সহজে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেতে একটি আমল করতে পারেন!
.
রাসূল (সা.) বলেন, "কেউ যদি তার অনুপস্থিত ভাইয়ের মর্যাদাহানির বা গিবতের প্রতিবাদ করে, তবে আল্লাহর উপর দায়িত্ব হয়ে যায় তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেয়া।" (সহিহ আত তারগিব ৩/৫২, ৫৩ হাদিসটি সহিহ)
.
গিবতের গোনাহ থেকে যেকোন মূল্যে বেঁচে থাকুন। না হয় হাশরের মাঠে নিজের নেক আমল সব তাকে দিয়ে দিতে হবে, যার গিবত করেছেন। রাসূল (সা.) বলেন, "কেউ যদি (গিবত-অপবাদের মাধ্যমে) কারো মর্যাদা-সম্মান নষ্ট করে বা অন্য কোনভাবে কারো প্রতি যুলুম করে থাকে, তবে সে যেন কিয়ামতের আগে আজই (দুনিয়াতে) তার থেকে (মাফ চেয়ে) মুক্তি নিয়ে নেয়; কারণ সেদিন কোন দিনার-দিরহাম থাকবে না। যদি তার নেক আমল থাকে তবে তার যুলুমের (বা গিবতের) পরিমাণ অনুসারে নেক আমল নিয়ে নেয়া হবে। আর যদি তার নেক আমল না থাকে, তবে তার সাথীর (যার গিবত করা হয়েছে তার) পাপ তার কাঁধে চাপানো হবে।" (সহিহ বুখারি ২/৮৬৫, ৫/২৩৯৪)
.
যদি গিবতকৃত ব্যক্তির নিকট মাফ চাওয়া না যায় তবে করণীয় কী?
.
১। যদি সম্ভব হয় তবে অবশ্যই সরাসরি তার কাছে মাফ চাইতে হবে।
২। যদি মাফ চাইতে গেলে সম্পর্ক আরো নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে তবে মাফ না চাওয়া উত্তম। তবে অবশ্যই এর বিকল্প কাজ করতে হবে। অথবা ব্যক্তিকে খুঁজে পাওয়া যায় না, তবে কিছু কাজ করতে হবে। সেগুলো হলো:
.
-----এক. কাফফারা (প্রায়শ্চিত্য/শাস্তি) হিসেবে এখন থেকে তার বেশি বেশি প্রশংসা করতে হবে। বিশেষ করে পূর্বে যাদের সাথে তার গিবত করেছিলেন তাদের সামনে তার সুনাম বলতে হবে।
----দুই. যখনই নিজের জন্য ক্ষমা চাবেন আল্লাহর কাছে তখন তার (যার গিবত করেছেন) জন্যও ক্ষমা চাবেন।
----তিন. বেশি বেশি নেক আমল করতে হবে।
---চার. যার গিবত করেছেন তার উদ্দেশ্যে কিছু সাদাক্বাহ করবেন। এতে ইনশাআল্লাহ হাশরের মাঠে সে যখন দেখবে আপনি তার জন্য সাদাক্বাহ করেছেন তখন সে খুশি হয়ে মাফ করে দিতে পারে। (তবে এটা নিশ্চিত না)
---পাঁচ. আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে ক্ষমা চাবেন আর ওয়াদা করবেন যে, জীবনে আর কারো গিবত করবেন না।
.
সর্বশেষ, গিবতের সংজ্ঞাটা জেনে নেয়া যাক। এই সংজ্ঞা অনুসারে নিজেই বুঝতে পারবেন, আপনার কোন কথাটি গিবত হচ্ছে।
.
রাসূলুল্লাহ (সা.) সাহাবাদের উদ্দেশ্যে বলেন, "তোমরা কি জান, 'গিবত' কী? তাঁরা বললেন, 'আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলই ভালো জানেন।' তিনি বললেন, ★তোমার ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তার ব্যাপারে এমন কিছু উল্লেখ করা (বলা), যা সে (শুনলে) অপছন্দ করবে।★ জিজ্ঞেস করা হলো, 'আমি যা বলছি তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে থাকে? (তবেও কি গিবত হবে)' তিনি বলেন, তুমি যা বলছো তা যদি তার মধ্যে থাকে তবেই তো তুমি তার গিবত করলে। আর যদি তার মধ্যে তা না থাকে তবে তো তুমি তার উপর অপবাদ দিলে।" (সহিহ মুসলিম ৪/২০০১)
.
শায়খ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল মুনাজ্জিদ (ফা.আ.) বলেন, "যে মাজলিসে কারো গিবত করা হয় সেখানে যে ব্যক্তিই উপস্থিত থাকুক, তাকে তা (গিবত করা থেকে) নিষেধ করা ওয়াজিব।"
No comments:
Post a Comment