Friday, September 15, 2017

সুন্নতী পোশাকের নামে প্রতারণা!



Image may contain: one or more people and text


সুন্নত বলতে আমরা কি বুঝি?
আল্লাহর নির্দেশপ্রাপ্ত হয়ে রাসূল
(সাঃ) যে সমস্ত কাজের আদেশ বা
নির্দেশ দিয়েছেন কিংবা নিষেধ
করেছেন ,ওহীর নির্দেশ অনুযায়ী নিজে আমল করেছেন এবং অন্যের কাজে সম্মতি দিয়েছেন ঐগুলোই হলো ইসলামের মধ্যে রাসূল (সাঃ) এর সুন্নাত , যা সমস্ত মুমিন
মুসলিমদের মানা উচিৎ। কিন্তু ওহীর
নির্দেশ ব্যতীত রাসুল (সাঃ) নিজে
মানুষ হিসেবে যা করেছেন এবং ঐ সমস্ত কাজ যা মানুষ হিসেবে যে কোন লোকই করে থাকে তা ইসলামী শরীয়তে রাসূল (সাঃ) এর সুন্নত নয় বরং মুবাহ অর্থাৎ ঐচ্ছিক , যে কেউ চাইলে করতে পারে আবার না করলেও কোন ধরনের সমস্যা নেই।
.
সর্বসাধারণের বুঝার জন্য উদাহরন
দিয়ে বুঝিয়ে বলি , যেমনঃ রাসূল (সাঃ) তার দুধমার দুধ পান করেছেন কিন্তু দুধমার দুধ পান করা সুন্নত বলা যাবে না ; তিনি মাছ খেতেন না কারণ মাছের গন্ধ তার পছন্দ হতো না তাই বলে মাছ না খেলে সুন্নত পালন হবে এ কথা বলা যাবে না।
আবার তিনি হেরা গুহায় ধ্যান করেছেন কিন্তু হেরা গুহায় ধ্যান করাকে সুন্নত বলা যাবে না। তিনি জীবনে প্রথমবার একজন বিধবা মহিলাকে বিবাহ করেছেন
কিন্তু বিধবা মহিলাকে বিবাহ করা সুন্নত এ কথা বলা যাবে না। তিনি ২৫ বৎসর বয়সে বিবাহ করেছেন তাই বলে ২৫ বৎসরে বিবাহ করা সুন্নত এ কথা বলা যাবে না।
তার বিবাহের সংখ্যা ১১ কিন্তু একের
অধিক বিবাহ সুন্নত বা সুন্নত পালন করতে হলে ১১ টি বিবাহ করতে হবে এই ধরনের কথা বলা যাবে না ইত্যাদি ইত্যাদি।
.
এবং এই সমস্ত কাজ পালন করা কিংবা পালন করলে অবশই সওয়াব পাওয়া যাবে এরূপ মনে করা ইসলামের শরিয়াহ সম্পর্কে
মূর্খ ও অজ্ঞতার পরিচয় বহন করে এবং অনেক ক্ষেত্রে এটা বিদ’আত হিসেবেও গণ্য হবে।
.
