Sunday, May 15, 2016

শবে বরাত ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা!!!





শবে বরাত আভিধানিক অর্থ অনুসন্ধান
শব ফারসি শব্দ। অর্থ রাত বা রজনী। বরাত শব্দটিওমূলে ফারসি। অর্থ ভাগ্য। দুশব্দের একত্রে অর্থ হবে,ভাগ্য-রজনী। 
বরাত শব্দটি আরবি ভেবে অনেকেই ভুল করে থাকেন।কারণ বরাত বলতে আরবি ভাষায় কোন শব্দ নেই। 
যদি বরাত শব্দটি আরবি বারাআত শব্দের অপভ্রংশধরা হয় তবে তার অর্থ হবে— সম্পর্কচ্ছেদ বাবিমুক্তিকরণ। কিন্তু কয়েকটি কারণে এ অর্থটি এখানেঅগ্রাহ্য, মেনে নেয়া যায় না- 
১. আগের শব্দটি ফারসি হওয়ায় বরাত শব্দটিও ফারসিহবে, এটাই স্বাভাবিক
২. শাবানের মধ্যরজনীকে আরবি ভাষার দীর্ঘপরম্পরায় কেউই বারা’আতের রাত্রি হিসাবে আখ্যাদেননি। 
৩. রমযান মাসের লাইলাতুল ক্বাদরকে কেউ-কেউলাইলাতুল বারাআত হিসাবে নামকরণ করেছেন,শাবানের মধ্য রাত্রিকে নয়।

আরবি ভাষায় এ রাতটিকে কি বলা হয়?
আরবি ভাষায় এ রাতটিকে লাইলাতুন নিছফি মিনশাবান শাবান মাসের মধ্য রজনী — হিসাবে অভিহিতকরা হয়।
শাবানের মধ্যরাত্রির কি কোন ফযীলত বর্ণিতহয়েছে?
শাবান মাসের মধ্য রাত্রির ফযীলত সম্পর্কে কিছু হাদীসবর্ণিত হয়েছে: 
১.আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) বলেন: এক রাতে আমিরাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে খুঁজে নাপেয়ে তাঁকে খুঁজতে বের হলাম, আমি তাকে বাকীগোরস্তানে পেলাম। তখন রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন: তুমি কি মনে কর,আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তোমার উপর জুলুম করবেন?আমি বললাম: ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমি ধারণাকরেছিলাম যে আপনি আপনার অপর কোন স্ত্রীরনিকট চলে গিয়েছেন। তখন রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম) বললেন: ‘মহান আল্লাহ তাAvলা শাবানেরমধ্যরাত্রিতে নিকটবর্তী আসমানে অবতীর্ণ হন এবংকালব গোত্রের ছাগলের পালের পশমের চেয়ে বেশীলোকদের ক্ষমা করেন। 
হাদীসটি ইমাম আহমাদ তার মুসনাদে বর্ণনা করেন(৬/২৩৮), তিরমিযি তার সুনানে (২/১২১,১২২) বর্ণনাকরে বলেন, এ হাদীসটিকে ইমাম বুখারী দুর্বল বলতেশুনেছি। অনুরূপভাবে হাদীসটি ইমাম ইবনে মাজাহ তারসুনানে (১/৪৪৪, হাদীস নং ১৩৮৯) বর্ণনা করেছেন।হাদীসটির সনদ দুর্বল বলে সমস্ত মুহাদ্দিসগণ একমত।

২. আবু মূসা আল আশআরী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকেবর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা শাবানেরমধ্যরাত্রিতে আগমণ করে, মুশরিক ও ঝগড়ায় লিপ্তব্যক্তিদের ব্যতীত, তাঁর সমস্ত সৃষ্টিজগতকে ক্ষমা করেদেন। 
হাদীসটি ইমাম ইবনে মাজাহ তার সুনানে (১/৪৫৫,হাদীস নং ১৩৯০),এবং তাবরানী তার মুজামুল কাবীর(২০/১০৭,১০৮) গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। 
আল্লামা বূছীরি বলেন: ইবনে মাজাহ বর্ণিত হাদীসটিরসনদ দুর্বল। তাবরানী বর্ণিত হাদীস সম্পর্কে আল্লামাহাইসামী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) মাজমা আযযাওয়ায়েদ (৮/৬৫) গ্রন্থে বলেনঃ ত্বাবরানী বর্ণিতহাদীসটির সনদের সমস্ত বর্ণনাকারী শক্তিশালী।হাদীসটি ইবনে হিব্বানও তার সহীহতে বর্ণনা করেছেন।এ ব্যাপারে দেখুন, মাওয়ারেদুজ জামআন, হাদীস নং(১৯৮০), পৃঃ (৪৮৬)।

