Sunday, June 28, 2015

দাড়ি কি রাখতেই হবে?




দাড়ি কি রাখতেই হবে?
-------------------------------
বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর জলপাই রঙের
ডোরাকাটা পোষাক দেখলে বোঝা যায় এই মানুষটি
আমার এবং আমার মত যধু-মধু থেকে
আলাদা, আনসার-পুলিশ এমনকি
বিমান আর নৌ বাহিনী থেকেও আলাদা।
আবার আপন পরিসরে এই পোশাকটা
নিজের বাহিনীর সবার সাথে তার একটা
একাত্মতাবোধ সৃষ্টি করে, তাকে তার
দায়িত্ব, কর্তব্য আর মর্যাদার কথা সবসময়
মনে করিয়ে দিতে থাকে। কোন বাহিনীর
সদস্য সেই বাহিনীর পোশাক পড়বেনা
এমনটা একেবারেই অসম্ভব। এমন
অকল্পনীয় অসম্ভবটা খালি একটি
ক্ষেত্রেই সম্ভব হয়ে যায় – মুসলিমদের
ক্ষেত্রে।
মুসলিম মানে আসলে কি? আল্লাহ্কে
একমাত্র সত্য ‘ইলাহ্’ হিসেবে স্বীকার
করে নিজের ইচ্ছাকে আল্লাহর ইচ্ছার
কাছে সমর্পণ যে করে সেই মুসলিম।
ইসলামকে একটা জীবন-ব্যবস্থা হিসেবে
বিবেক-বুদ্ধি খাটিয়ে বেছে নিতে হয়।
বেছে নেবার পর ইসলামের
বিধি বিধানগুলো জানতে হয় ও
দ্বিধাহীনভাবে মেনে নিতে হয়। এসব
নিয়ম-কানুন আমাদের জীবনের পরতে
পরতে জড়িয়ে আছে। আমি কোন কাতে
ঘুমাবো, কোন হাতে খাবো, কোন পা
দিয়ে টয়লেটে ঢুকবো – এসব আপাত অতি
তুচ্ছ ব্যাপারে যেমন ইসলামের দিক
নির্দেশনা আছে; তেমন আমি কোন
চাকরি করবো, কিভাবে ব্যবসা করবো,
কিভাবে শাসন করবো, কোন আইনে বিচার
করবো সেসব সামাজিক ব্যাপারেও
আছে। এমনকি আমি কাকে বিয়ে করবো,
নিকটজনের কাকে কতটা সম্পত্তি দেব –
এসব অতি ব্যক্তিগত ব্যাপারেও ইসলামের
কিছু না কিছু বলার আছে। মোটকথা একটা
মানুষ ঘুম থেকে জেগে আবার ঘুমুতে
যাওয়া অবধি যা কিছু করে সব কিছুর
জন্যেই ইসলাম কিছু মূলনীতি দিয়েছে।
স্বাধীনচেতা কারো কাছে মনে হতে
পারে – ইসলাম মানুষকে আষ্ঠেপৃষ্ঠে
বেঁধে রেখেছে, ব্যাপারটা আসলে তা নয়।
মানুষের জীবনের প্রতি পদে যেটা
মানুষের জন্য মঙ্গল সেটাই তাকে করতে
আল্লাহ্ আদেশ দিয়েছেন। শৃঙ্খলাবদ্ধ
জীবন মানেই শৃংখল নয়, তা
ব্যক্তিস্বাধীনতাকে পরিমিতি দেয়ার
একটা উপায়। এটা ব্যক্তির জন্য মঙ্গলকর
তো বটেই, সমাজের অন্য মানুষদের জন্য
কল্যাণকর। এক অপ্সরী রমণী সেজেগুজে
সবার চোখ ধাঁধিয়ে নারীস্বাধীনতা চর্চা
করলো। সে রূপের ছটা যাদের চোখে
গেঁথে গেল তারা এখন বিয়ের কনে
দেখবার কালে কালো তো কালো,
শ্যামলা বরণ দেখেই মুখ ঘুরিয়ে নেয়।
“মনের সৌন্দর্য -আসল সৌন্দর্য”, এসব তত্ত্ব
কথা হিসেবে চর্চিত হতে থাকলো, আসল
জীবনে বাজলো রঙ-ফর্সা ক্রিমের
জয়গান।
একটা মানুষের ব্যক্তিত্ব বোঝা যায় তার
পোষাক-আশাকে। মুসলিম পুরুষদের অন্য
ধর্মাবলম্বীদের থেকে আলাদা করতে,
তাদের মধ্যে একতাবদ্ধতা তৈরী করতে
আল্লাহ তাদের একটা ইউনিফর্ম দিলেন।
সেটা হল – ঢিলেঢালা, অস্বচ্ছ, পুরুষালী
পোশাক যা পায়ের গোড়ালির উপর
থাকবে। মুখে প্রাকৃতিক দাড়ি থাকবে,
গোঁফটাকে কেটে ছোট রাখতে হবে। এমন
একটা বেশভূষা যেটা যে কোন ভৌগলিক
অঞ্চলের মানুষরা পড়তে পারবে।
বাংলাদেশের মুসলিম বোতসোয়ানা,
স্পেন কী কানাডায় গিয়ে এমন পোশাক
পরা মানুষকে দেখেই একগাল হাসি হেসে
বলতে পারবে – আস-সালামু আলাইকুম।
ভাষা আর জাত-পাতের ভেদাভেদ ভেঙে
ভ্রাতৃত্বের কি এক অপূর্ব বন্ধন!
