Wednesday, September 12, 2018

*প্রশ্ন: নারী-পুরুষের নামাযে কি বিশেষ কোন পার্থক্য আছে?*



Image may contain: text

*প্রশ্ন: নারী-পুরুষের নামাযে কি বিশেষ কোন পার্থক্য আছে?*
উত্তর:
অধিক বিশুদ্ধমতানুসারে নামাযের পদ্ধতি যেমন তাকবীর, কিয়াম, রুকু, সিজদা, বৈঠক, তাশাহুদ, দুয়া-তাসবীহ, সালাম ইত্যাদি ক্ষেত্রে নারী পুরুষদের মাঝে কোন পার্থক্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সহীহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়।
তবে অবশ্যই সহীহ সুন্নাহর আলোক কিছু পার্থক্য আছে যেগুলো অধিকাংশই নামাযে বাইরের বিষয় অথবা নামাযের সংশ্লিষ্ট বিষয়; মূল সালাতের পদ্ধতিতে নয়।
যেমন, সতর ঢাকা, জুমা, জামাআত, আযান, ইকামত, ইমামতি, ইমামের ভুল সংশোধন করার পদ্ধতি ইত্যাদি। এসব বিষয়ে পুরুষদের থেকে মহিলাদের পার্থক্য হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। তবে মূল সালাতের পদ্ধতির মধ্যে পার্থক্য করা সহীহ সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত নয়। যদি দলীল দ্বারা কোথাও পার্থক্য প্রমাণিত হয় তবেই কেবল পার্থক্য করা যাবে; অন্যথায় নয়। আল্লাহু আলাম।
🖋🖋🖋🖋🖋
*উত্তর প্রদানে:*
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানি
*পুরুষ ও নারীর নামাযের পদ্ধতিতে কোন পার্থক্য নেই*

প্রশ্ন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
“তোমরা আমাকে যেভাবে নামায পড়তে দেখ সেভাবে নামায আদায় কর”। এ হাদিস থেকে আমরা যা বুঝি তা হচ্ছে— নারী ও পুরুষের নামাযের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। না দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে, না বসার ক্ষেত্রে, না রুকু করার ক্ষেত্রে, না সেজদা করার ক্ষেত্রে। প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর থেকে আমি এভাবে আমল করে আসছি।
কিন্তু, আমাদের কেনিয়াতে এমন কিছু মহিলা আছেন যারা এ নিয়ে আমার সাথে বাকবিতণ্ডা করেন। তারা বলেন: তোমার নামায সহিহ নয়। কারণ তোমার নামায পুরুষদের নামাযের ন্যায়। তারা এমন কিছু স্থানের কথা উল্লেখ করেন তাদের দৃষ্টিতে সে স্থানগুলোতে মহিলাদের নামায পুরুষের নামায থেকে ভিন্ন। যেমন— বুকের ওপর হাত বাঁধা, কিংবা হাতদুটিকে ছেড়ে দেয়া। রুকু করাকালে পিঠ সোজা রাখা ইত্যাদি; তবে আমি এখনো এগুলোতে প্রভাবিত হইনি। আমি আশা করব, আপনারা পরিস্কার করবেন যে, পুরুষের নামায ও মহিলার নামাযের মাঝে কোন পার্থক্য আছে কি?
উত্তর: আলহামদুলিল্লাহ।
সঠিক মতানুযায়ী মহিলাদের নামায ও পুরুষের নামাযের মাঝে কোন পার্থক্য নেই। কিছু কিছু ফিকাহবিদ যে পার্থক্যগুলো উল্লেখ করেছেন সেগুলোর পক্ষে কোন দলিল নেই। প্রশ্নে আপনি যে হাদিসটি উল্লেখ করেছেন “তোমরা আমাকে যেভাবে নামায পড়তে দেখ সেভাবে নামায আদায় কর” এর বিধান সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করবে। ইসলামী বিধি-বিধানগুলো নারী-পুরুষ উভয়কে অন্তর্ভুক্ত করে। তবে, দলিল যদি বিশেষ কোন বিধানকে খাস করে সেটা ভিন্ন কথা। অতএব, সুন্নাহ হল— রুকু, সেজদা, ক্বিরাত ও বুকে হাত রাখা ইত্যাদি সবক্ষেত্রে মহিলার নামায পুরুষের নামাযের মত। অনুরূপভাবে রুকুকালে হাঁটুতে হাত রাখার পদ্ধতিও একই। সেজদাকালে কাঁধ বরাবর কিংবা কান বরাবর জমিনে হাত রাখার পদ্ধতিও একই। রুকুকালে পিঠ সোজা রাখার পদ্ধতিও অভিন্ন। রুকু ও সেজদাতে যা পড়া হবে সেগুলো এক। রুকু ও প্রথম সেজদা থেকে উঠে যা বলবে সেটাও এক। এ সব ক্ষেত্রে নারীর নামায পুরুষের নামাযের ন্যায়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পূর্বোক্ত হাদিসের ভিত্তিতে:
“তোমরা আমাকে যেভাবে নামায পড়তে দেখ সেভাবে নামায আদায় কর”[সহিহ বুখারী]
*আর ইক্বামত ও আযান:* এ দুইটি নামাযের বাহিরের বিষয়। ইক্বামত ও আযান পুরুষের জন্য খাস। এই মর্মে দলিল উদ্ধৃত হয়েছে। পুরুষেরা ইক্বামত ও আযান দিবে। আর নারীদের ইক্বামত ও আযান নেই। উচ্চস্বরে ক্বিরাত পড়া: মহিলারা ফজর, মাগরিব ও এশার নামাযে উচ্চস্বরে ক্বিরাত পড়তে পারেন। ফজরের দুই রাকাতে উচ্চস্বরে ক্বিরাত পড়বেন। মাগরিবের প্রথম দুই রাকাতে উচ্চস্বরে ক্বিরাত পড়বেন। এশার প্রথম দুই রাকাতে উচ্চস্বরে ক্বিরাত পড়বেন, যেভাবে পুরুষেরা করে থাকে।[সমাপ্ত]
মহামান্য শাইখ আব্দুল আযিয বিন বায (রহঃ)

No comments:

Post a Comment