কাফেরদের সাথে বন্ধুত্বের নিদর্শন:
এক. কথা-বার্তা লেবাস-পোশাক ইত্যাদিতে অমুসলিমদের সাদৃশ্য অবলম্বন করা:
লেবাস-পোশাক, চাল-চলন ও কথা-বার্তা ইত্যাদিতে অমুসলিমদের সাথে সাদৃশ্য অবলম্বন করা, তাদের সাথে বন্ধুত্বকেই প্রমাণ করে[9]। সে কারণেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ»
“যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য রাখে, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকবে”[10]।
যে সব আচার-আচরণ, কথা-বার্তা, আখলাক-চরিত্র ইত্যাদি কাফেরদের বৈশিষ্ট্য, সে সব বিষয়ে তাদের অনুকরণ করা সম্পূর্ণ হারাম। যেমন- দাড়ি মুণ্ডন, গোফ বড় করা, প্রয়োজন ছাড়া তাদের সংস্কৃতিতে কথা বলা, তারা যে সব পোশাক পরিধান করে, তা পরিধান করা, তারা যে সব খাদ্য গ্রহণ করে, তা গ্রহণ করা, ইত্যাদি[11]।
লেবাস-পোশাক, চাল-চলন ও কথা-বার্তা ইত্যাদিতে অমুসলিমদের সাথে সাদৃশ্য অবলম্বন করা, তাদের সাথে বন্ধুত্বকেই প্রমাণ করে[9]। সে কারণেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ»
“যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য রাখে, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকবে”[10]।
যে সব আচার-আচরণ, কথা-বার্তা, আখলাক-চরিত্র ইত্যাদি কাফেরদের বৈশিষ্ট্য, সে সব বিষয়ে তাদের অনুকরণ করা সম্পূর্ণ হারাম। যেমন- দাড়ি মুণ্ডন, গোফ বড় করা, প্রয়োজন ছাড়া তাদের সংস্কৃতিতে কথা বলা, তারা যে সব পোশাক পরিধান করে, তা পরিধান করা, তারা যে সব খাদ্য গ্রহণ করে, তা গ্রহণ করা, ইত্যাদি[11]।
দুই. অমুসলিম দেশে অবস্থান করা, দ্বীনের হেফাজতের জন্য অমুসলিম দেশ থেকে মুসলিম দেশে হিজরত করা হতে বিরত থাকা:
যখন একজন মুসলিম ব্যক্তি কোন অমুসলিম দেশে তার দ্বীনের বিষয়ে আশঙ্কা করবে, তাকে অবশ্যই দ্বীনের হেফাজতের জন্য কাফেরদের দেশ ত্যাগ করে কোন মুসলিম দেশে হিজরত করতে হবে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে প্রতিটি মুসলিমের উপর তার দ্বীনের হেফাজতের জন্য হিজরত করা ওয়াজিব। কারণ, দ্বীনের বিষয়ে আশঙ্কা করার পরও কাফের দেশে অবস্থান করা, কাফেরদের সাথে সু-সম্পর্ক রাখা ও তাদের সাথে বন্ধুত্ব করার প্রমাণ বহন করে। এ কারণেই হিজরত করতে সক্ষম, এমন ব্যক্তির জন্য কোন কাফেরদের মাঝে অবস্থান করা আল্লাহ হারাম ঘোষণা করেছেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন,
﴿إِنَّ ٱلَّذِينَ تَوَفَّىٰهُمُ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ ظَالِمِيٓ أَنفُسِهِمۡ قَالُواْ فِيمَ كُنتُمۡۖ قَالُواْ كُنَّا مُسۡتَضۡعَفِينَ فِي ٱلۡأَرۡضِۚ قَالُوٓاْ أَلَمۡ تَكُنۡ أَرۡضُ ٱللَّهِ وَٰسِعَةٗ فَتُهَاجِرُواْ فِيهَاۚ فَأُوْلَٰٓئِكَ مَأۡوَىٰهُمۡ جَهَنَّمُۖ وَسَآءَتۡ مَصِيرًا ٩٧ إِلَّا ٱلۡمُسۡتَضۡعَفِينَ مِنَ ٱلرِّجَالِ وَٱلنِّسَآءِ وَٱلۡوِلۡدَٰنِ لَا يَسۡتَطِيعُونَ حِيلَةٗ وَلَا يَهۡتَدُونَ سَبِيلٗا ٩٨ فَأُوْلَٰٓئِكَ عَسَى ٱللَّهُ أَن يَعۡفُوَ عَنۡهُمۡۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَفُوًّا غَفُورٗا٩٩﴾ [سورة النساء:97-99].
“নিশ্চয় যারা নিজদের প্রতি যুলমকারী, ফেরেশতারা তাদের জান কবজ করার সময় বলে, ‘তোমরা কি অবস্থায় ছিলে’? তারা বলে, ‘আমরা জমিনে দুর্বল ছিলাম’। ফেরেশতারা বলে, ‘আল্লাহর জমিন কি প্রশস্ত ছিল না যে, তোমরা তাতে হিজরত করতে’? সুতরাং ওরাই তারা যাদের আশ্রয়স্থল জাহান্নাম। আর তা মন্দ প্রত্যাবর্তন-স্থল। তবে দুর্বল পুরুষ, নারী ও শিশু যারা কোন উপায় অবলম্বন করতে পারে না এবং কোন রাস্তা খুঁজে পায় না। অতঃপর আশা করা যায় যে, আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করবেন। আর আল্লাহ মার্জনাকারী, ক্ষমাশীল। [সূরা আন-নিসা: ৯৭-৯৯]
আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুমিনদের জন্য হিজরত করাকে ফরয করে দিয়েছেন। একমাত্র দুর্বল যারা হিজরত করতে অক্ষম তাদেরকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন অমুসলিম দেশে অবস্থান করার অনুমতি দিয়েছেন[12]।
অনুরূপভাবে যাদের কাফেরদের দেশে থাকার দ্বারা ইসলাম ও মুসলিমের কোন উপকার ও কল্যাণ রয়েছে, তাদের জন্য কাফেরদের দেশে থাকার অনুমতি ইসলাম দিয়েছে। যেমন- কাফেরদের দেশে কাফেরদেরকে ইসলামের দিকে দাওয়াত দিতে পারে, তাদের মধ্যে ইসলামের সৌন্দর্য তুলে ধরতে পারে এবং ইসলামের প্রচার করতে পারে। এ ধরনের লোকের জন্য কাফের দেশে অবস্থান করাতে কোন অসুবিধা বা গুনাহ নাই। তারা সেখানে অবস্থান করে মুসলিমদের পক্ষে কাজ করবে।
তিন- বিনোদন ও পর্যটনের উদ্দেশ্যে তাদের দেশে ভ্রমণ করা:
প্রয়োজন ব্যতীত কাফেরদের দেশে ভ্রমণ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবে প্রয়োজনীয় কাজে ভ্রমণ করাতে কোন অসুবিধা নাই। যেমন, চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্য, উচ্চ শিক্ষা লাভ, বিশেষত: এমন কোন ডিগ্রি হাসিল, যা তাদের দেশে যাওয়া ছাড়া অর্জন করা সম্ভব নয়, এ ধরনের কোন প্রয়োজনীয় কাজের জন্য ভ্রমণ করা বৈধ। তখন এ সব প্রয়োজনের খাতিরে তাদের দেশে সফর করা ও সেখানে সাময়িক অবস্থান করাতে কোন গুনাহ হবে না। আর একটি কথা মনে রাখতে হবে, যে সব প্রয়োজনের তাগিদে তাদের দেশে ভ্রমণ করা যেতে পারে, প্রয়োজন শেষ হওয়ার সাথে সাথে তার জন্য মুসলিমদের দেশে ফিরে আসা ওয়াজিব। সেখানে কাল ক্ষেপণ করা বা বিনোদনের উদ্দেশ্যে ঘুরা-ফেরা করা কোন ক্রমেই উচিত না।
এ ধরনের সফর বৈধ হওয়ার জন্য শর্ত হল, সে সেখানে নিজের দ্বীন প্রকাশ করার ক্ষমতা থাকতে হবে, মুসলিম হওয়ার কারণে তার মধ্যে কোন প্রকার সংকোচ ও হীনমন্যতা থাকতে পারবে না। মুসলিম হওয়ার কারণে তার সম্মানবোধ থাকতে হবে। অমুসলিমের দেশে যে সব অন্যায়, অনাচার ও কু-সংস্কার সংঘটিত হয়, তার থেকে দূরে থাকতে হবে। শত্রুদের ষড়যন্ত্রের শিকার হওয়া থেকে সাবধান থাকতে হবে। অনুরূপভাবে যদি কারো জন্য অমুসলিম দেশে ইসলামের দাওয়াত দেয়া ও ইসলাম প্রচারের কাজ করার সুযোগ হয়, তখন তার জন্য অমুসলিম দেশে অবস্থান করা বৈধ, আবার কখনও কখনও ওয়াজিব।
যখন একজন মুসলিম ব্যক্তি কোন অমুসলিম দেশে তার দ্বীনের বিষয়ে আশঙ্কা করবে, তাকে অবশ্যই দ্বীনের হেফাজতের জন্য কাফেরদের দেশ ত্যাগ করে কোন মুসলিম দেশে হিজরত করতে হবে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে প্রতিটি মুসলিমের উপর তার দ্বীনের হেফাজতের জন্য হিজরত করা ওয়াজিব। কারণ, দ্বীনের বিষয়ে আশঙ্কা করার পরও কাফের দেশে অবস্থান করা, কাফেরদের সাথে সু-সম্পর্ক রাখা ও তাদের সাথে বন্ধুত্ব করার প্রমাণ বহন করে। এ কারণেই হিজরত করতে সক্ষম, এমন ব্যক্তির জন্য কোন কাফেরদের মাঝে অবস্থান করা আল্লাহ হারাম ঘোষণা করেছেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন,
﴿إِنَّ ٱلَّذِينَ تَوَفَّىٰهُمُ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ ظَالِمِيٓ أَنفُسِهِمۡ قَالُواْ فِيمَ كُنتُمۡۖ قَالُواْ كُنَّا مُسۡتَضۡعَفِينَ فِي ٱلۡأَرۡضِۚ قَالُوٓاْ أَلَمۡ تَكُنۡ أَرۡضُ ٱللَّهِ وَٰسِعَةٗ فَتُهَاجِرُواْ فِيهَاۚ فَأُوْلَٰٓئِكَ مَأۡوَىٰهُمۡ جَهَنَّمُۖ وَسَآءَتۡ مَصِيرًا ٩٧ إِلَّا ٱلۡمُسۡتَضۡعَفِينَ مِنَ ٱلرِّجَالِ وَٱلنِّسَآءِ وَٱلۡوِلۡدَٰنِ لَا يَسۡتَطِيعُونَ حِيلَةٗ وَلَا يَهۡتَدُونَ سَبِيلٗا ٩٨ فَأُوْلَٰٓئِكَ عَسَى ٱللَّهُ أَن يَعۡفُوَ عَنۡهُمۡۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَفُوًّا غَفُورٗا٩٩﴾ [سورة النساء:97-99].
