Thursday, January 26, 2017

সমাজের প্রচলিত নামাজের ভুল ১-৫



No automatic alt text available.


ভুল ১ - ৫
১। 
প্রচলিত ভুলঃ প্রচলিত উযূর মধ্যে বাংলায় বা আরবীতে নাওয়াইতুআন আতআজ্জা...... নিয়্যাত হিসাবে পড়া হয়। কিন্তু সহীহ হাদীস তো দূরের কথা কোন যঈফ হাদীসেরও মুখে নিয়্যাত উচ্চারণের কথা বলা নেই।
.
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম) এর পদ্ধতিঃ 
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম) বলেনঃ ‘‘আর প্রত্যেক ব্যক্তি তাই পাবে, যা সে নিয়্যাত করবে।’’ (সহীহুল বুখারী-১/১, সহীহ্ মুসলিম’ ৪৬) 
.
অতএব নিয়্যাত করতে হবে পড়তে হবে না। আনোয়ার শাহ্ কাশ্মিরী (রঃ) বুখারীর শরা হতে লিখেছেন; নিয়্যাত হলো- অন্তরের কার্যসমূহ। (ফয়যুল বারী-১/৮ পৃঃ)
.
২। 
প্রচলিত ভুলঃ
উযূর প্রথমে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ, অথবা আলহামদুলিল্লাহ অথবা আশহাদু আল্লাইলাহা ইল্লাল্লাহ পাঠ করলে বিসমিল্লাহ পাঠের সুন্নাত আদায় হয়ে যায়। (ফাতোয়ায়ে আলমগিরী, তাজ কোঃ ১/৩০ পৃঃ) তাছাড়া প্রত্যেক অঙ্গ ধোয়ার জন্য পৃথক পৃথক দু’আর প্রচলন আছে। (বেহেশতী জেওর-১/৯৮,৯৯,১০, ফতোয়ায়ে আলমগীরী তাজ কোঃ ১/৩৪ পৃঃ)
.
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম)-এর পদ্ধতিঃ আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘‘সে ব্যক্তির সলাত হয় না, যার উযূ নেই। আর যে ব্যক্তি উযূর সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলে না, তার উযূ হয় না। (সহীহ মুসলিম ২/৩২, তিরমিযী-১/২৯ পৃঃ ইফাবা, ইবনে মাজাহ-১/১৭৯ পৃঃ, আবু দাউদ-১/৫১ পৃঃ, মিশকাত-২/৩৭০) উল্লেখ্য যে, শুরুতে বিসমিল্লাহ ছাড়া মধ্যখানে প্রত্যেক অঙ্গ ধোয়ার কোন আলাদা দু’আ সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়। সুতরাং কেউ তা করলে বিদ’আত হবে।
.
৩।
প্রচলিত ভুলঃ 
মাথার এক-চতুর্থাংশ মাসাহ করা ফরয। মুথতাছার কুদুরী মাদ্রাসার ৯ম ও ১০ম শ্রেণীর পাঠ্য ৮ পৃঃ ফতোয়ায়ে আলমগিরী ২৮ পৃঃ বেহেশতী জেওর ১/৪১ পৃঃ ১৫ নং মাসআলায় মাথার অগ্রভাগ পরিমাণ মাসাহ করা ফরয। (হিদায়া আলমগীরী-৪৫ পৃঃ ১/ ইফবা মাথার সম্মুখভাগ মাসাহ না করে যদি কোন ব্যক্তি মাথার পেছনের অংশ অথবা ডান বা বাঁদিকে মাথার মধ্যাংশ মাসাহ করে তবে মাসাহ দুরস্ত হবে। (তাতারখানিয়া’ ফাতোয়ায়ে আলমগীরী-১/৪৫)
.
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম)-এর পদ্ধতিঃ
রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম) উযূতে সম্পূর্ণ মাথা মাসাহ করতেন। যেহেতু আল্লাহ্ তা’আলা বলেছেনঃ ‘‘ওয়ামছাহু বিরুউসিকুম’’, অর্থাৎ তোমাদের মাথা সমূহ মাসাহ কর। (আল-মায়েদাঃ ৬) তার পর দু’হাত দিয়ে মাথা মাসাহ করলেন। অর্থাৎ হাত দু’টি সামনে এবং পেছনে নিলেন। মাথার সম্মুখভাগ থেকে শুরু করে উভয় হাত পেছনের চুলের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত নিলেন। তারপর আবার যেখান থেকে শুরু করেছিলেন, সেখানেই ফিরিয়ে আনলেন। (সহীহুল বুখারী ১/১৮৫, মুসলিম ১৮৬, ১৯১, ১৯২, ১৯৭, ১৯৯, ২/৭, ২৩৫, আহমাদ ১৪৪৫)
