Sunday, November 5, 2017

আমিন জোরে বলা ফেতনাহ ও সুন্নাত না।



No automatic alt text available.


আসসালামু আলাইকুম,
★ আমিন জোরে বলা ফেতনাহ ও সুন্নাত না। অনেক বড় আলেম এবং হুজুররা বলে থাকেন, তবে সবাই বলেন না।
তাই আমি আজকে ইনশাআল্লাহ আমিন জোরে বলা এবং মদীনা ও মক্কার গুরুত্ব বিষয়ে সহীহ হাদীস সমূহ অধ্যায় সহ আমি একজন মুসলিম হিসাবে তোলে ধরার চেষ্টা করেছি। আর্টিকেল এবং হাদীস গুলো একটু ধৈর্য্য সহকারে পড়ুন ইনশাআল্লাহ কিছু জানতে ও বুঝতে পারবেন।
★★ ইসলামে মদীনার গুরুত্ব:-
মক্কা / মদীনার মুসলমানরা আমিন জোরে বলে কোন ফেতনায় আছে তা আমি জানি না তবে,
★ রাসূল (সাঃ) বলেছেন, সাপ যেমন তার গর্তে ফিরে আসে তেমনি ইলেম মদীনায় ফিরে আসবে (১৮৭৬ বোখারী শরীফ)
উদাহারন হিসাবে বলতে পারি, সমুদ্রের পানি ফুরালেও তাতে পানি থাকবে আর আমরা নদী/পুকুরের পানি যা শুকিয়ে যাবে তা নিয়ে বসে রয়েছি। ৭০০/৮০০ এর কম বেশী বছর ধরে আমরা ইন্ডিয়া/ পাকিস্তান ভিত্তিক হয়ে গেছি যেখানে রাসূল (সাঃ) জন্ম গ্রহন করেছেন, ইসলামের বাণী প্রচার করেছেন, শুয়ে আছেন এবং তিনি নিজে বরকতের দোয়া করেছেন যে,
★ আল্লাহ মক্কায় যে বরকত দান করেছেন তার থেকে মদীনাতে দ্বিগুন রহমত বর্ষণ করুন ( ১৮৮৫ বোখারী শরীফ)
★ মদীনার সাথে যে ষড়যন্ত্রে বা প্রতারণায় লিপ্ত হবে সে মোমের মত গলে যাবে ( ১৮৭৭ বোখারী শরীফ)
★ আর মক্কা / মদীনাতে দাজ্জাল প্রবেশ করতে পারবে না (১৭৭৯ বোখারী শরীফ)
তাহলে তাদের ইলম / জ্ঞান ও জানার পরিধী কেমন তারা তো সহীহ পরিবার ভিত্তীক, বাপ-দাদা, মা- খালা এভাবে পূর্ববর্তী সাফ বংশধর রয়েছে। তাহলে তাদের ইমান আক্বীদা কেমন...????
★ সেখানে না আছে পীর না আছে মাজার / বিদাআত / তাবীজ প্রকাশ্যে।
মক্কা / মদীনা তো আর দলীল না তা আমি জানি ইনশাআল্লাহ। তবে রাসূল (সাঃ) এর সহীহ হাদীস তো দলীল, তা তো অস্বীকার করা যাবে না।
★ ★ জোরে আমিন বলা সম্পর্কে হাদীস সমূহঃ-
★ ভাই সব সময় অনেক ব্যাপারে অনেকেই ব্যাক্ষা ভালই দেন কিন্তু আমিন জোরে বলার ব্যাপারে তেমন একটা ব্যাক্ষা বলেন না যারা আস্তে আমিন এর পক্ষে। তবে ফেতনা বা সুন্নাত না বলার কারন কি মাযহাব বা গোরামী আর একারনে কি সহীহ হাদীস অস্বীকার করবেন আপনারা....??
আর সমাজে মুসলমানদের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়াবেন, সাথে ঐক্যও নষ্ট হচ্ছে....
★ আয়েশা রাঃ বলেন, রাসূল ( সাঃ) বলেছেন, যে মুসলমানদের সালাম ও আমিন বলার ব্যাপারে ইয়াহুদীরা যতটা ইর্ষান্নিত হয় ততোটা অন্য কোন বিষয়ে নয়।
এই কথার মানে কি..???
ভাই সালাম যদি আপনাকে আমি বা কেউ মনে মনে বলি তাহলে কি আপনি কসমিনকালেও তা শুনতে পারবেন...?
না শুনলে তো উত্তর ও দিবেন না। আপনাকে যদি বলি যে ভাই সালাম দিলাম উত্তর দিলেন না তখন আপনি বলবেন সালাম তো শুনিনি। আমি বল্লাম যে ভাই আমি মনে মনে দিয়েছি। তখন বলবেন ভাই আমি তো আর মনের খবর জানি না।
এখন বলেন আয়শা রাঃ যে বল্লেন, সালাম ও আমিনের ব্যাপারে ইয়াহুদীরা ইর্ষান্নিত হয়। তাহলে তারা যদি নাই শুনে থাকে তাহলে তাদের মাঝে ইর্ষা আসবে কই থেকে..???
আর ইয়াহুদীরা তো মনের খবর জানার প্রশ্নই আসে না।
তাহলে,
নিজের বিবেক কে প্রশ্ন করুন এবং মুসলিম হিসাবে সত্য বলা ও জানার চেষ্টা করি আমরা সকলে।
★ গ্রন্থঃ সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায়ঃ ৫/ সলাত কায়িম করা ও নিয়ম-কানুন (كتاب إقامة الصلاة والسنة)
হাদিস নম্বরঃ ৮৫৬
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ ইয়াহূদীরা তোমাদের কোন ব্যাপারে এত বেশি ঈর্ষান্বিত নয় যতটা তারা তোমাদের সালাম ও আমীনের ব্যাপারে ঈর্ষান্বিত।
হাদিসের মানঃ সহিহ
★ গ্রন্থ সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ১০/ আযান (كتاب الأذان)
হাদিস নম্বরঃ ৭৮০
‘আত্বা (রহ.) বলেন, ‘আমীন’ হল দু‘আ। তিনি আরও বলেন, ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু যুবায়র (রাযি.) ও তাঁর পিছনের মুসুল্লীগণ এমনভাবে ‘আমীন’ বলতেন যে, মসজিদে গুমগুম আওয়ায হতো। আবূ হুরাইরাহ্ (রাযি.) ইমামকে ডেকে বলতেন, আমাকে ‘আমীন’ বলার সুযোগ হতে বঞ্চিত করবেন না। নাফি‘ (রহ.) বলেন, ইবনু ‘উমার (রাযি.) কখনই ‘আমীন’ বলা ছাড়তেন না এবং তিনি তাদের (আমীন বলার জন্য) উৎসাহিত করতেন। আমি তাঁর কাছ হতে এ সম্পর্কে হাদীস শুনেছি।
★ ৭৮০ আবূ হুরাইরাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইমাম যখন ‘আমীন’ বলেন, তখন তোমরাও ‘আমীন’ বলো। কেননা, যার ‘আমীন’ (বলা) ও মালাইকাহর ‘আমীন’ (বলা) এক হয়, তার পূর্বের সব গুনাহ মা‘ফ করে দেয়া হয়। ইবনু শিহাব (রহ.) বলেন, রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও ‘আমীন’ বলতেন। (৬৪০২; মুসলিম ৪/১৮, হাঃ ৪১০, আহমাদ ৮২৪৭) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৭৩৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৭৪৪)

