ইশার সালাতের সুন্নতের পরপরই কি ১ রাকআত বিতর পড়া বৈধ হবে? না কি তা কেবল তাহাজ্জুদ সালাতের পরে পড়ার অনুমতি রয়েছে?
-------- -------- -----------:>
প্রশ্ন: আমরা জানি এক রাকাত বিতরের স্বলাত পড়া যায়। কিন্তু তাই বলে কোন ব্যক্তি যদি ইশার সুন্নত শেষ করে ১ রাকাত বিতরের স্বলাত পড়ে এটি কি ঠিক হবে?
আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বা সাহাবীগণ রা. থেকে কি এমন কোন প্রমাণ আছে যে, তারা এভাবে এশার সুন্নতের পর ১ রাকাত বিতর পড়েছেন? কেননা আমরা জানি, তারা তাহাজ্জুদ স্বলাত পড়ার পর ১ রাকাত বিতর পড়েছেন। সুতরাং অলসতা বশত: কোন ব্যক্তি যদি ইশার ২ রাকাত সুন্নত পড়ার পর ১ রাকাত বিতর পড়ে তাহলে তা কি ঠিক হবে?
উত্তর:
উপরোক্ত প্রশ্নের উত্তর জানতে নিন্মোক্ত বিষয়গুলো পড়ুন:
💠 *১ রাকাআত বিতর পড়া জায়েয*
১মত: জানা দরকার যে, এক রাকাআত বিতর পড়া জায়েয। এ মর্মে একাধিক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। তন্মধ্যে একটি হল:
আবু আইয়্যুব আনছারী (রাঃ) বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
فمن شاء أوتر بسبع , ومن شاء أوتر بخمس , ومن شاء أوتر بثلاث , ومن شاء أوتر بواحدة
“সুতরাং যে ব্যক্তি চায় সাত রাকাআত, যে চায় পাঁচ রাকাআত, যে চায় তিন রাকাআত আর যে চায় এক রাকাত বিতর পড়তে চায় সে এক রাকাত পড়তে পারে।” [নাসাঈ, সহীহ হা/১৭০৯]
💠 *রাতের শেষ নামায যেন হয় বিতর*
আবদুল্লাহ্ বিন ওমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “তোমরা তোমাদের রাতের নামাযের সর্বশেষে বিতর নামায আদায় করবে।” [বুখারী, অধ্যায়ঃ জুমআর নামায, অনুচ্ছেদঃ সর্বশেষে বিতর নামায পড়া, হা/৯৪৩। ও মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায, অনুচ্ছেদঃ রাতের নামায দু’দু রাকাত এবং শেষ রাতে বিতর এক রাকাত, হা/১২৪৫।]
এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, বিতর নামাযকে রাতের শেষ নামায করতে হবে। সুতরাং কেউ যদি তাহাজ্জুদ সালাত আদায় করতে চায় সে তাহাজ্জুদের পরে বিতর পড়বে আর কেউ যদি তাহাজ্জুদ পড়তে না চায় তাহলে ইশার সুন্নতের পরেই বিতর পড়ে নিবে। কেননা, এটাই তার রাতের শেষ নামায। আর তা ১ রাকাআত, ৩ রাকাআত, ৫ রাকাআত বা অন্যান্য হাদীসে বর্ণিত যে কোন সংখ্যায় পড়তে পারে।
💠 *ইশার পরপর এক রাকআত বিতর পড়ার ব্যাপারে সাহাবীর আমল:*
সা’দ বিন আবী ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর মসজিদে এশা নামায আদায় করতেন, অতঃপর এক রাকাত বিতর পড়তেন, এর বেশি নয়। তাঁকে বলা হত, আবু ইসহাক্ব? আপনি এক রাকাতের বেশি বিতর আদায় করেন না? তিনি বলেন, হ্যাঁ, আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “যে ব্যক্তি বিতর না পড়ে নিদ্রা যায় না সে দৃঢ়তা সম্পন্ন লোক।” [ মুসনাদে আহমাদ হা/১৩৮২।]
আল্লাহু আলাম।
✒✒✒✒✒✒
*উত্তর প্রদানে:*
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সৌদি আরব
No comments:
Post a Comment