যে ভুলে ৯৫% নারীর নামায হয় না।
.
কিছু হুকুম আছে যা সবাই জানে, কিন্তু অসতর্কতার কারণে মানুষ ভুল করে বসে। কিন্তু সে বিষয়গুলো যদি তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয়া হয় তাহলে তারা সংশোধিত হতে পারে। সাধারণ সুন্নাত বা নফল বিষয় হলে সমস্যা নেই। সমস্যাতো তখন যখন সেটা ফরজ বিষয়ে হয়ে থাকে। নামাযের ঠিক তেমন-ই একটি অবহেলিত বিষয়; যে বিষয়ে সকলের সতর্ক হওয়া উচিত। বিষয়টি হচ্ছে,
পুরুষদের সতর সাধারণত ঢাকাই থাকে। তাদের মাঝে সাধারণত এ বিষয়টি খুব কম পরিলক্ষিত হয় যে সতর খোলার কারণে নামায বাতিল হবে। তবে যারা বেশি ফিট জামা বা শারীরিক আকৃতি প্রকাশ পায় এমন পোষাক পড়েন তাদের সাবধান হওয়া উচিত।
অপরদিকে, নারী সমাজের অধিকাংশই এ বিষয়ে অসতর্ক। ফরজ পর্দা ও সতর ঢাকার বিষয়টি সাধারণত পালন করার বিষয় অবহেলা করার কারণে এ বিষয়টি সালাতেও অবহেলিত হচ্ছে। তাই যে সময় ও শ্রম দিচ্ছেন তা বিফলে যাচ্ছে একটি #ফরজ ছুটে যাওয়ার করণে। #অনেকে একা ঘরে তাই সতর ঢাকাতে হেলা করেন, অথচ তা শর্ত! #অনেকে হাতের কজ্বির উপরেও খোলা রাখছেন! অনেকে মুখের সাথে গলাও খোলা রাখছেন! #অনেকে ওড়নাকে পেচিয়ে নামায পড়েন যেখানে সতর ঢাকার শর্ত, “আকৃতি ঢাকা”-টা অবহেলিত হচ্ছে। #অনেকে পা ঢাকার বিষয়ে বাড়াবাড়ি পর্যায়ে ছাড়াছাড়ি করছেন। পায়ের উপরিভাগ যতটা সম্ভব ঢেকে রাখতে হবে। #অনেকে শাড়ি পড়ে সালাত পড়ছেন স্বভাবতই সতর খোলা থাকছে বা অন্তত আকৃতি প্রকাশিত হচ্ছে। যা নামাযকে বাতিল করতে পারে। আসুন নিজের অংশটি পড়ে নিজেদের সালাত ও পরিচিতদের সালাতকে বাতিল হওয়া থেকে রক্ষা করি।
লেখক: ড. সালেহ ইবন ফাওযান আল-ফাওযান
সালাতে নারীর চেহারা ব্যতীত পূর্ণ শরীর সতর, তবে হাত ও পায়ের ব্যাপারে দ্বিমত রয়েছে যদি পর-পুরুষ তাকে না দেখে। গায়রে মাহরাম বা পর-পুরুষের দেখার সম্ভাবনা থাকলে চেহারা, হাত ও পা ঢাকা ওয়াজিব। যেমন, সালাতের বাইরেও এসব অঙ্গ পুরুষের আড়ালে রাখা ওয়াজিব। অতএব, সালাতের সময় মাথা, গর্দান ও সমস্ত শরীর পায়ের পাতা পর্যন্ত ঢাকা জরুরি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
“হায়েযা (ঋতুমতী) নারীর সালাত উড়না ব্যতীত গ্রহণ করা হয় না”।[তিরমিযী, হাদীস নং ৩৭৭); আবু দাউদ, হাদীস নং ৬৪১; ইবন মাজাহ; হাদীস নং ৬৫৫; আহমদ (৬/২৫৯)]
.
