ঈসা (আঃ) ছিলেন বানী ইসরাইল বংশের সর্বশেষ নাবী ও কিতাবধারী রাসুল। তিনি ইঞ্জিল প্রাপ্ত হয়েছিলেন। মুসা (আঃ) -এর অনুসারী হওয়ার দাবীদার ইহুদিরা তাঁকে নাবী হিসাবে স্বীকার করেনি। অত্যন্ত লজ্জাজনককভাবে তারা তাঁকে জনৈক ইউসুফ মিস্ত্রীর অবৈধ সন্তান বলে আখ্যায়িত করেছে (নাউজুবিল্লাহ)।
.
অপরদিকে ঈসা (আঃ) -এর ভক্ত ও অনুসারী বলে দাবীদার খৃষ্টানরা বাড়াবাড়ি করে তাঁকে ‘আল্লাহর পুত্র’ বলেছে, আর তিন আল্লাহর একজন বলেছে।
(নাউজুবিল্লাহ)
.
ঈসা (আঃ) ছিলেন আল্লাহর একজন দাস। তিনি আল্লাহর পুত্র ছিলেন না। যেমন মহান আল্লাহ বলেন,
-তারা বলে- ‘দয়াময় সন্তান গ্রহন করেছেন’ (এমন কথা বলে) তারা তো এক ভয়ংকার বিষয়ের অবতারনা করেছে। যাতে আকাশ বিদীর্ণ হওয়ার, পৃথিবী খণ্ড বিখণ্ড হওয়ার আর পর্বতমালা চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে পতিত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কারন তারা দয়াময়ের প্রতি সন্তান আরোপ করে। অথচ দয়াময়ের মহান মর্যাদার জন্য এটা শোভনীয় নয় যে, তিনি সন্তান গ্রহন করবেন। আকাশ আর যমিনে এমন কেউ নেই যে, দয়াময়ের নিকট বান্দা হয়ে হাযির হবে না। তিনি তাদেরকে বিশেষভাবে গুনে গুনে রেখেছেন। কিয়ামতের দিন সবাই তাঁর কাছে আসবে একাকী অবস্থায়।
[সূরা মারইয়াম ১৯/৮৮-৯৪]
.
মহান আল্লাহ আরও বলেন,
-তারা বলে- ‘দয়াময় সন্তান গ্রহন করেছেন’ তিনি এসব থেকে মহা পবিত্র। তারা হল (যাদেরকে আল্লাহর সন্তান বলা হয়) তাঁর বান্দা যাদেরকে সম্মানে উন্নীত করা হয়েছে।
[সূরা আম্বিয়া ২১/২৬]
.
মহান আল্লাহ আরও বলেন,
-আল্লাহ কোন সন্তান গ্রহন করেননি, আর তাঁর সাথে কোনো ইলাহ নেই, (থাকলে) প্রত্যেক ইলাহ আপন সৃষ্টি নিয়ে অবশ্যই চলে যেত, আর অবশ্যই একে অপরের উপর চড়াও হতো, তারা তাঁর প্রতি যা আরোপ করে তা থেকে তিনি কত মহান ও পবিত্র। তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যের অধিকারী, তারা যা তাঁর শরীক বানায়, তা থেকে তিনি বহু ঊর্ধ্বে।
[সূরা মু’মিনুন ২৩/৯১-৯২]
.
মহান আল্লাহ আরও বলেন,
-মহা কল্যাণময় তিনি, যিনি তাঁর বান্দার উপর সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী (কিতাব) নাযিল করেছেন, যাতে সে বিশ্বজগতের জন্য সতর্ককারী হতে পারে।
যিনি যমিন ও আসমানের রাজত্বের মালিক, তিনি কোনো সন্তান গ্রহন করেননি, রাজত্বে তাঁর কোনো অংশীদার নেই, তিনি সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছেন, আর সেগুলোকে যথাযথ করেছেন পরিমিত অনুপাতে।
[সূরা ফুরকান ২৫/১-২]
.
মহান আল্লাহ আরও বলেন,
-তারা অবশ্যই তাদের মনগড়া কথা বলে যে, আল্লাহ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তারা অবশ্যই মিথ্যাবাদী।
[সূরা সাফফাত ৩৭/১৫১-১৫২]
.
মহান আল্লাহ আরও বলেন,
-আল্লাহ সন্তান গ্রহন করার ইচ্ছা করলে, তিনি তাঁর সৃষ্টিকুল থেকে নিজ পছন্দ মত বেঁছে নিতেন। এসব থেকে তিনি পবিত্র। অপ্রতিরোধ্য ক্ষমতার অধিকারী তিনি এক ও একক আল্লাহ।
[সূরা যুমার ৩৯/৪]
.
মহান আল্লাহ আরও বলেন,
-আর আমাদের প্রতিপালকের মর্যাদা অতি উচ্চ, তিনি গ্রহন করেননি কোনো স্ত্রী আর কোনো সন্তান। আর আমাদের মধ্যেকার নির্বোধেরা তাঁর সম্পর্কে সীমাতিরিক্ত কথা বলতো।
[সূরা জিন ৭২/৩-৪]
.
মহান আল্লাহ আরও বলেন,
-বল- তিনি আল্লাহ, এক অদ্বিতীয়। আল্লাহ কোনো কিছুর মুখাপেক্ষী নন, সবই তাঁর মুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেননি, আর তাঁকেও জন্ম দেয়া হয়নি। তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই।
[সূরা ইখলাস ১১২/১-৪]
.
.
উপরোক্ত দলীল প্রমান জানার পরও কেউ যদি ২৫শে ডিসেম্বর খৃষ্টানদের 'বড়দিন' তথা ঈসা (আঃ)-এর তথাকথিত জন্মদিন হিসাবে কাউকে 'মেরী ক্রিসমাস' বলে অথবা অন্য কোনোভাবে শুভেচ্ছা জানায় তাহলে সে যেন সাক্ষ্য দিচ্ছে ঈসা (আঃ) নিজেই আল্লাহ, আল্লাহর পুত্র! (নাউজুবিল্লাহ) যা যেকোন মুসলিমের জন্য হারাম!
.
মহান আল্লাহ আমাদেরকে এই সমস্ত বড় কুফুরী থেকে হিফাযত করুন।
-
No comments:
Post a Comment