৩. আলী ইবনে আবী তালিব (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকেবর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “যখন শাবানের মধ্যরাত্রিআসবে তখন তোমরা সে রাতের কিয়াম তথা রাতভরনামায পড়বে, আর সে দিনের রোযা রাখবে; কেননা সেদিন সুর্যাস্তের সাথে সাথে আল্লাহ তাআলা দুনিয়ারআকাশে অবতরণ করেন এবং বলেন: ক্ষমা চাওয়ারকেউ কি আছে যাকে আমি ক্ষমা করব। রিযিক চাওয়ারকেউ কি আছে যাকে আমি রিযিক দেব। সমস্যাগ্রস্তকেউ কি আছে যে আমার কাছে পরিত্রাণ কামনা করবেআর আমি তাকে উদ্ধার করব। এমন এমন কেউ কিআছে? এমন এমন কেউ কি আছে? ফজর পর্যন্ত তিনিএভাবে বলতে থাকেন”।
হাদীসটি ইমাম ইবনে মাজাহ তার সুনানে (১/৪৪৪,হাদীস নং ১৩৮৮) বর্ণনা করেছেন। আল্লামা বূছীরি(রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) তার যাওয়ায়েদে ইবনে মাজাহ(২/১০) গ্রন্থে বলেন, হাদীসটির বর্ণনাকারীদের মধ্যেইবনে আবি সুবরাহ রয়েছেন যিনি হাদীস বানাতেন। তাইহাদীসটি বানোয়াট। 
উল্লিখিত আলোচনায় এটা স্পষ্ট যে, শাবানেরমধ্যরাত্রির ফযীলত বিষয়ে যে সব হাদীস বর্ণিতহয়েছে তার সবগুলোই দুর্বল অথবা বানোয়াট, আরতাই গ্রাহ্যতারহিত।

প্রাজ্ঞ আলেমগণ এ ব্যাপারে একমত যে, দুর্বলহাদীস দ্বারা কোন আহকাম- বিধান প্রমাণ করা যায়না। দুর্বল হাদীসের উপর আমল করার জন্য কয়েকটিশর্ত লাগিয়েছেন তারা। শর্তগুলো নিম্নরূপ -
১. হাদীসটির মূল বক্তব্য অন্য কোন সহীহ হাদীসেরবিরোধীতা করবেনা, বরং কোন শুদ্ধ ভিত্তির উপরপ্রতিষ্ঠিত হতে হবে। 
২. হাদীসটি একেবারেই দুর্বল অথবা বানোয়াট হলেচলবে না। 
৩. হাদীসটির উপর আমল করার সময় এটা রাসূল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে প্রমাণিত বলেবিশ্বাস করা যাবে না। কারণ রাসূল থেকে প্রমাণিত বলেবিশ্বাস করলে রাসূলের উপর মিথ্যাচারিতার পাপ হবে,ফলে জাহান্নাম অবধারিত হয়ে পড়বে। 
৪. হাদীসটি ফাদায়িল তথা কোন আমলের ফযীলতবর্ণনা সংক্রান্ত হতে হবে। আহকাম (ওয়াজিব, মুস্তাহাব,হারাম, মাকরূহ) ইত্যাদি সাব্যস্তকারী না হতে হবে। 
৫. বান্দা ও তার প্রভুর মাঝে একান্ত ব্যক্তিগত কোনআমলের ক্ষেত্রে হাদীসটির নির্ভরতা নেয়া যাবে। তবে এহাদীসের উপর আমল করার জন্য একে অপরকেআহবান করতে পারবে না।

এই শর্তাবলীর আলোকে যদি উপরোক্ত হাদীসগুলোপরীক্ষা করে দেখি তাহলে দেখতে পাই যে, উপরোক্তহাদীসসমূহের মধ্যে শেষোক্ত আলী (রাদিয়াল্লাহুআনহু)বর্ণিত হাদীসটি বানোয়াট। সুতরাং তার উপরআমল করা উম্মাতের আলেমদের ঐক্যমতে জায়েযহবে না। 
প্রথম হাদীসটি দুর্বল, দ্বিতীয় হাদীসটিও অধিকাংশআলেমের মতে দুর্বল, যদিও কোন-কোন আলেম এরবর্ণনাকারীগণকে শক্তিশালী বলে মত প্রকাশ করেছেন।কিন্তু কেবলমাত্র বর্ণনাকারী শক্তিশালী হলেই হাদীসবিশুদ্ধ হওয়া সাব্যস্ত হয়না। 
মোট কথাঃ প্রথম ও দ্বিতীয়, এ হাদীস দুটি দুর্বল। খুবদুর্বল বা বানোয়াট নয়। সে হিসেবে যৎকিঞ্চিৎ প্রমাণপাওয়া যাচ্ছে যে এ রাত্রির ফযীলত রয়েছে।