সুন্নতী পোশাক এর বিশ্লেষণঃ-
পোশাক পরিধান করা মানব সভ্যতার একটি অংশ। পৃথিবীর সকল সভ্য মানুষই পোশাক পরিধান করে থাকে। তবে দেশভেদে বিভিন্ন দেশের পোশাক বিভিন্ন হয়ে থাকে। বাংলাদেশের দেশীয় পোশাক লুঙ্গি যেমন মুসলিমরা পরিধান করে তেমনি হিন্দু , খ্রিষ্টান ও বোদ্ধ সহ নানা অমুসলিমরাও পরিধান
করে। আরব দেশে যে পোশাক পুতুল বা মূর্তি পূজারী , নাসারা , ইহুদী , কাফির , মুশরিকরা পরিধান করত , সে দেশের দেশীয় প্রচলিত পোশাক হিসেবে আমাদের নবী (সাঃ) ও তা পরিধান করতেন। নবুয়ত প্রাপ্তির পূর্বে নবী (সাঃ) যে পোশাক পড়তেন , নবুয়ত প্রাপ্তির পর ওহী প্রাপ্ত হয়ে আমাদের নবী (সাঃ) পুরাতন পোশাক ছেড়ে দিয়ে নতুন নিয়মের, নতুন ডিজাইনের কোন পোশাকের
ব্যাপারে আদিষ্ট হয়ে তা পরিধান করতে শুরু করেননি বরং সেই পোশাক সহ পৃথিবীর সকল পোশাকের মধ্যে কিছু সীমারেখা ও
দিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন নবী মুহাম্মদ (সাঃ) নবুয়ত প্রাপ্তির পূর্বে ৪০ বৎসর ধরে যে পোশাক পরিধান করেছেন, নবুয়ত প্রাপ্তির পরও তিনি তা জীবনের বাকী ২৩ টি বৎসর পরিধান করে গেছেন। তিনি
নিজের জন্য কিংবা তার সাহাবীর অথবা উম্মতের জন্য কোন নির্দিষ্ট ধরনের সুন্নতী পোশাক নির্ধারণ করে দেননি বরং কিছু দিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন। 
.
এক প্রশ্নের উত্তরে রাসূল (সাঃ) একবার বলেছিলানঃ যে জাতি যে
সভ্য পোশাক পরিধান করে সেটাই হলো সেই মুসলিমদের পোশাক। অত্যন্ত ন্যায় ও যুক্তিপূর্ণ কথা , কারণ মুহাম্মদ (সাঃ) কে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা সমগ্র মানব জাতির জন্য সর্বশেষ রাসূল করে পাঠিয়েছেন। যদি তিনি কোন পোশাককে নির্দিষ্ট করে যেতেন তাহলে তা কিছু মানুষ জাতির
জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়াত কারণ নির্দিষ্ট কোন দেশের পোশাক অন্য কোন দেশের জন্য ব্যবহারযোগ্য না’ও হতে পারে।
.
এদেশের মৌলভী বা হুজুরদের পরিধানকৃত পাঞ্জাবী বা তথাকথিত নামধারী সুন্নতী পোশাক যদি আসলেই রাসুল (সাঃ) এর সুন্নতী পোশাক হিসেবে ধরে নেয়া
হয় তাহলে সাইবেরিয়ার মতো পৃথিবীর অন্যান্য শীতপ্রধান এলাকার মানুষদের জন্য এ পোশাক নিশ্চিত মৃত্যু ডেকে আনত।
.
আমাদের দেশের কিছু মৌলভীগন বহু ক্ষেত্রেই সহীহ হাদীসের বর্ণনা থাকা সত্তেও রাসুল (সাঃ) এর বহু আদেশ নিষেধ মানেন না। অথচ পোশাকের মধ্যে রাসূল (সাঃ) এর সুন্নত আবিষ্কার করলেন। লম্বা
কলিদার সাদা কোর্তা পাঞ্জাবীকে
তারা সুন্নতী পোশাক বলে দাবী করেন এবং সেটা পরিধান করে নিজেদেরকে সুন্নী বলে গর্ববোধ করেন। তাদের আচারন দেখলে মনে হয় পৃথিবীতে একমাত্র তারাই যেন সুন্নত পালন করেন। আর যারা
এই ধরনের পোশাক পরিধান না করে
ইসলাম নিয়ে কথা বলে এমনকি কোরআন ও সহীহ হাদীসের কথা বলে তাদেরকে এইসব মৌলভীগন ওয়াহাবী , সুন্নতের বিরোধী ,
খ্রিষ্টান ইহুদি ও আমেরিকার দালাল
ইত্যাদি কটু ও অশ্লীল সম্বোধন দ্বারা
মন্তব্য করে থাকেন এবং ফতোয়া দিয়ে থাকেন যে এই ধরনের মানুষের কথা শোনা যাবে না ইত্যাদি ইত্যাদি।
.