.
৪। প্রচলিত ভুলঃ উভয় হাতের পৃষ্ঠ দ্বারা ঘাড় মাসাহ করবে। (ফাতওয়ায়ে আলমগীরী ৫১ পৃঃ)
.
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম)-এর পদ্ধতিঃ ঘাড় মাসাহ করা বিদ’আত। নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম) হতে ঘাড় মাসাহ (বিশুদ্ধ সূত্রে) প্রমাণিত নয়। সহীহ্ মুসলিমের ভাষ্যকার ইমাম নাবাবী (রঃ) একে বিদ‘আত বলেছেন। (সহীহ বুখারী তাওঃ প্র. টীকা ১১১ পৃঃ) উল্লেখ্য যে, উযূর শেষে কালিমায়ে শাহাদাত পড়া সুন্নাত। (মুসলিম-২/৩৯)
.
৫। প্রচলিত ভুলঃ আমাদের দেশে প্রচলিত বিভিন্ন কথিত ধর্মীয় পুস্তকে উযূর পূর্বে পাঠ করার জন্য নিম্নের দু’আটি শেখানো হয়েছে- উচ্চারণঃ বিসমিল্লাহেল আলিউল আযীম, ওয়ালহামদুলিল্লাহ আলা দ্বীনেল ইসলাম, আল ইসলামু হাক্কুন ওয়াল কুফরি বাতেলুন, ওয়াল ইসলামু নুরুন ওয়াল কুফরু জুলমাতুন। (মওঃ গোলাম রহমান, মকছুদুল মোমেনীন-১২৭ পৃঃ)
.
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লাম)-এর পদ্ধতিঃ দুই নং আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীস দ্রষ্টব্য। এছাড়া উল্লিখিত সব বানাওয়াট বা জাল কথা এর কোন সহীহ্ ভিত্তি নেই। তাছাড়া ‘বেহেস্তি জেওর’ ও উল্লিখিত ‘মোকছুদুল মোমেনিন’ সহ বিভিন্ন প্রচলিত পুস্তকে উযূর প্রত্যেক অঙ্গ ধৌত করার সময় পাঠ করার জন্য বিশেষ দু‘আর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন, হাত ধোয়ার, কুল্লি করার, নাক পরিষ্কার করার ইত্যাদি। অথচ এই দু‘আর কোন সহীহ্ ভিত্তি নেই। যে হাদীসের উপর ভিত্তি করে বলা হয় তার সবই বানোয়াট বা জাল। ইমাম দারাকুতনী, ইমাম নববী, ইমাম সূযুতী, মোল্লা আলী, ক্বারী-আল-হানাফী ও অন্যান্য মুহাদ্দীসগণ সকলেই হাদীসটিকে জাল ও ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেছেন। (নাববী, আল-আযকার ৫৭ পৃঃ,ইবনুল কাইয়েম, আল-মানারুল মুনিফ ১২০ পৃঃ, আল ক্বারী, আল-আসরারুল মারফূআ ৩৪৫, গৃহীত, হাদীসের নামে জালিয়াত ৩৬৪ পৃঃ)
.........................................................................

বইটির নামঃ'' প্রচলিত ভুল বনাম রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সলাত আদায়ের পদ্ধতি।''এই গ্রন্থে নামাজের ১০১ টির অধিক ভুলের দলিলসহ সমাধান পেশ করা হয়েছে। লেখকঃ সাইখ মুরাদ বিন আমজাদ
স্পষ্ট দলিল সহ রাসুল সঃ এর হাদিসের রেফারেন্স দেবার পরেও যদি কেউ কমেন্টে কোন বুজুর্গ বা অমুক তমুক এর মতামত লিখেন তাহলে সেটা রিমুভ করা হবে। অন্ধ অনুসরন বাদ দিয়ে মুহাম্মাদ সঃ এর দিকে ফিরে আসুন। তবেই মুসলিম উম্মা এক হতে পারবে।
আপনি শেয়ার করলে আপনার মুসলিম ভাইবোন জানতে পারবে এবং নিজেদের নামাজের ভুলগুলো শুধরাতে পারবে। 

No comments:

Post a Comment