“নিশ্চয় যারা নিজদের প্রতি যুলমকারী, ফেরেশতারা তাদের জান কবজ করার সময় বলে, ‘তোমরা কি অবস্থায় ছিলে’? তারা বলে, ‘আমরা জমিনে দুর্বল ছিলাম’। ফেরেশতারা বলে, ‘আল্লাহর জমিন কি প্রশস্ত ছিল না যে, তোমরা তাতে হিজরত করতে’? সুতরাং ওরাই তারা যাদের আশ্রয়স্থল জাহান্নাম। আর তা মন্দ প্রত্যাবর্তন-স্থল। তবে দুর্বল পুরুষ, নারী ও শিশু যারা কোন উপায় অবলম্বন করতে পারে না এবং কোন রাস্তা খুঁজে পায় না। অতঃপর আশা করা যায় যে, আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করবেন। আর আল্লাহ মার্জনাকারী, ক্ষমাশীল। [সূরা আন-নিসা: ৯৭-৯৯]
আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুমিনদের জন্য হিজরত করাকে ফরয করে দিয়েছেন। একমাত্র দুর্বল যারা হিজরত করতে অক্ষম তাদেরকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন অমুসলিম দেশে অবস্থান করার অনুমতি দিয়েছেন[12]।
অনুরূপভাবে যাদের কাফেরদের দেশে থাকার দ্বারা ইসলাম ও মুসলিমের কোন উপকার ও কল্যাণ রয়েছে, তাদের জন্য কাফেরদের দেশে থাকার অনুমতি ইসলাম দিয়েছে। যেমন- কাফেরদের দেশে কাফেরদেরকে ইসলামের দিকে দাওয়াত দিতে পারে, তাদের মধ্যে ইসলামের সৌন্দর্য তুলে ধরতে পারে এবং ইসলামের প্রচার করতে পারে। এ ধরনের লোকের জন্য কাফের দেশে অবস্থান করাতে কোন অসুবিধা বা গুনাহ নাই। তারা সেখানে অবস্থান করে মুসলিমদের পক্ষে কাজ করবে।
তিন- বিনোদন ও পর্যটনের উদ্দেশ্যে তাদের দেশে ভ্রমণ করা:
প্রয়োজন ব্যতীত কাফেরদের দেশে ভ্রমণ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবে প্রয়োজনীয় কাজে ভ্রমণ করাতে কোন অসুবিধা নাই। যেমন, চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্য, উচ্চ শিক্ষা লাভ, বিশেষত: এমন কোন ডিগ্রি হাসিল, যা তাদের দেশে যাওয়া ছাড়া অর্জন করা সম্ভব নয়, এ ধরনের কোন প্রয়োজনীয় কাজের জন্য ভ্রমণ করা বৈধ। তখন এ সব প্রয়োজনের খাতিরে তাদের দেশে সফর করা ও সেখানে সাময়িক অবস্থান করাতে কোন গুনাহ হবে না। আর একটি কথা মনে রাখতে হবে, যে সব প্রয়োজনের তাগিদে তাদের দেশে ভ্রমণ করা যেতে পারে, প্রয়োজন শেষ হওয়ার সাথে সাথে তার জন্য মুসলিমদের দেশে ফিরে আসা ওয়াজিব। সেখানে কাল ক্ষেপণ করা বা বিনোদনের উদ্দেশ্যে ঘুরা-ফেরা করা কোন ক্রমেই উচিত না।
এ ধরনের সফর বৈধ হওয়ার জন্য শর্ত হল, সে সেখানে নিজের দ্বীন প্রকাশ করার ক্ষমতা থাকতে হবে, মুসলিম হওয়ার কারণে তার মধ্যে কোন প্রকার সংকোচ ও হীনমন্যতা থাকতে পারবে না। মুসলিম হওয়ার কারণে তার সম্মানবোধ থাকতে হবে। অমুসলিমের দেশে যে সব অন্যায়, অনাচার ও কু-সংস্কার সংঘটিত হয়, তার থেকে দূরে থাকতে হবে। শত্রুদের ষড়যন্ত্রের শিকার হওয়া থেকে সাবধান থাকতে হবে। অনুরূপভাবে যদি কারো জন্য অমুসলিম দেশে ইসলামের দাওয়াত দেয়া ও ইসলাম প্রচারের কাজ করার সুযোগ হয়, তখন তার জন্য অমুসলিম দেশে অবস্থান করা বৈধ, আবার কখনও কখনও ওয়াজিব।
চার. মুসলিমদের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করে তাদের সাহায্য ও সহযোগিতা করা, তাদের প্রশংসা করা ও তাদের হয়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে লড়াই করা:
মুসলিমদের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করে তাদের সহযোগিতা করা মারাত্মক অপরাধ ও বড় গুনাহ। যারা এ ধরনের কাজ করে, তারা কোন ক্রমেই মুসলিম হতে পারে না। এ কাজটি হল, ইসলাম বিনষ্টকারী ও ঈমান হারা হওয়ার অন্যতম উপকরণ। এ ধরনের কাজ করলে সে মুরতাদ বা বেঈমান বলে গণ্য হবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের এ ধরনের কাজ করা হতে নাজাত দান করুন।
মুসলিমদের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করে তাদের সহযোগিতা করা মারাত্মক অপরাধ ও বড় গুনাহ। যারা এ ধরনের কাজ করে, তারা কোন ক্রমেই মুসলিম হতে পারে না। এ কাজটি হল, ইসলাম বিনষ্টকারী ও ঈমান হারা হওয়ার অন্যতম উপকরণ। এ ধরনের কাজ করলে সে মুরতাদ বা বেঈমান বলে গণ্য হবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের এ ধরনের কাজ করা হতে নাজাত দান করুন।
পাঁচ. অমুসলিমদের থেকে সাহায্য কামনা করা, তাদের কথার উপর ভরসা করা, তাদেরকে মুসলিমদের গোপন বিষয়াদি সম্বলিত বিভিন্ন বড় বড় পোষ্টে চাকুরী দেয়া, তাদেরকে অন্তরঙ্গ বন্ধু নির্বাচন করা, তাদেরকে পরামর্শক হিসেবে গ্রহণ করা[13]
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন,
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تَتَّخِذُواْ بِطَانَةٗ مِّن دُونِكُمۡ لَا يَأۡلُونَكُمۡ خَبَالٗا وَدُّواْ مَا عَنِتُّمۡ قَدۡ بَدَتِ ٱلۡبَغۡضَآءُ مِنۡ أَفۡوَٰهِهِمۡ وَمَا تُخۡفِي صُدُورُهُمۡ أَكۡبَرُۚ قَدۡ بَيَّنَّا لَكُمُ ٱلۡأٓيَٰتِۖ إِن كُنتُمۡ تَعۡقِلُونَ ١١٨ هَٰٓأَنتُمۡ أُوْلَآءِ تُحِبُّونَهُمۡ وَلَا يُحِبُّونَكُمۡ وَتُؤۡمِنُونَ بِٱلۡكِتَٰبِ كُلِّهِۦ وَإِذَا لَقُوكُمۡ قَالُوٓاْ ءَامَنَّا وَإِذَا خَلَوۡاْ عَضُّواْ عَلَيۡكُمُ ٱلۡأَنَامِلَ مِنَ ٱلۡغَيۡظِۚ قُلۡ مُوتُواْ بِغَيۡظِكُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ عَلِيمُۢ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ ١١٩ إِن تَمۡسَسۡكُمۡ حَسَنَةٞ تَسُؤۡهُمۡ وَإِن تُصِبۡكُمۡ سَيِّئَةٞ يَفۡرَحُواْ بِهَاۖ وَإِن تَصۡبِرُواْ وَتَتَّقُواْ لَا يَضُرُّكُمۡ كَيۡدُهُمۡ شَيًۡٔاۗ إِنَّ ٱللَّهَ بِمَا يَعۡمَلُونَ مُحِيطٞ١٢٠﴾] سورة آل عمران: 118-120].