এই সূত্রেই অনেক হাদীসবিদ শাবানের মধ্যরাতেরফযীলত রয়েছে বলে মত প্রকাশ করেছেন, তাঁদের মধ্যেরয়েছেনঃ
ইমাম আহমাদ (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি)। [ইবনেতাইমিয়া তার ইকতিদায়ে ছিরাতে মুস্তাকীমে (২/৬২৬)তা উল্লেখ করেছেন]
ইমাম আওযায়ী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি)। [ইমাম ইবনেরাজাব তার লাতায়েফুল মাআরিফ গ্রন্থে (পৃঃ১৪৪) তারথেকে তা বর্ণনা করেছেন] 
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রাহমাতুল্লাহিআলাইহি)। [ইকতিদায়ে ছিরাতে মুস্তাকীম ২/৬২৬,৬২৭,মাজমু ফাতাওয়া ২৩/১২৩, ১৩১,১৩৩,১৩৪]। 
ইমাম ইবনে রাজাব আল হাম্বলী (রাহমাতুল্লাহিআলাইহি)। [তার লাতায়েফুল মাআরিফ পৃঃ১৪৪দ্রষ্টব্য]। 
প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস আল্লামা নাসিরুদ্দিন আল-আলবানী(রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) [ছিলছিলাতুল আহাদীসআস্‌সাহীহা ৩/১৩৫-১৩৯]

উপরোক্ত মুহাদ্দিসগনসহ আরো অনেকে এ রাত্রিকেফযীলতের রাত বলে মত প্রকাশ করেছেন। 
কিন্তু আমরা যদি উপরে উল্লিখিত প্রথম ও দ্বিতীয়হাদীসটি পাঠ করে দেখি তাহলে দেখতে পাব আল্লাহ তাআলা নিকটবর্তী আসমানে অবতীর্ণ হয়ে তাঁর কাছেক্ষমা প্রার্থনার আহবান জানাতে থাকেন হাদীসদ্বয়ে এবক্তব্যই উপস্থাপিত হয়েছে। মুলত সহীহ হাদীসে সুস্পষ্টএসেছে যে, আল্লাহ তাআলা প্রতি রাতের শেষাংশে -শেষ তৃতীয়াংশে- নিকটবর্তী আসমানে অবতীর্ণ হয়েআহবান জানাতে থাকেন এমন কেউ কি আছে যেআমাকে ডাকবে আর আমি তার ডাকে সাড়া দেব?এমন কেউ কি আছে যে আমার কাছে কিছু চাইবে আরআমি তাকে দেব? আমার কাছে ক্ষমা চাইবে আর আমিতাকে ক্ষমা করে দেব?” [বুখারী, হাদীস নং ১১৪৫,মুসলিম হাদীস নং ৭৫৮] 
সুতরাং আমরা এ হাদীসদ্বয়ে অতিরিক্ত কোন কিছুইদেখতে পাচ্ছি না। সুতরাং এ রাত্রির বিশেষ কোনবিশেষত্ব আমাদের নজরে পড়ছে না। এজন্যই শাইখআব্দুল আজীজ ইবনে বায (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি)সহ আরো অনেকে এ রাত্রির অতিরিক্ত ফযীলতঅস্বীকার করেছেন।

এ রাত্রি উদযাপন ও এতদসংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর:
প্রথম প্রশ্নঃ এ রাত্রি কি ভাগ্য রজনী?
উত্তরঃ না, এ রাত্রি ভাগ্য রজনী নয়, মূলতঃ এ রাত্রিকেভাগ্য রজনী বলার পেছনে কাজ করছে সূরা আদ-দুখানের ৩ ও ৪ আয়াত দুটির ভূল ব্যাখ্যা। তা হলোঃ
إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةٍ مُبَارَكَةٍ إِنَّا كُنَّا مُنْذِرِينَ* فِيهَا يُفْرَقُ كُلُّ أَمْرٍ حَكِيمٍ - سورة الدخان:3ـ4
আয়াতদ্বয়ের অর্থ হলোঃ অবশ্যই আমরা তা(কোরআন) এক মুবারক রাত্রিতে অবতীর্ণ করেছি,অবশ্যই আমরা সতর্ককারী, এ রাত্রিতে যাবতীয়প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরকৃত হয়। 
এ আয়াতদ্বয়ের তাফসীরে অধিকাংশ মুফাসসিরবলেনঃ এ আয়াত দ্বারা রমযানের লাইলাতুল ক্বাদরকেইবুঝানো হয়েছে। যে লাইলাতুল কাদরের চারটি নামরয়েছে: ১. লাইলাতুল কাদর, ২. লাইলাতুল বারাআত,৩. লাইলাতুচ্ছফ, ৪.লাইলাতুল মুবারাকাহ। শুধুমাত্রইকরিমা (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) থেকে বর্ণিত হয়েছে,তিনি বলেন, এ আয়াত দ্বারা শাবানের মধ্যরাত্রিকেবুঝানো হয়েছে। এটা একটি অগ্রহণযোগ্য বর্ণনা। 
আল্লামা ইবনে কাসীর (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন,আলোচ্য আয়াতে মুবারক রাত্রি বলতে লাইলাতুল ক্বাদরবুঝানো হয়েছে, যেমন আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ

إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ - سورةالقدر:1
আমরা এ কোরআনকে ক্বাদরের রাত্রিতে অবতীর্ণকরেছি। (সূরা আল-কাদরঃ১)।
আল্লাহ তাআলা আরও বলেনঃ

شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنْزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ - سورة البقرة:185
রমযান এমন একটি মাস যাতে কোরআন অবতীর্ণ করাহয়েছে। (সূরা আলবাকারাহঃ১৮৫)। 
যিনি এ রাত্রিকে শাবানের মধ্যবর্তী রাত বলে মত প্রকাশকরেছেন, যেমনটি ইকরিমা থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনিঅনেক দূরবর্তী মত গ্রহণ করেছেন; কেননা কোরআনেরসুস্পষ্ট বাণী তা রমযান মাসে বলে ঘোষণা দিয়েছে।(তাফসীরে ইবনে কাসীর (৪/১৩৭)। 
অনুরূপভাবে আল্লামা শাওকানীও এ মত প্রকাশকরেছেন। (তাফসীরে ফাতহুল ক্বাদীর (৪/৭০৯)। 
সুতরাং ভাগ্য রজনী হলো লাইলাতুল ক্বাদর যারমযানের শেষ দশদিনের বেজোড় রাত্রিগুলো। আরএতে করে এও সাব্যস্ত হলো যে, এ আয়াতের তাফসীরেইকরিমা (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) মতভেদ করলেওতিনি শাবানের মধ্য তারিখের রাত্রিকে লাইলাতুলবারাআত নামকরণ করেননি।

দ্বিতীয় প্রশ্নঃ শাবানের মধ্যরাত্রি উদযাপন করাযাবে কিনা?
উত্তরঃ শাবানের মধ্যরাত্রি পালন করার কি হুকুম এনিয়ে আলেমদের মধ্যে তিনটি মত রয়েছে: 
এক. শাবানের মধ্য রাত্রিতে মাসজিদে জামাতের সাথেনামায ও অন্যান্য ইবাদত করা জায়েয । প্রসিদ্ধ তাবেয়ীখালেদ ইবনে মিদান, লুকমান ইবনে আমের সুন্দরপোশাক পরে, আতর খোশবু, শুরমা মেখে মাসজিদেগিয়ে মানুষদের নিয়ে এ রাত্রিতে নামায আদায়করতেন। এ মতটি ইমাম ইসহাক ইবনে রাহওয়ীয়াহথেকেও বর্ণিত হয়েছে। (লাতায়েফুল মাআরেফপৃঃ১৪৪)। 
তারা তাদের মতের পক্ষে কোন দলীল পেশ করেননি।আল্লামা ইবনে রাজাব (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) তাদেরমতের পক্ষে দলীল হিসাবে বলেনঃ তাদের কাছে এব্যাপারে ইসরাইলি তথা পূর্ববর্তী উম্মাতদের থেকেবিভিন্ন বর্ণনা এসেছিল, সে অনুসারে তারা আমলকরেছিলেন। তবে পূর্বে বর্ণিত বিভিন্ন দুর্বল হাদীসতাদের দলীল হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকবে।

দুই. শাবানের মধ্যরাত্রিতে ব্যক্তিগতভাবে ইবাদতবন্দেগী করা জায়েয। ইমাম আওযায়ী, শাইখুল ইসলামইবনে তাইমিয়া, এবং আল্লামা ইবনে রজব (রাহমাতুল্লাহিআলাইহিম) এ মত পোষণ করেন। 
তাদের মতের পক্ষে তারা যে সমস্ত হাদীস দ্বারা এ রাত্রিরফযীলত বর্ণিত হয়েছে সে সমস্ত সাধারণ হাদীসের উপরভিত্তি করে ব্যক্তিগতভাবে ইবাদত করাকে জায়েয মনেকরেন।