স্বাধীনতা পূর্বকালে হিন্দু জমিদাররা পাঞ্জাবী পরিধান করত। বর্তমানেও ভারতের হিন্দু রাজনীতিবিদ সহ বাংলাদেশেও অনেক অমুসলিম
ভারতবর্ষের পোশাক হিসেবে পাঞ্জাবী
পরিধান করে থাকে। ১৪০০ বৎসর পূর্বে আরবের কোথাও পাঞ্জাবীর প্রচলন ছিল না তাই এই ধরনের পোশাককে সুন্নতী পোশাক বলে চালিয়ে দিতে চাইলে তা
রাসূল (সাঃ) এর নামে মিথ্যা অপবাদ
দেয়া হবে। আর রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ
যে আমার প্রতি সেচ্ছায় মিথ্যারোপ
করে সে যেন তার স্থান জাহান্নাম করে নেয়। আমার নিজের চোখে অনেক মৌলভীদের দেখেছি তারা বহু ক্ষেত্রে কোরআন ও সহীহ হাদীসে বর্ণনা থাকা সত্তেও রাসুল (সাঃ) এর বহু আদেশ নিষেধ মানেন না। রাসুল (সাঃ) ভিক্ষা করা পছন্দ করতেন না। কিন্তু ভিক্ষুকদের মতো আমাদের দেশের কিছু মৌলভীদের দেখা
যায় তথাকথিত এ সুন্নতী পোশাক অর্থাৎ পায়জামা পাঞ্জাবীর সাথে টুপি
পরিধান করে এই পোশাককে পুঁজি করে নানা শিরক ও বেদ’আত পূর্ণ করে যাচ্ছেন এবং নিজেদের পকেট ভর্তি করছেন!
.
যেমনঃ মিলাদ মাহফিল , কুলখানি ,
চল্লিশা , কোরআনখানী , বিভিন্ন ধরনের খতম ,উরশ ইত্যাদি। এ ক্ষেত্রে আমি নিজে অনেক মৌলভীদেরকে কোরআনের
আয়াত সহ সহীহ হাদীসের নাম , খন্ড , হাদীস ও পৃষ্ঠা নম্বর সহ বরাত দিয়ে কোরআন হাদীসের কথা বলেছি। তখন প্রায় সবাই বাপ দাদা ও পীরদের দোহাই দিয়ে পাশ কাটিয়ে গেছেন। এই হলো আমাদের দেশের সুন্নী গর্ববোধ করা মৌলভীদের নমুনা।
.
রাসুল (সাঃ) এর সময় আরবে মুসলিমদের সংখ্যা ছিল খুব কম। মুসলিম , ইহুদী , খ্রিষ্টান , মূর্তিপুজারী , কাফির , মুশরিক
প্রভৃতি আরববাসী এখন যে পোশাক
পরিধান করছে প্রায় ১৪০০ বৎসর পূর্বেও ঐ পোশাক পরিধান করত। তাহলে স্পষ্টতই এ ধরনের পোশাক আরবের সংখ্যাগরিষ্ঠের
পোশাক এবং শুধু রাসুল (সাঃ) এর একার পোশাক ছিল না।
.
