Thursday, October 26, 2017

সালাতুর রাসূল (সা:): (পর্ব-৩)



Image may contain: 1 person


সালাতুর রাসূল (সা:): (পর্ব-৩)
----------------------------------------
আমাদের সমাজের মুসলিমরা আজকে কি করছে??? অন্ধের মত মসজিদের ঈমাম-হুজুর কে অনুসরণ করছে, পির বাবা কে অনুকরণ করছে। ছোটো বেলা থেকে বাপ দাদাদেরকে যে আমল-ইবাদত করতে দেখে এসেছে তাই চোখ বন্ধ করে করে যাচ্ছে। সঠিক-ভুল যাচাই/বাছাই এর সময় কোথায় এবং যাচাই এর দরকার ও বা কি......!!!! ঈমাম সাহেব কি কখনো ভুল করতে পারেন ??? পীর বাবা-দরবেশ বাবা কি কখনো ভুল হতে পারেন???

কেন আপনি নিজে একটু কষ্ট করে কোরআনের পাতা উল্টিয়ে দেখেন না আল্লাহ তাআলা কি বলেছেন। কেন আপনি সহিহ হাদিস খুঁজে পড়ার চেষ্টা করেন না। আপনি শুধু অনার্স/মাস্টার্স/বি বি এ /এম বি এ পাশ করে ব্যবসা বানিজ্য, চাকরি বাকরি করবেন। আর ইসলামী জ্ঞান অর্জন এবং ইসলাম প্রচারের কাজ করবেন শুধু মসজিদের ঈমাম সাহেব এবং মাদ্রাসা পড়ুয়া হুজুরেরা??? কে বলেছে আপনাকে এই কথা??? ইসলামী জ্ঞান, কোরান, হাদিস কি শুধু মসজিদের ঈমাম সাহেব, পীর বাবা এবং মাদ্রাসা পড়ুয়া হুজুর দের কাছে বন্ধক দেয়া আছে??? ইসলমের ঠিকাদারী কি শুধু পান খাওয়া হুজুর এবং ধান্দাবাজ পীর বাবাদের কাছে দেয়া হয়েছে??? এইসব প্রশ্নের উত্তর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খুঁজে বের করে সঠিক পথে এখনি ফিরে যেতে হবে। অনেক দেরী হয়ে গেছে। আর বেশি দেরী হলে আমাদের আরো ধংস হতে হবে।
এক ব্যাক্তি বাজার থেকে সব সময় মাছ আনতেন কিন্তু তিনি কোনদিন আস্ত মাছ আনতেন না। সব সময় টুকরা মাছ তিনি নিয়ে আসতেন। একদা তিনি বাজার থেকে আস্ত একটি মাছ কিনে আনলেন, এটা দেখে বাচ্চারা জিজ্ঞাসা করল, বাবা এটা কি? তিনি বললেন এটা মাছ, বাচ্চারা বলে বাবা তুমি মিথ্যা কথা বলছ, মাছত দেখতে এই রকম হয় না। আমরা কিছুতেই এটা খাব না কেননা এটা মাছ নয়। বাচ্চারা মুলত জন্মের পর থেকে দেখেছে যে টুকরা টুকরা যেটা বাবা বাজার থেকে নিয়ে আসে সেটাই মাছ। আর যেহেতু এই প্রথম অন্য রকম একটা কিছু দেখছে, আর বাবা বলছে যে সেটা মাছ কিন্তু তাদের জানা মাছের সাথে এর কোন মিল নেই, তাই তারা এটা খেতে রাজি না। আজকে এই আধুনিক যুগে ইসলামের অবস্থা হয়েছে ঐ মাছের মতই। সবাই ইসলামকে চিনেছে টুকরা মাছের মত, আর যখনি আজ পরিপূর্ণ ইসলামকে তুলে ধরার প্রয়াস নেয়া হচ্ছে তখনি সবাই বলছে-“আরে এ তো দেখি নতুন ইসলাম।” কারণ আজকের সমাজে আমাদের পিতা-মাতারা সন্তানদের পরিপূর্ণ ইসলামের কোন শিক্ষাই দিচ্ছেন না।যার কারণে আজকাল সঠিক হাদিস বললেও বলে সম্পূর্ণ ভুল বা এটা ইসলামে নাই। আসলে এই ইসলাম নতুন নয় বরং আপনি এতদিন টুকরা টুকরা ইসলামকেই পরিপূর্ণ মনে করেছেন কিন্তু তা পরিপূর্ণ ইসলাম ছিল না।
