Tuesday, December 6, 2016

আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট।




 আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট।
----------------

১ঃ আবু লাহাবের স্ত্রী, উম্মে জামীল যখন জানতে পারলেন, তার ও তার স্বামীর ব্যপারে নিন্দাসূচক আয়াত (সুরা লাহাব) নাযিল হয়েছে, তিনি তখন এক মুষ্ঠি পাথর নিয়ে বায়তুল হারামে আসলেন, যেখানে ছিলেন রাসুল (সা) ও আবু বাকর (রা)। কিন্তু, আল্লাহ তার দৃষ্টিশক্তি বন্ধ করে দেয়ার কারনে তিনি রাসুল (সা)কে আর দেখতে পাচ্ছিলেন না। তিনি আবু বাকর (রা) কে বললেন- “তোমার সাথী মুহাম্মাদ কোথায়? আমি যদি তাকে পেতাম, তো মুখের উপর এ পাথর ছুঁড়ে মারতাম”। এ কথা বলে তিনি চলে যান।
আবু বাকর (রা) বললেন-“হে আল্লাহর রাসুল! তিনি কি আপনাকে দেখতে পাননি?” নবীজি বললেন- “না, আল্লাহ তার দর্শন শক্তিকে আমার থেকে রহিত করে দিয়েছিলেন”। [ইবনে হিশাম]
আল্লাহু আকবর!!!

২ঃ নবী (সা) কে কষ্ট দেয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকা আরেক ব্যক্তি ছিল, আবূ জাহল। একবার আবূ জাহল কুরাইশ প্রধানদের বললেন-“আপনাদের সম্মুখে মুহাম্মদ (সা) কি স্বীয় মুখমন্ডলে ধূলা লাগিয়ে রাখে (সালাত আদায় করে)”? উত্তরে বলা হল- হ্যা। আবূ জাহল আস্ফালন করে বলল-“লাত ও উযযযার কসম, আমি তাঁকে (নবীজীকে) পুনরায় সালাতরত অবস্থায় পেলে তাঁর গ্রীবা পিষ্ট করে দিব, মুখমন্ডল মাটির সাথে আচ্ছা করে ঘষে মজা দেখাবো”।
এর কিছুদিন পর আবূ জাহল, রাসুল (সা) কে সালাত পড়তে দেখে তার সংকল্প বাস্তবায়নের জন্যে তাঁর দিকে আগাতে থাকে। কিন্তু হঠাৎ অগ্রসর হওয়ার পরিবর্তে জাহল পেছাতে থাকে এবং দু হাত দিয়ে আত্নরক্ষার ভঙ্গিতে দ্রুত নাড়াতে থাকে, যেন কোন কিছু এড়ানোর প্রাণপণ চেষ্টা করছে।
উপস্থিত লোকজন জানতে চাইল, কি হলো তার । আবূ জাহল উত্তরে বললো-“আমার ও তাঁর (নবী (সা)) এর মধ্যে আগুনের এক গর্ত রয়েছে, আর তাতে ভয়াবহ বিভীষিকাময় শেকল রয়েছে”।
রাসুল (সা) বলেন-“সে যদি আমার নিকট যেত, তাহলে ফেরেশতারা তার এক একটা অংগ উঠিয়ে নিয়ে যেতেন”। [সহীহ মুসলিম]
আল্লাহু আকবর!!!

এ ঘটনা দুটিই নবী মুহাম্মাদ (সা) এর ইসলাম প্রচারের একদম শুরুর দুইটি মাত্র ঘটনা, যেখানে আল্লাহপাক তাঁর রাসুল, মুহাম্মাদ(সা)কে বেইজ্জত আর অপমানিত হওয়া থেকে রক্ষা করেছেন। আর যেই কারনে নবী (সা) কে আল্লাহ এতো গুরুত্ব ও মর্যাদা দিয়েছেন, তার কারন কিন্তু একটাই- ইসলাম।
সেই আমরা মুসলিমরা আজ মুখে ইসলামের বিধান মোতাবেক সুন্নাতি দাঁড়ি রাখতে ভয় পাই যা ওয়াজিব, নারীরা পরিপূর্ণ পর্দা করতে ভয় পাই, যা ফরয। পাছে এসবের কারনে অপমানিত হতে হয়, বেইজ্জত হতে হয় সমাজের সামনে। সমাজ যতটুকু মেনে নিবে নির্দ্বিধায়, তাই মেপে মেপে পালন করি ইসলামকে কেটেছেঁটে। আল্লাহু আকবর !!! 
অথচ, এই সামান্য বিশ্বাসটুকু করতে আজ ভয় পাই, যেই আল্লাহ আমাদের নবী(সা)এর সম্মানের হেফাযাত করতে পারেন, সেই আল্লাহ এখনো আছেন আর থাকবেনও তাঁর সকল মুমিন বান্দার সাথে ইনশাল্লাহ, আমাদের মান-সম্মান হেফাযতের জন্যে তো এক আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট।

আল্লাহ বোঝার তৌফিক দিন, মানার তৌফিক দিন।

No comments:

Post a Comment