ভারত উপমহাদেশ সহ বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর আর কোন
মুসলিম দেশ সুন্নতী পোশাক আবিষ্কার করেননি। ইউরোপ , আমেরিকা সহ পৃথিবীর
মুসলিম দেশ যথা সৌদি আরব , কুয়েত , আরব আমিরাত , ইন্দোনেশিয়া সহ অন্যান্য
মুসলিম দেশের মুসলিমরা তাদের দেশের ঐতিহ্যবাহী জাতীয় পোশাক পরিধান করে এবং কোন ধরনের সুন্নতী পোশাকের আবিষ্কার করেনি। সুন্নতী নামের পোশাক শুধু ভারত উপমহাদেশের মৌলভীগন আবিষ্কার করে ফেললেন।
হিন্দুদের ভগবানের কাছে আরাধনা
পৌছানোর জন্য তাদের বিভিন্ন গোত্রের পৃথক পৃথক ধর্মযাজক , গুরু , গোসাই , ঠাকুর ও পুরোহিত রয়েছে। কিন্তু ইবাদাত করে আল্লাহর কাছে পৌছানোর জন্য
মুসলিমদের এরূপ কোন ঠাকুর , পুরোহিত বা মৌলভী , হুজুর প্রথার ব্যবস্থা ইসলামের শরিয়াহ-তে নেই। তাই তাদের মত নির্দিষ্ট কোন ডিজাইনের বা আকারের পোশাকও
নেই। বর্তমানে বাংলাদেশে হিন্দুদের
ঠাকুর ও পুরোহিতদের মত এই স্থান দখল করে নিয়েছে আমাদের সমাজের কিছু পীর ও মৌলভীগন। তারা ইসলাম ধর্মের নামে তাদের ব্যবসার হিন্দুদের রীতিনীতি কায়দায় একটি পৃথক পোশাকের প্রয়োজন উপলব্ধি করলেন এবং সেটা সুন্নাতী পোশাক বলে চালিয়ে দিলেন। তারা এই তথাকথিত সুন্নতী পোশাক দ্বারা তাদের শিরক ও বিদ’আত পূর্ণ অনুষ্ঠান প্রচলন করে দিলেন
ধর্মের নামে তাদের ব্যবসার জন্য। ঐ
সমস্ত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তারা একদিকে যেমন ধর্মীয় অনুশাসন থেকে দূরে থাকা
নীতিবিবর্জিত ভাবে আয় করা লোকদের
সহজভাবে জান্নাত পাওয়ার পথ
দেখানোর মিথ্যা প্রলোভন দেখাতে
সক্ষম হলো , তেমনি অন্যদিকে তারা
তাদের পেট পূজারীর ব্যবস্থা করে
পকেট ও পেটকে স্ফীত করার সুযোগ
করে নিলো। অথচ মাদ্রাসা থেকে তারা যে
পাঠ শিখে আসলো যে, ধর্মীয় কাজে
কোন টাকা পয়সা গ্রহন করা হারাম ; তা মাদ্রাসার গণ্ডি থেকে বের হয়েই ভুলে গেল। কি সুন্দর শিক্ষা , আর কি সুন্দর তার বাস্তবায়নের নমুনা। তাদের রোজগারকে নিশ্চিত করার জন্য এ নিয়মও বানানো
হলো যে , ইসলামের নামে ঐ সমস্ত শিরক ও বিদ’আতী অনুষ্ঠানগুলো মাদ্রাসা পড়ুয়া মৌলভী কিংবা যত্রতত্র গজিয়ে উঠা পীরদের দ্বারা সমাধা করতে হবে ,
যেমনিভাবে হিন্দু রীতিনীতিতে ঠাকুর
বা ব্রাহ্মণ ছাড়া পূজা করার অধিকার কোন সাধারণ হিন্দুর নেই। ঠাকুরদের মত তাদেরকেও টাকা কড়ির সাথে ভুরিভোজের মাধ্যমে সন্তুষ্ট করতে হচ্ছে।
আমাদের দেশে যে এক ধরনের পোশাক তথাকথিত সুন্নতী পোশাক বলে প্রচলিত আছে তা যদি কেউ পরিধান না করে তাহলে তাকে সুন্নত বিরোধী , ফাসেক বলে বিবেচনা করা হয় এবং এমন লোক যদি তথ্যসূত্র ও সনদ সহ ইসলাম প্রচার করে
তাহলেও তার কথা শোনা জায়েয হবে না
বলেও কেউ কেউ অভিমত ব্যক্ত করে থাকেন। সুন্নতী পোশাক বলতে সত্যিই কি সাদা লম্বা কলিদার জামা , লম্বা পাঞ্জাবী , লম্বা কোর্তা কে বুঝায়???
যেগুলোকে সুন্নতী পোশাক বলা হয়
সেটার দলীল কি???
.