তিন: এ ধরণের ইবাদত সম্পূর্ণরূপে বিদআত চাই তাব্যক্তিগতভাবে হোক বা সামষ্টিকভাবে। ইমাম আতাইবনে আবি রাবাহ, ইবনে আবি মুলাইকা, মদীনারফুকাহাগণ, ইমাম মালেকের ছাত্রগণ, ও অন্যান্য আরোঅনেকেই এ মত পোষণ করেছেন। এমনকি ইমামআওযায়ী যিনি শাম তথা সিরিয়াবাসীদের ইমাম বলেপ্রসিদ্ধ তিনিও এ ধরনের ঘটা করে মাসজিদে ইবাদতপালন করাকে বিদআত বলে ঘোষণা করেছেন। 
তাদের মতের পক্ষে যুক্তি হলো :

১.এ রাত্রির ফযীলত সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোন দলীল নেই।রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ রাত্রিতেকোন সুনির্দিষ্ট ইবাদত করেছেন বলে সহীহ হাদীসেপ্রমাণিত হয়নি। অনুরূপভাবে তার কোন সাহাবী থেকেওকিছু বর্ণিত হয়নি। তাবেয়ীনদের মধ্যে তিনজন ব্যতীতআর কারো থেকে বর্ণিত হয়নি।
আল্লামা ইবনে রজব (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেনঃশাবানের রাত্রিতে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অথবা তার সাহাবাদের থেকে কোন নামায পড়াপ্রমাণিত হয়নি। যদিও শামদেশীয় সুনির্দিষ্ট কোন কোনতাবেয়ীন থেকে তা বর্ণিত হয়েছে। (লাতায়েফুলমাআরিফঃ১৪৫)। 
শাইখ আব্দুল আযীয ইবনে বায (রাহমাতুল্লাহিআলাইহি) বলেনঃ এ রাত্রির ফযীলত বর্ণনায় কিছু দুর্বলহাদীস এসেছে যার উপর ভিত্তি করা জায়েয নেই, আরএ রাত্রিতে নামায আদায়ে বর্ণিত যাবতীয় হাদীসইবানোয়াট, আলেমগণ এ ব্যাপারে সতর্ক করে গেছেন।

২. হাফেজ ইবনে রজব (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) যিনিকোন কোন তাবেয়ীনদের থেকে এ রাত্রির ফযীলতরয়েছে বলে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেনঃ ঐ সমস্ততাবেয়ীনদের কাছে দলীল হলো যে তাদের কাছে এব্যাপারে ইসরাইলি কিছু বর্ণনা এসেছে। 
তাহলে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, যারা এ রাত পালনকরেছেন তাদের দলীল হলো, যে তাদের কাছেইসরাইলি বর্ণনা এসেছে, আমাদের প্রশ্নঃ ইসরাইলিবর্ণনা এ উম্মাতের জন্য কিভাবে দলীল হতে পারে?

৩. যে সমস্ত তাবেয়ীনগণ থেকে এ রাত উদযাপনেরসংবাদ এসেছে তাদের সমসাময়িক প্রখ্যাত ফুকাহা ওমুহাদ্দিসীনগণ তাদের এ সব কর্মকান্ডের নিন্দাকরেছেন। যারা তাদের নিন্দা করেছেন তাদের মধ্যেপ্রখ্যাত হলেনঃ ইমাম আতা ইবনে আবি রাবাহ, যিনিতার যুগের সর্বশ্রেষ্ট মুফতি ছিলেন, আর যার সম্পর্কেসাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহুমা)বলেছিলেনঃ তোমরা আমার কাছে প্রশ্নের জন্যএকত্রিত হও, অথচ তোমাদের কাছে ইবনে আবি রাবাহরয়েছে।
সুতরাং যদি ঐ রাত্রি উদযাপনকারীদের পক্ষে কোনদলীল থাকত, তাহলে তারা আতা ইবনে আবি রাবাহরবিপক্ষে তা অবশ্যই পেশ করে তাদের কর্মকাণ্ডেরযথার্থতা প্রমাণ করার চেষ্টা করতেন, অথচ এরকমকরেছেন বলে প্রমাণিত হয়নি।
৪. পূর্বেই বর্ণিত হয়েছে যে, যে সমস্ত দুর্বল হাদীসে ঐরাত্রির ফযীলত বর্ণিত হয়েছে, তাতে শুধুমাত্র সেরাত্রিতে আল্লাহর অবতীর্ণ হওয়া এবং ক্ষমা করাপ্রমাণিত হয়েছে, এর বাইরে কিছুই বর্ণিত হয়নি। মুলতঃএ অবতীর্ণ হওয়া ও ক্ষমা চাওয়ার আহবান প্রতি রাতেইআল্লাহ তাআলা করে থাকেন। যা সুনির্দিষ্ট কোন রাত বারাতসমূহের সাথে সংশ্লিষ্ট নয়। 
এর বাইরে দুর্বল হাদীসেও অতিরিক্ত কোন ইবাদতকরার নির্দেশ নেই।