★ গ্রন্থ সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
অধ্যায়ঃ ২/ সালাত (كتاب الصلاة)
হাদিস নম্বরঃ ৯৩২

ইমামের পিছনে আমীন বলা প্রসঙ্গে
ওয়াইল ইবনু হুজর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, (সলাত আদায়কালে সূরাহ ফাতিহার শেষে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ‘‘ওয়ালাদ্দোয়াল্লীন’’ পড়তেন তখন তিনি সশব্দে আমীন বলতেন।[1]
সহীহ।
[1] তিরমিযী (অধ্যায় : আবওয়াবুস সলাত, অনুঃ আমীন বলা প্রসঙ্গে, হাঃ ২৪৮), ইবনু মাজাহ (অধ্যায় : সলাত ক্বায়িম, অনুঃ সশব্দে আমীন বলা, ৮৫৫), আহমাদ (৪/৩১৬), দারাকুতনী (১/৫/৩৩৪) ওয়ায়িল ইবনু হুজর এর হাদীস। হাদীস থেকে শিক্ষা : জেহরী ক্বিরাআতের সলাতে সূরাহ ফাতিহা শেষে ইমাম সশব্দে আমীন বলবে। হাদিসের মানঃ সহিহ
★ গ্রন্থ সূনান আত তিরমিজী [তাহকীককৃত]
অধ্যায়ঃ ২/ রাসূলুল্লাহ ﷺ হতে নামাযের সময়সূচী (كتاب الصلاة عن رسول الله ﷺ)
হাদিস নম্বরঃ ২৪৮

