Friday, September 15, 2017

ইসলাম ধর্মে কুনো মানুষকে গালি দেওয়া বা গালিগালাজ করা যায়েজ কি না বরং নিষিদ্ধ না হারাম?



No automatic alt text available.



প্রশ্নঃ ইসলাম ধর্মে কুনো মানুষকে গালি দেওয়া বা গালিগালাজ করা যায়েজ কি না বরং নিষিদ্ধ না হারাম?
________________________________________________
উওরঃ
ইসলাম ধর্মে কুনো মানুষকে গালি দেওয়া বা গালিগালাজ করা যায়েজ না বরং নিষিদ্ধ এবং হারাম। তাই এগুলো থেকে দুরে থাকার যথাসাধ্য চেষ্টা করুনঃ নিচে পবিত্র কুরআন মাজিদ এবং হাদীস শরীফ থেকে গালাগালি বা গালিগালাজ না করার পক্ষে দলিল পেস করা হলো, মানা না মানা আপনার ব্যপার।
যারা গালিগালাজ করে তাদের ব্যপারে আল্লাহ্ পাক রাব্বুল আলামিন তিনি বলেনঃ- রহমান-এর বান্দা তারাই, যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাদের সাথে যখন মুর্খরা কথা বলতে থাকে{গালিগালাজ/যুক্তিহিন/
কতর্ক}, তখন তারা বলে, সালাম। {সূরা আল ফুরকানঃ আয়াত শরিফ ৬৩}
“যেসব লোক ঈমানদার পুরুষ ও নারীদের বিনা কারণে কষ্ট দেয় তারা একটা অতি বড় মিথ্যা অপবাদ ও সুস্পষ্ট গুনাহের বোঝা নিজেদের মাথায় উঠিযে নেয়।” (সূরা আহযাবঃ আয়াত শরিফ ৫৮)
যারা সতী-সাধ্বী, নিরীহ ঈমানদার নারীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে, তারা ইহকালে ও পরকালে ধিকৃত এবং তাদের জন্যে রয়েছে গুরুতর শাস্তি। (সূরা আন-নূর: আয়াত শরিফ ২৩)
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাস’উদ (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) উনার থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, “মুসলমানদের কে গালমন্দ করা ফাসেকী আর তাদের বিপক্ষে যুদ্ধ করা কুফরী।” (বুখারী ও মুসলিম)
হযরত আবু যর (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) উনার থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, কোন ব্যক্তি অপর কোন ব্যক্তিকে যেন ফাসেক অথবা কাফের এর অপবাদ না দেয়। কেননা সে যদি প্রকৃতই তা না হয়ে থাকে তবে এই অপবাদ তার নিজের ঘাড়ে চেপে আসবে। (বুখারী)
হযরত আবু হোরায়রা (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, পরস্পরকে গালি দানকারীর মধ্যে যে পূর্বে গালি দিয়েছে সে দোষী, যদি নির্যাতিত (প্রথম যাকে গালি দেয়া হয়েছে) ব্যক্তি পরিসীমা অতিক্রম না করে থাকে। (মুসলিম)
হযরত আবু হোরায়রা (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার কাছে উপস্থিত করা হল। সে মদ পান করেছিল। তিনি বললেন, একে প্রহার কর। হযরত আবু হোরায়রা (রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) বর্ণনা করেছেন, আমাদের মধ্যে কেউ হাত দিয়ে, কেউ জুতা দিয়ে, আবার কেউ বস্ত্র দিয়ে তাকে প্রহার করল। যখন সে সেখান থেকে প্রত্যাবর্তন করল, তখন কোন একজন বলল, আল্লাহ তোকে লাঞ্ছিত করুক। এ কথা শুনে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “এধরণের কথা বল না। তার বিরুদ্ধে শয়তানকে সাহায্য কর না।” (বুখারী)
আর হাদিস শরিফেঃ- হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা বসিয়াছিলেন, তাহার উপস্থিতিতে এক ব্যক্তি হযরত আবু বকর সিদ্দিক (আঃ) উনাকে গালি দিলো। তিনি (ঐ ব্যক্তির বার বার গালি দেওয়া এবং হযরত আবু বকর সিদ্দিক (আঃ) উনার সবর ও খামুশ থাকার উপর) খুশী হইতে থাকেন এবং মুচকি হাসিতে থাকেন। অতঃপর যখন সেই ব্যক্তি অনেক বেশী গালিগালাজ করিল তখনহযরত আবু বকর সিদ্দিক (আঃ) তাহার কিছু কথার জবাব দিলেন। ইহার উপর নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসন্তুষ্ট হইয়া সেখান হইতে চলিয়া গেলেন। হযরত আবু বকর সিদ্দিক (আঃ) ও তাহার পিছনে পিছনে তাহার নিকট পৌঁছিলেন এবং আরজ করিলেন, ইয়া রাসুলুল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (যতক্ষণ) ঐ ব্যক্তি আমাকে গালি দিতেছিল আপনি সেখানে অবস্থান করিতেছিলেন, তারপর যখন আমি তাহার কিছু কথার জওয়াব দিলাম তখন আপনি নারাজ হইয়া উঠিয়া গেলেন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিলেন, (যতক্ষণ তুমি চুপ ছিলে এবং সবর করিতেছিলে তোমার সহিত একজন ফেরেশতা ছিল, যে তোমার পক্ষ হইতে জওয়াব দিতেছিল। তারপর যখন তুমি তাহার কিছু কথার জওয়াব দিলে (তখন সেই ফেরেশতা চলিয়া গেলো আর) শয়তান মাঝখানে আসিয়া গেলো। আর আমি শয়তানের সহিত বসি না। (এই জন্য আমি উঠিয়া রওয়ানা হইয়া গিয়াছি)-(মুসনাদ
ে আহমদ)।

No comments:

Post a Comment