Friday, May 22, 2015

দৌড়াদৌড়ি করে নামাযে আসা বিরাট সাওয়াব ও ফজিলত থেকে বঞ্চিত হওয়া:




আস সালামুয়ালাইকুম, আলহামদুলিল্লাহ,ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আলা রসুলিল্লাহ।
-
দৌড়াদৌড়ি করে নামাযে আসা বিরাট সাওয়াব ও ফজিলত থেকে বঞ্চিত হওয়া:
-----------------
রাসুল (সাঃ) মসজিদে নামাযে তাড়াহুড় ও দৌড়াদৌড়ি করে যেতে নিষেধ করেছেন। [বুখারী, ৬৩৬; আবু দাউদ, ৫৭২; মুসলিম, ৬০২; মালিক,১৪৩]
ইক্বামতের পরে নামাযে দৌড়ে আগত ব্যক্তি তাকবীরে উলার ফযিলত ও অন্যান্য সকল কিছুই পাওয়ার প্রত্যাশা করতে পারে। তা সত্ত্বেও নামাযে দৌড়ায়ে আসতে তাকে নিষেধ করা হয়েছে। [ফাতহুল বারী, ৩/৬৩৬]
আল্লাহ ও তাঁর রাসুল(সাঃ) এর সঠিক আনুগত্যেই তাঁর রহমত ও সাওয়াব পাওয়া যায়। কারণ ধীরস্থিরভাবে ঘনঘন পদচারণায় নামাযে আসাতেই সাওয়াব নিহিত। ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (রহ) ইমাম নববীর বরাত দিয়ে লিখেছেন- "ইতোপূর্বে হযরত 'আলা' বর্ণিত হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে যে, তোমাদের কেউ যখন নামাযের উদ্দেশ্যে বের হয় তখন সে নামাযেই অবস্থান করে। ইমাম নববী বলেন, এর দ্বারা অবহিত করা হয়েছে যে, ইক্বামতের পরে ধীরস্থিরভাবে আসার কারণে নামাযের কিছু অংশও যদি না পায় তবুও সে মূল উদ্দেশ্য (সাওয়াব) অবশ্যই পাবে। কেননা সে নামাযরতই আছে। আর দ্রুত ও দৌড়াদৌড়ি না করায় ঘনঘন ও অধিক পদচারণার আবশ্যক হয়, এবং তাই হলো মূল উদ্দেশ্য।" [ফাতহুল বারী, ৩/৬৩৬]
এ প্রসঙ্গে ইমাম মুসলিম একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন যা উপরে বর্ণিত উদ্দেশ্যেরই প্রমাণ বহন করে। হাদীসের শেষাংটি নিম্নরূপ- "যে ব্যক্তি উত্তমরূপে পাক পবিত্র হয়ে এই সমসজিদগুলোর যে কোন একটার উদ্দেশ্যে বের হয়; তবে আল্লাহ তার প্রত্যেকটির পদচারণার বিনিময়ে তার জন্য একটি করে নেকী লিখে দেন, তার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি করেন, এর দ্বারা তার একটি পাপ মিটিয়ে দেন।" [মুসলিম, ৬৫৭-৬৫৮]
এ প্রসঙ্গে ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (রহ) আবু দাউদের বরাত দিয়ে আরেকটি হাদীস উল্লেখ করেছেন- "ইমাম আবু দাউদ জনৈক আনসারী কর্তৃক মারফূ' সনদে বর্ণিত সাঈদ ইবনে মুসায়্যিব এর মাধ্যমে নিম্নলিখিত হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। রাসুল (সাঃ) বলেন, তোমাদের কেউ যখন উত্তমরূপে অযু করে মসজিদের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ে; তবে সে যখন তার ডান পা উত্তোলন করে তখন আল্লাহ তার জন্য একটা সাওয়াব লিখে দেন, আর সে যখন তার বাম পা স্থাপন করে তখন আল্লাহ তার একটা গোনাহ মিটিয়ে দেন। অতঃপর সে যখন মসজিদে এসে জামাআতে নামায পড়ে তখন আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন। আর সে যদি এমন অবস্থায় আসে যে, লোকেরা জামাআতের সাথে কিছু নামায পড়ে নিয়েছে এবং কিছু অবশিষ্ট রয়ে গেছে; তাহলে সে যা পেয়েছে তা যেন পড়ে নেয়, আর যা পায়নি তা যেন পূর্ণ করে, তবে সে পূর্বোল্লিখিত সাওয়াবই প্রাপ্ত হবে। আর যদি এমন অবস্থায় আসে যে, লোকেরা জামাআতের সাথে সম্পূর্ণ নামাযই পড়ে নিয়েছে; তাহলে সে তার নামায আদায় করবে, তবে সে পূর্বোল্লিখিত সাওয়াবই প্রাপ্ত হবে।" [ফাতহুল বারী, ৩/৬৩৬]
সুতরাং বুঝা গেলো যে, নামাযের কিছু অংশ ছুটে যাওয়ার আশংকায় দৌড়াদৌড়ি করে মসজিদে যাওয়া একান্তই নিরর্থক। কেননা ধীরস্থিরভাবে যাওয়ার কারণে জামাআতে নামায একেবারেই যদি নাও পাওয়া যায়; তবুও রাসুল (সাঃ) এর পক্ষ থেকে জামাআতে নামাযের পূর্ণ সাওয়াব পাওয়ার নিশ্চয়তা রয়েছে। আল্লাহ তা'আলা আমাদের সবাইকে সঠিক সুন্নাহ বুঝার ও আমল করার তাওফীক দান করুন। আমিন।

No comments:

Post a Comment