Tuesday, December 4, 2018



Image may contain: candles




যখন কোন ব্যক্তির মৃত্যু উপস্থিত হয় তার জন্য উচিত হবে আল্লাহর কাছে ক্ষমা পাবে এ আশা পোষণ করা।
যেমন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
لا يموتن أحدكم إلا وهو يحسن الظن بالله عز وجل. رواه مسلم(২৮৭৭)
'আল্লাহর প্রতি ভাল ধারণা না নিয়ে তোমাদের মধ্যে কেহ যেন মৃত্যু বরণ না করে।'
(মুসলিম : ২৮৭৭)

অনেক মানুষ এমন আছেন যারা আল্লাহর সীমাহীন দয়া ও ক্ষমা লাভের আশায় পাপ করতে থাকেন, তা থেকে ফিরে আসা যে প্রয়োজন তা অনুধাবন করতে চান না। এটা এক ধরনের মুর্খতা। আল্লাহ তাআলা বলেন :
نَبِّئْ عِبَادِي أَنِّي أَنَا الْغَفُورُ الرَّحِيمُ. وَأَنَّ عَذَابِي هُوَ الْعَذَابُ الْأَلِيمُ. ﴿الحجر :৫০﴾
'আমার বান্দাদের বলে দাও যে, আমি তো পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু, এবং আমার শাস্তি- সে অতি মর্মন্তুদ শাস্তি ![সূরা আল-হিজর : ৪৯-৫০]

তিনি আরো বলেন,
حم. تَنْزِيلُ الْكِتَابِ مِنَ اللَّهِ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ. غَافِرِ الذَّنْبِ وَقَابِلِ التَّوْبِ شَدِيدِ الْعِقَابِ ذِي الطَّوْلِ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ إِلَيْهِ الْمَصِيرُ ﴿الغافر : ১-৩﴾
'হা-মীম এ কিতাব অবতীর্ণ হয়েছে পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর নিকট হতে- যিনি পাপ ক্ষমা করেন, তাওবা কবুল করেন, যিনি শাস্তি দানে কঠোর শক্তিশালী।[সূরা আল-গাফির : ১-৩]

অতএব আল্লাহ শুধু ক্ষমাশীল এ ধারনার ভিত্তিতে নিজের আমলগুলো দেখলে হবে না বরং তিনি যে কাঠোর শাস্তিদাতা এটা সর্বদা মনে রাখতে হবে।
==°===°°===°°°====°°°°=====
আশা এবং ভয়ের ব্যাপারে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের মতামত কি?

মানুষ আশাকে ভয়ের উপর প্রাধান্য দিবে? না ভয়কে আশার উপর? এ ব্যাপারে আলেমদের মধ্যে মত পার্থক্য রয়েছে।
ইমাম আহমাদ বিন হান্বাল (রাঃ) বলেছেন, মানুষের নিকট আশা এবং ভয় সমান সমান হওয়া উচিৎ। একটিকে অন্যটির উপর প্রাধান্য দেয়া উচিৎ নয়। তিনি আরো বলেন, একটি অন্যটির উপর প্রাধান্য দিলে বিপথগামী হবে। কেননা আশাকে প্রাধান্য দিলে মানুষ আল্লাহর পাকড়াও থেকে নিজেকে নিরাপদ মনে করবে। আর ভয়কে প্রাধান্য দিলে আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ে পড়বে।
কোন কোন আলেম বলেন, সৎ আমলের ক্ষেত্রে আল্লাহর রহমত পাওয়ার আশাকে প্রাধান্য দিবে এবং পাপ কাজের প্রতি ধাবিত হওয়ার সময় আল্লাহর ভয়কে সামনে রাখবে। কেননা বান্দা আনুগত্যের কাজের দ্বারা আল্লাহর প্রতি ভাল ধারণা আবশ্যক হওয়ার কাজ করে থাকে। তাই আশার দিককে অর্থাৎ আমলটি কবূল হওয়ার আশাকে প্রাধান্য দেয়া উচিৎ। আর মনের ভিতরে যদি পাপ কাজের ইচ্ছা জাগ্রত হয়, তখন আল্লাহর ভয়কে প্রাধান্য দেয়া উচিৎ। যাতে পাপ কাজে লিপ্ত না হয়।
কিছু কিছু আলেম বলেছেন, সুস্থ ব্যক্তির ভয়কে প্রাধান্য দেয়া উচিৎ। আর অসুস্থ ব্যক্তির জন্য আশার আলো থাকা দরকার। কেননা সুস্থ ব্যক্তির নিকটে ভয় বেশী থাকলে পাপের কাজে অগ্রসর হওয়া থেকে বিরত থাকবে। আর রোগী ব্যক্তি আশাকে প্রাধান্য দিবে। কারণ সে যদি আশাকে প্রাধান্য দেয়, তা হলে আল্লাহর সাথে ভাল ধারণা রাখা অবস্থায় আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করবে।
এই মাসআলাতে আমার কাছে গ্রহণ যোগ্য কথা হল মানুষের অবস্থাভেদে হুকুম বিভিন্ন হবে। ভয়ের দিককে প্রাধান্য দিতে গেলে যদি আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হওয়ার আশঙ্ককা থাকে, তা হলে মন থেকে এ ধরণের ভয় দূর করে দিয়ে আশার দিককে স্থান দিবে। আর যদি আশঙ্ককা থাকে যে, আশার দিককে প্রাধান্য দিতে গেলে আল্লাহর পাকড়াও থেকে নিজেকে মুক্ত ভাবার ভয় রয়েছে, তা হলে ভয়কেই প্রাধান্য দিবে। মানুষ তার অন্তরের ডাক্তার। যদি তার অন্তর জীবিত থাকে। আর যদি অন্তর মৃত হয়ে থাকে, তা হলে তার কোন চিকিৎসা নেই।
গ্রন্থঃ ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম
অধ্যায়ঃ ঈমান
শাইখ মুহাম্মাদ ইবনে সালিহ আল উথাইমিন (র:)

No comments:

Post a Comment