ইসলামি ইউনিফর্মের যে অংশটাকে
সাধারণ মুসলিমরা তো বটেই, ইসলামী
আন্দোলনের কর্মীরা পর্যন্ত থোড়াই
কেয়ার করছে সেটা হল – দাড়ি। শায়খ
মুহাম্মদ আল জিবালি দেখিয়েছেন দাড়ি
কেটে একজন মানুষ কত ভাবে ইসলাম লঙ্ঘন
করে –
১. আল্লাহ সুবহানাহু এর অবাধ্যতাঃ
আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
পারস্যের সম্রাট কিসরা ইয়েমেনের
শাসকের মাধ্যমে রসুলুল্লাহ (সাঃ) এর
কাছে দু’জন দূত পাঠান। এদের দাড়ি ছিল
কামানো আর গোঁফ ছিল বড় বড়। রসুলুল্লাহ
(সাঃ) এর কাছে তাদের এই অবয়ব এতই
কুৎসিত লেগেছিল যে তিনি মুখ অন্য
দিকে ঘুরিয়ে জিজ্ঞাসা করেন,
তোমাদের ধ্বংস হোক, এমনটি তোমাদের
কে করতে বলেছে? তারা উত্তর দিল,
আমাদের প্রভু কিসরা। তিনি (সাঃ) তখন
উত্তর দেন, আমার রব্ব, যিনি পবিত্র ও
সম্মানিত আদেশ করেছেন যেন আমি
দাড়ি ছেড়ে দেই এবং গোঁফ ছোট রাখি ।
আল্লাহর অবাধ্যতাতে মগ্ন হবার সময়
আমাদের মনে রাখা উচিত, আল্লাহর
একটি মাত্র আদেশের অবাধ্যতা করে
শয়তান জান্নাত থেকে বিতাড়িত
হয়েছিল।
২. রসুলুল্লাহ (সাঃ) এর অবাধ্যতাঃ
ইবন উমার (রাঃ) বলেন, রসুলুল্লাহ (সাঃ)
আমাদের আদেশ করেছেন, “গোঁফ ছোট
করে কেটে রাখ, আর দাড়িকে ছেড়ে
দাও”
উল্লেখ্য যে রসুলুল্লাহ (সাঃ) এর আদেশ
যে মানছে সে মূলত আল্লাহর আদেশই
মানছে। আর যে রসুলের (সাঃ) এর আদেশ
মানলোনা সে আল্লাহর আদেশেরই অবাধ্য
হল।
যারা ভাবছেন আল্লাহ ও তার রসুলের
(সাঃ) এর কিছু আদেশ না মানলেও চলে,
তাদের জন্য আল্লাহ কঠোর সতর্কতাবাণী
দিয়েছেন –
“… আর যে আল্লাহ ও তার রসুলকে
অমান্য করে, তার জন্য রয়েছে
জাহান্নামের আগুন। তাতে তারা
চিরস্থায়ী হবে।”
৩. রসুলদের (সাঃ) এর সুন্নাত থেকে
বিচ্যুতিঃ
আল্লাহর প্রেরিত সব রসুলদের বর্ণনায়
দাড়ির কথা পাওয়া যায়। সুরা ত্বহা-তে
হারুন (আঃ) এর দাড়ির বর্ণনা এসেছে।
আল্লাহ আমাদের নিশ্চিত করেছেন যে,
শেষ নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) প্রতিটি
মুসলিমের জন্য উস্ওয়াতুন হাসানা –
সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ, কর্মে বা গড়নে।
জাবির বিন সামুরাহ(রাঃ) বলেন,
রসুলুল্লাহ (সাঃ) এর দাড়ি ছিল অনেক বড়।
এখন একজন ক্লিনশেভড মুসলিম আয়নায়
দাঁড়িয়ে দেখুক কাফির সম্রাট
সারকোজির সাথে তার চেহারা বেশী
মেলে না রসুল(সাঃ) এর সাথে। একজন
দাড়ি সাইজ করে রাখা মুসলিম আয়নায়
দাঁড়িয়ে ভাবুক রসুল(সাঃ) এর ছেড়ে
দেয়া দাড়ির চেয়ে সে কেন বেছে নিল
রসুল(সাঃ) কে অপমানকারী লেখক
সালমান রুশদির সাহিত্যিক দাড়িকে।
৪. সাহাবাদের সুন্নাত থেকে বিচ্যুতিঃ
রসুলুল্লাহ(সাঃ) এর সাহাবাদের দৈহিক
বর্ণনার মধ্যে দাড়ির দৈর্ঘ্যের কথাও
এসেছে। আবু বকর(রাঃ) এর দাড়ি ঘন ছিল,
উমার ও উসমান (রাঃ) এর দাড়ি ছিল
দীর্ঘ। আলি(রাঃ) এর দাড়ির দৈর্ঘ্য ছিল
দু’কাঁধের দুরত্বের সমান।৭
খুলাফায়ে রাশেদিনের সুন্নাতকে রসুল
(সাঃ) দাঁত দিয়ে হলেও আকড়ে থাকতে
বলেছিলেন। দাড়ি ছোট করতে করতে
পাতলা ঘাসের স্তর বানিয়ে কার
সুন্নাতের দিকে যাচ্ছি আমরা?
৫. কাফিরদের অনুকরণঃ
আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রসুল (সাঃ)
আদেশ করেন – “গোঁফ ছোট কর ও দাড়ি বড়
কর, মাজুসিদের(পারস্যের অগ্নি উপাসক)
চেয়ে অন্য রকম হও।”
আবু উমামাহ (রাঃ) বলেন, রসুল (সাঃ)
আদেশ করেছেন – “গোঁফ ছোট কর ও দাড়ি
বড় কর, কিতাবধারীদের (ইহুদি-খ্রীষ্টান)
বিরোধীতা কর।”
ইবনু উমার (রাঃ) বলেন, রসুল (সাঃ)
বলেছেন – “মুশরিকদের চেয়ে আলাদা হও
– গোঁফ ছোট কর ও দাড়ি বড় কর”
রসুলুল্লাহ (সাঃ) আমাদের বার বার
সাবধান করে বলেছেন – যে যাকে
অনুকরণ করবে সে তাদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত
হবে।৯ আমরা কাতর আহবান জানাই প্রতি
ওয়াক্ত সলাতে, সুরা ফাতিহাতে –
গাইরিল মাগদুবি আলাইহিম ওয়ালা
দওঅল্লিন। কাদের থেকে আলাদা হতে
চাই? তাদের থেকে যারা সত্য জানার
প্রতি বিমুখ ছিল, তাদের থেকে যারা
সত্য জেনেও মানেনি। তবে কি আমরা
রসুল(সাঃ) এবং তার সাহাবাদের (রাঃ)
পরিবর্তে অনুসরণ করছি মুশরিক-ইহুদি-
খ্রীষ্টান-অগ্নিউপাসকদের, যাদের
অন্তিম পরিণাম জাহান্নামের আগুন?
