প্রশ্ন:- বিয়ের পর স্ত্রী কি তাঁর স্বামীর নাম নিজের নাম এর সাথে যুক্ত করতে পারবে?
---------------------
উত্তর:- যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর। দুরূদ ও সালাম আল্লাহর রসূল (সঃ) এর উপর বর্ষিত হোক।
পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু মহান আল্লাহ তায়ালার নামে শুরু করছি।
নিজ পরিবারের ও বংশের নাম পরিবর্তন করে অন্য পরিবারের ও বংশের নাম লাগানো সম্পূর্ণ হারাম এবং বড় গুনাহ। আর এটা হচ্ছে জাহেলিয়াত ও বিজাতীয় অনুসরণ। আপনি আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সঃ) এর স্ত্রীদের নামের দিকে দৃষ্টিপাত করলে দেখতে পাবেন- তাদের নামের সাথে মুহাম্মাদ (সঃ) এর নাম যুক্ত ছিল না, তারা তাদের নামের সাথে স্বামীর নাম যুক্ত করেন নি। বরং তাদের নামের সাথে তাদের পিতার নাম যুক্ত ছিল। উদাহরনঃ হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) এর বিয়ের পরেও তাঁর নামের সাথে "সিদ্দিকা" তাঁর পিতার নাম যুক্ত ছিল। তাঁর নামের সাথে মুহাম্মাদ (সঃ) এর নাম যুক্ত করে "আয়েশা মুহাম্মাদ" রাখা হয় নি।
সুতরাং কারো নাম হবে তার নামে ও তার বাবার নামে।
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
"তোমরা তাদের সন্বোধন কর তাদের বাপেদের নামে, এটিই আল্লাহর কাছে বেশি ন্যায়সংগত।"
[সূরা আহযাব আয়াত নাম্বার:- ৫]
আবূ মা'মার (রঃ).......আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (সঃ) -কে বলতে শুনেছেন, "কোন ব্যক্তি যদি নিজ পিতা সম্পর্কে জ্ঞাত থাকা সত্ত্বেও অন্য কাউকে তার পিতা বলে দাবী করে তবে সে আল্লাহর (নিয়ামতের) কুফরী করল এবং যে ব্যক্তি নিজেকে এমন বংশের সাথে নসবী সম্পৃক্ততার দাবী করল, যে বংশের সাথে তার কোন নসবী সম্পর্ক নেই, সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামে তৈরি করে নেয়।"
[সহিহ বুখারী অধ্যায় ৫৬ হাদিস ৭১১],
নবী (সঃ) আরো বলেন, "যে ব্যক্তি তার পিতা বাদ দিয়ে অন্যের সাথে সম্পর্কের দাবি করে পরিচয় দেয় অথবা নিজের মনিবকে ত্যাগ করে অপরকে মনিব বলে পরিচয় দেয়, তার উপর আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাকুল এবং সকল মানুষের অভিশাপ। তার নফল বা ফরয কোন ইবাদতই কবুল করা হবে না।"
[সুনানু ইবনে মাজাহ হাদিস ২৭১২]।
যেহেতু স্বামী রক্ত সম্পর্কে অন্য বংশের তাই তার নাম নিজের বংশীয় নাম পরিবর্তন করে লাগানো যাবে না। আর এটা এক ধরনের জাহেলিয়াত ও বিজাতির অনুসরণ।
অতএব, বিয়ের আগে এবং পরে নারীরা সব সময়েই নিজের পিতার নামে পরিচিত হবে। বিয়ের পরে নামের সাথে স্বামীর নাম লাগানো- এটা সম্পূর্ণরূপে ইহুদী এবং খ্রিস্টানদের সংস্কৃতি। মহান আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেছেন, "ইহুদী এবং খ্রিস্টানরা জাতি হিসেবে নির্বোধ, কারণ তারা ইব্রাহীম (আঃ) এর দ্বীনে হানীফ (এক আল্লাহর ইবাদত করা এবং সমস্ত শিরক থেকে বেঁচে থাকার ধর্ম) থেকে ফিরে কুফুরীতে লিপ্ত হয়েছে।" সেজন্যে ইহুদী এবং খ্রিস্টানদের সংস্কৃতি অনুকরণ করা মুসলমানদের জন্যে হারাম।
একবার চিন্তা করে দেখুনঃ এই কাজটা কত বোকামী, এক মেয়ে বিয়ের পরে স্বামীর নাম যুক্ত করলো, হয়তো কোন একসময় তালাক হয়ে অন্য পুরুষের ঘরে গেলো। তখন আবার নাম পাল্টানো...ইসলাম আমাদেরকে নিজের বাবার নামে পরিচিত হতে আদেশ করেছে। স্বামী স্ত্রী সম্পর্কের দ্বারা একজন নারীর প্রকৃত পরিচয় হতে পারে না।
ইবনু উমার (রাঃ) বর্ণনা করেন। রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, "যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের অনুকরণ করবে সে ঐ কাওমের বলেই গণ্য হবে।"
[বুলুগূল মারাম ১৪৭১]।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের এই সকল গুনাহ হতে রক্ষা করে সঠিক পথে থাকার তাওফিক দিন। আমিন।
No comments:
Post a Comment