“হে মুমিনগণ, তোমরা তোমাদের ছাড়া অন্য কাউকে অন্তরঙ্গ বন্ধরূপে গ্রহণ করো না। তারা তোমাদের সর্বনাশ করতে ত্রুটি করবে না। তারা তোমাদের মারাত্মক ক্ষতি কামনা করে। তাদের মুখ থেকে তো শত্রুতা প্রকাশ পেয়ে গিয়েছে। আর তাদের অন্তরসমূহ যা গোপন করে তা মারাত্মক। অবশ্যই আমি তোমাদের জন্য আয়াতসমূহ স্পষ্ট বর্ণনা করেছি। যদি তোমরা উপলব্ধি করতে। শোন, তোমরাই তো তাদেরকে ভালবাসা এবং তারা তোমাদেরকে ভালবাসে না। অথচ তোমরা সব কিতাবের প্রতি ঈমান রাখ। আর যখন তারা তোমাদের সাথে সাক্ষাৎ করে, তখন বলে, ‘আমরা ঈমান এনেছি’। আর যখন তারা একান্তে মিলিত হয়, তোমাদের উপর রাগে আঙ্গুল কামড়ায়। বল, ‘তোমরা তোমাদের রাগ নিয়ে মর’! নিশ্চয় আল্লাহ তারা যা করে, তা পরিবেষ্টনকারী”[14]। যদি তোমাদেরকে কোন ভালো কিছু স্পর্শ করে তখন তাদেরকে কষ্ট দেয়, আর যদি তোমাদের উপর কোন বিপদ-কষ্ট আপতিত হয়, তখন তারা তাতে খুশি হয়। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১১৮-১২০]
এ সব আয়াতগুলো কাফেরদের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোর ব্যাখ্যা দেয় এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে তারা যে সব দুশমনি, ষড়যন্ত্র, প্রতারণা ও ধোঁকা দেয়ার মানসিকতা গোপন করে, তা উম্মোচণ করে দেয়। এ ছাড়াও এ সব আয়াত কাফেররা মুসলিমদের বিরুদ্ধে যে সব খিয়ানত, ধোঁকাবাজি ও মিথ্যাচার করত, তার বর্ণনাকে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছ। যখন মুসলিমরা তাদের প্রতি বিশ্বাস করবে, তখন তারা এটিকে সুযোগ মনে করে তা তাদের বিরুদ্ধে কাজে লাগাবে। তাদের কাজই ছিল, কীভাবে মুসলিমদের ক্ষতি করা যায়, তার চক আঁকা এবং তাদের থেকে উদ্দেশ্যে হাসিল করার পন্থা আবিষ্কার করা।
ইমাম আহমদ রহ. বলেন, আবু মুসা আশয়ারী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«قلتُ لعمرَ رضى الله عنه لي كاتبٌ نصرانيٌ، قال: مالَكَ قاتلَكَ اللهُ ، أما سمعتَ قولَه تعالى ﴿يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا الْيَهُودَ وَالنَّصَارَى أَوْلِيَاءَ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ﴾ [ سورة المائدة:51]. ألا اتخذتَ حنيفاً ! قلتُ: يا أميرَ المؤمنينَ لي كتابتُه وله دينُه ، قال:لا أُكرمُهم إذ أهانَهم اللهُ ، ولا أُعزُهم إذ أَذلَهم اللهُ ، ولا أُدينهم وقد أقصاهم اللهُ»
অর্থ, একদিন আমি ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বলি, আমার একজন সচিব আছে, সে খৃষ্টান। এ কথা শুনে তিনি বললেন, আল্লাহ তোমার অমঙ্গল করুন! তুমি খৃষ্টানকে কেন তোমার সচিব বানালে? তুমি কি আল্লাহ তা’আলার বাণী শুনোনি? আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন,
﴿يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا الْيَهُودَ وَالنَّصَارَى أَوْلِيَاءَ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ﴾ [سورة المائدة:51].
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা ইয়াহুদি ও খৃষ্টানদের বন্ধু রূপে গ্রহণ করো না। তারা নিজেরা পরস্পর বন্ধু”। [সূরা মায়েদাহ, আয়াত: ৫১] তুমি একজন খাটি মুসলিমকে কেন তোমার কাতেব বানালে না। তার কথা শুনে আমি বললাম, হে আমীরুল মুমীনিন! আমি তার থেকে কিতাবত আদায় করব, আর সে তার দ্বীন আদায় করবে। উত্তরে তিনি বলেন, আল্লাহ যাদের অপমান করে আমি তাদের সম্মান করব না। আর আল্লাহ যাদের বে-ইজ্জত করে আমি তাদের ইজ্জত দেবো না এবং আমি তাদেরকে কাছে টানবো না, যখন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাদের দূরে ঠেলে দিয়েছেন।
وروى الإمام أحمد ومسلم أن النبي صلى الله عليه وسلم خَرَج إلى بَدْرٍ فَتَبِعَهُ رَجُلٌ مِنْ المشركين فَلحِقَه عند الحَرةِ فقال: إِني أَردتُ أنْ ِأَتَّبِعَكَ وَأُصِيبَ مَعَكَ، قَالَ« تُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ » قَالَ لا ، قَالَ: «ارْجِعْ فَلَنْ أَسْتَعِينَ بِمُشْرِكٍ »
অর্থ, ইমাম আহমদ রহ. ও ইমাম মুসলিম রহ. বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বদরের যুদ্ধে বের হলে, একজন মুশরিক তার সাথে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য ‘হাররাহ’ নামক স্থানে এসে মিলিত হয়। সে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলে, আমি তোমার সাথে যুদ্ধে যেতে চাই এবং তোমার সাথে যুদ্ধ অংশ গ্রহণ করব। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তুমি কি আল্লাহ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি ঈমান আনয়ন কর? সে বলল, না। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তুমি ফেরৎ যাও! আমরা কোন মুশরিক হতে সাহায্য গ্রহণ করব না[15]।
উল্লেখিত আয়াত ও হাদিসসমূহ দ্বারা এ কথা স্পষ্ট হয়, মুসলিমদের কর্মের দায়িত্ব বা নেতৃত্ব যদ্বারা সে মুসলিমদের যাবতীয় সব কার্য-কলাপ বিষয়ে অবগত হয়, তা কখনোই কোন অমুসলিমদের হাতে দেয়া উচিত নয়। মুসলিমদের কোন গোপন তথ্য তাদের নিকট প্রকাশ পায় এবং তাদের ক্ষতির কারণ হয়, এ ধরনের কোন কাজে তাদের সম্পৃক্ত করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কারণ, তারা যখন মুসলিমদের গোপনীয় বিষয়গুলো জানতে পারবে এবং তাদের দুর্বলতাগুলো তাদের নিকট প্রকাশ পাবে, তখন তারা মুসলিমদের ক্ষতি করার চেষ্টা করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালাবে। এ ধরনের ঘটনা বর্তমান যুগে অহরহ সংঘটিত হচ্ছে এবং যার পরিণতি মুসলিমদের ভোগ করতে হচ্ছে। অমুসলিমরা তাদের দেশের নাগরিকদের মুসলিম দেশসমূহে বিভিন্ন কাজের অজুহাতে প্রেরণ করছে, যাতে তারা মুসলিমদের সাথে মিশে তাদের ক্ষতি করতে পারে। বিশেষ করে সৌদি আরব- যেখানে হারা-মাইন শরিফাইন- আছে সেখানে অসংখ্য অমুসলিমদের বিভিন্ন কাজের অজুহাতে পাঠানো হচ্ছে। তাদেরকে সেখানে ড্রাইভার, বাড়ীর পাহারাদার, ঘরের কর্মচারী ইত্যাদি বানানো হচ্ছে। এ ছাড়াও তাদেরকে পরিবারের সাথে অবাধে মেলা-মেশা করার সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন,
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تَتَّخِذُواْ بِطَانَةٗ مِّن دُونِكُمۡ لَا يَأۡلُونَكُمۡ خَبَالٗا وَدُّواْ مَا عَنِتُّمۡ قَدۡ بَدَتِ ٱلۡبَغۡضَآءُ مِنۡ أَفۡوَٰهِهِمۡ وَمَا تُخۡفِي صُدُورُهُمۡ أَكۡبَرُۚ قَدۡ بَيَّنَّا لَكُمُ ٱلۡأٓيَٰتِۖ إِن كُنتُمۡ تَعۡقِلُونَ ١١٨ هَٰٓأَنتُمۡ أُوْلَآءِ تُحِبُّونَهُمۡ وَلَا يُحِبُّونَكُمۡ وَتُؤۡمِنُونَ بِٱلۡكِتَٰبِ كُلِّهِۦ وَإِذَا لَقُوكُمۡ قَالُوٓاْ ءَامَنَّا وَإِذَا خَلَوۡاْ عَضُّواْ عَلَيۡكُمُ ٱلۡأَنَامِلَ مِنَ ٱلۡغَيۡظِۚ قُلۡ مُوتُواْ بِغَيۡظِكُمۡۗ إِنَّ ٱللَّهَ عَلِيمُۢ بِذَاتِ ٱلصُّدُورِ ١١٩ إِن تَمۡسَسۡكُمۡ حَسَنَةٞ تَسُؤۡهُمۡ وَإِن تُصِبۡكُمۡ سَيِّئَةٞ يَفۡرَحُواْ بِهَاۖ وَإِن تَصۡبِرُواْ وَتَتَّقُواْ لَا يَضُرُّكُمۡ كَيۡدُهُمۡ شَيًۡٔاۗ إِنَّ ٱللَّهَ بِمَا يَعۡمَلُونَ مُحِيطٞ١٢٠﴾] سورة آل عمران: 118-120].