পোশাক সম্পর্কিত ইসলামের শরিয়াহ-র দলীল সমূহ পোশাক এর ব্যাপারে ইসলামের শরিয়াহতে যে কয়েকটি দলীল রয়েছে
তার মধ্যে কয়েকটি হলোঃ
.
হে আদম সন্তান ! নিশ্চয়ই আমি
তোমাদের জন্য পোশাক সৃষ্টি করাছি যা তোমাদের লজ্জাস্থানকে ঢেকে রাখবে এবং যা হবে ভূষণ। আর তাকওয়ার পোশাক, সেটাই কল্যাণময়। এ হচ্ছে আল্লাহর
আয়াত সমূহের অন্যতম ; যাতে তারা উপদেশ গ্রহন করে। 
(সূরা আ’রাফ , আয়াত নং- ২৬)
.
হে আদম সন্তান ! তোমরা প্রত্যেক
নামাযের সময় সুন্দর পোশাক পরিধান কর
... কিন্তু আপচয় করো না। নিশ্চয় তিনি অপচয়কারীদের ভালবাসেন না। 
(সূরা আ’রাফ , আয়াত নং- ৩১)
.
পাঠক লক্ষ্য করুন উপরের আয়াতে আল্লাহ্ ও রাসুল (সাঃ) এর সুন্নতী পোশাক না বলে সুন্দর পোশাক এর কথা বললেন ; কারণ আল্লাহ্ সুন্নতী পোশাক এর নামে কোন
নির্দিষ্ট পোশাককে নির্ধারণ করেননি।
আর যদি সুন্নতী পোশাক বলে কিছু
থাকতোই তাহলে আল্লাহ্ কেন সুন্নতী
পোশাকের কথা না বলে সুন্দর পোশাকের কথা বললেন, অথচ আল্লাহ্ কোরআনে বলেনঃ
.
আমি (আল্লাহ্) কোন কিছু এই
কোরআনে লিপিবদ্ধ করতে বাদ রাখিনি (সূরা আন’আম , আয়াত নং- ৩৮)।
.
হয়ত তারা এখন বলতে চাইবে যে এই সুন্দর পোশাক বলতে আল্লাহ্ রাসূল (সাঃ) এর পোশাককে বুঝিয়েছেন ; তার জবাবে বলব
যদি তর্কের খাতিরে ধরে নেই যে এই
সুন্দর পোশাক বলতে বুঝায় রাসুল (সাঃ) এর পোশাক ; তাহলে ইউসুফ (আঃ) এর জামা (সূরা ইউসুফ , আয়াত নং- ১৮) এবং
আয়েশা (রা) ও ফাতেমা (রা) সহ
অন্যান্যরা যে পোশাক পড়েছেন সেটা
কি সুন্দর পোশাক নয় , তারা তো রাসুল (সাঃ) এর মতো পোশাক পড়েননি। তাহলে কি তারা সুন্নত পালন করেননি? তাহলে
বুঝা যাচ্ছে যে , রাসুল (সাঃ) পোশাক
ছাড়াও আরও সুন্দর পোশাক রয়েছে এবং আল্লাহ্ তা পড়ার অনুমতি দিয়েছেন তাও নামাযের মধ্যে।
.
রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ ......যা ইচ্ছা
পরিধান করো যতক্ষণ না তাতে অপচয় বা অহংকারের সংযোগ না ঘটে। (প্রমান দেখুন- সহীহ বোখারী শরীফ , ৯ম খন্ড , অধ্যায়ঃ কিতাবুল লেবাস , পরিচ্ছেদ নং- ২৩৩০ , পৃষ্ঠা নং- ৩১১ , প্রকাঃ ইসলামিক
ফাউন্ডেশন ; সুনানে ইবনে মাজাহ , ৩য় খন্ড , হাদীস নং- ৩৬০৫ , পৃষ্ঠা নং- ৩২১ ,
প্রকাঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন)।
.
