জাহান্নামী না হওয়ার নিশ্চয়তা :
আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, لاَ يَلِجُ النَّارَ رَجُلٌ بَكَى مِنْ خَشْيَةِ اللَّهِ حَتَّى يَعُودَ اللَّبَنُ فِي الضَّرْعِ، وَلَا يَجْتَمِعُ غُبَارٌ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ وَدُخَانُ جَهَنَّمَ ‘আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দনকারীর জাহান্নামে যাওয়া এরূপ অসম্ভব যেরূপ দোহনকৃত দুধ পুনরায় পালানে ফিরে যাওয়া অসম্ভব। আর আল্লাহর পথের ধুলা ও জাহান্নামের ধোঁয়া কখনও একত্রিত হবে না’।[তিরমিযী হা/১৬৩৩; মিশকাত হা/৩৮২৮, সনদ ছহীহ।]
আরেকটি হাদীছে এসেছে, ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, عَيْنَانِ لاَ تَمَسُّهُمَا النَّارُ: عَيْنٌ بَكَتْ مِنْ خَشْيَةِ اللهِ، وَعَيْنٌ بَاتَتْ تَحْرُسُ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ، ‘জাহান্নামের আগুন দু’টি চোখকে স্পর্শ করবে না। এক- আল্লাহর ভয়ে যে চোখ ক্রন্দন করে এবং দুই- আল্লাহর রাস্তায় যে চোখ পাহারা দিয়ে বিনিদ্র রাত অতিবাহিত করে’।[তিরমিযী হা/১৬৩৯; মিশকাত হা/৩৮২৯, সনদ ছহীহ।]
উল্লেখিত হাদীছদ্বয়ের প্রেক্ষিতে বলা যায় যে, কোন ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলার প্রতি পূর্ণ আনুগত্যশীল হয়ে এবং তাঁর নিষিদ্ধ বিষয়াবলী পরিহার করে আল্লাহর ভয়ে অশ্রু প্রবাহিত করলে সে ব্যক্তি উক্ত মর্যাদার অধিকারী হবে। হৃদয়ে পূর্ণ তাক্বওয়া বা আল্লাহভীতি রেখে নীরবে-নিভৃতে আল্লাহর দিকে লুটিয়ে পড়লে দু’চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরবে। তবে এজন্য হৃদয়ে থাকা চাই পরিপূর্ণ ইখলাছ এবং আল্লাহর প্রতি নিখাদ ভালোবাসা। কপট হৃদয়ের মানুষ কখনোই উক্ত মর্যাদার অধিকারী হ’তে পারবে না। তারা তো দুনিয়ার নগণ্য স্বার্থে ধার্মিকতার লেবাস পরে নিজেকে যাহির করে। তাদের কাছে দুনিয়া হ’ল মুখ্য, আখেরাতের সফলতা তাদের কাছে গুরুত্বহীন। পক্ষান্তরে মুমিন বান্দা আখেরাত হাছিলের জন্য সদা ব্যস্ত। তাই কখনও কোন নেকী বা কল্যাণ তার হাতছাড়া হ’লেই সে ডুকরে কেঁদে ওঠে, অঝোরে দু’চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরে। যেমন সহায় সম্বলহীন দরিদ্র ছাহাবীগণ যারা তাবূক যুদ্ধে পাথেয়র অভাবে যেতে না পারায় কেঁদেছিল। ত্রিশ হাযার সেনা নিয়ে রওয়ানা হওয়ার পূর্বে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বাহনের অভাবে নিজের অপারগতা প্রকাশ করে যাদের বিদায় দিয়েছিলেন সেই সৌভাগ্যবান ব্যক্তিদের প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন,إِذَا مَا أَتَوْكَ لِتَحْمِلَهُمْ قُلْتَ لَا أَجِدُ مَا أَحْمِلُكُمْ عَلَيْهِ تَوَلَّوْا وَأَعْيُنُهُمْ تَفِيضُ مِنَ الدَّمْعِ حَزَنًا أَلَّا يَجِدُوْا مَا يُنْفِقُونَ- ‘যারা তোমার নিকট এজন্য আসে যে, তুমি তাদের (জিহাদে যাবার) জন্য বাহনের ব্যবস্থা করবে। অথচ তুমি বলেছ যে, আমার নিকটে এমন কোন বাহন নেই যার উপর তোমাদের সওয়ার করাবো। তখন তারা এমন অবস্থায় ফিরে যায় যে, তাদের চক্ষুসমূহ হ’তে অশ্রু প্রবাহিত হ’তে থাকে এই দুঃখে যে, তারা এমন কিছু পাচ্ছে না যা তারা ব্যয় করবে’ (তওবা ৯/৯২)।
উক্ত জান্নাত পিয়াসী ব্যক্তিদের সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বলেন, إِنَّ بِالْمَدِينَةِ أَقْوَامًا مَا سِرْتُمْ مَسِيْرًا وَلاَ قَطَعْتُمْ وَادِيًا إِلاَّ كَانُوْا مَعَكُمْ. قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ وَهُمْ بِالْمَدِيْنَةِ، قَالَ وَهُمْ بِالْمَدِينَةِ، حَبَسَهُمُ الْعُذْرُ- ‘মদীনায় এমন কিছু লোক রয়েছে, তোমরা যেখানেই সফর করেছ এবং যে উপত্যকাই অতিক্রম করেছ তারা তোমাদের সঙ্গে ছিল। ছাবায়ে কেরাম বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! তারা তো মদীনায় ছিল? তিনি বললেন, তারা মদীনায় ছিল, কেবল ওযর তাদের আটকিয়ে রেখেছিল’। (বুখারী হা/৪৪২৩; আবু দাউদ হা/২০৫৮; মিশকাত হা/৩৮১৫।)
At-tahreek nov’17
No comments:
Post a Comment