“হে মুমিনগণ, তোমরা তোমাদের ছাড়া অন্য কাউকে অন্তরঙ্গ বন্ধরূপে গ্রহণ করো না। তারা তোমাদের সর্বনাশ করতে ত্রুটি করবে না। তারা তোমাদের মারাত্মক ক্ষতি কামনা করে। তাদের মুখ থেকে তো শত্রুতা প্রকাশ পেয়ে গিয়েছে। আর তাদের অন্তরসমূহ যা গোপন করে তা মারাত্মক। অবশ্যই আমি তোমাদের জন্য আয়াতসমূহ স্পষ্ট বর্ণনা করেছি। যদি তোমরা উপলব্ধি করতে। শোন, তোমরাই তো তাদেরকে ভালবাসা এবং তারা তোমাদেরকে ভালবাসে না। অথচ তোমরা সব কিতাবের প্রতি ঈমান রাখ। আর যখন তারা তোমাদের সাথে সাক্ষাৎ করে, তখন বলে, ‘আমরা ঈমান এনেছি’। আর যখন তারা একান্তে মিলিত হয়, তোমাদের উপর রাগে আঙ্গুল কামড়ায়। বল, ‘তোমরা তোমাদের রাগ নিয়ে মর’! নিশ্চয় আল্লাহ তারা যা করে, তা পরিবেষ্টনকারী”[14]। যদি তোমাদেরকে কোন ভালো কিছু স্পর্শ করে তখন তাদেরকে কষ্ট দেয়, আর যদি তোমাদের উপর কোন বিপদ-কষ্ট আপতিত হয়, তখন তারা তাতে খুশি হয়। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১১৮-১২০]
এ সব আয়াতগুলো কাফেরদের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোর ব্যাখ্যা দেয় এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে তারা যে সব দুশমনি, ষড়যন্ত্র, প্রতারণা ও ধোঁকা দেয়ার মানসিকতা গোপন করে, তা উম্মোচণ করে দেয়। এ ছাড়াও এ সব আয়াত কাফেররা মুসলিমদের বিরুদ্ধে যে সব খিয়ানত, ধোঁকাবাজি ও মিথ্যাচার করত, তার বর্ণনাকে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছ। যখন মুসলিমরা তাদের প্রতি বিশ্বাস করবে, তখন তারা এটিকে সুযোগ মনে করে তা তাদের বিরুদ্ধে কাজে লাগাবে। তাদের কাজই ছিল, কীভাবে মুসলিমদের ক্ষতি করা যায়, তার চক আঁকা এবং তাদের থেকে উদ্দেশ্যে হাসিল করার পন্থা আবিষ্কার করা।
ইমাম আহমদ রহ. বলেন, আবু মুসা আশয়ারী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«قلتُ لعمرَ رضى الله عنه لي كاتبٌ نصرانيٌ، قال: مالَكَ قاتلَكَ اللهُ ، أما سمعتَ قولَه تعالى ﴿يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا الْيَهُودَ وَالنَّصَارَى أَوْلِيَاءَ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ﴾ [ سورة المائدة:51]. ألا اتخذتَ حنيفاً ! قلتُ: يا أميرَ المؤمنينَ لي كتابتُه وله دينُه ، قال:لا أُكرمُهم إذ أهانَهم اللهُ ، ولا أُعزُهم إذ أَذلَهم اللهُ ، ولا أُدينهم وقد أقصاهم اللهُ»
অর্থ, একদিন আমি ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বলি, আমার একজন সচিব আছে, সে খৃষ্টান। এ কথা শুনে তিনি বললেন, আল্লাহ তোমার অমঙ্গল করুন! তুমি খৃষ্টানকে কেন তোমার সচিব বানালে? তুমি কি আল্লাহ তা’আলার বাণী শুনোনি? আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন,
﴿يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا الْيَهُودَ وَالنَّصَارَى أَوْلِيَاءَ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ﴾ [سورة المائدة:51].
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা ইয়াহুদি ও খৃষ্টানদের বন্ধু রূপে গ্রহণ করো না। তারা নিজেরা পরস্পর বন্ধু”। [সূরা মায়েদাহ, আয়াত: ৫১] তুমি একজন খাটি মুসলিমকে কেন তোমার কাতেব বানালে না। তার কথা শুনে আমি বললাম, হে আমীরুল মুমীনিন! আমি তার থেকে কিতাবত আদায় করব, আর সে তার দ্বীন আদায় করবে। উত্তরে তিনি বলেন, আল্লাহ যাদের অপমান করে আমি তাদের সম্মান করব না। আর আল্লাহ যাদের বে-ইজ্জত করে আমি তাদের ইজ্জত দেবো না এবং আমি তাদেরকে কাছে টানবো না, যখন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাদের দূরে ঠেলে দিয়েছেন।
وروى الإمام أحمد ومسلم أن النبي صلى الله عليه وسلم خَرَج إلى بَدْرٍ فَتَبِعَهُ رَجُلٌ مِنْ المشركين فَلحِقَه عند الحَرةِ فقال: إِني أَردتُ أنْ ِأَتَّبِعَكَ وَأُصِيبَ مَعَكَ، قَالَ« تُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ » قَالَ لا ، قَالَ: «ارْجِعْ فَلَنْ أَسْتَعِينَ بِمُشْرِكٍ »
অর্থ, ইমাম আহমদ রহ. ও ইমাম মুসলিম রহ. বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বদরের যুদ্ধে বের হলে, একজন মুশরিক তার সাথে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য ‘হাররাহ’ নামক স্থানে এসে মিলিত হয়। সে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলে, আমি তোমার সাথে যুদ্ধে যেতে চাই এবং তোমার সাথে যুদ্ধ অংশ গ্রহণ করব। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তুমি কি আল্লাহ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি ঈমান আনয়ন কর? সে বলল, না। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তুমি ফেরৎ যাও! আমরা কোন মুশরিক হতে সাহায্য গ্রহণ করব না[15]।
উল্লেখিত আয়াত ও হাদিসসমূহ দ্বারা এ কথা স্পষ্ট হয়, মুসলিমদের কর্মের দায়িত্ব বা নেতৃত্ব যদ্বারা সে মুসলিমদের যাবতীয় সব কার্য-কলাপ বিষয়ে অবগত হয়, তা কখনোই কোন অমুসলিমদের হাতে দেয়া উচিত নয়। মুসলিমদের কোন গোপন তথ্য তাদের নিকট প্রকাশ পায় এবং তাদের ক্ষতির কারণ হয়, এ ধরনের কোন কাজে তাদের সম্পৃক্ত করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কারণ, তারা যখন মুসলিমদের গোপনীয় বিষয়গুলো জানতে পারবে এবং তাদের দুর্বলতাগুলো তাদের নিকট প্রকাশ পাবে, তখন তারা মুসলিমদের ক্ষতি করার চেষ্টা করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালাবে। এ ধরনের ঘটনা বর্তমান যুগে অহরহ সংঘটিত হচ্ছে এবং যার পরিণতি মুসলিমদের ভোগ করতে হচ্ছে। অমুসলিমরা তাদের দেশের নাগরিকদের মুসলিম দেশসমূহে বিভিন্ন কাজের অজুহাতে প্রেরণ করছে, যাতে তারা মুসলিমদের সাথে মিশে তাদের ক্ষতি করতে পারে। বিশেষ করে সৌদি আরব- যেখানে হারা-মাইন শরিফাইন- আছে সেখানে অসংখ্য অমুসলিমদের বিভিন্ন কাজের অজুহাতে পাঠানো হচ্ছে। তাদেরকে সেখানে ড্রাইভার, বাড়ীর পাহারাদার, ঘরের কর্মচারী ইত্যাদি বানানো হচ্ছে। এ ছাড়াও তাদেরকে পরিবারের সাথে অবাধে মেলা-মেশা করার সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে।