রাসূল (সাঃ) এর ইয়ামনী দেশের চাদর অনেক পছন্দ ছিল এবং তিনি তা পরিধান করতেন। (সহীহ মুসলিম শরীফ, ৭ম খন্ড , হাদীস নং- ৫২৮০ , পৃষ্ঠা নং- ১৫৪ , প্রকাঃ ইসলামিক সেন্টার ; সুনানে ইবনে মাজাহ ,
৩য় খন্ড , হাদীস নং- ৩৫৫২ , ৩৫৫৩ , প্রকাঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
.
রাসুল (সাঃ) রোমের দেশের পশমী চাদর ও জুব্বা পড়েছেন। (সহীহ মুসলিম শরীফ , ৭ম খন্ড , হাদীস নং- ৫২৮৪ , প্রকাঃ ইসলামিক সেন্টার ; সুনানে ইবনে মাজাহ ,
৩য় খন্ড , হাদীস নং- ৩৫৫৬ , ৩৫৬৩ , ৩৫৬৪ , প্রকাঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন ; বোখারী
- রেওয়ায়াতে মিশকাত , ৮ম খন্ড , হাদীস নং- ৪১১৬)
.
রাসুল (সাঃ) লুঙ্গি পড়তেন। (সহীহ
মুসলিম শরীফ , ৭ম খন্ড , হাদীস নং- ৫২৮২ , পৃষ্ঠা নং- ১৫৫ , প্রকাঃ ইসলামিক সেন্টার ; সুনানে ইবনে মাজাহ , ৩য় খন্ড , হাদীস নং- ৩৫৫১ , ৩৫৬৫ , প্রকাঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
.
রাসুল (সাঃ) এর কাছে পোশাক এর
মধ্যে কামিজ বা জামা ছিল সবচেয়ে
প্রিয় এবং পরিধান ও করেছেন অনেক ,
এমনকি তার ইন্তেকালের সময়ও জামা ও লুঙ্গি পরিধান করা ছিল। (সুনানে ইবনে
মাজাহ , ৩য় খন্ড , হাদীস নং- ৩৫৭৫ , ৩৫৭৬ ;
প্রকাঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
.
রাসূল (সাঃ) বেশীর ভাগ সময়ই স্বল্প
দৈর্ঘ্যের জামা বা কামিজ পড়তেন এবং এর সাথে পায়জামা পড়তেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ , ৩য় খন্ড , হাদীস নং- ৩৫৫৭ , ৩৫৭৯ ; প্রকাঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
.
মুসলিমদের পোশাকের উপর কোরআনের বিভিন্ন আয়াত ও বিভিন্ন সহীহ হাদীস থেকে যে নিয়মনীতি পাওয়া যায় তা
হলো -
(১) পোশাকের সীমা নির্ধারণ এবং
নিরীক্ষণঃ শুধু এই নিয়মটাই পুরুষ ও
মহিলার জন্য ভিন্ন ভিন্ন। পুরুষের জন্য “ সতর ” হলো নাভী থেকে হাঁটু পর্যন্ত। এই সতর ফরজ অর্থাৎ ঢাকতেই হবে আর পায়ের গোড়ালির উপর পর্যন্ত কাপড় রাখা এবং মাথা ঢেকে রাখা সুন্নত। এছাড়া নারীর
জন্য মুখমণ্ডল ও হাতের পাতা ছাড়া
শরীরের সকল অংশই সতর। এই সতর ফরজ অর্থাৎ ঢাকতেই হবে। মুখমণ্ডল ও হাত ঢেকে রাখা উত্তম তবে না রাখতে পারলে কোন গুনাহ নেই। শুধু এই বিধানটা ছাড়া নিচের বাকি ৫টি বিধান গুলো নারী পুরুষের জন্য একই রকম। 
(সূরা আ’রাফ ; সহীহ মুসলিম শরীফ , ৭ম খন্ড , হাদীস নং- ৫২৮৭ , ইসলামিক ফাউন্ডেশন ;
সহীহ বোখারী শরীফ , ১০ম খন্ড , হাদীস নং- ৫৩৭১ , ৫৩৭৪ , ৫৩৭৫ , ২৩৫৪ , ইসলামিক ফাউন্ডেশন )

No comments:

Post a Comment