অর্থলিপ্সা!
___________
.
.
রাসুলুল্লাহ (সা) বলেন- “দুটি ক্ষুধার্ত নেকড়ে একপাল ভেড়ার জন্য ততটা ক্ষতিকর নয়, যতটা সম্পদ ও পদ-মর্যাদার প্রতি আকর্ষন তার দ্বীনের জন্য ক্ষতিকর”। (তিরমিযি হা/২৩৭২, আহমদ, ইবনে হিব্বান)
.
ধন-সম্পত্তি ও পদ-মর্যাদার লোভে পড়ে থাকা বেক্তি তার দ্বীনের জন্য কতোটুকু ক্ষতিকর, তা রাসুলুল্লাহ সা খুবই সুন্দর একটি উপমার মাধ্যমে আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছেন। একদল ভেড়ার মধ্যে দুটি ক্ষুধার্ত নেকড়ে ছেড়ে দিলে, স্বভাবতই তারা সকল ভেড়াকে হত্যা করে তাদের মাংস তৃপ্তি সহকারে আহার করবে। খুব কম সংখ্যক ভেড়াই সেখান থেকে প্রান নিয়ে পালাতে পারবে।
.
তাই দুটি ক্ষুধার্ত নেকড়ের মধ্যে একদল ভেড়া যেমন নিরাপদ নয়, তেমনি ধন-সম্পত্তির প্রতি অধিক ভালবাসাও আমাদের দ্বীনের জন্য নিরাপদ নয়।
.
তাছাড়া দুনিয়ার পিছনে ছোটা, আর দুনিয়া লাভ করা এক না। পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষই দুনিয়ার পিছনে অন্ধের মত ছুটছে, কিন্তু সফল হচ্ছে কয়জন? ১% ও না।
__________
.
অপরপক্ষে, যারাই আল্লাহ্র সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পরকালের জন্য কাজ করছে, তারা সবাই সফলকাম। তাই নিজেকে প্রস্ন করুন এই অস্থায়ী দুনিয়ার পিছনে ছোটে লাভটা কি?
.
গাজ্জালি (রহঃ) বলেন, দুনিয়া হচ্ছে উত্তপ্ত রৌদ্রের মধ্যে রাখা এক টুকরো বরফের মত, যা প্রতিনিয়ত ক্ষয় হচ্ছে এবং শীঘ্রই নিঃশেষিত হয়ে যাবে। অবশেষে এর কিছুই অবশিষ্ট থাকবেনা; না ধন-সম্পত্তি না সন্তান-সন্ততি। তবে আমাদের কর্ম থেকে যাবে; কেয়ামতের দিন এর জন্য জবাব দিতে হবে।
.
আল্লাহ তা'লা বলেন- “তোমরা জেনে রাখ, পার্থিব জীবন ক্রীড়া-কৌতুক, সাজ-সজ্জা, পারস্পরিক অহমিকা এবং ধন ও জনের প্রাচুর্য ব্যতীত আর কিছু নয়।” [সুরা আল-হাদিদঃ ২০]
.
উপরন্তু, ধন-সম্পত্তির প্রতি আমাদের আক্ষাঙ্খা যতই তীব্র হোক না কেন, আমরা শুধু তাই লাভ করব যা আমাদের তাকদিরে লেখা আছে। রিযিক উপার্জনের জন্য আমরা হালাল-হারাম যে পন্থাই অনুসরণ করিনা কেন, আমাদের রিযিকে কোন পরিবর্তন আসবে না।
.
তবে অর্থলিপ্সা এবং অসুদুপায় অবলম্বন, আমাদের দুনিয়াবি জীবনে পরিবর্তন না আনলেও, আখিরাতের গতিপথ পরিবর্তন করে দিতে পারে।
.
রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন- “অর্থলিপ্সা এবং ইমান মুমিনের অন্তরে একত্রিত হবে না।” (আহমদ, আন-নাসায়ি)
__________
.
পরিশেষে বলা যায় যে, ধন-সম্পত্তি এবং পদ-মর্যাদার প্রতি ভালবাসা মানুষের দ্বীনকে এভাবে ধ্বংস করে দেয় যে, অবশেষে আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। তাই আমাদের উচিত অস্থায়ী দুনিয়াকে পরিত্যাগ করে চিরস্থায়ি জান্নাতের প্রতি মনোযোগ দেওয়া। কারন আল্লাহ তা'লা বলেন-
.
.
"যে ব্যক্তি সীমালংঘন করেছে;এবং পার্থিব জীবনকে অগ্রাধিকার দিয়েছে,তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে দন্ডায়মান হওয়াকে ভয় করেছে এবং খেয়াল-খুশী থেকে নিজেকে নিবৃত্ত রেখেছে, তার ঠিকানা হবে জান্নাত।"
.
[আন-নাযিয়াতঃ৩৭-৪১]
▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂
:
লিখেছেনঃ নাফিজ মুক্তাদীর (আল্লাহ তাকে হেফাজত করুন)
No comments:
Post a Comment