Sunday, November 5, 2017

সালাতুর রাসূল (সা:)-(পর্ব-৬)



Image may contain: text


সালাতুর রাসূল (সা:)-(পর্ব-৬)
----------------------------------------
সালাত শুরুর সময় মুখে নিয়ত উচ্চারণ না করাঃ

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “إنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَاتِ وَ إِنَّمَا لِكُلٍّ امْرِءٍ مَّا نَوَى”
“নিশ্চয় নিয়তের উপর আমল নির্ভরশীল এবং প্রত্যেক ব্যক্তি তাই-ই পাবে, যার জন্য সে নিয়ত করবে”।
‘নিয়ত’ অর্থ ‘সংকল্প’। ছালাতের শুরুতে নিয়ত করা অপরিহার্য। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিয়ত করতে বলেছেন, পড়তে বলেননি। নিয়ত মুখে উচ্চারণ করবেন না, কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সাহাবায়ে কেরাম নিয়ত মুখে উচ্চারণ করেননি।
নাওয়াইতু আন… বলে মুখে নিয়ত উচ্চারণ করা আরেকটি বিদআত। কেননা এর পক্ষে কোন ছহীহ হাদীছ তো দূরের কথা কোন যঈফ হাদীছও পাওয়া যায় না। এ ভাবে নিয়ত না রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম না ছাহাবায়ে কেরাম না তাবেঈন না তাবে-তাবেঈন না চার ইমামের কেহ করেছেন। এটা কোন বুযুর্গ ব্যক্তির তৈরী করা প্রথা। তার সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই। সুতরাং তা বর্জন করা প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য ফরয। নিয়ত শব্দের অর্থ-ইচ্ছা বা সঙ্কল্প করা। আর তা অন্তরে হয় মুখে নয়। সুতরাং কোন কিছু করার জন্য অন্তরে ইচ্ছা বা সঙ্কল্প করলেই সে কাজের নিয়ত হয়ে গেল। তা মুখে বলতে হবে না।
অতএব ছালাতের জন্য ওযূ করে পবিত্র হয়ে পরিচ্ছন্ন পোষাক ও দেহ-মন নিয়ে কা‘বা গৃহ পানে মুখ ফিরিয়ে মনে মনে ছালাতের দৃঢ় সংকল্প করে স্বীয় প্রভুর সন্তুষ্টি কামনায় তাঁর সম্মুখে বিনম্রচিত্তে দাঁড়িয়ে যেতে হবে। মুখে নিয়ত পাঠের প্রচলিত রেওয়াজটি দ্বীনের মধ্যে একটি নতুন সৃষ্টি। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ছালাতে এর কোন স্থান নেই। অনেকে ছালাত শুরুর আগেই জায়নামাযের দো‘আ মনে করে ‘ইন্নী ওয়াজ্জাহ্তু…’ পড়েন। এই রেওয়াজটি সুন্নাতের বরখেলাফ। মূলতঃ জায়নামাযের দো‘আ বলে কিছু নেই।
মন্তব্য এবং আমাদের করণীয়:
-----------------------------------------
আমরা যখন সালাতে দাড়াই তখন মনে মনে আমি ঠিকই জানি যে আমি কোন ওয়াক্তের কোন সালাত পড়তে দাড়িয়েছি। অর্থাত জোহর/আসর/মাগরিব কোন ওয়াক্তের সালাত পড়ব এটা আমি জানি, আবার সুন্নাত না ফরজ পড়ব তাও জানি। আল্লাহ তাআলাও আমার মনের সংকল্প এবং নিয়ত সম্পর্কে আমার নিজের চেয়েও বেশি ওয়াকিবহাল। তাহলে কেন আমাকে মুখে নিয়াত পড়তে হবে? আবার কেউ কি ফজর এর সময়ে উঠে জোহর এর নামাজ পড়বে অথবা জোহর এর সময়ে আসর এর? নিশ্চই না।

তাহলে কেন আমরা "নাওয়াই তুওয়ান..." দিয়ে শুরু করে ওয়াক্তের নাম, নামাজের ধরন, রাকাত সংখ্যা ইত্যাদি উল্লেখ করে মুখে নিয়ত পড়ছি? দয়া করে একটু চিন্তা করে দেখুন যে, আপনি কি নামাজ শুরুই করবেন একটি বিদআত দিয়ে? তাই অনুগ্রহ করে এই বিদআত বাদ দিয়ে নিয়াত পড়ার পরিবর্তে নিয়াত করুন। অর্থাৎ মনে মনেই নামাজের সংকল্প করুন যেটা হবে নিয়াত করা, মুখে মুখে নিয়াত পড়তে রাসুলুল্লাহ (সা  বলেন নি। তাই সেটা করা যাবেনা।

No comments:

Post a Comment