ছয়. অমুসলিমদের ক্যালেন্ডার অনুসারে তাদের তারিখ নির্ধারণ করা, বিশেষ করে যে ক্যালেন্ডার অমুসলিমদের নিজস্ব ধর্মীয় ইবাদত-ঐতিহ্য ও পর্বের হিসাব অনুসারে নির্ধারিত। যেমন জিওগ্রেরিয়ান ক্যালেন্ডার (ইংরেজি বা ঈসায়ী ক্যালেন্ডার হিসেবে যা আমাদের কাছে পরিচিত)।
ইংরেজী বর্ষপঞ্জী বস্তুত: ঈসা আলাইহিস সালামের জন্মের স্মরনিকা হিসেবে প্রবর্তিত হয়েছে। মূলত: ঈসা আ. এর জন্মদিন পালন খৃষ্টানরা তাদের নিজেদের পক্ষ থেকে আবিষ্কার করেছে। বাস্তবে এটি ঈসা আ. এর ধর্মের কোন রীতিনীতিতে পড়ে না। সুতরাং এ বর্ষপঞ্জী ব্যবহার খৃষ্টানদের সাথে তাদের ধর্মীয় রীতি-নীতি ও পর্বে মুসলিমদের অংশ গ্রহনেরই নামান্তর।
অমুসলিমদের বর্ষপঞ্জীর অনুসরণ-অনুকরণ থেকে বিরত থাকার জন্যই মুসলিমদের ইচ্ছা ও তাদের দাবির প্রেক্ষাপটে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এর খেলাফত আমলে মুসলিমদের জন্য স্বতন্ত্র ইতিহাস ও হিজরি সনের প্রবর্তন করা হয়। তারপর থেকে মুসলিমরা অমুসলিমদের সন গণনা করা হতে বিরত থাকে এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হিজরতের বছর থেকে হিজরি সন গণনা করা হয়। এ ঘটনা দ্বারা এ কথা স্পষ্ট হয়, সন গণনার ক্ষেত্রে মুসলিমদের জন্য অমুসলিমদের বিরোধিতা করা ও যে সব বিষয়গুলো তাদের বৈশিষ্ট্য বলে স্বীকৃত সে সব বিষয়ে তাদের বিরোধিতা করা ওয়াজিব। আল্লাহ আমাদের সহযোগিতা করুন।
ইংরেজী বর্ষপঞ্জী বস্তুত: ঈসা আলাইহিস সালামের জন্মের স্মরনিকা হিসেবে প্রবর্তিত হয়েছে। মূলত: ঈসা আ. এর জন্মদিন পালন খৃষ্টানরা তাদের নিজেদের পক্ষ থেকে আবিষ্কার করেছে। বাস্তবে এটি ঈসা আ. এর ধর্মের কোন রীতিনীতিতে পড়ে না। সুতরাং এ বর্ষপঞ্জী ব্যবহার খৃষ্টানদের সাথে তাদের ধর্মীয় রীতি-নীতি ও পর্বে মুসলিমদের অংশ গ্রহনেরই নামান্তর।
অমুসলিমদের বর্ষপঞ্জীর অনুসরণ-অনুকরণ থেকে বিরত থাকার জন্যই মুসলিমদের ইচ্ছা ও তাদের দাবির প্রেক্ষাপটে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এর খেলাফত আমলে মুসলিমদের জন্য স্বতন্ত্র ইতিহাস ও হিজরি সনের প্রবর্তন করা হয়। তারপর থেকে মুসলিমরা অমুসলিমদের সন গণনা করা হতে বিরত থাকে এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হিজরতের বছর থেকে হিজরি সন গণনা করা হয়। এ ঘটনা দ্বারা এ কথা স্পষ্ট হয়, সন গণনার ক্ষেত্রে মুসলিমদের জন্য অমুসলিমদের বিরোধিতা করা ও যে সব বিষয়গুলো তাদের বৈশিষ্ট্য বলে স্বীকৃত সে সব বিষয়ে তাদের বিরোধিতা করা ওয়াজিব। আল্লাহ আমাদের সহযোগিতা করুন।
সাত. অমুসলিমদের উৎসব, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে অংশগ্রহণ করা, তাদেরকে তাদের অনুষ্ঠান পালনে সহযোগিতা করা, তাদের অনুষ্ঠান উপলক্ষে তাদের সম্ভাষণ জানানো, ধন্যবাদ দেয়া ও তাদের অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত হওয়া:
এ আয়াতের ﴿وَٱلَّذِينَ لَا يَشۡهَدُونَ ٱلزُّورَ وَإِذَا مَرُّواْ بِٱللَّغۡوِ مَرُّواْ كِرَامٗا ٧٢﴾ [سورة الفرقان:72]. তাফসীরে বলা হয়ে থাকে- রহমানের বান্দাদের গুণ হল, তারা কাফের, মুশরিকদের অনুষ্ঠান ও উৎসবে হাজির হয় না।
এ আয়াতের ﴿وَٱلَّذِينَ لَا يَشۡهَدُونَ ٱلزُّورَ وَإِذَا مَرُّواْ بِٱللَّغۡوِ مَرُّواْ كِرَامٗا ٧٢﴾ [سورة الفرقان:72]. তাফসীরে বলা হয়ে থাকে- রহমানের বান্দাদের গুণ হল, তারা কাফের, মুশরিকদের অনুষ্ঠান ও উৎসবে হাজির হয় না।
আট. অমুসলিমদের ভ্রান্ত আকীদা-বিশ্বাস ও বাতিল দ্বীনের প্রতি লক্ষ্য না করে, তাদের সভ্যতা, সংস্কৃতি ও আচার- আচরণ, তাদের চরিত্র ও ব্যবহারের প্রশংসা ও খুশি প্রকাশ করা এবং তাদের কর্ম দক্ষতা ও নিত্য নতুন আবিষ্কার ও তাদের কর্মে অভিভূত হওয়া।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাদের বিষয়ে বলেন,
﴿وَلَا تَمُدَّنَّ عَيۡنَيۡكَ إِلَىٰ مَا مَتَّعۡنَا بِهِۦٓ أَزۡوَٰجٗا مِّنۡهُمۡ زَهۡرَةَ ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَا لِنَفۡتِنَهُمۡ فِيهِۚ وَرِزۡقُ رَبِّكَ خَيۡرٞ وَأَبۡقَىٰ﴾ [سورة طه :131 ].
“আর তুমি কখনো প্রসারিত করো না তোমার দু’চোখ সে সবের প্রতি, যা আমি তাদের বিভিন্ন শ্রেণীকে দুনিয়ার জীবনের জাঁক-জমকস্বরূপ উপভোগের উপকরণ হিসেবে দিয়েছি। যাতে আমি সে বিষয়ে তাদেরকে পরীক্ষা করে নিতে পারি। আর তোমার রবের প্রদত্ত রিযক সর্বোৎকৃষ্ট ও অধিকতর স্থায়ী”[16]। [সূরা ত্বাহা. আয়াত: ১৩১]
আয়াতের অর্থ এ নয়, মুসলিমরা দুনিয়ার বিষয়ে কোন প্রকার মাথা ঘামাবে না এবং জাগতিক বা দুনিয়াবি কোন শক্তি সামর্থ্য তারা অর্জন করবে না, বা তারা বিভিন্ন ধরনের আবিষ্কার ও কারিগরি শিক্ষা অর্জন বা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করবে না এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সামরিক শক্তি অর্জন করা হতে বিরত থাকবে। বরং মুসলিমরা এ ধরনের কাজগুলো অবশ্যই উদ্দেশ্য। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন,
﴿وَأَعِدُّواْ لَهُم مَّا ٱسۡتَطَعۡتُم مِّن قُوَّةٖ ﴾ [سورة الأنفال60].
“আর তাদের মুকাবিলার জন্য তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী শক্তি ও অশ্ব বাহিনী প্রস্তুত কর”। [সূরা আনফাল, আয়াত: ৬০]
ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এ সব উপকরণ ও বর্তমান দুনিয়ার নব্য আবিষ্কারগুলোর ক্ষেত্রে মুসলিমদের অবদানই বেশি। তাদের এ অবদানের কথা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এ বিষয়ে কুরআনে করীমে এরশাদ করে বলেন,
﴿قُلۡ مَنۡ حَرَّمَ زِينَةَ ٱللَّهِ ٱلَّتِيٓ أَخۡرَجَ لِعِبَادِهِۦ وَٱلطَّيِّبَٰتِ مِنَ ٱلرِّزۡقِۚ قُلۡ هِيَ لِلَّذِينَ ءَامَنُواْ فِي ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَا خَالِصَةٗ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِۗ كَذَٰلِكَ نُفَصِّلُ ٱلۡأٓيَٰتِ لِقَوۡمٖ يَعۡلَمُونَ ٣٢ ﴾ [سورة الأعراف:32].
