Sunday, December 3, 2017

আযানের সুন্নাতসমূহ





আযানের সুন্নাতসমূহ-----------------
(১) আযানের সময় আযানের জবাব দেওয়া সুন্নাত । ওমর ইবনুল খাত্তাব (র) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন,
মুআযযিন যখন আল্লাহু আকবার , আল্লাহু আকবার বলে তখন তোমাদের কেউ আল্লাহু আকবার , আল্লাহু আকবার বলল। তারপর মু-আযযিন যখন আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লালাহু বলে, তখন সেও আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লালাহু বলল।অতঃপর মু-আযযিন যখন আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ বলে, তখন সেও আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ বলল।
পরে মু-আযযিন যখন হাইয়্যাআলাস সালাহ বলে, তখন সে লা হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহ বলল।এরপর মু”আযযিন যখন হাইয়্যাআলাল ফালাহ বলে, তখন সেও লা হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহ বলল।তারপর মু-আযযিন যখন আল্লাহু আকবার , আল্লাহু আকবার বলে, তখন সেও আল্লাহু আকবার , আল্লাহু আকবার বলল-এসবই যদি সে বিশুদ্ধ অন্তরে বলে থাকে তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (সহীহ মুসলিম,২/৭৪৯ )

(২) আযান শোনার পর নিম্নের দুআ পাঠ করা সুন্নাত ।
সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাছ (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-মুয়াজ্জিনের আযান শুনে যে ব্যক্তি বলে, أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ وَأَنَّ مُحَمَّد-ا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ رَضِيتُ بِاللَّهِ رَبًّا وَبِمُحَمَّدٍ رَسُولاً وَبِالإِسْلاَمِ دِينًا“আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াদাহু লা শারীকালাহু, ওয়া আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু, রাদীতু বিল্লাহি রব্বান ওয়া বিমুহাম্মাদিন রাসূলান ওয়া বিল-ইসলামি দ্বীনান” তার গুনাহ মাফ করা হবে।(সহীহ মুসলিম , ২ / ৭৫০ )

(৩) অতঃপর রাসুল (সাঃ) এর উপর দরুদ (দরুদে ইবরাহীম) এবং সালাম প্রেরন করা সুন্নাত ।আবদুল্লাহ ইবন আমর ইবনুল আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসুল (সা) কে বলতে শুনেছেন,তোমরা যখন মুআযযিনকে আযান দিতে শুনবে, তখন সে যা বলে তাই বলবে।তারপর আমার ওপর দুরূদ পাঠ করবে।কারণ যে আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করে, আল্লাহ তারবিনিময়ে তার ওপর দশবার রহমত নাযিল করেন।(সহীহ মুসলিম , ২/ ৭৪৮ )
এখানে দরুদ বলতে পূর্ণ দুরদে ইবরাহীম উদ্দেশ্য ।কাব বিন ওযরা (রা) থেকে বর্ণিত , তিনি বলেন , আমরা রাসূলুল্লাহ (স)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আপনাদের উপর অর্থাৎ আহলে বায়তের উপর কিভাবে দরূদ পাঠ করতে হবে ? তখন রাসুলুল্লাহ (সা) বললেন তোমরা এভাবে বল,
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ، وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ، اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ، وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ(সহীহুল বুখারী , খণ্ড – ৩ /৩৩৭০ , তাওহীদ প্রকাশনী )

(৪) দরুদ এবং সালাম প্রেরন করার পর এই দুআ পাঠ করা সুন্নাত ।
দুআটি হল – وَعَدْتَهُ الَّذِي مَحْمُودً مَقَامًا وَابْعَثْهُ وَالْفَضِيلَةَ الْوَسِيلَةَ مُحَمَّدًا آتِ الْقَائِمَةِ وَالصَّلاَةِ لتَّامَّةِ الدَّعْوَةِ هَذِهِ رَبَّ اللَّهُمَّ(হে আল্লাহ পরিপূর্ণ আহবান ও সালাতের প্রতিষ্ঠিত মালিক, মুহাম্মাদ (সা.) –কে ওয়াসীলা ও সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী করুন এবং তাঁকে সে মাকেমে মাহমূদে পৌঁছিয়ে দিন যার অঙ্গিকার আপনি করেছেন’-জাবির ইবন আবদুল্লাহ্(রা.) থকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্(সা.) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আযান শুনে এই দু’আ পাঠ করে ,কিয়ামতের দিন সে আমার শাফাআত লাভের অধিকারী হবে।) [সহীহুল বুখারী , খণ্ড – ১ , হাদিস নং – ৬১৪ , তাওহীদ প্রকাশনী । ]

(৫) আযানের উত্তর দেওয়ার পর নিজের কল্যান এবং মঙ্গলের জন্য দুআ করা সুন্নাত ।মুহাম্মাদ ইবন কাছীর আনাস ইবন মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত,আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে কৃত দুআ কখনই প্রত্যাখ্যাত হয়না ।(সুনান আবু দাঊদ ১/৫২১ ইফা )

No comments:

Post a Comment