'আমীন' বলা সম্পর্কে
ওয়াইল ইবনু হুজর (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে “গাইরিল মাগযুবি আলাইহিম অলায-যালীন পাঠ করতে এবং আমীন' বলতে শুনেছি। আমীন বলতে গিয়ে তিনি নিজের কণ্ঠস্বর দীর্ঘ ও উচ্চ করলেন। —সহীহ। ইবনু মাজাহ– (৮৫৫)।
এ অনুচ্ছেদে আলী ও আবু হুরাইরা (রাঃ) হতেও হাদীস বর্ণিত আছে। আবু ঈসা বলেনঃ ওয়াইল ইবনু হুজরের হাদীসটি হাসান। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একদল সাহাবা, তাবিঈন ও তাদের পরবর্তীগণ ‘আমীন’ স্বশব্দে বলার পক্ষে মত দিয়েছেন এবং নিঃশব্দে - বলতে নিষেধ করেছেন। ইমাম শাফিঈ, আহমাদ ও ইসহাক এই মত গ্রহণ করেছেন। শুবা এ হাদীসটি সালামা ইবনু কুহাইলের সূত্রে তিনি বর্ণনা করেছেন। তাতে আছেঃ “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গাইরিল মাগযুবি আলাইহিম অলায-যাল্লীন পাঠ করলেন। অতঃপর নীচু স্বরে আমীন' বললেন।" -শাজ।
সহীহ আবু দাউদ- (৮৬৩)।
★ গ্রন্থ সূনান আত তিরমিজী [তাহকীককৃত]
অধ্যায়ঃ ২/ রাসূলুল্লাহ ﷺ হতে নামাযের সময়সূচী (كتاب الصلاة عن رسول الله ﷺ)
হাদিস নম্বরঃ ২৪৯

'আমীন' বলা সম্পর্কে
আবু ঈসা বলেনঃ আবু বাকর মুহাম্মাদ ইবনু আবান, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনু নুমাইর হতে, তিনি 'আলা ইবনু সালিহ আল-আসাদী হতে। তিনি সালামাহ ইবনু কুহাইল হতে তিনি হুজর ইবনু আনবাস হতে, তিনি ওয়াইল ইবনু হুজর হতে তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে সালামা ইবনু কুহাইলের সূত্রে সুফিয়ানের হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। -সহীহ। দেখুন পূর্বের- (২৪৮ নং) হাদীস।
হাদিসের মানঃ সহিহ
গ্রন্থঃ সুনানে ইবনে মাজাহ
অধ্যায়ঃ ৫/ সলাত কায়িম করা ও নিয়ম-কানুন (كتاب إقامة الصلاة والسنة)
হাদিস নম্বরঃ ৮৫৫