“বল, ‘কে হারাম করেছে আল্লাহর সৌন্দর্য উপকরণ, যা তিনি তাঁর বান্দাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন এবং পবিত্র রিয্ক’? বল, ‘তা দুনিয়ার জীবনে মুমিনদের জন্য, বিশেষভাবে কিয়ামত দিবসে’। এভাবে আমি আয়াতসমূহ বিস্তারিত বর্ণনা করি এমন কওমের জন্য, যারা জানে”। [সূরা আরাফ. আয়াত: ৩২][17]
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আরও বলেন,
﴿وَسَخَّرَ لَكُم مَّا فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِي ٱلۡأَرۡضِ جَمِيعٗا مِّنۡهُۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَأٓيَٰتٖ لِّقَوۡمٖ يَتَفَكَّرُونَ ١٣﴾ [سورة الجاثية:13].
“আর যা কিছু রয়েছে আসমানসমূহে এবং যা কিছু রয়েছে জমিনে, তার সবই তিনি তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন। চিন্তাশীল কওমের জন্য নিশ্চয় এতে নিদর্শনা-বলী রয়েছে”[18]। [সূরা আল-জাসিয়া. আয়াত: ১৩]
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আরও বলেন,
﴿هُوَ ٱلَّذِي خَلَقَ لَكُم مَّا فِي ٱلۡأَرۡضِ جَمِيعٗا﴾ [سورة البقرة:29].
“তিনিই জমিনে যা আছে সব তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন”। [সূরা বাকারাহ, আয়াত: ২৯]
সুতরাং মুসলিমদের উপর কর্তব্য হবে এ সমস্ত উপকারী বিষয় ও শক্তিসমূহের প্রতি সর্বাগ্রে মনোযোগী হবে। তারা নতুন নতুন আবিষ্কার ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অমুসলিমদের তুলনায় অগ্রগামী থাকবে। অমুসলিমরা যাতে এ ধরনের কাজের কোন সুযোগ না পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখবে। আর মুসলিমরা যাতে তাদের মুখাপেক্ষী না হতে হয়, সে বিষেয়ে সতর্ক থাকবে। বরং যাবতীয় কারখানা ও কারিগরী জ্ঞান মুসলিমদেরই থাকবে।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাদের বিষয়ে বলেন,
﴿وَلَا تَمُدَّنَّ عَيۡنَيۡكَ إِلَىٰ مَا مَتَّعۡنَا بِهِۦٓ أَزۡوَٰجٗا مِّنۡهُمۡ زَهۡرَةَ ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَا لِنَفۡتِنَهُمۡ فِيهِۚ وَرِزۡقُ رَبِّكَ خَيۡرٞ وَأَبۡقَىٰ﴾ [سورة طه :131 ].
“আর তুমি কখনো প্রসারিত করো না তোমার দু’চোখ সে সবের প্রতি, যা আমি তাদের বিভিন্ন শ্রেণীকে দুনিয়ার জীবনের জাঁক-জমকস্বরূপ উপভোগের উপকরণ হিসেবে দিয়েছি। যাতে আমি সে বিষয়ে তাদেরকে পরীক্ষা করে নিতে পারি। আর তোমার রবের প্রদত্ত রিযক সর্বোৎকৃষ্ট ও অধিকতর স্থায়ী”[16]। [সূরা ত্বাহা. আয়াত: ১৩১]
আয়াতের অর্থ এ নয়, মুসলিমরা দুনিয়ার বিষয়ে কোন প্রকার মাথা ঘামাবে না এবং জাগতিক বা দুনিয়াবি কোন শক্তি সামর্থ্য তারা অর্জন করবে না, বা তারা বিভিন্ন ধরনের আবিষ্কার ও কারিগরি শিক্ষা অর্জন বা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করবে না এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সামরিক শক্তি অর্জন করা হতে বিরত থাকবে। বরং মুসলিমরা এ ধরনের কাজগুলো অবশ্যই উদ্দেশ্য। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন,
﴿وَأَعِدُّواْ لَهُم مَّا ٱسۡتَطَعۡتُم مِّن قُوَّةٖ ﴾ [سورة الأنفال60].
“আর তাদের মুকাবিলার জন্য তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী শক্তি ও অশ্ব বাহিনী প্রস্তুত কর”। [সূরা আনফাল, আয়াত: ৬০]
ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এ সব উপকরণ ও বর্তমান দুনিয়ার নব্য আবিষ্কারগুলোর ক্ষেত্রে মুসলিমদের অবদানই বেশি। তাদের এ অবদানের কথা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এ বিষয়ে কুরআনে করীমে এরশাদ করে বলেন,
﴿قُلۡ مَنۡ حَرَّمَ زِينَةَ ٱللَّهِ ٱلَّتِيٓ أَخۡرَجَ لِعِبَادِهِۦ وَٱلطَّيِّبَٰتِ مِنَ ٱلرِّزۡقِۚ قُلۡ هِيَ لِلَّذِينَ ءَامَنُواْ فِي ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَا خَالِصَةٗ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِۗ كَذَٰلِكَ نُفَصِّلُ ٱلۡأٓيَٰتِ لِقَوۡمٖ يَعۡلَمُونَ ٣٢ ﴾ [سورة الأعراف:32].
“বল, ‘কে হারাম করেছে আল্লাহর সৌন্দর্য উপকরণ, যা তিনি তাঁর বান্দাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন এবং পবিত্র রিয্ক’? বল, ‘তা দুনিয়ার জীবনে মুমিনদের জন্য, বিশেষভাবে কিয়ামত দিবসে’। এভাবে আমি আয়াতসমূহ বিস্তারিত বর্ণনা করি এমন কওমের জন্য, যারা জানে”। [সূরা আরাফ. আয়াত: ৩২][17]
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আরও বলেন,
﴿وَسَخَّرَ لَكُم مَّا فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِي ٱلۡأَرۡضِ جَمِيعٗا مِّنۡهُۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَأٓيَٰتٖ لِّقَوۡمٖ يَتَفَكَّرُونَ ١٣﴾ [سورة الجاثية:13].
“আর যা কিছু রয়েছে আসমানসমূহে এবং যা কিছু রয়েছে জমিনে, তার সবই তিনি তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন। চিন্তাশীল কওমের জন্য নিশ্চয় এতে নিদর্শনা-বলী রয়েছে”[18]। [সূরা আল-জাসিয়া. আয়াত: ১৩]
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আরও বলেন,
﴿هُوَ ٱلَّذِي خَلَقَ لَكُم مَّا فِي ٱلۡأَرۡضِ جَمِيعٗا﴾ [سورة البقرة:29].
