Saturday, November 28, 2015

প্রশ্নঃ-১।মৃত নারীকে গোসল কি পুরুষ বা নারী যে কেউ দিতে পারে ?? .২।মৃত নারীর কাফন কেমন হবে ? আর চুল্ গুলোকে কিভাবে রাখবে ? .৩।নারীরা জানাজার পিছনে পিছনে যেতে পারবে কি ??




প্রশ্নঃ-১।মৃত নারীকে গোসল কি পুরুষ বা নারী যে কেউ দিতে পারে ??
.২।মৃত নারীর কাফন কেমন হবে ? আর চুল্ গুলোকে কিভাবে রাখবে ?
.৩।নারীরা জানাজার পিছনে পিছনে যেতে পারবে কি ??
উত্তরঃ--
১. মৃত নারীকে গোসল দেওয়ার দায়িত্ব কোনো নারীর গ্রহণ করা ওয়াজিব।
মৃত নারীকে গোসল নারীই দিবে, পুরুষের পক্ষে তাকে গোসল দেওয়া বৈধ নয় স্বামী ব্যতীত, স্বামীর পক্ষে স্ত্রীকে গোসল দেওয়া বৈধ। অনুরূপ পুরুষকে গোসল করানোর দায়িত্ব পুরুষ গ্রহণ করবে, নারীর পক্ষে তাকে গোসল দেওয়া বৈধ নয় স্ত্রী ব্যতীত, স্ত্রীর পক্ষে নিজ স্বামীকে গোসল দেওয়া বৈধ। কারণ, আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু নিজ স্ত্রী ফাতিমা বিনতে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে গোসল দিয়েছেন, অনুরূপ আসমা বিনতে উমাইস নিজ স্বামী আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে গোসল দিয়েছেন।
২. নারীদের পাঁচটি সাদা কাপড়ে কাফন দেওয়া মুস্তাহাব।
ইযার, যা দিয়ে তার নিম্নাংশ আবৃত করা হয়। উড়না হবে মাথার উপর। জামা হবে তার শরীরের উপর। আর দু’টি লেফাফা দিয়ে তার পূর্ণ শরীরকে ঢেকে দেওয়া হবে। কারণ, লায়লা সাকাফিয়্যাহ বর্ণনা করেন:
»كنت فيمن غسل أم كلثوم بنت رسول الله صلى الله عليه وسلم عند وفاتها، وكان أول ما أعطانا رسول الله الحقى، ثم الدرع، ثم الخمار، ثم الملحفة، ثم أدرجت بعد ذلك في الثوب الآخر«
“উম্মে কুলসুম বিনতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মারা গেলে যারা তাকে গোসল দেয়, আমি তাদের একজন ছিলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে প্রথম যা দিয়ে ছিলেন, তা ছিল ইযার, অতঃপর জামা, অতঃপর উড়না, অতঃপর লেফাফা, অতঃপর এগুলোকে আরেকটি কাপড় দিয়ে আচ্ছাদিত করে দেই”।
[ আবু দাউদ, হাদীস নং ৩১৫৭; আহমদ: (৬/৩৮০)]
ইমাম শাওকানী রহ. বলেন: হাদীস প্রমাণ করে যে, নারীর কাফনের জন্য বিধান হচ্ছে ইযার, জামা, উড়না, চাদর ও লেফাফা”।[ নাইলুল আওতার: (৪/৪২)]
মৃত নারীর চুলের ব্যাপারে করণীয় হচ্ছে---
নারীর চুল তিনটি বেণী করে পিছনে ফেলে রাখবে। কারণ, উম্মে ‘আতিয়্যাহ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মেয়ের গোসলের বর্ণনা দিয়ে বলেন:
»فضفرنا شعرها ثلاثة قرون، وألقيناه خلفها«
“আমরা তার চুলকে সমান তিনটি বেণী বানিয়ে পিছনে রেখে দিয়েছি”।
[ সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১২০৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯৩৯; তিরমিযী, হাদীস নং ৯৯০; আবু দাউদ, হাদীস নং ৩১৪৫; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১৪৫৯; আহমদ: (৬/৪০৭)]
৩।নারীদের জানাযার পিছনে চলার ক্ষেত্রে সাহিহ হাদিস থেকে পাই-----
উম্মে ‘আতিয়্যাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:
»نهينا عن اتباع الجنائز، ولم يعزم علينا«
“আমাদেরকে জানাযার অনুসরণ করতে নিষেধ করা হয়েছে তবে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয় নি”।
[সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১২১৯; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯৩৮; আবু দাউদ, হাদীস নং ৩১৬৭; ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১৫৭৭; আহমদ: (৬/৪০]
হাদীসের বাহ্যিক ভাষা নারীদের জন্য জানাযার পিছনে চলা হারাম বুঝায়। আর উম্মে ‘আতিয়্যাহ-এর কথা “আমাদেরকে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয় নি” সম্পর্কে শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ বলেন: “মনে হয় তার উদ্দেশ্য, নিষেধ করার বিষয়টিতে তাকীদ দেওয়া হয় নি”। এ কথা জানাযার অনুসরণ করা হারাম হওয়ার পরিপন্থী নয়। হয়তো তিনি ধারণা করেছে এ নিষেধাজ্ঞা হারাম নয়। এটা তার বুঝ, দলীল তার বুঝ নয়, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথাই দলীল”।[ মাজমুউল ফতোয়া: (২৪/৩৫৫)]

No comments:

Post a Comment