৫. আর যারা এ রাত্রিতে ব্যক্তিগতভাবে আমল করাজায়েয বলে মন্তব্য করেছেন তাদের মতের পক্ষে কোনদলীল নেই, কেননা এ রাত্রিতে রাসূল (সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বা তার সাহাবা কারোথেকেই ব্যক্তিগত কিংবা সামষ্টিক কোন ভাবেই কোনপ্রকার ইবাদত করেছেন বলে বর্ণিত হয়নি।
এর বিপরীতে শরীয়তের সাধারণ অনেক দলীল এরাত্রিকে ইবাদতের জন্য নির্দিষ্ট করাকে নিষিদ্ধ ঘোষণাকরছে, তম্মধ্যে রয়েছেঃ 
আল্লাহ বলেনঃ 
“আজকের দিনে আমি তোমাদের জন্য তোমাদেরদ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম”। (সূরা আল-মায়েদাহঃ ৩)।
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ 
(যে ব্যক্তি আমাদের দ্বীনের মধ্যে এমন নতুন কিছুরউদ্ভব ঘটাবে যা এর মধ্যে নেই, তা তার উপর নিক্ষিপ্তহবে)। (বুখারী, হাদীস নং ২৬৯৭)। 
তিনি আরো বলেছেনঃ 
(যে ব্যক্তি এমন কোন কাজ করবে যার উপর আমাদেরদ্বীনের মধ্যে কোন নির্দেশ নেই তা অগ্রহণযোগ্য)।(মুসলিম, হাদীস নং ১৭১৮)।

শাইখ আব্দুল আজীজ ইবনে বায (রাহমাতুল্লাহিআলাইহি) বলেনঃ আর ইমাম আওযায়ী (রাহমাতুল্লাহিআলাইহি) যে, এ রাতে ব্যক্তিগত ইবাদত করা ভাল মনেকরেছেন, আর যা হাফেয ইবনে রাজাব পছন্দ করেছেন,তাদের এ মত অত্যন্ত আশ্চার্যজনক বরং দুর্বল; কেননাকোন কিছু যতক্ষন পর্যন্ত না শরীয়তের দলীলের মাধ্যমেজায়েয বলে সাব্যস্ত হবে ততক্ষন পর্যন্ত কোন মুসলিমেরপক্ষেই দ্বীনের মধ্যে তার অনুপ্রবেশ ঘটাতে বৈধ হবে না।চাই তা ব্যক্তিগতভাবে করুক বা সামষ্টিক- দলবদ্ধভাবে।চাই গোপনে করুক বা প্রকাশ্য। কারণ বিদআতকর্মঅস্বীকার করে এবং তা থেকে সাবধান করে যে সমস্তপ্রমাণাদি এসেছে সেগুলো সাধারণভাবে তার বিপক্ষেঅবস্থান নিচ্ছে। (আত্‌তাহযীর মিনাল বিদআঃ১৩)।
৬. শাইখ আব্দুল আযীয ইবনে বায (রাহমাতুল্লাহিআলাইহি) আরো বলেনঃ সহীহ মুসলিমে আবু হুরায়রা(রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ 
“তোমরা জুম‘আর রাত্রিকে অন্যান্য রাত থেকে ক্বিয়াম/নামাযের জন্য সুনির্দিষ্ট করে নিও না, আর জুম‘আরদিনকেও অন্যান্য দিনের থেকে আলাদা করে রোযারজন্য সুনির্দিষ্ট করে নিও না, তবে যদি কারো রোযারদিনে সে দিন ঘটনাচক্রে এসে যায় সেটা ভিন্ন কথা”।(সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৪৪, ১৪৮)। 
যদি কোন রাতকে ইবাদতের জন্য সুনির্দিষ্ট করা জায়েযহতো তবে অবশ্যই জুম‘আর রাতকে ইবাদতের জন্যবিশেষভাবে সুনির্দিষ্ট করা জায়েয হতো; কেননাজুমআর দিনের ফযীলত সম্পর্কে হাদীসে এসেছে যে, 
“সুর্য যে দিনগুলোতে উদিত হয় তম্মধ্যে সবচেয়ে শ্রেষ্টদিন, জুমআর দিন”। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৮৪)।
সুতরাং যেহেতু রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)জুমআর দিনকে বিশেষভাবে ক্বিয়াম/নামাযের জন্যসুনির্দিষ্ট করা থেকে নিষেধ করেছেন সেহেতু অন্যান্যরাতগুলোতে অবশ্যই ইবাদতের জন্য সুনির্দিষ্ট করেনেয়া জায়েয হবে না। তবে যদি কোন রাত্রের ব্যাপারেসুস্পষ্ট কোন দলীল এসে যায় তবে সেটা ভিন্ন কথা।আর যেহেতু লাইলাতুল ক্বাদর এবং রমযানের রাতেরক্বিয়াম/নামায পড়া জায়েয সেহেতু রাসূল (সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে এ রাতগুলোর ব্যাপারেস্পষ্ট হাদীস এসেছে।

