুনতে পায় কিনা।
এর জবাব কুরআন পাকে দেখতে পাওয়া যায়। আল্লাহ্‌ বলেনঃ 
“সে ব্যক্তির চেয়ে অধিক বিভ্রান্ত আর কে হতে পারে – যে আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমনসব সত্তাকে ডাকে যারা কিয়ামত পর্যন্তও তার জবাব দিতে পারে না। তারা বরঞ্চ এসব লোকের ডাকাডাকির কোন খবরই রাখে না।” -(সূরা আল আহকাফঃ ৫)
দুনিয়ার যেসব লোক তাদেরকে ডাকে, সে ডাক তাদের কাছে মোটেই পৌঁছে না। না তারা স্বয়ং সে সব ডাক তাদের নিজ কানে শুনে আর না কোন কিছুর মাধ্যমে তাদের কাছে এ খবর পৌঁছে যে, কেউ তাদেরকে ডাকছে।
আল্লাহ্‌ তায়ালার এ এরশাদ বিশদভাবে বুঝতে হলে এভাবে বুঝতে হবে যে, দুনিয়ার যাবতীয় মুশরিক আল্লাহ্‌ ছাড়া যেসব সত্তাকে ডেকে আসছে তারা তিন প্রকারের। এক হচ্ছে, কিছু প্রাণহীন জড় পদার্থ যাদের স্বয়ং মানুষ নিজ হাতে তৈরী করে তাদেরকে উপাস্য বানিয়েছে।
দ্বিতীয়ত কতিপয় নেক ও বুযর্গ লোক যারা অতীত হয়েছেন।
তৃতীয়ত ঐসব বিভ্রান্ত ও পথভ্রষ্ট মানুষ যারা অপরকেও বিভ্রান্ত ও বিকৃত করে দুনিয়া থেকে বিদায় গ্রহণ করেছে।
প্রথম ধরণের উপাস্য সম্পর্কে একথাতো সুস্পষ্ট যে, প্রাণহীন জড় পদার্থ হওয়ার কারণে না তারা কিছু শুনতে ও দেখতে পায়, আর না তাদের কোন কিছু করার কোন শক্তি আছে।
দ্বিতীয় ধরণের উপাস্যগণও অর্থাৎ মৃত্যুবরণকারী নেক ও বুযর্গগণও দু’ কারণে দুনিয়ার মানুষের ফরিয়াদ ও দোয়া প্রার্থনা থেকে বেখবর থাকবেন। এক এই যে, তাঁরা আল্লাহর নিকটে এমন এক অবস্থায় রয়েছেন যেখানে দুনিয়ার মানুষের আওয়াজ সরাসরি পৌঁছে না, দুই- আল্লাহ্‌ ও তাঁর ফেরেশতাগণও তাঁদের কাছে দুনিয়ার কোন খবর পৌঁছিয়ে দেন না। তার কারণ এই যে, যারা জীবনভর মানুষকে একমাত্র আল্লাহর দরবারে দোয়া করা শিক্ষা দিয়ে এলেন, তাদেরকেই এখন মানুষ ডাকছে- এর চেয়ে বেদনাদায়ক বিষয় তাঁদের কাছে আর কিছু হবে না। আল্লাহ্‌ তাঁর নেক বান্দাহদের রূহে কোন প্রকার কষ্ট দেয়া কিছুতেই পছন্দ করেন না।
তৃতীয় প্রকার উপাস্যদেরও বেখবর থাকার দু’টি কারণ আছে। এক এই যে, তাঁরা আসামী হিসাবে আল্লাহর হাজতে রয়েছে যেখানে দুনিয়ার কোন আওয়াজই পৌঁছে না। তাদের মিশন দুনিয়াতে খুব সাফল্য লাভ করেছে এবং মানুষ তাদেরকে উপাস্য বানিয়ে রেখেছে- আল্লাহ্‌ ও তাঁর ফেরেশতাগণ একথা তাদেরকে পৌঁছিয়ে দেন না।
এমন খবর তাদেরকে জানিয়ে দিলে-তা তাদের জন্যে খুবই আনন্দের কারণ হবে। আর আল্লাহ্‌ এসব যালেমদেরকে কখনো সন্তুষ্ট করতে চান না।

No comments:

Post a Comment