সশব্দে আমীন বলা।
আবদুল জাববার ইবনু ওয়াইল (রহঃ) থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সাথে সালাত পড়লাম। তিনি ওয়ালায যআলীন বলার পর আমীন বলেছেন। আমরা তা তাঁকে বলতে শুনেছি।
তাখরীজ কুতুবুত সিত্তাহ: তিরমিযী ২৪৮, নাসায়ী ৮৭৯, ৯৩২; আবূ দাঊদ ৯৩২-৩৩, আহমাদ ১৮৩৬২, ১৮৩৬৫, ১৮৩৮৮; ১২৪৭। তাহক্বীক্ব আলবানী: সহীহ। তাখরীজ আলবানী: মিশকাত সহীহাহ ৪৬৫৪, সহীহ আবী দাউদ ৮৬৩, ৮৬৪। হাদিসের মানঃ সহিহ
আমীন উচ্চঃস্বরে বলার আরও দলিল দেখুন (মুসলিম ১ম খন্ড ১৭৬ পৃঃ; নাসাঈ ১ম খন্ড ১৪৭ পৃঃ; মুয়াত্তা মালিক ৩০ পৃঃ; দারা কুতনী ১২৭ পৃঃ; বায়হাকী ২য় খন্ড ৫৯ পৃঃ; ফাতহুল বারী ২য় খন্ড ২১৭ পৃঃ; নাইলুল আওতার ২য় খন্ড ২৪৪ পৃঃ; আত্‌তারগীব ওয়াত্‌তারহীব ১ম খন্ড ২৩৬ পৃঃ; সুবুলুস সালাম ১ম খন্ড ২৪৩ পৃঃ; তুহফাতুল আহওয়াযী ১ম খন্ড ১০৮ পৃঃ; তালখিসুল হাবীব ১ম খন্ড ৯০ পৃঃ; আকামুল আহ্‌কামুল ১ম খন্ড ২০৭ পৃঃ);
আমীন উচ্চ স্বরে বলার আরও দলিল দেখুন (মিশকাত-মাওলানা নুর মোহাম্মাদ আযমী ২য় খন্ড হাঃ ৭৬৮, ৭৮৭; মিশকাত মাদ্রাসার পাঠ্য ২য় খন্ড হাঃ ৭৬৮, ৭৮৭; বাংলা অনুবাদ বুখারি মাওলানা আজীজুল হক ১ম খন্ড হাঃ ৪৫২; সহিহ আল বুখারি আঃ প্রঃ ১ম খন্ড হাঃ ৭৩৬, ৭৩৮; সহিহুল বুখারী তাঃ পাঃ ১ম খন্ড হাঃ ৭৮০, ৭৮২; বুখারী শরীফ ইঃ ফাঃ ১ম খন্ড হাঃ ৭৪১, ৭৪৩; মুসলিম শরীফ ইঃ ফাঃ ২য় খন্ড হাঃ ৭৯৭, ৭৯৮, ৭৯৯, ৮০০; আবু দাউদ ইঃ ফাঃ ২য় খন্ড হাঃ ৯৩২; তিরমিযী শরীফ ইঃ ফাঃ ১ম খন্ড হাঃ ২৪৮; ইবনে মাযাহ ইঃ ফাঃ ১ম খন্ড হাঃ ৮৩৭, ৮৩৮; জামে তিরমিযী মাওলানা আব্দুন নুর সালাফী ১ম খন্ড হাঃ ২৪১)
জোরে আমীন শুনে চটা ইহুদিদের সম্পর্কে আরও দলিল দেখুন (রাফউল উজাজাহ ১ম খন্ড ৩০০ পৃঃ; ইবনু কাসীর ১ম খন্ড ৫৮ পৃঃ; আত্‌তারগীব ওয়াত্‌তারহীব ১ম খন্ড ১৫০ পৃঃ; জামিউল ফাওয়ায়েদ ১ম খন্ড ৭৬ পৃঃ; নাইলুল আওতার ২য় খন্ড ২৪৬ পৃঃ; কানযুল উম্মাল ৩য় খন্ড ১৮৬ পৃঃ);
★ উপসংহারে একথা বলতে চায় যে, আমরা সহীহ হাদীস জেনে শুনে পরিহার করলে এবং উক্ত হাদীস অনুযায়ী কেউ আমল করলে তার সাথে ঠাট্টা মশকরা করলে তা রাসূল (সাঃ) এর উপর করা হয় তা চিন্তা করতে হবে। কারন হাদীস তো রাসূল (সাঃ) এর কথা।
এখন সহীহ হাদীসের আলোকে মাসলাগত মতপার্থক্য থাকতে পারে সাহাবা আজমাীন রাঃ তাদের যামানায় ও ছিল কিন্তু তারা বিভক্ত ও দলাদলিতে লিপ্ত হন নি।আসুন আমরাও মুসলিম হিসাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়া চেষ্টা করি।
আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন এবং সরল সঠিক পথ প্রদর্শণ করুন।
আমিন.......
★★★ আল্লাহ অধিক ভালো জানেন।

No comments:

Post a Comment