অর্থাৎ ঋতু আরম্ভ হয়েছে এমন প্রাপ্তবয়স্কা নারীর সালাত। উড়না দ্বারা উদ্দেশ্য মথা ও গর্দান আচ্ছাদনকারী কাপড়। উম্মে সালামাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করেন, নারী কি জামা ও উড়নায় সালাত পড়তে পারে নিচের কাপড় ছাড়া? তিনি বলেন:
“যদি জামা পর্যাপ্ত হয় যা তার পায়ের পাতা ঢেকে নেয়”।[আবু দাউদ, হাদীস নং ৬৪০; মালিক, হাদীস নং ৩২৬]
.
উড়না ও জামা দ্বারাই সালাত বিশুদ্ধ।
এ দু’টি হাদীস প্রমাণ করে যে, সালাতে নারীর মাথা ও গর্দান ঢেকে রাখা জরুরি, যা আয়েশা থেকে বর্ণিত হাদীসের দাবি। তার পায়ের বহিরাংশ (পাতা) পর্যন্ত শরীরের অংশও ঢেকে রাখা জরুরি, যা উম্মে সালামার হাদীসের দাবি। যদি পর-পুরুষ না দেখে চেহারা উন্মুক্ত রাখা বৈধ, এ ব্যাপারে সকল আহলে ইলম একমত।
.
শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ বলেন: “কারণ নারী একাকী সালাত পড়লে উড়না ব্যবহার করার নির্দেশ রয়েছে, সালাত ব্যতীত অন্যান্য সময় নিজ ঘরে মাথা উন্মুক্ত রাখা বৈধ। অতএব, সালাতে পোশাক গ্রহণ করা আল্লাহর হক। কোনো ব্যক্তির পক্ষে উলঙ্গাবস্থায় কা‘বা তাওয়াফ করা বৈধ নয়, যদিও সে রাতের অন্ধকারে একাকী হয়। অনুরূপ একাকী হলেও উলঙ্গ সালাত পড়া দুরস্ত নয়... অতঃপর তিনি বলেন: সালাতে সতর ঢাকার বিষয়টি দৃষ্টির সাথে সম্পৃক্ত নয়, না দৃষ্টি রোধ করার সাথে, আর না দৃষ্টি আকর্ষণ করার সাথে”।(মাজমুউল ফতোয়া: (২২/১১৩-১১৪) সমাপ্ত।
.
‘মুগনি’ কিতাবে: (২/৩২৮) ইবন কুদামাহ বলেছেন: “স্বাধীন নারীর পুরো শরীর সালাতে ঢেকে রাখা জরুরি, যদি তার কোনো অংশ খুলে যায় সালাত শুদ্ধ হবে না, তবে কম হলে সমস্যা নয়। এ কথাই বলেছেন ইমাম মালিক, আওযা‘ঈ ও শাফে‘ঈ।
.
সালাতে মহিলাদের পোশাক, কতটুকু ঢাকা থাকবে, কোন কোন অঙ্গ ঢাকা থাকবে।
মেয়েদের সুন্নাতী পোশাক কেমন হবে?
ইসলামে পুরুষ ও মহিলার পোশাকের নিয়ম গুলো কি কি?
.
ছালাতের জন্য এবং ছালাতের বাহিরে ঢিলেঢালা, সতর ঢেকে রাখে এমন পোষাক পরিধানে সচেষ্ট হতে হবে।
> লজ্জাহীনতার প্রতিযোগীতার যুগে লজ্জা করে হলেও সতর চেনার চেষ্টা করুন। সতর ঢেকে রাখুন। ছালাতের ভিতরের হুকুম যদি এমন হয় চিন্তা করা উচিত যে বাহিরে তাহলে কিভাবে বের হতে হবে। আল্লাহ তাওফিক দাতা।
প্রচারে: জান্নাত অনলাইন বুক শপ।
No comments:
Post a Comment