Friday, May 22, 2015

::::: শবেবরাত পালন করা বিদ'আত। এর থেকে বিরত থাকুন :::::




::::: শবেবরাত পালন করা বিদ'আত। এর থেকে বিরত থাকুন :::::
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ্‌র যিনি ইসলামকে পূর্ণতা দান করেছেন। আমাদের রাসুল (সঃ) পূর্ণ দিন সঠিকভাবে স্বীয় উম্মাতের নিকট পৌঁছে দিয়েছেন। সালাত এবং সালাম বর্ষিত হোক আমাদের রাসুল (সঃ) এর উপর।
শবেবরাত কি ?
::::::::::::::::::::::
১৪ই শা'বানের দিবাগত রাতকে শবেবরাত বলা হয়, যা আমাদের দেশে ভাগ্য-রজনী বা মুক্তির রাত হিসেবে পালিত হয়। লোকেরা মনে করে, এ রাতে ভাগ্য লেখা হয়। সুতরাং এ রাতে যে যত ভাল খাবে সারা বছর তাই পাবে, এ ধারনায় রাতে জেগে ইবাদাত আর দিনে ছিয়াম সহ আনুষ্ঠানিকতার চরম পরাকাষ্ঠায় দেখানো হয়।
শবেবরাত পালনের ভুয়া দলিলঃ
::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
আমাদের দেশের বিভিন্ন মসজিদে, রেডিও, টিভি ও পত্র-পত্রিকায় লাগামহীন মনগড়া জোর প্রচারনা চালাতে দেখা যায়। যা শুনে সাধারণ মুসলিম বিভ্রান্ত হতে বাধ্য। এর স্বপক্ষে সূরা দুখানের ৩ নং আয়াত দলীল হিসেবে পেশ করে বলা হয় যে, এ আয়াতে বর্ণিত (বারাকাতময় রাত) বলতে শবেবরাত বুঝান হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে তারা যদি এর আগের অংশটুকু সামান্য একটু দেখতো তবে এতবড় জালিয়াতি করতে পারতোনা। যেখানে আল্লাহ্‌ বলেছেনঃ وَالْكِتَابِ الْمُبِينِ إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةٍ مُبَارَكَةٍ ۚ إِنَّا كُنَّا مُنْذِرِينَ অর্থাৎ হা-মীম, সুস্পষ্ট কিতাবের শপথ, নিশ্চয়ই উহা নাযিল করেছি বারাকাতময় রাতে। (সূরা দুখানঃ ১-৩)
বলাবাহুল্য যে কোন নাদান লোকও বলবেনা যে, কুরআন মাজিদ শবেবরাতে নাযিল হয়েছে, বরং তা লাইলাতুল ক্বাদর এ নাযিল হয়েছে যা সবারই জানা। সুতরাং কোন মহামান্য মুফাসসিরও যদি এর পরিপন্থি কোন কথা বলেন তবে তা অবশ্যই পরিত্যাজ্য, পবিত্র কুরআন ও ছহিহ হাদিছের বিরোধী হওয়ার কারনে।
শবেবরাত নামটিও কুরআন হাদিসে নেইঃ
::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
তবে 'লাইলাতুন নিছুফ মিন শাবান' অর্থাৎ 'মধ্য শাবানের রাত্রি' এর ফজিলতে বর্ণিত কতক জাল/জইফ হাদিছ পাওয়া যায় যার দু/একটি গ্রহণ যোগ্য ধরে নিলেও ওর উপর ভিত্তি করে আলাদা কোন ইবাদাত সাব্বস্ত হয়নি বরং মূল ইবাদাতের উপর বাড়ানও হতে পারে। এ ব্যাপারে মূল দুটি হাদিছের একটি রাতে ইবাদাত আর দিনে রোজা... অপরটি রাতে কবর জিয়ারাত আর মহান আল্লাহ্‌র প্রথম আসমানে নেমে আসা... মর্মে উল্লেখ করা হয়ে থাকে। প্রথমটির বর্ণনা সুত্রে হাদিছ জালকারী ইবনে আবি সাবরাহ আর দ্বিতীয়টিতে হাজ্জাজ বিন আরত্ত্বাত থাকার কারনে একে তো দুর্বল তদপুরি ইমাম বুখারী ও মুসলিম বর্ণিত (নিচের) সহিহ হাদিছ বিরোধী হওয়ার মুনকার-জঘন্য। যেখানে রাসুল (সঃ) বলেছেন,
'মহান আল্লাহ্‌ প্রত্যেক রাতের তৃতীয় প্রহরে নেমে আসেন.........'।
শুধুমাত্র সবেবরাতেই নয়। লোকে বলে, একে তো পচা খেজুর তারপরে ওজনে কম।
এ ব্যাপারে হাদীছ বিশারদগনের বক্তব্যঃ
::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