৬. আল্লাহর সৃষ্টিতে তার অনুমতি
ব্যতিরেকেই পরিবর্তনঃ
আল্লাহর কাছে অন্যতম ঘৃণিত ব্যাপার
হলো তার সৃষ্টিতে পরিবর্তন আনা, যার
অনুমোদন তিনি দেননি। একজন পুরুষ
বয়োপ্রাপ্ত হলে তার বহিপ্রকাশ হবে তার
চেহারায় – এটাই আল্লাহর সৃষ্টি। যে
দাড়ি কাটছে সে আল্লাহর সৃষ্টি বদলে
দিচ্ছে, মেনে নিচ্ছে শয়তানের আদেশ।
আল্লাহ পাক আমাদের সুরা নিসায়
সাবধানবাণী জানিয়েছেন এভাবে –
আল্লাহ তাকে (শয়তানকে) অভিশম্পাত
করেছেন। আর সে বলেছিল: আমি
অবশ্যই তোমার বান্দাহদের এক
নির্দিষ্ট অংশকে আমার অনুসারী করে
নিবো … তাদেরকে নিশ্চয়ই নির্দেশ
দেবো আর তারাই আল্লাহর সৃষ্টিকে
বিকৃত করবে। আর আল্লাহর পরিবর্তে
কেউ শয়তানকে অভিভাবক বানিয়ে
নিলে সে নিঃসন্দেহে প্রকাশ্য
ক্ষতিতে আক্রান্ত হয়।
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাঃ বলেছেন,
আল্লাহ তা’লা অভিশম্পাত করেছেন ঐসব
নারীর ওপর, যারা শরীরে উল্কি আঁকে ও
আঁকায়; যারা ভ্রু তুলে কপাল প্রশস্ত করে
এবং সৌন্দর্যের জন্য দাঁত সরু ও দু’দাঁতের
মাঝে ফাঁক সৃষ্টি করে। এসব নারী
(এভাবে) আল্লাহর সৃষ্টির আকৃতিকে
বিকৃত করে ।
এখন সৌন্দর্য বাড়াতে যদি কোন মেয়ে
কপালের লোম তুলে আল্লাহর অভিশাপের
যোগ্য হয় তবে একজন পুরুষ – যার
বৈশিষ্ট্যই মুখে দাড়ি থাকা – তার
অবস্থা কি হবে?
৭. নারীদের অনুকরণঃ
ইবনু আব্বাস বলেন, রসুলুল্লাহ (সাঃ) সেসব
পুরুষদের অভিশম্পাত করেছেন যারা
নারীদের অনুকরণ করে, আর সেসব
নারীদের অভিশাপ দিয়েছেন যারা
পুরুষের অনুকরণ করে।
যে মুসলিম পুরুষ আল্লাহর দেয়া দাড়ি
নিয়ে অস্বস্তিতে থাকে, সেটাকে কেটে
সাফ করে মেয়েদের মত মুখায়বকে
স্মার্টনেস ভাবে তারা আসলে নিজের
পুরুষত্ব নিয়েই অতৃপ্ত থাকে। মেয়েদের
আল্লাহ একভাবে বানিয়েছেন, পুরুষদের
আরেকভাবে। এখন রাত যদি দিনের মত
হয়ে যায়, আর দিন, রাতের মত তাহলে কি
অবস্থা দাঁড়াবে? নারী-পুরুষের পরষ্পরের
অনুকরণের কুফল আমরা দেখতে পাচ্ছি
সমকামিতার প্লেগ আর বিবাহ-বিচ্ছেদের
বন্যায়। আল্লাহর অভিশাপ মাথায় নিয়ে
পরকালে কেন, ইহকালেও ভাল থাকা
যায়না, যাবেনা।
৮. বিশুদ্ধ ফিতরাতের বিরোধীতাঃ
প্রতিটি শিশুই বিশুদ্ধ প্রকৃতির উপর
জন্মায় যাকে বলে ফিতরাত। পরে
পরিবেশের প্রভাবে, শয়তানের ধোঁকায়
কিংবা আত্মপ্রবঞ্চণায় সে তা থেকে
সরে যায়। আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
রসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন –
দশটি আচরণ ফিতরাতের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত
– গোঁফ কাটা, দাড়ি ছেড়ে দেয়া, দাঁত
মাজা, নাক ও মুখের ভিতর পানি দিয়ে
পরিষ্কার করা, নখ কাটা, আঙুলের মাঝে
ধোয়া, বগলের লোম পরিষ্কার করা,
লজ্জাস্থানের চুল পরিষ্কার করা,
লজ্জাস্থান পানি দিয়ে ধোয়া ও
মুসলমানি করা।
এই ফিতরাতের আচরণগুলো সকল যুগের
সকল মুসলিমের জন্য প্রযোজ্য।
৯. ইসলামকে উপহাসঃ
দাড়ি না রাখতে রাখতে সমাজের অবস্থা
এমন হয়েছে যে যদি কোন মুসলিম দাড়ি
রাখে তাহলে তাকে জেএমবি বলে
কটাক্ষ করা হয়। অথচ জংলী বাউল গোঁফ-
দাড়ির জঙ্গল বানিয়ে ফেললে তা রক্ষা
করতে হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল
জারি করে। চারুকলার দাড়ি স্পর্ধিত
বিপ্লবী গুয়েভারার আর মুসলিম যুবকের
দাড়ি লজ্জার, পশ্চাৎপদতার!
