Monday, October 2, 2017

তাবেঈ ইয়াযীদ বিন মু‘আবিয়া-কে ‘মালঊন’ বা অভিশপ্ত বলে গালি দেওয়া কতটুকু সঠিক?





তাবেঈ ইয়াযীদ বিন মু‘আবিয়া-কে ‘মালঊন’ বা অভিশপ্ত বলে গালি দেওয়া কতটুকু সঠিক?
ইয়াযীদ বিন মু‘আবিয়াকে ‘মালঊন’ বা অভিশপ্ত বলে গালি দেওয়া আদৌ ঠিক নয়। বরং সকল মুসলমানের ন্যায় তার মাগফেরাতের জন্য দো‘আ করা উচিত। কেননা মানুষ হিসাবে তার কিছু ভুল-ত্রুটি থাকলেও কারবালার মর্মান্তিক ঘটনার জন্য তিনি দায়ী নন। এজন্য মূলতঃ দায়ী বিশ্বাসঘাতক কূফাবাসী ও নিষ্ঠুর গভর্ণর ওবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদ। কেননা ইয়াযীদ কেবল হুসাইন (রাঃ)-এর আনুগত্য চেয়েছিলেন, তাঁর খুন চাননি। হুসাইন (রাঃ) সে আনুগত্য দিতেও প্রস্ত্তত ছিলেন। ইয়াযীদ স্বীয় পিতার অছিয়ত অনুযায়ী হুসাইনকে সর্বদা সম্মান করেছেন এবং তখনও করতেন। হুসাইন (রাঃ)-এর ছিন্ন মস্তক ইয়াযীদের সামনে রাখা হ’লে তিনি কেঁদে বলে ওঠেন, ‘ওবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদের উপর আল্লাহ লা‘নত করুন। আল্লাহর কসম! যদি হুসাইনের সাথে ওর রক্তের সম্পর্ক থাকত, তাহ’লে সে কিছুতেই তাঁকে হত্যা করত না। তিনি আরো বলেন, হুসাইনের খুন ছাড়াও আমি ইরাকীদেরকে আমার আনুগত্যে রাযী করাতে পারতাম’।
(ইবনু তায়মিয়া, মুখতাছার মিনহাজুস সুন্নাহ, ১/৩৫০; আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ৮/১৭৩; আশূরায়ে মুহাররম ও আমাদের করণীয়, পৃঃ ৭-১০।)
কূফার নেতাদের লিখিত ১৫০টি পত্র পেয়ে হুসাইন (রাঃ) কূফায় আসলে বছরার গভর্ণর ওবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদ কূফার গভর্ণর মুসলিম বিন আকীলকে গ্রেফতার করে হত্যা করে। এদিকে হুসাইন (রাঃ) প্রদত্ত তিনটি প্রস্তাবের কোনটি গ্রহণ না করায় দুষ্টমতি ওবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদের সাথে সংঘর্ষ অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে। এতে হুসাইন (রাঃ) সপরিবারে নিহত হন।
(ইবনু হাজার, আল-ইছাবাহ ২/২৫২; ইবনু কাছীর, আল-বিদায়াহ ৮/১৫৪, ১৭১।)

তাই সম্মানিত ভাই-বোন! পরিপূর্ণভাবে ইসলামের উপর টিকে থাকতে হ’লে ফিরে যেতে হবে একমাত্র পবিত্র কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহর দিকে। মুসলিম জাতি আজ কুরআন-সুন্নাহ থেকে ছিটকে পড়েছে। ফলে বিদ‘আতের কাল মেঘে আচ্ছাদিত হয়েছে ইসলামী শরী‘আতের স্বচ্ছ আকাশ। এ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য শারঈ জ্ঞানার্জন অপরিহার্য। মুহাররম মাসে রাসূল (ছাঃ) কি করেছেন আর আমরা কি করছি তা মিলিয়ে দেখতে হবে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহর সাথে। কারবালার ঘটনা সম্পর্কে সকল প্রকার আবেগ ও বাড়াবাড়ি হ’তে দূরে থাকতে হবে এবং আশূরা উপলক্ষে প্রচলিত শিরক ও বিদ‘আতী আক্বীদা-বিশ্বাস ও রসম-রেওয়াজ পরিহার করতে হবে। আল্লাহ আমাদেরকে বিদ‘আত মুক্ত জীবন-যাপন করার তওফীক্ব দান করুন- আমীন!

No comments:

Post a Comment