তৃতীয় প্রশ্নঃ শা‘বানের মধ্যরাত্রিতে হাজারী নামাযপড়ার কী হুকুম?
উত্তরঃ শা‘বানের মধ্যরাত্রিতে একশত রাকাত নামাযেরপ্রতি রাকাতে দশবার সূরা কুল হুওয়াল্লাহ (সূরা ইখলাস)দিয়ে নামাজ পড়ার যে নিয়ম প্রচলিত হয়েছে তাসম্পূর্ণরূপে বিদআত।
এ নামাযের প্রথম প্রচলন: 
এ নামাযের প্রথম প্রচলন হয় হিজরী ৪৪৮ সনে।ফিলিস্তিনের নাবলুস শহরের ইবনে আবিল হামরানামীয় একলোক বায়তুল মুকাদ্দাস আসেন। তারতিলাওয়াত ছিল সুমধুর। তিনি শাবানের মধ্যরাত্রিতেনামাযে দাঁড়ালে তার পিছনে এক লোক এসে দাঁড়ায়,তারপর তার সাথে তৃতীয় জন এসে যোগ দেয়, তারপরচতুর্থ জন। তিনি নামায শেষ করার আগেই বিরাটএকদল লোক এসে তার সাথে যুক্ত হয়ে পড়ে। 
পরবর্তী বছর এলে, তার সাথে অনেকেই যোগ দেয় ওনামায আদায় করে। এতে করে মাসজিদুল আক্‌সাতেএ নামাযের প্রথা চালু হয়। কালক্রমে এ নামাযএমনভাবে আদায় হতে লাগে যে অনেকেই তা সুন্নাতমনে করতে শুরু করে। (ত্বারতুসীঃ হাওয়াদেস ও বিদআপৃঃ১২১, ১২২, ইবনে কাসীরঃ বিদায়া ওয়ান নিহায়া১৪/২৪৭, ইবনুল কাইয়েমঃ আল-মানারুল মুনিফপৃঃ৯৯)।

এ নামাযের পদ্ধতি: 
প্রথা অনুযায়ী এ নামাযের পদ্ধতি হলো, প্রতি রাকাতেসূরা ফাতিহার পর সূরা ইখলাস দশবার করে পড়ে মোটএকশত রাকাত নামায পড়া। যাতে করে সূরা ইখলাস১০০০ বার পড়া হয়। (এহইয়ায়ে উলুমুদ্দীন (১/২০৩)।

এ ধরণের নামায সম্পূর্ণ বিদআত। কারণ এ ধরণেরনামাযের বর্ণনা কোন হাদীসের কিতাবে আসেনি। কোনকোন বইয়ে এ সম্পর্কে যে সকল হাদীস উল্লেখ করা হয়সেগুলো কোন হাদীসের কিতাবে আসেনি। আর তাইআল্লামা ইবনুল জাওযী (মাওদুআত ১/১২৭-১৩০),হাফেয ইরাকী (তাখরীজুল এহইয়া), ইমাম নববী (আল-মাজমু ৪/৫৬), আল্লামা আবু শামাহ (আল-বায়সপৃঃ৩২-৩৬), শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যা, (ইকতিদায়ে ছিরাতুল মুস্তাকীম ২/৬২৮), আল্লামা ইবনেআররাক (তানযীহুশ শরীয়াহ ২/৯২), ইবনে হাজারআল-আসকালানী, আল্লামা সূয়ূতী (আল-আমর বিলইত্তেবা পৃঃ৮১, আল-লাআলিল মাসনূআ ২/৫৭),আল্লামা শাওকানী (ফাওয়ায়েদুল মাজমু‘আ পৃঃ৫১) সহআরো অনেকেই এ গুলোকে “বানোয়াট হাদীস” বলেসুস্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন।
এ ধরণের নামাযের হুকুম: 
সঠিক জ্ঞানের অধিকারী আলেমগণের মতে এ ধরণেরনামায বিদআত; কেননা এ ধরনের নামায আল্লাহররাসূলও পড়েননি। তার কোন খলীফাও পড়েননি।সাহাবাগণও পড়েননি। হেদায়াতের ইমাম তথা আবুহানিফা, মালেক, শাফেয়ী, আহমাদ, সাওরী, আওযায়ী,লাইসসহ অন্যান্যগণ কেউই এ ধরণের নামায পড়েননিবা পড়তে বলেননি। 
আর এ ধরণের নামাযের বর্ণনায় যে হাদীসসমূহ কেউকেউ উল্লেখ করে থাকেন তা উম্মাতের আলেমদেরইজমা অনুযায়ী বানোয়াট। (এর জন্য দেখুনঃ ইবনেতাইমিয়ার মাজমুল ফাতাওয়া ২৩/১৩১,১৩৩,১৩৪,ইকতিদায়ে ছিরাতে মুস্তাকীম ২/৬২৮, আবু শামাহঃআল-বায়েছ পৃঃ ৩২-৩৬, রশীদ রিদাঃ ফাতাওয়া ১/২৮,আলী মাহফুজ, ইবদা‘ পৃঃ২৮৬,২৮৮, ইবনে বাযঃআত্‌তাহযীর মিনাল বিদআ পৃঃ১১-১৬)।