মুসলিম দাড়ি দেখে অমুসলিমদের
গাত্রদাহ হবে এটাই স্বাভাবিক, কিন্তু
একজন মুসলিম যদি শ্মশ্রুমন্ডিত কোন
মানুষকে উপহাস করে বলে, “মনের দাড়িই
আসল দাড়ি” বা “আমার দাড়ি নেই তো কি
হয়েছে আমার ঈমান পাকা” – তাহলে তার
জেনে রাখা উচিত ইসলামের কোন বিষয়
নিয়ে উপহাস করার ফলাফল ইসলামের
গন্ডী থেকে বেরিয়ে যাওয়া। আল্লাহ
সুবহানাহু তা’আলা বলেন –
… বল, তোমরা কি আল্লাহ, তাঁর
আয়াতসমূহ এবং তাঁর রাসূলকে উপহাস
করছিলে? কোন অজুহাত পেশ করো না!
তোমরা ঈমান আনয়নের পর কুফরী
করেছ.....
পরিশেষে, আমাদের মধ্যে একটা বহুল
প্রচলিত ভুল ধারণা হল যে দাড়ি রাখা
সুন্নাত, সুতরাং এটা রাখলেও চলে না
রাখলেও চলে। রসুলের যেসব সুন্নাত সব
মানুষের অনুকরণের জন্য তাকে বলে
সুন্নাতে ইবাদাত। রসুল (সাঃ) যা মানুষ
হিসেবে করেছেন এবং সাধারণের
স্বাধীনতা উন্মুক্ত রেখেছেন সেটাকে
বলে সুন্নাতে আদাত। যেমন রসুল (সাঃ)
কাঁধ পর্যন্ত লম্বা চুলও রাখতেন আবার
ছোট করে কেটেও রাখতেন। এটা সুন্নাতে
আদাত। কিন্তু তিনি দাঁড়ি কখনো
কাটেননি, কাটার অনুমতি দেননি, বরং তা
ছেড়ে দিতে বলেছেন। তাই দাড়ি রাখা
সুন্নাতে ইবাদাত হিসেবে ওয়াজিব, যা
লঙ্ঘনের মাধ্যমে একজন মানুষ আল্লাহ ও
তার রসুলের(সাঃ) অভিশাপের সামনে
নিজেকে উন্মুক্ত করে দেয়। ইমাম আবু
হানিফা, মালিক, শাফী, আহমদ বিন
হাম্বল, ইবনে তাইমিয়া, ইবন হাজাম, বিন
বায, নাসিরুদ্দিন আলবানি সহ আহলে
সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের সকল আলিম
দাড়ি কাটাকে হারাম বলেছেন।
আমাদের উচিত নিজেদের প্রশ্ন করা
কোন রবকে খুশি করার জন্য দাড়ি কাটছি
– স্ত্রী? বান্ধবী? অফিসের বস? সমাজের
মানুষ? আত্মপ্রবৃত্তি? যিনি আল্লাহকে
সত্যিই রব্ হিসেবে মেনে নিয়েছেন তার
মনে রাখা উচিত মুমিনদের কথা হল –
“সামিঈনা ওয়া আতাইনা”- আমরা
শুনলাম ও মেনে নিলাম।
আল্লাহ আমাদের সত্যই ইসলামে
পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ করার তৌফিক দিন।
আমিন।

No comments:

Post a Comment