“তিনিই জমিনে যা আছে সব তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন”। [সূরা বাকারাহ, আয়াত: ২৯]
সুতরাং মুসলিমদের উপর কর্তব্য হবে এ সমস্ত উপকারী বিষয় ও শক্তিসমূহের প্রতি সর্বাগ্রে মনোযোগী হবে। তারা নতুন নতুন আবিষ্কার ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অমুসলিমদের তুলনায় অগ্রগামী থাকবে। অমুসলিমরা যাতে এ ধরনের কাজের কোন সুযোগ না পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখবে। আর মুসলিমরা যাতে তাদের মুখাপেক্ষী না হতে হয়, সে বিষেয়ে সতর্ক থাকবে। বরং যাবতীয় কারখানা ও কারিগরী জ্ঞান মুসলিমদেরই থাকবে।
নয়. অমুসলিমদের নামে মুসলিম বাচ্চাদের নাম রাখা:
বিজাতিদের অনুকরণ করতে করতে আমাদের অবনতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, আমরা এখন আমাদের বাচ্চাদের নামও অমুসলিমদের নামের সাথে মিলিয়ে রাখি। অথচ মুসলিম মনীষীদের অনেক সুন্দর সুন্দর নাম আছে, যা আমরা আমাদের বাচ্চাদের জন্য বাচাই করতে পারি। কিন্তু তা আমরা করি না। বর্তমানে অনেক মুসলিমকে দেখা যায়, তারা তাদের নিজেদের বাচ্চাদের নাম অমুসলিমদের নামের সাথে মিলিয়ে রাখে। মুসলিম মনীষীদের সাথে তাদের বাচ্চাদের নাম মিলিয়ে রাখা হতে তারা বিরত থাকে। তারা তাদের নিজেদের বাপ-দাদা ও পূর্ব-পুরুষদের যে সব সুন্দর নাম আছে, বা মুসলিমদের যে সব পরিচিত নাম আছে সেগুলো দ্বারা তাদের বাচ্চাদের নাম করণ হতে বিরত থাকে। অথচ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
« خَيْرُ الْأَسْمَاءِ عَبْدُ اللَّهِ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ »
“উত্তম নাম হল, আব্দুর রহমান ও আব্দুল্লাহ”[19]।
মুসলিমদের নামের মধ্যে বিকৃতির কারণে দেখা যায়, বর্তমানে একটি প্রজন্ম এমন তৈরি হয়েছে, যারা পশ্চিমাদের নামে তাদের নিজেদের বাচ্চাদের নাম রাখা আরম্ভ করছে। এ কারণে বর্তমান প্রজন্ম ও অতীত প্রজন্মের সাথে একটি ফাটল তৈরী হয়েছে। আগের মানুষদের নাম দ্বারাই জানা যেত যে, এরা মুসলিম। তাদের নামের একটি ঐতিহ্য ছিল। কিন্তু বর্তমানে নাম শুনলে বোঝা যায় না, তারা মুসলিম নাকি অমুসলিম।
বিজাতিদের অনুকরণ করতে করতে আমাদের অবনতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, আমরা এখন আমাদের বাচ্চাদের নামও অমুসলিমদের নামের সাথে মিলিয়ে রাখি। অথচ মুসলিম মনীষীদের অনেক সুন্দর সুন্দর নাম আছে, যা আমরা আমাদের বাচ্চাদের জন্য বাচাই করতে পারি। কিন্তু তা আমরা করি না। বর্তমানে অনেক মুসলিমকে দেখা যায়, তারা তাদের নিজেদের বাচ্চাদের নাম অমুসলিমদের নামের সাথে মিলিয়ে রাখে। মুসলিম মনীষীদের সাথে তাদের বাচ্চাদের নাম মিলিয়ে রাখা হতে তারা বিরত থাকে। তারা তাদের নিজেদের বাপ-দাদা ও পূর্ব-পুরুষদের যে সব সুন্দর নাম আছে, বা মুসলিমদের যে সব পরিচিত নাম আছে সেগুলো দ্বারা তাদের বাচ্চাদের নাম করণ হতে বিরত থাকে। অথচ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
« خَيْرُ الْأَسْمَاءِ عَبْدُ اللَّهِ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ »
“উত্তম নাম হল, আব্দুর রহমান ও আব্দুল্লাহ”[19]।
মুসলিমদের নামের মধ্যে বিকৃতির কারণে দেখা যায়, বর্তমানে একটি প্রজন্ম এমন তৈরি হয়েছে, যারা পশ্চিমাদের নামে তাদের নিজেদের বাচ্চাদের নাম রাখা আরম্ভ করছে। এ কারণে বর্তমান প্রজন্ম ও অতীত প্রজন্মের সাথে একটি ফাটল তৈরী হয়েছে। আগের মানুষদের নাম দ্বারাই জানা যেত যে, এরা মুসলিম। তাদের নামের একটি ঐতিহ্য ছিল। কিন্তু বর্তমানে নাম শুনলে বোঝা যায় না, তারা মুসলিম নাকি অমুসলিম।
দশ. অমুসলিমদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা এবং তাদের প্রতি অনুগ্রহ প্রার্থনা করা:
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন অমুসলিমদের জন্য দো‘আ ও ক্ষমা প্রার্থনা করাকে হারাম করেছেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন-
﴿مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ أَن يَسۡتَغۡفِرُواْ لِلۡمُشۡرِكِينَ وَلَوۡ كَانُوٓاْ أُوْلِي قُرۡبَىٰ مِنۢ بَعۡدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمۡ أَنَّهُمۡ أَصۡحَٰبُ ٱلۡجَحِيمِ١١٣﴾ [ سورة التوبة: 113].
“নবী ও মুমিনদের জন্য উচিত নয় যে, তারা মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে। যদিও তারা আত্মীয় হয়। তাদের নিকট এটা স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পর যে, নিশ্চয় তারা প্রজ্বলিত আগুনের অধিবাসী”। [সূরা তাওবা, আয়াত: ১১৩]
আয়াত দ্বারা এ কথা স্পষ্ট হয়, কাফির, মুশরিক ও বেঈমানরা অবশ্যই চির জাহান্নামী। তারা কখনোই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। যখন কোন মানুষের নিকট এ কথা স্পষ্ট হয়, লোকটি কাফের বা মুশরিক তখন তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা এবং তার দো‘আ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যদিও সে তার নিকটাত্মীয় বা মাতা-পিতা হোক। কারণ, তাদের জন্য দো‘আ করা বা ক্ষমা প্রার্থনা দ্বারা প্রমাণিত হয়, মুসলিমরা তাদের মহব্বত করে এবং তারা যে ভ্রান্ত ও বাতিল দ্বীনের উপর আছে তা সঠিক। অন্যথায় তাদের জন্য কেন ক্ষমা প্রার্থনা করবে এবং দো‘আ করবে?।[9] মুমিনরা কখনোই অমুসলিমদের অনুকরণ করতে পারে না। তারা সব সময় তাদের নিজেদের স্বকীয়তা বজায় রাখবে। নিজেরা মানব জাতির জন্য অনুকরণীয় আদর্শ হয়ে থাকবে। তাদের আদর্শের প্রতি মানুষ আকৃষ্ট হবে। তারা কেন বিজাতিদের আদর্শের অনুকরণ করবে? তারা সব সময় বিজাতিদের কৃষ্টি-কালচার ও সংস্কৃতির বিরোধিতা করবে এবং তাদের অন্ধানুকরণ হতে দূরে থাকবে। [অনুবাদক]।
[10] আবু দাউদ কিতাবুল লিবাস, পরিচ্ছেদ: প্রসিদ্ধ পোশাক পরিধান বিষয়ে।
বস্তুত মুসলিমদের জন্য তাদের আলাদা ও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ও ঐতিহ্য রয়েছে। তাদের ঐতিহ্যকে মানুষ অনুসরণ করবে, এটাই হল চিরন্তন সত্য। তারা কেন বিজাতিদের কালচারের অনুকরণ করবে? কিন্তু বর্তমানে মুসলিমরা তাদের আসল ঐহিত্য ও সংস্কৃতি হতে দূরে সরে যাওয়াতে বিজাতীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতি মুসলিম সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়েছে। তারা নিজেদের চাল-চলন ও ঐতিহ্য ভুলে গিয়ে বিজাতি ও অমুসলিমদের চাল-চলন ঐতিহ্যে অন্ধ অনুকরণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। অথচ আল্লাহর মুসলিম উম্মতকে বিজাতিদের অনুকরণ করতে নিষেধ করেছেন। আব্দুল্লাহ ইব্ন আব্বাস রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেন, « صوموا يوم عاشوراء وخالفوا فيه اليهود صوموا يوما قبله ويوما بعده »رواه أحمد وفيه محمد بن أبي ليلى وفيه كلام، ضعفه يحيى بن سعيد তোমরা আশুরার দিন রোজা রাখ! তোমরা ইয়াহূদীদের বিরোধিতা কর। আশুরাদের দিনের আগে একটি রোজা রাখ এবং পরের দিন একটি রোজা রাখ। [বর্ণনায় আহমদ]
عن أبي سعيد الخدري عن النبي صلى الله عليه وسلم قال : « لتتبعن سنن من كان قبلكم شبرا شبرا وذراعا بذراع حتى لو دخلوا جحر ضب تبعتموهم قلنا يا رسول الله اليهود والنصارى؟ قال: فمن ؟!!»
আবু সাঈদ খুদরী রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেন, তোমরা তোমাদের পূর্বের উম্মতদের গজ ও ইঞ্চি শুদ্ধ অনুকরণ করবে। এমনকি তারা যদি কোন গুই শাপের গর্তে প্রবেশ করে, তোমরাও তাদের অনুকরণে তাতে প্রবেশ করবে। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! তারা কি ইয়াহু-দি ও খৃষ্টান? বলল, তারা ছাড়া আর কারা? !!