চতুর্থ প্রশ্নঃ শাবানের মধ্যরাত্রির পরদিন কি রোযারাখা যাবে?
উত্তরঃ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকেবহু সহীহ হাদীসে প্রমাণিত হয়েছে যে, তিনি শাবান মাসেসবচেয়ে বেশী রোযা রাখতেন। (এর জন্য দেখুনঃবুখারী, হাদীস নং ১৯৬৯, ১৯৭০, মুসলিম, হাদীস নং১১৫৬, ১১৬১, মুসনাদে আহমাদ ৬/১৮৮, সুনানে আবুদাউদ, হাদীস নং ২৪৩১, সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস নং২০৭৭, সুনানে তিরমিঝি, হাদীস নং ৬৫৭)। 
সে হিসাবে যদি কেউ শাবান মাসে রোযা রাখেন তবে তাহবে সুন্নাত। শাবান মাসের শেষ দিন ছাড়া বাকী যেকোন দিন রোযা রাখা জায়েয বা সওয়াবের কাজ। তবেরোজা রাখার সময় মনে করতে হবে যে, রাসূল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেহেতু শাবান মাসেরোজা রেখেছিলেন তাকে অনুসরন করে রোযা রাখাহচ্ছে। 
অথবা যদি কারও আইয়ামে বিদের নফল রোযা তথামাসের ১৩,১৪,১৫ এ তিনদিন রোযা রাখার নিয়ম থাকেতিনিও রোযা রাখতে পারেন। কিন্তু শুধুমাত্র শাবানেরপনের তারিখ রোযা রাখা বিদআত হবে। কারণশরীয়তে এ রোযার কোন ভিত্তি নেই। 
আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর রাসূলের পরিপূর্ণ পদাঙ্কঅনুসরন করে চলার তৌফিক দিন। আমীন।

টীকা:7. যদি শাবানের মধ্যরাত্রিকে উদযাপন করা বাঘটা করে পালন করা জায়েয হতো তাহলে অবশ্যইরাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ ব্যাপারেআমাদের জানাতেন। বা তিনি নিজেই তা করতেন। আরএমন কিছু তিনি করে থাকতেন তাহলে সাহাবাগণঅবশ্যই তা উম্মাতের কাছে বর্ণনা করতেন। তারানবীদের পরে জগতের শ্রেষ্টতম মানুষ, সবচেয়ে বেশীনসীহতকারী, কোন কিছুই তারা গোপন করেননি’।(আত্‌তহযীর মিনাল বিদা১৫,১৬)।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমাদের কাছে স্পষ্ট হলোযে, কুরআন, হাদীস ও গ্রহণযোগ্য আলেমদের বাণীথেকে আমরা জানতে পারলাম শাবানের মধ্যরাত্রিকে ঘটা করে উদযাপন করা চাই তা নামাযেরমাধ্যমে হোক অথবা অন্য কোন ইবাদতের মাধ্যেমেঅধিকাংশ আলেমদের মতে জগন্যতম বিদআত।শরীয়তে যার কোন ভিত্তি নেই। বরং তা সাহাবাদেরযুগের পরে প্রথম শুরু হয়েছিল। যারা সত্যেরঅনুসরণ করতে চায় তাদের জন্য দ্বীনের মধ্যেআল্লাহ ও তাঁর রাসূল যা করতে বলেছেন তাইযথেষ্ট।
লেখক: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
সম্পাদনা: মুহাম্মদ শামসুল হক সিদ্দিক
সূত্র: ইসলাম প্রচার ব্যুরো, রাবওয়াহ, রিয়াদ, সৌদিআরব

No comments:

Post a Comment