Thursday, October 26, 2017

কারো প্রতি জুলুম করা থেকে সতর্ক হয়েছেন কি?



Image may contain: one or more people and text


কারো প্রতি জুলুম করা থেকে সতর্ক হয়েছেন কি?
একটু ভেবে দেখুন তো-আপনার জবান দ্বারা কারো উপর জুলুম করছেন না তো? জেনেশুনে কারো উপর জুলুম করা সম্পূর্ন হারাম অথচ আমরা অনেকে তা দিব্যি ই করেই চলেছি!সম্মানহানি করা, মিথ্যা অপবাদ লাগিয়ে দেওয়া যেন ডাল/ভাতের মত হয়ে গেছে!
আপনার লেখনি/বক্তব্য /আচার আচরন দ্বারা যদি কারো উপর সামান্যতম জুলুম করে থাকেন তাহলে আজ ই ওই ব্যক্তির কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন, তা না হলে হয়ত কাল কেয়ামতের ময়দানে এই একটি কারনে আটকা পড়ে যেতে পারেন! কারন জুলুম কবিরাহ গুনাহের অন্তভুক্ত!

আজকাল অল্প ইল্ম ওয়ালা & অনেক জাহিল শ্রেনির লোকই নিজের মতের সাথে অমিল থাকার কারনে নাম ধরে বহু দ্বাায়ীকে কাফির/মুনাফিক/তাগুত/দালাল etc ট্যাগ লাগিয়ে দিচ্ছে হামেশাই!সাথে নিয়মিত গালাগালি তো চলছে ই!
বড় ই ভয় হয় ওইসকল লোকদের জন্য,না জানি কাল কেয়ামতের ময়দানে আল্লাহর সামনে কি জবাব দেন এরা!
কারন যাদের উপর আপনি এসকল ট্যাগ লাগিয়ে দিচ্ছেন যদি তা আল্লাহর সামনে প্রমান করতে না পারেন তখন আপনার অবস্থা কি হবে জানেন?
জাহান্নামিদের রক্ত/পুজ/প্রসাব/পায়খানা জমাটকৃত জায়গা হবে আপনার শেষ ঠিকানা!
সেদিন দলিল ছাড়া সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন না!
ও ভাই এসব ভেবে কি আজও আপনার অন্তর ভয়ে কেপে উঠেনা?
খবরদার কারো উপর এমন জুলুম করবেন না!

নিম্নের হাদিস গুলোতে ইমানের দাবিদারদের জন্য চিন্তার খোরাক রয়েছে-
===================================>>>
উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ ‘’যখন কেউ তার মুসলিম ভাইকে ‘কাফির’ বলে, তখন তাদের উভয়ের মধ্যে একজনের উপর তা বর্তায়। যা বলেছে, তা যদি সঠিক হয়, তাহলে তো ভালো। নচেৎ (যে বলেছে) তার উপর ঐ কথা ফিরে যায় (অর্থাৎ সে কাফির হয়ে যায়)’’বুখারী ৬১০৪; মুসলিম ৬১

আবু যার (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ ‘’যে কাউকে ‘হে কাফির’ বলে অথবা ‘হে আল্লাহর দুশমন’ বলে ডাকে অথচ বাস্তবিক ক্ষেত্রে যদি সে তা না হয়, তাহলে তার (বক্তার) উপর তা বর্তায়’’।
রিয়াদুস সালিহীনঃ ১৭৪২।

সাবিত ইবন যাহহাক (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসুল (সাঃ) বলেনঃ ‘’ইমানদারকে লা’নাত করা, তাকে হত্যা করা সমতুল্য। আর কেউ কোন ইমানদারকে কুফরির অপবাদ দিলে তাও তাকে হত্যা করার সমতুল্য হবে’’।
বুখারীঃ ৬১০৫।

*রাসুল (সা.) বলেন, 
'কেউ যদি তাঁর কোনো ভাইয়ের সম্মানহানি কিংবা কোনো জিনিসের ক্ষতি করে থাকে, তবে আজই (দুনিয়াতেই) তার কাছ থেকে তা বৈধ করে নেওয়া উচিত (অর্থাৎ ক্ষমা চেয়ে নেওয়া ও ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত) এবং সেই ভয়াবহ দিন আসার আগেই এটা করা উচিত, যেদিন টাকাকড়ি দিয়ে কোনো প্রতিকার করা যাবে না, বরং তার কাছে কোনো নেক আমল থাকলে তার জুলুমের পরিমাণ হিসেবে মজলুমকে ওই নেক আমল দিয়ে দেওয়া হবে এবং তার কোনো অসৎ কাজ না থাকলেও ওই মজলুমের অসৎ কাজ তার ওপর বর্তানো হবে' 
(সহিহ আল বুখারি ও জামে তিরমিজি)।

*একটি হাদিসে কুদসিতে রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, 'হে আমার বান্দারা! আমি নিজের ওপর জুলুম হারাম করে নিয়েছি এবং তোমাদের পরস্পরের মধ্যেও তা হারাম করেছি। সুতরাং তোমরা পরস্পরের ওপর জুলুম করো না! (সহিহ মুসলিম, জামে তিরমিজি)।
*কুতায়বা ইবনু সাঈদ ও আলী ইবনু হুজর (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা কি বলতে পার, দরিদ্র (দেউলিয়া) কে? তারা বললেন, আমাদের মধ্যে যার দিরহাম (টাকা কড়ি) ও আসবাপত্র (ধন-সম্পদ) নেই সেই তো দরিদ্র। তখন তিনি বললেনঃ আমার উম্মাতের মধ্যে সেই প্রকৃত অভাবগ্রস্ত, যে ব্যক্তি কিয়ামতের দিন সালাত, সাওম ও যাকাত নিয়ে আসবে; অথচ সে এই অবস্থায় আসবে যে, একে গালি দিয়েছে, ওকে অপবাদ দিয়েছে, এর সম্পদ ভোগ করেছে, ওকে হত্যা করেছে ও একে মেরেছে। এরপর একে তার নেক আমল থেকে দেওয়া হবে, ওকে নেক আমল থেকে দেওয়া হবে। এরপর তার কাছে (পাওনাদারের) প্রাপ্য তার নেক আমল থেকে পূরণ করা না গেলে ঋণের বিনিময়ে তাদের পাপের একাংশ তার প্রতি নিক্ষেপ করা হবে। এরপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
সহীহ মুসলিম:-৬৩৪৩ 
হাদিসের মানঃ সহিহ

আনাস ইবনু মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ মি‘রাজের রাতে আমি এমন এক কওমের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলাম যাদের নখগুলো তামার তৈরী এবং তা দিয়ে তারা অনবরত তাদের মুখমন্ডলে ও বুকে আচড় মারছে। আমি বললাম, হে জিবরীল! এরা কারা? তিনি বললেন, এরা সেসব লোক যারা মানুষের গোশত খেতো (গীবত করতো) এবং তাদের মানসম্মানে আঘাত হানতো। (আবু দাউদ ৪৭৭৮; হাদিসের মানঃ সহিহ; মুসনাদে আহমদ)

No comments:

Post a Comment