হাফিয ইবনে রজব (রাহিমাহুল্লাহ) তার কিতাব 'লাতায়িফুল মা'আরিফ' এ বলেন, উক্ত রাতে ছালাত আদায়ের ফজিলতের যে সকল হাদিস পাওয়া যায় তা বানোয়াট।
হাফিজ ইরাক্কী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, মধ্য শাবানের রাতে সালাত আদায় সম্পর্কিত হদীছগুলি বানোয়াট বা জাল এবং এটা রাসুল (সঃ) এর প্রতি মিথ্যারোপ করার শামিল।
লোকদের এও ধারনা যে,
:::::::::::::::::::::::::::::::::::
মুর্দাদের রুহ দুনিয়ায় ফিরে আসে। সুতরাং তাদের স্বাগত জানানোর জন্য ধুপ-ধুনা, আতশবাজি এবং পটকা ফোটানো হয় সেই সাথে কবর জিয়ারাতের হিড়িক পরে যায়। বলা নিস্প্রয়জন যে, মানুষ মরার পরে আবার দুনিয়ায় ফিরে আসা এটা হিন্দুদের অন্ধ বিশ্বাস প্রকৃত মুসলিম এমন আকিদাহ বিশ্বাস রাখতে পারেনা।
বলা হয়, উহুদের যুদ্ধে নবী সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাত ভেঙ্গেছিল বিধায় তিনি নরম খাদ্য হিসেবে হালুয়া রুটি খেয়েছিলেন। তাই শবেবরাতের খাদ্য হিসেবে হালুয়া রুটি খাওয়া হয়।অথচ উহুদের যুদ্ধ হয়েছিল ৩য় হিজরির শাওয়াল মাসের ১১ তারিখ শনিবার সকাল বেলায়। কোথায় বলে- 'চাচার কবর কোথায় চাচী কাঁদে কোথায়।'
কে চালু করলো এই জঘন্য বিদআত ?
:::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
৪৪৮ হিজরিতে সর্ব প্রথম ইবনু আবিল হুমাইলাহ নামক বুজুর্গ বাইতুল বুকাদ্দিসে এ শবেবরাতের ছালাত চালু করেন। পরে অবশ্য তিনি তাওবাহ করেছিলেন কিন্তু যা হবার তা তো হয়েই গেছে। আর আলোকসজ্জা করা, পটকা ফাটানো। মোমবাতি ও আগরবাতি জালানো এ সব হিন্দুদের দিপালী পুজার অনুশরনে চালু হয়েছে।
মহান আল্লাহ্‌ বলেনঃ
অর্থাৎ 'তাদের কি এমন কতগুলো শরীক আছে যারা তাদের জন্য ধর্মের এমন বিধান দিয়েছে যার অনুমতি আল্লাহ্‌ দেননি ?' (সূরা শুরা, ২১)
হাদিসে রাসুল সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
''যে আমাদের এ ধর্মে এমন কিছুর প্রচলন করবে যা দ্বীনের মধ্যে ছিলনা তা প্রত্যাখ্যাত।''
বিদআত এর কুফলঃ
::::::::::::::::::::::::::::
১/ বিদ'আতির তাওবাহ করার সুযোগ হয়না, কারন সেটা ভালো কাজ মনে করে করা হয়।
২/ বিদ'আতিরা রাসুল (সঃ) এর শাফা'আত পাবে না।
৩/ ওরা হাউজে কাউছারের পানি হতে বঞ্চিত হবে। রাসুল (সঃ) বলেছেন,
'শুনে রেখ! হাউজে কাউছারের কাছে তোমাদের সাথে আমার দেখা হবে। তোমাদের সংখার অধিক নিয়ে আমি গর্ব করবো। সেই দিন তোমরা আমার চেহারা মলিন করে দিওনা। জেনে রেখো ! আমি সেদিন অনেক মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করার চেষ্টা চালাবো। কিন্তু তাদের অনেককে আমার হতে দূরে সরিয়ে দেয়া হবে। আমি বলব, হে আমার প্রতিপালক ! তারা তো আমার প্রিয় সাথি সঙ্গী, আমার অনুসারী।কে তাদের দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে ? তিনি উত্তর দিবেন, আপনি জানেন না আপনি চলে আসার পরে তারা ধর্মের মধ্যে কি কি নতুন বিশয় আবিস্কার করেছে।' (হাদিস/সহিহ ইবনে মাজাহ) বিদ'আতকে হালাল করার জন্য অনেকে ধানাই পানাই বলে তাহকে, ''আরে শবেবরাত, মীলাদ কিয়াম ইত্যাদি বিদ'আত হলে বিমানে চরাও বিদ'আত 'অসায়িলুল কাউনিয়া' এর পার্থক্য তাই এমন কথা বলে।''

No comments:

Post a Comment