Saturday, June 27, 2015

রোযা অবস্থায় মেসওয়াক ও সুগন্ধি ব্যবহার করার বিধান




রোযা অবস্থায় মেসওয়াক ও সুগন্ধি ব্যবহার করার বিধান
==================================
প্রশ্নঃ রোযা অবস্থায় মেসওয়াক ও সুগন্ধি ব্যবহার করার বিধান কি? রোযাদারের জন্য সুরমা ব্যবহার করা কি বৈধ?
উত্তরঃ
===
রোযাদারের জন্য সুরমা ব্যবহার করায় কোন অসুবিধা নেই। অনুরূপভাবে চোখে বা কানে ঔষুধ (ড্রপ) ব্যবহার করতেও কোন অসুবিধা নেই, যদিও এতে গলায় ড্রপের স্বাদ অনুভব করে। এতে রোযা ভঙ্গ হবে না। কেননা ইহা খাদ্য বা পানীয় নয় বা খানা-পিনার বিকল্প হিসেবেও ব্যবহৃত নয়। একথার দলীল হচ্ছে, ছিয়ামের ক্ষেত্রে যে নিষেধাজ্ঞা তা হচ্ছে খানা-পিনা করা। সুতরাং যা খানা-পিনার অন্তর্ভূক্ত নয় তা এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যে গণ্য হবে না। ইমাম ইবনু তাইমিয়া (রহঃ) একথাই বলেছেন। আর এটাই বিশুদ্ধ মত।
কিন্তু যদি নাকে ড্রপ ব্যবহার করে এবং তা পেটে পৌঁছে, তবে রোযা ভঙ্গ হবে- যদি রোযা ভঙ্গের উদ্দেশ্য করে থাকে। কেননা নবী ﷺ বলেন,
وَبَالِغْ فِي الِاسْتِنْشَاقِ إِلَّا أَنْ تَكُونَ صَائِمًا
-ছিয়াম অবস্থায় না থাকলে ওযুর ক্ষেত্রে নাকে অতিরিক্ত পানি নিবে। [আবু দাঊদ, অধ্যায়: নাক ঝাড়া, ১৪২। তিরমিযী, অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুচ্ছেদঃ আঙ্গুল খিলাল করার বর্ণনা। নাসাঈ, অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুচ্ছেদ: নাকে পানি নেয়ায় বাড়াবাড়ি করা। ইবনু মাজাহ্‌, অধ্যায়: পবিত্রতা, অনুচ্ছেদ: আঙ্গুল খিলাল করার বর্ণনা]
মেসওয়াক এর মাসআলায় বিশুদ্ধ কথা হচ্ছে দিনের প্রথম ভাগে যেমন শেষ ভাগেও তেমন মেসওয়াক করা সুন্নাত। কেননা নবী ﷺ বলেন,
السِّوَاكُ مَطْهَرَةٌ لِلْفَمِ ومَرْضَاةٌ لِلرَّبِّ
মেসওয়াক হচ্ছে মুখের পবিত্রতা ও প্রভুর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যম।[বুখারী মুআল্লাক সনদে, অধ্যায়ঃ ছিয়াম, অনুচ্ছেদ: রোযাদারের কাঁচা ও শুকনা মেসওয়াক ব্যবহার করা]
তিনি আরো বলেন,
لَوْلا أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمَّتِي أَوْ عَلَى النَّاسِ لأَمَرْتُهُمْ بِالسِّوَاكِ مَعَ كُلِّ صَلاةٍ
আমার উম্মতের জন্য কষ্টকর মনে না করলে আমি প্রত্যেক নামাযের সময় তাদেরকে মেসওয়াক করার নির্দেশ দিতাম। [বুখারী, অধ্যায়ঃ ছিয়াম, অনুচ্ছেদ: রোযাদারের কাঁচা ও শুকনা মেসওয়াক ব্যবহার করা। মুসলিম, অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুচ্ছেদ: মেসওয়াক করা]
অনুরূপভাবে আতর-সুগন্ধি ব্যবহার করাও রোযাদারের জন্য জায়েয। চাই তা দিনের প্রথম ভাগে হোক বা শেষ ভাগে। চাই উক্ত সুগন্ধি ভাপ হোক বা তৈল জাতীয় বা সেন্ট প্রভৃতি হোক। তবে ভাপের সুগন্ধি নাকে টেনে নেয়া জায়েয নয়। কেননা ধোঁয়ার মধ্যে প্রত্যক্ষ ও অনুভবযোগ্য কিছু অংশ আছে যা নাক দ্বারা গ্রহণ করলে নাকের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে পেটে পৌঁছায়।
→ধুমপানের ক্ষেত্রে যেহেতু ধুঁয়াটাই নাকের মধ্যে দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে এজন্য তা দ্বারা রোযা ভঙ্গ হবে। অবশ্য ধুমপান মূলতঃ হারাম কাজ। যা থেকে বেঁচে থাকা মুসলমান তো অবশ্যই প্রত্যেক মানুষের জন্য অপরিহার্য)।
এজন্য নবী ﷺ লাক্বীত বিন ছাবুরা (রাঃ) কে বলেছেন,
بَالِغْ فِي الاسْتِنْشَاقِ إِلاَّ أَنْ تَكُونَ صَائِمًا
-ছিয়াম অবস্থায় না থাকলে ওযুর ক্ষেত্রে নাকে অতিরিক্ত পানি নিবে।[আবু দাঊদ, অধ্যায়: নাক ঝাড়া, ১৪২। তিরমিযী, অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুচ্ছেদঃ আঙ্গুল খিলাল করার বর্ণনা।]
______________________
লেখক/সংকলকঃ শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ)
গ্রন্থঃ ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম
বিভাগঃ সিয়াম
প্রশ্ন নং ৪১১-৪১২

No comments:

Post a Comment