[11] আমাদের দেশে ধুতি পরিধান হিন্দুদের বৈশিষ্ট্য। সুতরাং, মুসলিমদের জন্য ধুতি পরিধান করা বৈধ নয়। অনুরূপভাবে হিন্দুরা গরুর গোস্ত খায় না। তাদের অনুকরণ করে গরুর গোস্ত খাওয়া হতে বিরত থাকা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। হিন্দুরা পানিকে জল বলে, তাদের অনুকরণ করে পানিকে জল বলা হতে বিরত থাকতে হবে। [অনুবাদক]।
[12] কিন্তু হিজরত করতে সক্ষম ব্যক্তিদের জন্য অমুসলিম দেশে বসবাস করার অনুমতি আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কোন মুসলিমকে দেননি। কারণ হিজরতে বিধান অদ্যবধি বাকী আছে। তা বন্ধ হয়নি। রাসূল সা. বলেন,
« لا تنقطع الهجرة حتى تنقطع التوبة ولا تنقطع التوبة حتى تطلع الشمس من مغربها »
“যত দিন পর্যন্ত তাওবার দরজা খোলা থাকবে, ততদিন পর্যন্ত হিজরতের বিধান চালু থাকবে। আর তাওবার দরজা তখন বন্ধ হবে যখন সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদয় হয়”। [অনুবাদক]।
[13] উল্লেখিত প্রতিটি কাজ মুসলিমদের জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। তারা এ সবের মাধ্যমে কাফেরদেরকে তাদের নিজেদের বিরুদ্ধে সুযোগ করে দেয়। আমরা তাদের যত সাহায্য সহযোগিতা করি না কেন, তারা আমাদের কোন উপকারে আসবে না। তারা যখনই সুযোগ পাবে আমাদের বিরুদ্ধে কাজ করবে। তারা সব সময় তাদের অন্তরে মুসলিমদের বিরুদ্ধে হিংসা বিদ্বেষ ও শত্রুতা পোষণ করে। আর তোমরা যদি তাদের মহব্বত ও ভালো বাস, তারা কিন্তু তোমাদের মহব্বত করবে এবং তোমাদের ভালো বাসবে না। তারা প্রকাশ্যে তোমাদের সাথে মিশবে এবং দেখাবে যে, তারা তোমাদের বন্ধু, কিন্তু গোপনে তারা তোমাদের ক্ষতি করবে এবং তোমাদের বিরোধিতা করবে। [অনুবাদক]।
[14] আয়াতে একটি কথা স্পষ্ট হয়, তা হল কাফের, মুশরিক ও বেঈমানরা কখনোই মুসলিমদের বন্ধু হতে পারে না। তারা সব সময় মুসলিমদের শত্রু। প্রকাশ্যে তারা যদি তোমাদের বন্ধুত্ব দাবিও করে, তাদের কথার উপর আস্থা রাখা কোন মুমিনের কাজ নয়। তাদের প্রতিটি কাজকে সন্দেহের চোখে দেখতে হবে। তাদের সেবা, খেদ
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন অমুসলিমদের জন্য দো‘আ ও ক্ষমা প্রার্থনা করাকে হারাম করেছেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন-
﴿مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ أَن يَسۡتَغۡفِرُواْ لِلۡمُشۡرِكِينَ وَلَوۡ كَانُوٓاْ أُوْلِي قُرۡبَىٰ مِنۢ بَعۡدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمۡ أَنَّهُمۡ أَصۡحَٰبُ ٱلۡجَحِيمِ١١٣﴾ [ سورة التوبة: 113].
“নবী ও মুমিনদের জন্য উচিত নয় যে, তারা মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে। যদিও তারা আত্মীয় হয়। তাদের নিকট এটা স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পর যে, নিশ্চয় তারা প্রজ্বলিত আগুনের অধিবাসী”। [সূরা তাওবা, আয়াত: ১১৩]
আয়াত দ্বারা এ কথা স্পষ্ট হয়, কাফির, মুশরিক ও বেঈমানরা অবশ্যই চির জাহান্নামী। তারা কখনোই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। যখন কোন মানুষের নিকট এ কথা স্পষ্ট হয়, লোকটি কাফের বা মুশরিক তখন তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা এবং তার দো‘আ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যদিও সে তার নিকটাত্মীয় বা মাতা-পিতা হোক। কারণ, তাদের জন্য দো‘আ করা বা ক্ষমা প্রার্থনা দ্বারা প্রমাণিত হয়, মুসলিমরা তাদের মহব্বত করে এবং তারা যে ভ্রান্ত ও বাতিল দ্বীনের উপর আছে তা সঠিক। অন্যথায় তাদের জন্য কেন ক্ষমা প্রার্থনা করবে এবং দো‘আ করবে?।[9] মুমিনরা কখনোই অমুসলিমদের অনুকরণ করতে পারে না। তারা সব সময় তাদের নিজেদের স্বকীয়তা বজায় রাখবে। নিজেরা মানব জাতির জন্য অনুকরণীয় আদর্শ হয়ে থাকবে। তাদের আদর্শের প্রতি মানুষ আকৃষ্ট হবে। তারা কেন বিজাতিদের আদর্শের অনুকরণ করবে? তারা সব সময় বিজাতিদের কৃষ্টি-কালচার ও সংস্কৃতির বিরোধিতা করবে এবং তাদের অন্ধানুকরণ হতে দূরে থাকবে। [অনুবাদক]।
[10] আবু দাউদ কিতাবুল লিবাস, পরিচ্ছেদ: প্রসিদ্ধ পোশাক পরিধান বিষয়ে।
বস্তুত মুসলিমদের জন্য তাদের আলাদা ও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ও ঐতিহ্য রয়েছে। তাদের ঐতিহ্যকে মানুষ অনুসরণ করবে, এটাই হল চিরন্তন সত্য। তারা কেন বিজাতিদের কালচারের অনুকরণ করবে? কিন্তু বর্তমানে মুসলিমরা তাদের আসল ঐহিত্য ও সংস্কৃতি হতে দূরে সরে যাওয়াতে বিজাতীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতি মুসলিম সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়েছে। তারা নিজেদের চাল-চলন ও ঐতিহ্য ভুলে গিয়ে বিজাতি ও অমুসলিমদের চাল-চলন ঐতিহ্যে অন্ধ অনুকরণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। অথচ আল্লাহর মুসলিম উম্মতকে বিজাতিদের অনুকরণ করতে নিষেধ করেছেন। আব্দুল্লাহ ইব্ন আব্বাস রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেন, « صوموا يوم عاشوراء وخالفوا فيه اليهود صوموا يوما قبله ويوما بعده »رواه أحمد وفيه محمد بن أبي ليلى وفيه كلام، ضعفه يحيى بن سعيد তোমরা আশুরার দিন রোজা রাখ! তোমরা ইয়াহূদীদের বিরোধিতা কর। আশুরাদের দিনের আগে একটি রোজা রাখ এবং পরের দিন একটি রোজা রাখ। [বর্ণনায় আহমদ]
عن أبي سعيد الخدري عن النبي صلى الله عليه وسلم قال : « لتتبعن سنن من كان قبلكم شبرا شبرا وذراعا بذراع حتى لو دخلوا جحر ضب تبعتموهم قلنا يا رسول الله اليهود والنصارى؟ قال: فمن ؟!!»
আবু সাঈদ খুদরী রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেন, তোমরা তোমাদের পূর্বের উম্মতদের গজ ও ইঞ্চি শুদ্ধ অনুকরণ করবে। এমনকি তারা যদি কোন গুই শাপের গর্তে প্রবেশ করে, তোমরাও তাদের অনুকরণে তাতে প্রবেশ করবে। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! তারা কি ইয়াহু-দি ও খৃষ্টান? বলল, তারা ছাড়া আর কারা? !!
[11] আমাদের দেশে ধুতি পরিধান হিন্দুদের বৈশিষ্ট্য। সুতরাং, মুসলিমদের জন্য ধুতি পরিধান করা বৈধ নয়। অনুরূপভাবে হিন্দুরা গরুর গোস্ত খায় না। তাদের অনুকরণ করে গরুর গোস্ত খাওয়া হতে বিরত থাকা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। হিন্দুরা পানিকে জল বলে, তাদের অনুকরণ করে পানিকে জল বলা হতে বিরত থাকতে হবে। [অনুবাদক]।
[12] কিন্তু হিজরত করতে সক্ষম ব্যক্তিদের জন্য অমুসলিম দেশে বসবাস করার অনুমতি আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কোন মুসলিমকে দেননি। কারণ হিজরতে বিধান অদ্যবধি বাকী আছে। তা বন্ধ হয়নি। রাসূল সা. বলেন,
« لا تنقطع الهجرة حتى تنقطع التوبة ولا تنقطع التوبة حتى تطلع الشمس من مغربها »
“যত দিন পর্যন্ত তাওবার দরজা খোলা থাকবে, ততদিন পর্যন্ত হিজরতের বিধান চালু থাকবে। আর তাওবার দরজা তখন বন্ধ হবে যখন সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদয় হয়”। [অনুবাদক]।
[13] উল্লেখিত প্রতিটি কাজ মুসলিমদের জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। তারা এ সবের মাধ্যমে কাফেরদেরকে তাদের নিজেদের বিরুদ্ধে সুযোগ করে দেয়। আমরা তাদের যত সাহায্য সহযোগিতা করি না কেন, তারা আমাদের কোন উপকারে আসবে না। তারা যখনই সুযোগ পাবে আমাদের বিরুদ্ধে কাজ করবে। তারা সব সময় তাদের অন্তরে মুসলিমদের বিরুদ্ধে হিংসা বিদ্বেষ ও শত্রুতা পোষণ করে। আর তোমরা যদি তাদের মহব্বত ও ভালো বাস, তারা কিন্তু তোমাদের মহব্বত করবে এবং তোমাদের ভালো বাসবে না। তারা প্রকাশ্যে তোমাদের সাথে মিশবে এবং দেখাবে যে, তারা তোমাদের বন্ধু, কিন্তু গোপনে তারা তোমাদের ক্ষতি করবে এবং তোমাদের বিরোধিতা করবে। [অনুবাদক]।
[14] আয়াতে একটি কথা স্পষ্ট হয়, তা হল কাফের, মুশরিক ও বেঈমানরা কখনোই মুসলিমদের বন্ধু হতে পারে না। তারা সব সময় মুসলিমদের শত্রু। প্রকাশ্যে তারা যদি তোমাদের বন্ধুত্ব দাবিও করে, তাদের কথার উপর আস্থা রাখা কোন মুমিনের কাজ নয়। তাদের প্রতিটি কাজকে সন্দেহের চোখে দেখতে হবে। তাদের সেবা, খেদ
No comments:
Post a Comment