Friday, March 2, 2018

*প্রশ্ন: শুধু ’আল্লাহ' ’আল্লাহ’জিকির কি শরীয়ত সম্মত?*



No automatic alt text available.


*প্রশ্ন: শুধু ’আল্লাহ' ’আল্লাহ’জিকির কি শরীয়ত সম্মত?*
উত্তর: আল হামদুলিল্লাহ ওয়াস সালাতু ওয়া সালামু আলা রাসূলিল্লাহ। আম্মা বাদ:
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে দুয়া ও জিকিরের ব্যাপারে যতগুলো হাদীস পাওয়া যায় সবগুলোই পূর্ণাঙ্গ বাক্য। যেমন, সুবাহান আল্লাহ, আল হামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার, লাইলাহা ইল্লাল্লাহ ইত্যাদি। কতবার পড়তে হবে সংখ্যা সহ হাদীসগুলোতে উল্লেখ আছে। 
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
أفضل ما قلت أنا والنبيون قبلي: لا إله إلا الله وحده لا شريك له له الملك وله الحمد وهو على كل شيء قدير.
"আমি এবং আমার পূর্ববর্তী নবীগণের বলা শ্রেষ্ঠ জিকির হল, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদীর।”
তিনি আরও বলেন:
أفضل الذكر لا إله إلا الله
”শ্রেষ্ট জিকির হল, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।”
তিনি আরও বলেন:
وأفضل الدعاء الحمد الله
শ্রেষ্ঠ দুয়া হল, আল হমদুলিল্লাহ।
এভাবে বহু হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে জিকিরের শব্দাবলী শিক্ষা প্রদান করেছেন।
কিন্তু আল্লাহ তায়ালার একটি মাত্র নাম নিয়ে একক শব্দে,(যেমন, আল্লাহু আল্লাহু... বা আর রাহমানু আর রাহমানু... ইত্যাদি) জিকির করার ব্যাপারে একটি হাদীস পাওয়া যায় না। সাহাবী তাবেঈদের নিকট থেকেও এমন নজির খুঁজে পাওয়া যায় না।
একক শব্দে জিকির করা যদি শরীয়ত সম্মত হত তবে অবশ্যই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মতের জন্য উল্লেখ করতেন। সাহাবীগণও তা পালন করতে পিছুপা হতেন না।
ভ্রান্ত আকীদার পীর-ফকীর ও সূফীগণ এভাবে জিকির করে থাকেন। তাদের কেউ কেউ তো আল্লাহ শব্দ বাদ দিয়ে কেবল হু হু বলে জিকির করে থাকে। এভাবে তারা দীনের মধ্যে বিদআত আবিষ্কার করেছে।
আর প্রতিটি বিদআতই গোমরাহী।

*একটি হাদীস ও তার জবাব:*
---------------------------------------
আল্লাহ আল্লাহ শব্দে জিকির করার ব্যাপারে নিম্নোক্ত হাদীসটি দ্বারা দলীল পেশ করা হয়:
« لاَ تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى لاَ يُقَالَ فِى الأَرْضِ اللَّهُ اللَّهُ »
“কিয়ামত ততদিন পর্যন্ত সংঘটিত হবে না যত দিন না ‘আল্লাহ’ ‘আল্লাহ’ বলা বন্ধ হয়। (সহীহ মুসলিম, অনুচ্ছেদ: শেষ যমানায় ঈমান চলে যাওয়া।)
এর উত্তরে বলব: উক্ত হাদীসটি অন্য শব্দে এভাবে বর্ণিত হয়েছে:
لا تقوم الساعة حتى لا يقال لا إله إلا الله
“কিয়ামত ততদিন পর্যন্ত সংঘটিত হবে না যত দিন না লা ‘ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলা বন্ধ হয়।”
(দ্র: মাজমাঊয যাওয়ায়েদ ওয়া মামবাউল ফাওয়ায়েদ, অধ্যায়: কিতাবুল ফিতান, অনুচ্ছেদ: “কিয়ামত ততদিন পর্যন্ত সংঘটিত হবে না যত দিন না লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলা বন্ধ হয়।)
এ হাদীসেগুলো অর্থ অত্যন্ত স্পষ্ট যে, কিয়ামত এমন এক সময় সংঘটিত হবে যখন পৃথিবীর বুকে এমন একজন মানুষও বিদ্যমান থাকবে না যে ’লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বা ‘আল্লাহ’ শব্দটি মুখে উচ্চারণ করে। সব মানুষ যখন আল্লাহকে ভুলে শিরক, কুফুরী, নোংরামি, ও নানা পাপাচারে ডুবে যাবে তখন এ সকল নিকৃষ্ট মানুষদের উপর কিয়ামত সংঘটিত হবে।

উক্ত হাদীস থেকে ১০০, ২০০, ৫০০, ১০০০ বা এক লক্ষবার... আল্লাহু আল্লাহু জিকির করার বৈধতা আদৌ প্রমাণিত হয় না।
সুতরাং মুসলমানদের কর্তব্য, ইবাদত-বন্দেগী এখলাসের সাথে এমনভাবে করা যেভাবে দ্বীনের নবী শিখিয়ে দিয়ে গেছেন। তার দেখানো পন্থাই আমাদের জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ সবচেয়ে ভাল জানোন।
*গ্রন্থনায়:* আব্দুল্লাহিল হাদী
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার। সউদী আরব।

No comments:

Post a Comment