আজকাল একদল মাদ্রাসা পড়ুয়া হুজুর, আলেম, ঈমাম সাহেব এবং তাবলিগ জামাতের কিছু লোকজন কে দেখা যায় মসজিদের গম্বুজের মত অর্থাৎ উপর দিকে সরু সারা গায়ে ছোটো ছোটো ছিদ্র যুক্ত কিছু টুপি পড়তে। তাদের যুক্তি রাসুলুল্লাহ (সা:) এধরনের টুপি পরতেন। আবার আরেক দল কে দেখা যায় ৩৬০ ডিগ্রী বৃত্তের মত সম্পূর্ণ গোল টুপি পরতে। তারাও বলেন রাসুলুল্লাহ (সা:) এধরনের টুপি পরতেন। আবার আরো কিছু আলেম টাইপের লোক কে দেখা যায় যারা পাগড়ি পড়ে। এর মধ্যে আবার আছে সাদা, কালো এবং সবুজ পাগড়ি ওয়ালাদের দল। এদের বক্তব্য হচ্ছে রাসুলুল্লাহ (সা:) পাগড়ি পরতেন। কেউ বলছে সাদা পাগড়ি পরতেন, কেউ বলছে কালো। অর্থাৎ মূল ঘটনা হচ্ছে রাসুলুল্লাহ (সা:) এর প্রতি তাদের ভালবাসা এত প্রবল যে পাঞ্জাবি-পায়জামা পরার পাশাপাশি তারা টুপি-পাগড়িটাও যেন হুবহু তাঁর মত পড়তে পারে এজন্যে তাদের কত চেষ্টা। অথচ নামাজ যেন রাসুলুল্লাহ (সা:) এর মত পড়তে পারি, নামাজের সব সুন্নাহ যেন রাসুলুল্লাহ (সা:) এর মত হয় সেদিকে কেন তাদের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই??? বড়ই আশ্চর্যের বিষয়। রাসুলুল্লাহ (সা:) এর সুন্নাহ তো তারা নামাজে মানছেই না, উল্টো নামাজে তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী স্বার্থ হাসিল এবং নিজেদের ভুল মতবাদ প্রতিষ্ঠা করার জন্য অসংখ্য বিদআত এর অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে।
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এরশাদ করেছেন যে, “বনী ইস্রাঈল ৭২ দলে বিভক্ত হয়েছিল, আমার উম্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। সবাই জাহান্নামে যাবে একটি দল ব্যতীত। সাহাবাগন জিজ্ঞেস করলেন, সেটি কোন দল হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন, আমি এবং আমার সাহাবাগন যে পথে আছি এবং এ পথের উপর যারা থাকবে।“(তিরমিযী, ইবনে মাযাহ, আবু দাউদ)আল্লাহ যেন আমাদের তৌফিক দেন, আমরা যেন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এবং তাঁর সাহাবায়ে কেরামগনের অনুসরণ করে সেই একটিমাত্র জান্নাতি দলে থাকতে পারি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সত্য জানার, বুঝার, শেখার, সত্য-মিথ্যার পার্থক্য করার-তুলনা করার এবং সহিহ হাদিস-সহিহ তরিকা অনুযায়ী নামাজ পড়ার তৌফিক দিন। আমিন। এখানে আমরা সহিহ হাদিস দ্বারা নামাজের সেই গুরুত্বপূর্ণ ব্যপারগুলো আলোচনা করব যা আজকাল আমরা করিনা, জানিনা এবং সেই সুন্নাহ গুলো বাদ দিয়ে সেই জায়গায় আমরা বিভিন্ন বিদআত যোগ করেছি সেগুলোর তাত্বিক এবং তুলনামূলক বিচার বিশ্লেষণ করব ইনশাআল্লাহ। সবার কাছে অনুরোধ রইলো আমরা এই সুন্নাহ এবং সহিহ হাদিসগুলো পালন করি আর না করি, অন্তত পড়ে যেন যাচাই-বাছাই করে দেখি।

No comments:

Post a Comment