Tuesday, April 14, 2015

পহেলা বৈশাখ অথবা এ জাতীয় কোন প্রকার দিবস পালন করা বৈধ নয়।




পহেলা বৈশাখ অথবা এ জাতীয় কোন প্রকার দিবস পালন করা বৈধ নয়।
প্রথম কারণঃ
========
কেননা মুসলিমদেরকে এই পৃথিবীতে আমোদ-ফুর্তির জন্য পাঠানো হয় নি।
তাদের ৬০/৭০ বছরের অতি সংক্ষিপ্ত এ জীবনটাকে কাজে লাগানোর জন্য আল্লাহ্‌ পাঠিয়েছেন।
তারা এই ৬০/৭০ বছরের অতি সংক্ষিপ্ত এ জীবনটাকে কাজে লাগিয়ে তারা তাদের হাজার হাজার বছরের জীবনকে সমৃদ্ধ করবে। তাদের আনন্দ-ফুর্তি করার জায়গা হচ্ছে মূলত জান্নাত!
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বলেন-
"দুনিয়া মুমিনের জন্য জেলখানা, আর কাফেরদের জন্য জান্নাত স্বরুপ"। (মুসলিম- ৭০৫৮)
অর্থাৎ কাফেরদের যেহেতু পরকাল বলে কিছু নেই তাই তারা এখানেই আনন্দ-ফুর্তি করে নিতে চায়। কিন্তু মুসলিমরা তো পরকালের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রাখে। তাই তারা সময়ের অপচয় করে না।
মহান আল্লাহ্‌ বলেন-
সময়ের কসম! নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। (সুরা আল আসরঃ ১-২)
অর্থাৎ সময়কে সঠিকভাবে কাজে না লাগানোর জন্য মানুষ সেইদিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পরবে। সেইদিন সে আফসোস করবে যে- আমি যদি আরো একটু বেশি সময় ভাল কাজে ব্যয় করতাম তাহলে আজ আমারা জাহান্নামী হতাম না, অথবা আরো পুরষ্কার পেতাম!
দ্বিতীয় কারনঃ
============
ইসলামে দুটি দিবস ব্যতীত অন্য তৃতীয় কোন দিবস পালন করা তো এমনেতেই নিষেধ।
আনাস (রা) বলেন, "রাসুল (সা) মদীনায় আগমন করে দেখলেন যে, মদীনাবাসীরা দুটি ঈদ (আনন্দের দিন) পালন করছে ৷ তা দেখে রাসূল (সা)বললেন, জাহীলিয়াতের যুগে তোমাদের দুটি দিন ছিল যাতে তোমরা খেলাধূলা, আনন্দ-ফুর্তি করতে এখন ঐ দিনগুলির পরিবর্তে আল্লাহ্
তোমাদেরকে দুটি উত্তম দিন প্রদান করেছেন, ঈদুল ফিৎর ও ঈদুল আযহার দিন। (আবূ দাউদ: ১০০৪, নাসাই: ১৫৫৫ হাদীস সহীহ)
এই হাদিসে আল্লাহ্‌র রাসুল (সাঃ) বলেছেন ঐ দুটি দিনের পরিবর্তে আল্লাহ্‌ তোমাদেরকে দুটি উত্তম দিন প্রদান করেছেন। এখানে যদি আল্লাহ্‌র রাসুল (সাঃ) বলতেন তোমাদের ছিল দুটি দিন, আর আল্লাহ্‌ তোমাদেরকে দিয়েছেন আরো দুটি দিন। তাহলে মুসলিমরা ১৪০০ বছর যাবৎ ৪টি উৎসবের দিন পালন করে আসতো।
যেহেতু আল্লাহ্‌র রাসুল (সাঃ) অন্য মানব রচিত গুলো পরিবর্তন করে আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে দুটি উত্তম দিন প্রদান করেছেন তাই অন্য যে কোন দিবস পালন করা এমনেতেই বাতিল হয়ে যায়।
তাই কোন মুসলিমদের জন্য অন্য কোন প্রকার দিবস পালন করা বৈধ নয়, হোক সেটা জন্মদিন, শোক দিবস, মাতৃভাষা দিবস, বিজয় দিবস, নববর্ষ ইত্যাদি যা-ই হোক না কেন, তা পালন করা যাবে না।
আর তৃতীয় কারনঃ
============
এই ধরণের যত প্রকার দিবস রয়েছে সেগুলোর কোনটাই মুসলিমদের সংস্কৃতি নয়।
যদি এগুলো মুসলিমদের সংস্কৃতি হত তবে এগুলো সাহাবাদের যুগ থেকেই পালিত হয়ে আসতো।
তাই যেহেতু এগুলো মুসলিমদের সংস্কৃতি নয় তাহলে বুঝাই যাচ্ছে যে এগুলো কাফের-মুশরিক বিজাতীয়দের সংস্কৃতি থেকে এসেছে।
আর এ প্রসঙ্গে রাসূল ﷺ বলেছেন,
‘যে ব্যক্তি যে জাতির অনুকরণ করবে, সে ব্যক্তি সেই জাতিরই একজন বলে গণ্য হবে’ ( আবূ দাঊদ হা/৪০৩১) ।
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস রাঃ থেকে বর্ণিত রাসূল সাঃ বলেছেন, যে ব্যক্তি মুশরিকদের দেশে বাড়ী তৈরি করল তাদের উৎসব দিবস পালন করল এবং এ অবস্থায় মারা গেল তবে তার হাশর তাদের সাথেই হবে। (সূনানে বাইহাকীঃ ২৩৪)
নবী মুহাম্মাদ (ﷺ) বলেন, “যে ব্যক্তি বিজাতির তরীকা অনুযায়ী আমল করে, সে আমাদের কেউ নয়।”(ত্বাবারানী, সিলসিলাহ সহীহাহ ২১৯৪নং)
“আমাদের তরীকা ওদের (মুশরিকদের) তরীকা থেকে ভিন্ন।”(বাইহাকী ৫/১২৫)
সাওবান (রা:) বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "আমি সবচেয়ে যাদের বেশী ভয় করি তারা হচ্ছে নেতা ও এক শ্রেনীর আলেম সমাজ। অচিরেই আমার উম্মতের কিছু লোক মূর্তিপূজা করবে। আর অতি শীঘ্রই আমার উম্মতের কিছু লোক বিজাতিদের সাথে মিশে যাবে।" [ইবনে মাজাহঃ ৩৯৫২। হাদিস সহিহ]
আবূ সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত। নাবী (স.) বলেছেন, “অবশ্য অবশ্যই তোমরা তোমাদের আগের লোকদের নীতি-পদ্ধতিকে বিঘতে বিঘতে, হাতে হাতে অনুকরণ করবে। এমনকি তারা যদি গুইসাপের গর্তে ঢুকে, তাহলে তোমরাও তাদের অনুকরণ করবে। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রসূল (স.)! এরা কি ইয়াহুদী ও নাসারা? তিনি (স.) বললেন, আর কারা?” –[সহীহুল বুখারী ৭৩২]
তাই আর বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বিজাতীয়দের সংস্কৃতি বর্জন করা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ওয়াজিব।
অতএব মুসলিমরা যদি জান্নাতের আশা করে এবং জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচতে চায় তবে তারা আল্লাহ্‌ এবং তাঁর রাসুলের দিকে ফিরে আসুক।।
আল্লাহ্‌ আমাদের সকলকে সঠিক জ্ঞান দান করুন।।

No comments:

Post a Comment